রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

বাংলাদেশের কথাসাহিত্য

বাঙালির আবহমানকালের মূল্যবোধ ও জীবনদর্শন নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি বর্তমানে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের অধিবাসী। এই স্বাধীনতা বাংলা ভাষাকে একটি দেশের রাষ্ট্রভাষা করেছে। এই স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে একে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তিনিই সেই বাঙালি যিনি বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও বলব-আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা, বাংলা আমার নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে।’ এই স্বাধীনতা লাভের দীর্ঘ পটভূমি আছে। এই পটভূমি স্বল্প সময়ে অনায়াসে তৈরি হয়নি। এর জন্য সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই জনগোষ্ঠীকে-ঝরেছে অগণিত মানুষের রক্ত এবং জীবন। মোটা দাগের টানে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করা যায়।

এক. সাতচল্লিশের দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাহান্নর ভাষা আন্দোলন পূর্ব বঙ্গের বাঙালির একটি বিশাল এবং স্থায়ী সাংস্কৃতিক অর্জন। মাতৃভাষার জন্য এই জীবনদান পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। এ ঘটনা বাঙালির জীবনে এক অমিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়। তাই ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ আমাদের নিকট অতীতের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।

দুই. এই ভূখণ্ডের বাঙালির পরবর্তী ধাক্কা সামরিক শাসনের নিপীড়ন-সামরিক শাসনের অভিজ্ঞতা তার এই প্রথম এবং কোনও বাঙালি জনগোষ্ঠীকে এ ধরনের নিপীড়নের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল কি না তা আমার জানা নেই, যার ভেতর থেকে সে জনগোষ্ঠীর লেখকরা কুড়িয়ে আনতে পারে গুটিকয় সোনালি শস্যদানা।

তিন.পৃথিবীর কোথাও রবীন্দ্রনাথ রাষ্ট্রযন্ত্রের রোষানলে পড়েননি, যেমন পড়েছিলেন তৎকালীন পূর্ব বঙ্গে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করেছিলেন রেডিয়ো-টেলিভিশনে। পূর্ব বঙ্গবাসী তাঁকে বুকে আগলে রাখার জন্য প্রতিবাদে, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। রবীন্দ্রসংগীত গাইবার অপরাধে সরকারের হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন কোনও কোনও শিল্পী। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান রবীন্দ্রসংগীত লিখতে পারেন না কেন বলে ধমকেছিলেন লেখকদের তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা' থেকে ছাড়া পেয়ে তার প্রথম ভাষণে বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্রনাথের বই পড়বই, আমরা রবীন্দ্রসংগীত গাইবই এবং রবীন্দ্রসংগীত এই দেশে গীত হবেই।’

সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রতিবাদের পাশাপাশি এটি ছিল একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রতিরোধের মুখে নতিস্বীকার করেছিল পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে নিষিদ্ধঘোষিত রবীন্দ্রসংগীত পুনঃপ্রচারের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে প্রবাসী সরকারের কোনো নির্দেশ ছিল না, তবু মানুষের মুখে মুখে সেই দারুণ দুর্দিনে যে গান উঠে আসে তা রবীন্দ্রনাথের, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'। ভুল সুরে, ভুল উচ্চারণে এই গান মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে শক্তি এবং সাহসের প্রতীক হয়ে। রবীন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে মানুষের এই লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা লেখকদের এক দারুণ সঞ্চয়।

চার. পাকিস্তান সরকারের শোষণ, বঞ্চনা, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সাংস্কৃতিক পদদলনের প্রতিবাদে নয় মাস স্থায়ী যুদ্ধ বাঙালির জীবনের আকাশছোঁয়া অন্যরকম অভিজ্ঞতা। দেখতে হয়েছে গণহত্যা, বন্দিশিবিরের নিদারুণ অত্যাচার, নারী ধর্ষণ—শিশুর খুলি রাজপথে বেয়নেটের মাথায়। দেখতে হয়েছে গেরিলা অপারেশন, রাতের অন্ধকারে মুক্তিযোদ্ধার জ্বলজ্বলে চোখ। দেখতে হয়েছে স্বাধীনতার পর যুদ্ধশিশু। বিধ্বস্ত দেশ। শুনতে হয়েছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ। সইতে হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার শূন্যতা।

পাঁচ, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট ইতিহাসের মহান বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে জীবন দিতে হয় সামরিক বাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে। যিনি ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তাঁর গমগমে কণ্ঠস্বরে স্পিকারকে বলেছিলেন, ‘স্যার, আপনি দেখবেন, ওরা পূর্ব ‘বাংলা’ নামের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতে চায়। আমরা বহুবার বলেছি, আপনারা এ দেশটাকে “বাংলা” নামে ডাকেন। বাংলা শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। আপনারা এই নাম পরিবর্তন করতে চাইলে আমাদের জনগণের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।’ তিনিই আবার ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর মাসে হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু দিবসে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন, ‘আর পূর্ব পাকিস্তান নয়, আর পূর্ব বাংলা নয়। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ও শহিদ সোহরাওয়ার্দীর মাজারের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের পক্ষ থেকে আমি ঘোষণা করছি- আজ থেকে বাঙালি জাতির এই আবাসভূমির নাম হবে ‘বাংলাদেশ’।’

