বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বাংলাদেশের কথাসাহিত্য

বাঙালির আবহমানকালের মূল্যবোধ ও জীবনদর্শন নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি বর্তমানে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের অধিবাসী। এই স্বাধীনতা বাংলা ভাষাকে একটি দেশের রাষ্ট্রভাষা করেছে। এই স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে একে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তিনিই সেই বাঙালি যিনি বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও বলব-আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা, বাংলা আমার নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে।’ এই স্বাধীনতা লাভের দীর্ঘ পটভূমি আছে। এই পটভূমি স্বল্প সময়ে অনায়াসে তৈরি হয়নি। এর জন্য সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই জনগোষ্ঠীকে-ঝরেছে অগণিত মানুষের রক্ত এবং জীবন। মোটা দাগের টানে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করা যায়।

এক. সাতচল্লিশের দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাহান্নর ভাষা আন্দোলন পূর্ব বঙ্গের বাঙালির একটি বিশাল এবং স্থায়ী সাংস্কৃতিক অর্জন। মাতৃভাষার জন্য এই জীবনদান পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। এ ঘটনা বাঙালির জীবনে এক অমিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়। তাই ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ আমাদের নিকট অতীতের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।

দুই. এই ভূখণ্ডের বাঙালির পরবর্তী ধাক্কা সামরিক শাসনের নিপীড়ন-সামরিক শাসনের অভিজ্ঞতা তার এই প্রথম এবং কোনও বাঙালি জনগোষ্ঠীকে এ ধরনের নিপীড়নের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল কি না তা আমার জানা নেই, যার ভেতর থেকে সে জনগোষ্ঠীর লেখকরা কুড়িয়ে আনতে পারে গুটিকয় সোনালি শস্যদানা।

তিন.পৃথিবীর কোথাও রবীন্দ্রনাথ রাষ্ট্রযন্ত্রের রোষানলে পড়েননি, যেমন পড়েছিলেন তৎকালীন পূর্ব বঙ্গে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করেছিলেন রেডিয়ো-টেলিভিশনে। পূর্ব বঙ্গবাসী তাঁকে বুকে আগলে রাখার জন্য প্রতিবাদে, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। রবীন্দ্রসংগীত গাইবার অপরাধে সরকারের হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন কোনও কোনও শিল্পী। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারেন না কেন বলে ধমকেছিলেন লেখকদের তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা' থেকে ছাড়া পেয়ে তার প্রথম ভাষণে বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্রনাথের বই পড়বই, আমরা রবীন্দ্রসংগীত গাইবই এবং রবীন্দ্রসংগীত এই দেশে গীত হবেই।’

সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রতিবাদের পাশাপাশি এটি ছিল একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রতিরোধের মুখে নতিস্বীকার করেছিল পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে নিষিদ্ধঘোষিত রবীন্দ্রসংগীত পুনঃপ্রচারের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে প্রবাসী সরকারের কোনো নির্দেশ ছিল না, তবু মানুষের মুখে মুখে সেই দারুণ দুর্দিনে যে গান উঠে আসে তা রবীন্দ্রনাথের, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'। ভুল সুরে, ভুল উচ্চারণে এই গান মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে শক্তি এবং সাহসের প্রতীক হয়ে। রবীন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে মানুষের এই লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা লেখকদের এক দারুণ সঞ্চয়।

চার. পাকিস্তান সরকারের শোষণ, বঞ্চনা, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সাংস্কৃতিক পদদলনের প্রতিবাদে নয় মাস স্থায়ী যুদ্ধ বাঙালির জীবনের আকাশছোঁয়া অন্যরকম অভিজ্ঞতা। দেখতে হয়েছে গণহত্যা, বন্দিশিবিরের নিদারুণ অত্যাচার, নারী ধর্ষণ—শিশুর খুলি রাজপথে বেয়নেটের মাথায়। দেখতে হয়েছে গেরিলা অপারেশন, রাতের অন্ধকারে মুক্তিযোদ্ধার জ্বলজ্বলে চোখ। দেখতে হয়েছে স্বাধীনতার পর যুদ্ধশিশু। বিধ্বস্ত দেশ। শুনতে হয়েছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ। সইতে হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার শূন্যতা।

