ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ‘বিসিএস প্রস্তুতি’ বন্ধ হচ্ছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের পাঞ্চ কার্ডের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও যারা পড়তে যান, বিশেষ করে বিভিন্ন চাকরি ও বিসিএস প্রস্তুতির জন্য পড়তে যাওয়া ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে পারবেন না। আগামী বছর থেকে এই নিয়ম চালু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
শুক্রবার (১০ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পাস করে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অগ্রায়ন (বিদায়) ও নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয় বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। অগ্রায়ন ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব পরিকল্পনার কথা জানান।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফেরদৌস আহমেদ এবং সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসির বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছাত্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, লাইব্রেরিতে কার্ড পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে। যারা কেবল বিসিএস পড়তে যায়, তারা আগামী বছর থেকে লাইব্রেরিতেও প্রবেশ করতে পারবে না। এখন লাইব্রেরিতে সবাই বিসিএস পড়তে যায়। দু-একজন হয়তো একাডেমিক বই পড়ার জন্য যায়। এর অর্থ, যে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে, সে বিষয়ে তারা আনন্দ পায় না। আনন্দ পেলে পাঠ্যসূচিনির্ভর পড়াশোনা তাদের ধ্যান-জ্ঞান হওয়ার কথা।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আগামী বছর থেকে হলে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কার্ড পাঞ্চ করে প্রবেশ করতে হবে। যার ফলে, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতরা হলে প্রবেশ করতে পারবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার উৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান আখ্যায়িত করে উপাচার্য বলেন, এখানকার উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে জ্ঞান চর্চা ও সকল সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সঠিক তথ্য পরিবেশন, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।
সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে সাংবাদিকরা দেশ ও সমাজকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলুদ সাংবাদিকতা রোধ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিভাগের সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।