বৃষ্টিতে বরগুনার তরমুজ চাষিদের চোখে-মুখে হতাশা
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ, ঝড়ো হাওয়া, শিলা বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছে বরগুনার তরমুজ চাষিরা। হঠাৎ এই ভারি বর্ষণে ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে চাষিরা।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে তেমন ক্ষতি না হলেও এরপর আরও বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দেড়গুন জমিতে এই বছর বরগুনা জেলায় তরমুজ চাষ হয়েছে এবং এর সঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবার সম্পৃক্ত রয়েছে।
কৃষকরা জানান, তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় এই বছর বরগুনার কৃষকরা বেশ আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন যখন দ্বারপ্রান্তে তখন প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ার পথে।
জেলার বিভিন্ন তরমুজ ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণসহ শিলা বৃষ্টিতে ক্ষেতে অতিরিক্ত পানি জমেছে। তাই কৃষকরা পানি নিষ্কাশনে ক্ষেতে বেড কেটেছেন। তবুও হতাশার ছাঁপ কৃষকদের চোখে-মুখে।
বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া এলাকার কৃষক মো. মাসুদ বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ এনে ব্যয়বহুল এই ফসল ফলানোর স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে দেনাগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছাড়তে হবে।
আমতলীর চুনাখালী গ্রামের কৃষক আনসার মাদবর বলেন, আমি ১৭ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তাই বেশ দুশ্চিন্তায় আছি।
একই উপজেলার সোনাখালী গ্রামের কৃষক বারেক গাজী বলেন, ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশন করেও শেষ করতে পারছি না। বৃষ্টি আরও হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে। চাষিদের পথে বসতে হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপপরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, এ বছর বরগুনা জেলায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৩২৬ হেক্টর বেশি।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিনে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে তেমন একটা ক্ষতি না হলেও সামনে আরও বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে কৃষকরা। তাই জমে থাকা পানি নিস্কাশন এবং পঁচন রোধের ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