প্রথম বর্ষেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ঢাকাপ্রকাশ
‘সততাই শক্তি সুসাংবাদিকতায় মুক্তি’এই স্লোগান নিয়ে এক বছর পূর্বে যাত্রা শুরু ঢাকাপ্রকাশ-এর। প্রথম বর্ষপূর্তিতে ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে সংযুক্ত প্রকাশক, সাংবাদিক, কলাকুশলী এবং অগণিত পাঠক, যারা দেশে বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের সকলকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। একটি গণমাধ্যমের জন্য একটি বছর সময় হিসেবে খুবই অল্প। একটি শিশুর যেমন জন্মের পরের সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক একইভাবে একটি প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে যদি গণমাধ্যম হয়, তার প্রথম বছর সফলভাবে অতিক্রম করে আসা, এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা মনে হয় আমার কাছে।
আমাদের দেশে শুধু নয়, সারা পৃথিবীতেই গণমাধ্যম একটি তীব্র প্রতিযোগিতার মাঝে সময় অতিক্রম করছে। আমাদের দেশে প্রচুর গণমাধ্যমের কার্যক্রম আমরা লক্ষ্য করছি। বিভিন্ন রকম গণমাধ্যমের সমাহার আমরা লক্ষ্য করছি। সেখানে এই কঠিন সময়ে ঢাকাপ্রকাশ শুধু আত্মপ্রকাশ করেনি, পাঠক সমাজের মাঝে, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ সবার মাঝে বিশেষ স্থান দখল করে রাখতে পেরেছে। এক বছরের মধ্যেই পত্রিকাটি একটি সুদৃঢ় অবস্থান করে নিয়েছে এবং তার কারণই হচ্ছে পত্রিকার মূল আদর্শ, ‘সততাই শক্তি ও সুসাংবাদিকতায় মুক্তি।’ কারণ সততা ছাড়া পৃথিবী এগিয়ে যেতে পারে না।
পৃথিবী আজ পর্যন্ত যেটুকু এগিয়ে এসেছে, ২০২২ পর্যন্ত আমরা যে যেটুকু এগিয়ে যেতে পেরেছি, সততা ছাড়া এটি সম্ভব ছিল না। মনে রাখতে হবে, আজকে আমরা যতদূর এগিয়েছি, এর পেছনে বহু সৎ মানুষের অবদান রয়েছে। সেই সৎ মানুষের অবদানগুলো সুসাংবাদিকতার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা যখন ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রথম বর্ষপূর্তি আয়োজনের কথা বলছি, সেই সময় আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি আমাদের এই দেশেরই বহু সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক, যারা জীবনের বিনিময়ে সত্য কথাটি প্রকাশ করে গেছেন। সত্য কথাটি মানুষকে বলে গেছেন। সেই বৃটিশ আমল, পাকিস্তান আমল, এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশেও কত সাংবাদিক অতি সাম্প্রতিককালেও আমরা দেখেছি কত সাংবাদিক তাদের জীবন দিয়েছেন। বহু নাম এক্ষেত্রে উচ্চারণ করা যায়। আমি মনে করি, সেদিক বিবেচনা করে ঢাকাপ্রকাশ-এর শক্তিই হচ্ছে সত্য অন্বেষণ এবং তার মূলপ্রাণই হচ্ছে একটি সুসম্পাদিত গণমাধ্যম। সুসম্পাদনা সাংবাদিকতার প্রাণ। সুসম্পাদনা যেহেতু সাংবাদিকতার প্রাণ, কাজেই সুসাংবাদিকতায় মুক্তি এ কথাটি যুক্ত করার যে গুরুত্ব ও তাৎপর্য সেটি আমরা উপলব্ধি করি।
পৃথিবীতে বহু ঘটনা ঘটে চলেছে। বিগত চব্বিশ ঘন্টায় যত ধরনের ঘটনা ঘটেছে, বহু ইতিবাচক ঘটনা আছে, বহু নেতিবাচক ঘটনা আছে, সবগুলোই কিন্তু পত্র পত্রিকায় প্রকাশযোগ্য সংবাদ নয়। যেগুলি প্রকাশযোগ্য সেগুলি সম্পাদনার মাধ্যমে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে সঠিক তথ্য সহকারে, পরিসংখ্যান সহকারে প্রকাশিত হয় অথবা প্রচারিত হয়। সেদিক থেকে আমি মনে করি , ঢাকাপ্রকাশ-এর যে একঝাক সুদক্ষ কর্মীবাহিনীর সমন্বয় ঘটেছে, সেখান থেকেই সুসম্পাদিত হয়ে যে চিত্রগুলো আমাদের কাছে আসে, সেগুলি আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শুধু প্রেরণা দেয় না, আমাদের আলোর পথ দেখায়।
একজন সাংবাদিক, একজন সম্পাদক, তিনি সবসময়ই চেষ্টা করেন, তার গণমাধ্যম সুসম্পাদিত অবস্থায় প্রকাশিত হোক। সেই বিবেচনায় ঢাকাপ্রকাশ অনেকদূর এদিকে গিয়েছে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় সফলতা। আমি ঢাকাপ্রকাশ-এর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এটি দেখেছি যে, আমাদের দেশের মানুষের যে নূন্যতম তথ্য চাহিদা আছে, সেই তথ্য চাহিদা পূরণে এই মাধ্যমটি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এর কারণ সম্পাদনার দায়িত্বে যারা আছেন, প্রকাশনার দায়িত্বে যারা আছেন তারা এক বছরের মধ্যে সেই চাহিদাগুলো সঠিকভাবে পালন করে চলেছেন। মানুষের চাহিদাগুলোর গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। পাঠককে ও দর্শককে সঠিক তথ্য জানাতে পারছে। তথ্যগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে পাঠকের কাছে পৌঁছানোই সুসাংবাদিকতার মূল কথা। আমি মনে করি, ঢাকাপ্রকাশ সেদিক থেকে সফলভাবে, সুস্থ ও সুন্দরভাবে তাদের সাংবাদিকতা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এক বছর সময় খুব বেশি নয়, কিন্তু এই এক বছরে যে সম্ভাবনা ঢাকাপ্রকাশ দেখিয়েছে, সেটি নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ঢাকাপ্রকাশ সফলতার সঙ্গে একইসঙ্গে আরও গঠনমূলক সংবাদ প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে, ঢাকাপ্রকাশ-এর কাছে আমাদের সেটিই প্রত্যাশা। আমি আশা করি, আগামী দিনগুলোতে ঢাকাপ্রকাশ আরও উজ্জ্বলতরভাবে পাঠকের চাহিদা মিটাবে এবং সামনের দিকে উত্তরোত্তর এগিয়ে যাবে। ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার আবারও অভিনন্দন ও শুভ কামনা রইল।
লেখক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়