এই বাংলাদেশে তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই বলে ইতিহাসের নিজস্ব গতি কেউ থামিয়ে দিতে পারে না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব পথ খুঁজে নিয়ে চলছে। উর্বর হচ্ছে তার নিজস্ব মাটি। যে কয়টি বড় ঘটনার উল্লেখ করলাম এর বাইরে আরও নানা ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করতে হয়েছে দেশবাসীকে। দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন এবং গণ-অভ্যুত্থানের মতো অসংখ্য ছোট-বড় ঘটনা এ দেশের মানুষের শান্তি ও স্বস্তির বিপরীতে লৌহ-কঠিন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকার শপথ।

এই পথপরিক্রমার অজস্র অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ভাষা ও সাহিত্য। এই নির্মাণ হাজার বছরের বাংলা ভাষার মূলস্রোতে একটি বড় সংযোজন যে সংযোজনের ফলে হাজার বছরের বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য এবং আয়তন বেড়েছে। এ যাত্রার অনুষঙ্গ নানাবিধ-বিশ্লেষণ করলে বেরিয়ে আসবে কীভাবে এ দেশের ভাষা ও সাহিত্য বাঙালির গৌরবকে শাণিত করেছে, দিয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী রচনার মৃত্তিকা। প্রথমে ভাষার প্রসঙ্গ। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে জন্মলাভ করা পাকিস্তান শুরু থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের উপর নানারকম সাংস্কৃতিক আধিপত্য চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। তারা ভেবেছিল এ জাতিকে তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে শুধু ইসলামি সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মাথা তোলার কথা ভাববে না।

ভুলে যাবে নিজেদের অতীত। নতুন ইসলামি সংস্কৃতির ধারণা বাঙালিকে দেবে ভিনগ্রহে প্রবেশের উদ্দীপনা। বাঙালি মুসলিম জনগোষ্ঠী দীর্ঘকাল ধরে ইসলামি পরিমণ্ডলে বসবাস করেছে। তাদের মুখের ভাষায় প্রচুর আরবি ফারসি শব্দ যুক্ত হয়েছে। শতাব্দীর গড়ার দিকে বাঙালি মুসলমান লেখকগণ প্রচুর পরিমাণ আরবি-ফারসি শব্দ যোগ করে যে ইসলামি আবহ সৃষ্টি করার সচেতন উদ্যোগ নিয়েছিলেন ১৯৪৭-পরবর্তী বাস্তবতা ছিল তার চেয়ে আলাদা। যে উদ্যোগ মুসলমান লেখকগণ নিয়েছিলেন সেটি ছিল অনেকটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অর্জনের তাগিদ থেকে, অনেকটা আন্তঃপ্রেরণা থেকে,তবে বেশিটা হচ্ছে বাস্তবতারই স্বীকৃতি।

সংস্কৃতায়নপ্রবণতার কারণে বাংলা ভাষায় যেভাবে প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দ সংস্কৃত শব্দের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল,মুসলমান লেখকদের মনে তার সহজ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বাঙালি মুসলমানের ব্যবহৃত আরবি-ফারসি শব্দই শুধু নয়, বাঙালি হিন্দুর ব্যবহৃত মুখের ভাষায় আরবি-ফারসি শব্দগুলোর অনেকটাই এই শ্রেণির লেখকদের হাতে প্রথমবার স্বীকৃতি পেয়েছিল। প্যারীচাদ মিত্র, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বা প্রমথ চৌধুরীদের মতে কয়েকজন লেখকের প্রাসঙ্গিক সচেতনতার কথাও এ প্রসঙ্গে স্মরণীয়। কিন্তু সাতচল্লিশ-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্যই ছিল আলাদা। তারা জোর করে বাঙালিকে নতুন মুসলমান বানাতে চেয়েছিল। তারা আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েছিল। বাঙালির মুখের ভাষাকে বদলে দেওয়ার জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করেছিল। জোর করে ইসলামি আবরণ চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর ভুল ভাঙতে বেশি দিন সময় লাগেনি।