পাঁচ, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট ইতিহাসের মহান বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে জীবন দিতে হয় সামরিক বাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে। যিনি ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তাঁর গমগমে কণ্ঠস্বরে স্পিকারকে বলেছিলেন, ‘স্যার, আপনি দেখবেন, ওরা পূর্ব ‘বাংলা’ নামের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতে চায়। আমরা বহুবার বলেছি, আপনারা এ দেশটাকে “বাংলা” নামে ডাকেন। বাংলা শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। আপনারা এই নাম পরিবর্তন করতে চাইলে আমাদের জনগণের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।’ তিনিই আবার ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর মাসে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু দিবসে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন, ‘আর পূর্ব পাকিস্তান নয়, আর পূর্ব বাংলা নয়। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ও শহিদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের পক্ষ থেকে আমি ঘোষণা করছি- আজ থেকে বাঙালি জাতির এই আবাসভূমির নাম হবে ‘বাংলাদেশ’।’

এই বাংলাদেশে তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই বলে ইতিহাসের নিজস্ব গতি কেউ থামিয়ে দিতে পারে না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব পথ খুঁজে নিয়ে চলছে। উর্বর হচ্ছে তার নিজস্ব মাটি। যে কয়টি বড় ঘটনার উল্লেখ করলাম এর বাইরে আরও নানা ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করতে হয়েছে দেশবাসীকে। দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন এবং গণ-অভ্যুত্থানের মতো অসংখ্য ছোট-বড় ঘটনা এ দেশের মানুষের শান্তি ও স্বস্তির বিপরীতে লৌহ-কঠিন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকার শপথ।

এই পথপরিক্রমার অজস্র অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ভাষা ও সাহিত্য। এই নির্মাণ হাজার বছরের বাংলা ভাষার মূলস্রোতে একটি বড় সংযোজন যে সংযোজনের ফলে হাজার বছরের বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য এবং আয়তন বেড়েছে। এ যাত্রার অনুষঙ্গ নানাবিধ-বিশ্লেষণ করলে বেরিয়ে আসবে কীভাবে এ দেশের ভাষা ও সাহিত্য বাঙালির গৌরবকে শাণিত করেছে, দিয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী রচনার মৃত্তিকা। প্রথমে ভাষার প্রসঙ্গ। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে জন্মলাভ করা পাকিস্তান শুরু থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের উপর নানারকম সাংস্কৃতিক আধিপত্য চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। তারা ভেবেছিল এ জাতিকে তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে শুধু ইসলামি সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মাথা তোলার কথা ভাববে না।

ভুলে যাবে নিজেদের অতীত। নতুন ইসলামি সংস্কৃতির ধারণা বাঙালিকে দেবে ভিনগ্রহে প্রবেশের উদ্দীপনা। বাঙালি মুসলিম জনগোষ্ঠী দীর্ঘকাল ধরে ইসলামি পরিমণ্ডলে বসবাস করেছে। তাদের মুখের ভাষায় প্রচুর আরবি ফারসি শব্দ যুক্ত হয়েছে। শতাব্দীর গড়ার দিকে বাঙালি মুসলমান লেখকগণ প্রচুর পরিমাণ আরবি-ফারসি শব্দ যোগ করে যে ইসলামি আবহ সৃষ্টি করার সচেতন উদ্যোগ নিয়েছিলেন ১৯৪৭-পরবর্তী বাস্তবতা ছিল তার চেয়ে আলাদা। যে উদ্যোগ মুসলমান লেখকগণ নিয়েছিলেন সেটি ছিল অনেকটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অর্জনের তাগিদ থেকে, অনেকটা আন্তঃপ্রেরণা থেকে,তবে বেশিটা হচ্ছে বাস্তবতারই স্বীকৃতি।

সংস্কৃতায়নপ্রবণতার কারণে বাংলা ভাষায় যেভাবে প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দ সংস্কৃত শব্দের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল,মুসলমান লেখকদের মনে তার সহজ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বাঙালি মুসলমানের ব্যবহৃত আরবি-ফারসি শব্দই শুধু নয়, বাঙালি হিন্দুর ব্যবহৃত মুখের ভাষায় আরবি-ফারসি শব্দগুলোর অনেকটাই এই শ্রেণির লেখকদের হাতে প্রথমবার স্বীকৃতি পেয়েছিল। প্যারীচাদ মিত্র, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বা প্রমথ চৌধুরীদের মতে কয়েকজন লেখকের প্রাসঙ্গিক সচেতনতার কথাও এ প্রসঙ্গে স্মরণীয়। কিন্তু সাতচল্লিশ-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্যই ছিল আলাদা। তারা জোর করে বাঙালিকে নতুন মুসলমান বানাতে চেয়েছিল। তারা আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েছিল। বাঙালির মুখের ভাষাকে বদলে দেওয়ার জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করেছিল। জোর করে ইসলামি আবরণ চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর ভুল ভাঙতে বেশি দিন সময় লাগেনি।

