বইমেলার অনুষ্ঠানমালা
ইতিহাস প্রতিফলিত হতে হবে চলচ্চিত্র ও নাটকে
বইমেলার তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নাটক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
আলোচকরা বলেন, চলচ্চিত্র ও নাটক দুটি শিল্পকলা মাধ্যম যার মাধ্যমে আমাদের মননশক্তির বিকাশ ঘটে। এর মধ্যে নাটক খুবই শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম যা খুব সহজে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। অন্যদিকে স্বাধীনতা পরবর্তী পাঁচ দশকে বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ নানামাত্রিক বিষয় নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির মুক্তির দাবিতে আমাদের যে সংগ্রাম করতে হয়েছে তার সঠিক ও সত্য ইতিহাস প্রতিফলিত হতে হবে চলচ্চিত্র ও নাটকের মতো শিল্পমাধ্যমগুলোতে।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাবুল বিশ্বাস এবং মোমিন রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অরুণা বিশ্বাস এবং সাজ্জাদ বকুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রামেন্দু মজুমদার।
বাংলাদেশের নাটক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বাবুল বিশ্বাস বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-জাত বাংলাদেশে মঞ্চনাটক সাংস্কৃতিক জগতে বিপ্লব সৃষ্টি করলেও সমাজ ও রাষ্ট্রে জেঁকে বসা অশুভ শক্তি নাটকের স্বাধীন বিকাশকে বাঁধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে বারবার। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নাট্যচর্চার কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে মোমিন রহমান বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বিষয় এবং নির্মাণশৈলীতে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে তবে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র সৃজনে আমাদের এখনও অনেক কিছু করার আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংস্কৃতির অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো আমাদের চলচ্চিত্রের যথাযথ বিকাশে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, নাটক ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ভিন্নভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে আনা যেতে পারে। নতুন প্রজন্মের তরুণ নির্মাতাগণ শিল্প-মানসম্পন্ন, জীবনমুখী চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন, যা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। আর নাটকের ক্ষেত্রে বলা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণ-ফসল বাংলাদেশের নাটক। স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশে প্রতিবাদী নাটকের যে ধারা তৈরি হয়েছিল তা স্বাধীনতা-পরবর্তী নাটকের ধারাকে সমৃদ্ধ করেছে।
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন আসাদ মান্নান এবং আমিনুর রহমান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি অসীম সাহা, আলতাফ হোসেন, শিহাব সরকার, রেজাউদ্দিন স্টালিন, অঞ্জনা সাহা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মো. রফিকুল ইসলাম, ঝর্ণা সরকার এবং ইকবাল খোরশেদ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’ এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমি-এর শিল্পীবৃন্দ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন প্রবীর পাল (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), পাপ্পু আখন্দ (অক্টোপ্যাড)।
শুক্রবারের অনুষ্ঠানসূচি
বিকেল ৩টা বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘আন্তর্জাতিক বলয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি’ উদযাপন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্বজিত সাহা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ইকবাল হাসান, তাজুল ইমাম এবং ইউসুফ রেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অসীম কুমার দে।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জাহীদ রেজা নূর এবং শহীদ ইকবাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন প্রশান্ত মৃধা এবং আমিনুর রহমান সুলতান। সভাপতিত্ব করবেন ভীষ্মদেব চৌধুরী।
ডিআরইউ’র স্টল উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী
অমর একুশে বইমেলায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্টল উদ্বোধন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ফিতা কেটে তিনি ৬৩৪ নম্বর স্টলের উদ্বোধন করেন।
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম।
ডিআরইউ’র স্টলে রিপোর্টারদের প্রকাশিত বই প্রদর্শন করা হবে।
এপি/