পূর্ব বঙ্গবাসী পূর্ব পাকিস্তানি হয়ে পাকিস্তান সরকার সৃষ্ট সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে প্রবেশ করেছে ঠিকই, তার ভালটুকু নিয়েছে বর্জন করেছে অসার বস্তু। পাকিস্তানের সংহতির নামে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে থেকেও বিসর্জন দেয়নি অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গ্রহণ করেনি ধর্মীয় গোঁড়ামির উন্মাদনা, হারিয়ে ফেলেনি তার মানবিক উদার দৃষ্টিভঙ্গি। শুধু জীবনযাপনের মিথস্ক্রিয়ায় গ্রহণ করেছে ধর্মীয় উৎসব, ব্যবহারিক প্রয়োজনে মুখের ভাষায় এসেছে প্রচুর ইসলামি শব্দ। এ শব্দগুলো ইসলামি শব্দ বলে গ্রহণ করা হয়েছে তা নয়, জীবনযাপনের আচার-আচরণের ফলে দীর্ঘকাল ধরে মানুষের মুখে মুখে ব্যবহৃত হতে হতে শব্দগুলো স্থায়ী হয়ে যায় জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক চেতনায়। সাধারণ মানুষের জীবনের শব্দ বলে আমাদের লেখকগণ এসব শব্দ সাহিত্যে তুলে আনেন। ভিন্ন শব্দভাণ্ডার তৈরি হওয়ার কারণে আমাদের সাহিত্যের একটি ভিন্ন গদ্যভঙ্গি তৈরি হয়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা আমাদের গদ্যের এক বড় সম্পদ। বাংলা একাডেমি থেকে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রকাশিত হয়েছে। আঞ্চলিক ভাষার এই বিপুল শব্দভাণ্ডার, লেখকদের ব্যবহার পদ্ধতি আমাদের গদ্যকে বাংলা ভাষার অন্য অঞ্চলের গদ্য থেকে বিশিষ্ট করে তুলেছে। দিয়েছে ভাষার প্রাণশক্তি। যে প্রমিত গদ্য বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করে তার কাঠামো সবটা কলকাতাকেন্দ্রিক নয়। অনেক সময়ে তা পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক ভাষাকাঠামোর উপর শুধু শুদ্ধ শব্দের প্রতিস্থাপন। এটি বাংলাদেশের সাহিত্যের গদ্যকে কিছুটা স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত করে। উচ্চারণ এবং বাকভঙ্গির ভিন্নতা গদ্যের বৈচিত্র্য নির্ণয়ের একটি বড় উপাদান। যে জনগোষ্ঠী যে ধরনের সংস্কৃতির ভেতরে বসবাস করে সে সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের উপরও গদ্যের প্রকাশ কী হবে, তা নির্ভর করে। একটি জনগোষ্ঠী নিজস্ব মূল্যবোধের ভিত্তিতে যে জীবনাচরণ গড়ে তোলে সেটা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি। ভাষা সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান।

এই ভাষা শুধু আমাদের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকেই চিহ্নিত করেনি, রাজনৈতিক দিকনির্দেশনারও বলিষ্ঠ প্রকাশ ঘটিয়েছে।বাংলাদেশের একটি আঞ্চলিক বাকভঙ্গি কীভাবে মুখের ভাষাকে অসাধারণভাবে অর্থপূর্ণ করে তোলে, তার একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে পারি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণটির কথা আমরা খুব গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করে থাকি। লক্ষণীয় যে এই ভাষণে তিনি একটি বাক্য ব্যবহার করেছেন এমন: ‘আর দাবায়ে রাখবার পারবা না। তিনি যদি প্রমিত বাংলা ব্যবহার করতেন, তা হলে বলতেন, ‘আর দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আঞ্চলিক শব্দ সহযোগে আঞ্চলিক ক্রিয়াপদ ব্যবহার করে একটি জাতির প্রতিবাদের ভাষা কত বলিষ্ঠ, কত তীব্র হতে পারে তা প্রমাণ করেছেন তিনি। আমাদের জীবনে এই একটি বাক্য মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস। জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন। সাধারণ মানুষের মুখের ভাষাকে এভাবে জীবনের ভাষায় রূপান্তরিত করা আমাদের গদ্যভঙ্গির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আমাদের কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে, নাটকে আঞ্চলিক ভাষার এই বিশিষ্টতা একেকজন লেখকের ক্ষমতার উপর বিচিত্রভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এই ব্যবহার পঞ্চাশের দশকের শুরু থেকেই। যাকে সম্বল করে আমরা সাহিত্যে একটি নতুন মাত্রা গঠনে প্রয়াসী হয়েছি।

লেখক: বাংলা একাডেমির সভাপতি ও কথাসাহিত্যিক

Header Ad
Header Ad

দুর্ঘটনায় আহত ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল মায়ের

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর মান্দায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে ভটভটির ধাক্কায় জায়েদা বিবি (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৩ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের বিজয়পুর মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জায়েদা বিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের মৃত মনসুর রহমানের স্ত্রী।

নিহতের ছেলে আল মামুন বলেন, তাঁর বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য রহিদুল ইসলাম রোববার সকালে উপজেলা সদরের প্রসাদপুর বাজার থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ভাইয়ের দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরে তাঁর মা জায়েদা বিবি ভটভটিতে চড়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। পথে বিজয়পুর মোড় এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি ভটভটি ধাক্কায় তিনি পাকা রাস্তায় পড়ে গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান জানান, অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত জায়েদা বিবির মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে!

