করলা-ধুন্দল চাষে শফি জমদারের দিন বদল
ভোলার ইলিশা রামদাশপুর কান্দির বাসিন্দা শফি জমাদার, এক সময় জিবীকা নির্বাহ করতেন দীতে মাছ শিকার ও সামান্য কৃষি কাজ করে। বিগত দশ বছর ধরে তিনি মাছ শিকার বাদ দিয়ে কৃষি কাজ করেন। করলা, রেখা আর ধুন্দল চাষ করে তিনি প্রতিবছর লাভবান হলেও লোকসান গুনেছেন গত বছর। শফি জমাদারের তরকারি চাষের নিজস্ব জমি নেই বলে তিনি অন্যের জমি লগ্নি রেখে করেন এসব তরকারি চাষ।
অন্যের সঙ্গে নদীতে মাছ শিকার করে কোনোরকমে সংসার চালাতেন শফি জমাদার। কিন্তু তরকারি চাষ করে আজ দিন বদলে গেছে তার। আজ তিনি তরকারি চাষ করে বেশ ভালো আছেন।
ভোলার সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের রামদাশপুর কান্দি গ্রামে শফি জমাদারের বাড়ি। বর্ষামৌসুমে মেঘনার কড়াল স্রোতের পানি রক্ষা কবচ বেরি বাঁধের উপর দিয়ে যেতেই রাস্তার উপর দেখা মিলে শফি জমাদারের রেখা ও করলার স্তপ। এ যেন পুরো বেরি ভাঁধের উপর এক সবুজের সমারোহ। বেরি বাধের পাশেই মেঘনার কুলে ঝাঁকায় চাষ করেছেন তিনি রেখা করলা আর ধুন্দল। এখানে ৩০০ শতাংশ অর্থাৎ ৩ একর জমিতে তিনি এই তিন প্রকারের চাষ করেন।
জাল দিয়ে তৈরি করা তার মাচাং এর ভিতরে ঢুকতেই নজর কাড়ে 'রেখা' চারিদেকে দুলছে ছোট বড় রেখা। কিছু কিছু রেখার নিচের অংশে ঝুলানো রয়েছে মাটি ভর্তি ছোট পলিথিন। পলিব্যাগে মাটি ভর্তি কেন জানতে চাইলে একজন বলেন রেখা সোজা করার জন্য মাটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ক্ষেতে কাজ করছে কজন শ্রমিকরাও। কেউ খেত থেকে রেখা ও করলা তুলছেন, কেউ ঝাপিতে ভরে নিচ্ছেন, কেউ ঢাকার বাজারে পৌছানের জন্য বস্তায় পেকিং করছেন, আবার কেউ করছেন খেতের পরিচর্যা করতে ব্যস্ত।
নাম না জানা একজনকে জানতে চাইলাম এই রেখা ও করলার চাষি কে? জানতেই তিনি দেখিয়ে দেন, ওই যে শফি জমাদার করলা সাজানো গুছানোর কাজ করছেন। এগোতেই দেখা যায়, নিজের করলার বাজার জাতকরনের জন্য গুছানোর কাজ করছেন শফি জমাদার।
তিনি বলেন, তার রেখা ও করলা আর ধুন্দল চাষ করতে এবছর দুই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে ইতিমধ্যে তার দুই লক্ষ টাকার বেশি বিক্রি করা হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরো দুই লক্ষ টাকার রেখা ও করলা বিক্রি করার আশা করেন তিনি।
শফি জমাদার বলেন, আমি এবছরের প্রথমে করলার দর কেজি প্রতি ৯৫ টাকা ও রেখা ৬০ টাকা পেয়েছি। এখন দাম অনেক কমেছে গতকাল করলা ঢাকার বাজার প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও রেখা ২৮ টাকা ছিলো।
জেলা কৃষি কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবির বলেন, ভোলাতে প্রচুর পরিমানে রেখা ও করলা শষা চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর রেখা, করলা ও ধুন্দলের ফলন ভালো হয়েছে এবং বাজার দাম ভালো পেয়ে কৃষক খুশি।
এএজেড