স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে স্মার্ট কৃষির বিকল্প নেই: কৃষিমন্ত্রী
স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে স্মার্ট এগ্রিকালচারের বিকল্প নেই উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী স্মার্ট এগ্রিকালচারকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। কারণ অর্থনীতির অন্যতম খাত হলো কৃষি খাত। জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখছে। ৩৮ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে। কৃষি খাতে ভর্তুকি জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ।
ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশের প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থাকে স্মার্ট কৃষিতে রূপান্তর: ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনার বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের এক হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি ডমিনিকো স্কেলপেলি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এগ্রিকালচারাল ইকোনোমিক্স’র ইমিরেটাস অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমএ সাত্তার মন্ডল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৭টিই কৃষির সঙ্গে সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত। তাই কৃষি খাতের সার্বিক উন্নয়নে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধুনিক ও লাভজনক কৃষি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সংরক্ষণের জন্য বহুমুখী হিমাগার নির্মাণের মনোযোগী হতে হবে। একই সাথে সড়ক, জল ও রেলপথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট এগ্রিকালচারের কোন বিকল্প নেই।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমাদের কে স্মার্ট এগ্রিকালচারের দিকে অগ্রসর হতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ জরুরি।
সেমিনারে ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, আমাদের কৃষি ও এগ্রো-প্রসেসিং খাতের আকার প্রায় ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) মার্কিন ডলার এবং প্রায় ১৫৪টি দেশে ৭০০ কৃষি পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু জিডিপিতে আমাদের এগ্রো ও ফুড প্রসেসিং খাতের অবদান মাত্র ০.২২ শতাংশ।
আমাদের কৃষি পণ্যের ভ্যালু এডিশন, পণ্য বহুমুখীকরণ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার, দক্ষতার স্বল্পতা এবং খাদ্যের মান নিশ্চিতকরণ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সামঞ্জ্যতা বজায় রাখতে ন্যানো টেকনোলোজি, নতুন নতুন কৃষি মেশিনারীজ ব্যবহার করতে হবে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশ ক্রমশ বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। স্মার্ট এগ্রিকালচারের মূল লক্ষ্য হলো পণ্যের মান উন্নয়ন ও পণ্যের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো। বাংলাদেশের তরুন জনগোষ্ঠীকে স্মার্ট অগ্রিকালচারের সঙ্গে বেশি হারে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সেমিনারে প্রফেসর ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল বলেন, জাতীয় কৃষি নীতিমালা ২০১৮ তে ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২.৮ বিলিয়িন মার্কিন ডলারের কৃষি মেশিনারিজ খাতের বাজার রয়েছে। ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির সহজীকরণ, সহায়ক কর ও শুল্ক কাঠামো, দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার এবং অটোমেশন স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থার জন্য খুবই জরুরি। এ ছাড়া, সারা দেশে কোল্ডস্টোরেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন এটুআই-এর কনসালটেন্ট আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম, এসিআই এগ্রি-বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. এফ এইচ আনসারি, প্রাণ-আরএফএফ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।
জেডএ/এমএমএ/