পূর্ব বঙ্গবাসী পূর্ব পাকিস্তানি হয়ে পাকিস্তান সরকার সৃষ্ট সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে প্রবেশ করেছে ঠিকই, তার ভালটুকু নিয়েছে বর্জন করেছে অসার বস্তু। পাকিস্তানের সংহতির নামে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে থেকেও বিসর্জন দেয়নি অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গ্রহণ করেনি ধর্মীয় গোঁড়ামির উন্মাদনা, হারিয়ে ফেলেনি তার মানবিক উদার দৃষ্টিভঙ্গি। শুধু জীবনযাপনের মিথস্ক্রিয়ায় গ্রহণ করেছে ধর্মীয় উৎসব, ব্যবহারিক প্রয়োজনে মুখের ভাষায় এসেছে প্রচুর ইসলামি শব্দ। এ শব্দগুলো ইসলামি শব্দ বলে গ্রহণ করা হয়েছে তা নয়, জীবনযাপনের আচার-আচরণের ফলে দীর্ঘকাল ধরে মানুষের মুখে মুখে ব্যবহৃত হতে হতে শব্দগুলো স্থায়ী হয়ে যায় জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক চেতনায়। সাধারণ মানুষের জীবনের শব্দ বলে আমাদের লেখকগণ এসব শব্দ সাহিত্যে তুলে আনেন। ভিন্ন শব্দভাণ্ডার তৈরি হওয়ার কারণে আমাদের সাহিত্যের একটি ভিন্ন গদ্যভঙ্গি তৈরি হয়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা আমাদের গদ্যের এক বড় সম্পদ। বাংলা একাডেমি থেকে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রকাশিত হয়েছে। আঞ্চলিক ভাষার এই বিপুল শব্দভাণ্ডার, লেখকদের ব্যবহার পদ্ধতি আমাদের গদ্যকে বাংলা ভাষার অন্য অঞ্চলের গদ্য থেকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। দিয়েছে ভাষার প্রাণশক্তি। যে প্রমিত গদ্য বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করে তার কাঠামো সবটা কলকাতাকেন্দ্রিক নয়। অনেক সময়ে তা পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক ভাষাকাঠামোর উপর শুধু শুদ্ধ শব্দের প্রতিস্থাপন। এটি বাংলাদেশের সাহিত্যের গদ্যকে কিছুটা স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত করে। উচ্চারণ এবং বাকভঙ্গির ভিন্নতা গদ্যের বৈচিত্র্য নির্ণয়ের একটি বড় উপাদান। যে জনগোষ্ঠী যে ধরনের সংস্কৃতির ভেতরে বসবাস করে সে সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের উপরও গদ্যের প্রকাশ কী হবে, তা নির্ভর করে। একটি জনগোষ্ঠী নিজস্ব মূল্যবোধের ভিত্তিতে যে জীবনাচরণ গড়ে তোলে সেটা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি। ভাষা সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান।

এই ভাষা শুধু আমাদের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকেই চিহ্নিত করেনি, রাজনৈতিক দিকনির্দেশনারও বলিষ্ঠ প্রকাশ ঘটিয়েছে।বাংলাদেশের একটি আঞ্চলিক বাকভঙ্গি কীভাবে মুখের ভাষাকে অসাধারণভাবে অর্থপূর্ণ করে তোলে, তার একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে পারি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণটির কথা আমরা খুব গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করে থাকি। লক্ষণীয় যে এই ভাষণে তিনি একটি বাক্য ব্যবহার করেছেন এমন: ‘আর দাবায়ে রাখবার পারবা না। তিনি যদি প্রমিত বাংলা ব্যবহার করতেন, তা হলে বলতেন, ‘আর দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আঞ্চলিক শব্দ সহযোগে আঞ্চলিক ক্রিয়াপদ ব্যবহার করে একটি জাতির প্রতিবাদের ভাষা কত বলিষ্ঠ, কত তীব্র হতে পারে তা প্রমাণ করেছেন তিনি। আমাদের জীবনে এই একটি বাক্য মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস। জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন। সাধারণ মানুষের মুখের ভাষাকে এভাবে জীবনের ভাষায় রূপান্তরিত করা আমাদের গদ্যভঙ্গির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আমাদের কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে, নাটকে আঞ্চলিক ভাষার এই বিশিষ্টতা একেকজন লেখকের ক্ষমতার উপর বিচিত্রভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এই ব্যবহার পঞ্চাশের দশকের শুরু থেকেই। যাকে সম্বল করে আমরা সাহিত্যে একটি নতুন মাত্রা গঠনে প্রয়াসী হয়েছি।

লেখক: বাংলা একাডেমির সভাপতি ও কথাসাহিত্যিক

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