পুলিশে চাকরির কথা বলে বড় অঙ্কের টাকা নিত প্রতারক চক্র
মাত্র ১২০ টাকা খরচ করলেই পাওয়া যাবে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি। এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের। কোনো ধরনের ঘুষ ও তদবির ছাড়া চাকরিও পাচ্ছেন যোগ্য প্রার্থীরা। কিন্তু বসে নেই প্রতারক চক্রও। এর মধ্যেই চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা!
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, টাকা দিয়েও কারও কপালে জোটেনি চাকরি। মামলার তদন্তের স্বার্থে প্রতারকদের নাম জানায়নি পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮ ফ্রেরুয়ারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মশিউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার নামে ২ প্রতারককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাদের ধরার পর, ডিবি পুলিশ জানায় এই চক্রটি পুলিশের চাকরি দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে শুরু হয়েছে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল বা টিআরসি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া। জেলাভিত্তিক শূন্যপদের বিপরীতে ৬৪ জেলায় ৫ হাজার ৫শ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। ২০২১ সাল থেকে এ পদের নিয়োগ পরীক্ষার আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে সাত ধাপ অনুসরণ করে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শারীরিক সহনশীলতা পরীক্ষা। এ ধাপে মোট তিন দিন প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই করা হয়। এ ইভেন্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আরও পাঁচ ধাপ অতিক্রম করার পর পাওয়া যায় কনস্টেবলের চাকরি।
নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে পুলিশ সদর দপ্তরের রয়েছে কঠোর নির্দেশনা। চাকরি পেতে খরচ হবে ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট এবং ২০ টাকার ফরম অর্থাৎ মাত্র ১২০ টাকা। কিন্তু এখানেও প্রতারকদের হাতছানি।
টাকার বিনিময়ে কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ৭ থেকে ১২ লাখ টাকা হলেই নিশ্চিত চাকরি-এমন আশ্বাস দিতেন প্রার্থীদের। কারও কাছ থেকে নগদ, কারও কাছ থেকে চেকে টাকা নিতেন প্রতারকরা।
পুলিশ বলছে, উত্তরাঞ্চলের অন্তত অর্ধশত প্রার্থীকে চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছিল চক্রটি। যদিও তারা একজনকেও চাকরি দিতে পারেনি।
উপ-পুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, এ প্রতারক চক্র কখনো আইজিপি, কখনো স্বরাষ্ট্র সচিব, আবার কখনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস পরিচয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে। তাদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। তারপর তারা প্রার্থীদের আশ্বস্ত করেছে, ভিআইপিভাবে পরীক্ষা নিয়ে পাস করিয়ে দেবে। আশ্বাস দিয়েছে নিয়োগপত্র দিয়ে পাঠিয়ে দেয়ার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অফিস সহকারীও এ চক্রে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/