ছবি: সংগৃহীত

নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ঘটনা নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্রমাগত দুশ্চিন্তা শরীরের স্ট্রেস-রেসপন্স সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্রনিক স্ট্রেসের জন্ম দেয় এবং এমনকি অকাল মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, ফলে সংক্রমণ ও বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের মতো মারাত্মক কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার সঙ্গেও এটি সরাসরি সম্পর্কিত।

বিশেষজ্ঞরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে কর্টিসলসহ বিভিন্ন স্ট্রেস হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণ হজমজনিত সমস্যা, পেশির টান, অনিদ্রা ও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।

এছাড়া, অনিয়ন্ত্রিত বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগ ধূমপান, অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ বা মাদকাসক্তির মতো ক্ষতিকর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে, যা আরও ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।

তবে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানোর জন্য সচেতনতা ও সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করলে এ সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মেডিটেশন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পেশাদার সহায়তা নেওয়া এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর হতে পারে।

সূত্র: আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন

Header Ad
Header Ad

জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে না।

রোববার বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওই পোস্টে ইশরাক লিখেছেন, "জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় সরকার ফরকার হবে না। তার আগে অন্তত ঢাকার প্রাণকেন্দ্র দক্ষিণ ঢাকায় আমার সঙ্গে যুদ্ধ করে, আমাকে কবরে পাঠিয়ে তারপর করতে পারলে করবে।"

তিনি আরও লিখেছেন, "এই সরকারকে এর চাইতে স্পষ্ট ভাষায় আর কিছু বলার নাই। আর আমাদের দলীয় কেউ যদি ভুলেও স্বপ্ন দেখেন, যেই হন না কেন আপনাদের চিনবো না। অতএব এলাকায় ফ্যাসিবাদের স্থান দেওয়ার আগে ১০০ বার চিন্তা করে নিয়েন। আগে বরখাস্তকৃত কমিশনের/কাউন্সিলর পদধারী হাসিনার কিলার বাহিনীদের বিচার, শাস্তি ও নির্মূল করতে হবে।"

 

তরুণ এই বিএনপি নেতা তার পোস্টে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিজস্ব পরিকল্পনায় স্থানীয় নির্বাচন থাকতে পারে। কিছু নতুন দল বা ছোট দল নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টা করতে পারে। তবে তার মতে, "এই মার্কাবিহীন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে খুনি হাসিনার অমানুষ জালেম বাহিনীর উত্থান ঘটবে।"

তিনি আরও উল্লেখ করেন, "আমাদের স্পষ্ট দলীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে এই ব্যাপারে। এর বাইরে, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র প্রার্থী বা মহানগর বিএনপির সদস্য হিসেবে, বা একজন সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে, যে অবস্থানেই বিবেচনা করা হোক না কেন, আমি জানিয়ে দিচ্ছি—ঢাকার অলিগলির রাজনীতি কীভাবে চলে তা আমি জানি।"

ইশরাক হোসেন তার পোস্টের শেষ অংশে বলেন, "ঢাকা ও অন্যত্র স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে কোনো উদ্যোগকে চক্রান্ত হিসেবেই গণ্য করা হবে। হাসিনার কমিশনার/কাউন্সিলরা কিভাবে হয় এবং তারা কীভাবে ফিরে আসতে পারে, সেটাও আমাদের মুখস্থ।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুর্ঘটনায় আহত ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল মায়ের
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে!
জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা, সরকারি ছুটি নিয়ে যা জানা গেল!
ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন, ছাত্রদলের নিন্দা
ভারতে ৫ বছর ধরে নিকটজনদের কাছে ধর্ষণের শিকার কিশোরী
ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফর ও স্টারলিংক চালুর আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার
পাঁচ দফা দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, একাডেমিক শাটডাউন ও লংমার্চের ঘোষণা
নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সময়সীমা নির্ধারণ: সিইসি
নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ অভিনেতা আজাদ, আহত মা ও স্ত্রী
আহতদের চিকিৎসা বন্ধে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিলো
এস আলম পরিবারের ৮,১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের নির্দেশ
প্রথমবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি বাণিজ্য চালু
৪ ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসর, জানা গেল নাম
পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, কোনো দলের নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ধর্ষণের প্রতিবাদে আসাদ গেটে ছাত্র-জনতার সড়ক অবরোধ
স্ত্রীর সামনে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২
দুই ফুসফুসেই নিউমোনিয়া, পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন
নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি