লবণাক্ত জমিতে বোরোর ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
উপকূলীয় বাগেরহাটের রামপালে তীব্র লবণাক্ততার মধ্যেও বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি ও ভালো ফলন ঘরে তুলছেন কৃষকরা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এ এলাকার কৃষিতে পরিবর্তন আনায় বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভালো ফলনও পেয়েছেন কৃষকরা।
রামপাল কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। তা বেড়ে ৪ হাজার ৭০১ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। তীব্র দাবদাহ, লবণাক্ততার প্রভাব ও মিষ্টি পানির অভাবে হাজার হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। কৃষকদের লবণসহিষ্ণু জাতের উন্নত জাতের বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করায় কৃষি খাত বেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এ বছর উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নে ৫৩৫ হেক্টর, উজলকুড় ইউনিয়নে ২ হাজার ৪১২ হেক্টর, বাইনতলা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬ হেক্টর, রামপাল সদর ইউনিয়নে ৪৮২ হেক্টর, রাজনগর ইউনিয়নে ১০৮ হেক্টর, হুড়কা ইউনিয়নে ২৮ হেক্টর, পেড়িখালী ইউনিয়নে ৪২ হেক্টর, ভোজপাতিয়া ইউনিয়নে ৯ হেক্টর, মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে ৬৭ হেক্টর ও বাঁশতলী ইউনিয়নে ১২ হেক্টর জমিসহ মোট ৭ হাজার ৭০১ হেক্টর জমি আবাদের আওতায় আনা হয়েছিল। এতে প্রায় ২০ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টান চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমি। চাল উৎপাদন হয়েছিল ১৮ হাজার ৪৩২ মেট্রিক টন। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমি। আর চাল উৎপাদন হয়েছিল ১৯ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন।
বড়দিয়া গ্রামের কৃষক মোন্তাজ মোল্লা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে এবার ফসল ফলাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এরপরেও ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেলে লাভবান হওয়া যাবে।
সিংগড়বুনিয়া গ্রামের কৃষক বাকী বিল্লাহ বলেন, পানি স্বল্পতার কারণে মাটিতে লবণ বেড়ে যায়। এজন্য কিছু ফসল নষ্ট হয়েছে। তা না হলে আরও ভালো ফলন পেতাম।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল বলেন, প্রতিনিয়ত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। মাটির লবণাক্ততার পাশাপাশি বাতাসেও লবণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনার মাধ্যমে বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ দিয়েছি। এবার ভালো ফলন হয়েছে। আশা করি কৃষিতে রামপালে আবারও বিপ্লব ঘটবে।
এসজি