রোনালদোকেই যত ভয় সুইজারল্যান্ডের
বিশ্বকাপেও চেনা রূপে নেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সম্বল বলতে পেনাল্টি থেকে পাওয়া একটি গোল! টুর্নামেন্টে ছন্দহীন ফুটবলের বিপরীতে জন্ম দিয়েছেন বিতর্ক। তাতে সমালোচনার শীর্ষে সিআর সেভেন। সবমিলে বিশ্বমঞ্চে কঠিন সময় পার করছেন পর্তুগিজ যুবরাজ। তবুও রোনালদোকেই যত ভয় সুইজারল্যান্ডের।
আজ শেষ ষোলোতে পর্তুগালের মুখোমুখি হবে সুইসরা। লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মাঠে গড়াবে দুই দলের লড়াই। তার আগে, সোমবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে সুইজারল্যান্ড কোচ মুরাত ইয়াকিন বলেন, ‘দল হিসেবে আমরা শক্তিশালী এবং এটাও জানি যে রোনালদো ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে।’
ইয়াকিন অল্পতে থামলেও নিজেদের ভয়ের সবটাই উগড়ে দিয়েছেন জেরদান শাকিরি। সুইস মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘আপনি ক্রিশ্চিয়ানোকে পড়তে পারেন না, মেসির সঙ্গে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন তিনি। এই খেলোয়াড় যেকোনো সেকেন্ডে, যেকোনো মিনিটে গোল করতে পারে। তার অভিজ্ঞতা আছে এবং সবাই জানে তিনি পর্তুগাল ও তার দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
সুইস কোচ আর মিডফিল্ডারের বক্তব্যে স্পষ্ট যে তারা কতটা ভীত সিআর-সেভেনকে নিয়ে। অথচ কাতারে এখন পর্যন্ত ভীতি ছড়ানোর মতো তেমন কিছুই করতে পারেননি রোনালদো। হ্যাঁ, চলতি বিশ্বকাপে দলের প্রথম গোলটি ছিল তার। এখন পর্যন্ত ওটাই শেষ। গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচে গোল তো দূরের কথা কোনো অ্যাসিস্টও নেই ক্লাবহীন এই ফুটবলারের।
উল্টো সবশেষ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে দলের হারের ম্যাচে মেজাজ হারান রোনালদো। কোরিয়া ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদোকে মাঠ থেকে তুলে নেন সান্তোস। সেই মুহূর্তে প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারও ইশারায় তাকে মাঠ ছাড়তে বলেন। তাতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন রোনালদো। ফুঁসতে-ফুঁসতে গিয়ে বেঞ্চে বসেন। ডাগআউটে ছুড়ে মারেন হাতে থাকা পানির বোতল।
সোমবার সান্তোসের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গ ওঠলে পর্তুগাল কোচ বলেন, ‘আমি ওটা মোটেও পছন্দ করিনি। আমি সত্যিই অমন কিছু পছন্দ করি না। তবে এটার সমাধান হয়েছে। ইস্যুটিও শেষ।’
রোনালদো ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সান্তোসের পাশে বসে থাকা রুবেন দিয়াসকে। পর্তুগাল ডিফেন্ডার বিষয়টি এড়িয়ে ম্যাচের প্রসঙ্গে ফেরেন।
দিয়াস বলেন, ‘প্রশ্নটি ক্রিশ্চিয়ানোকে জিজ্ঞাসা করা উচিত, আমাকে নয়। আমরা নিজেদেরকে বিভক্ত করার পরিবর্তে ঐক্যবদ্ধ হই যা আমাদের আরও শক্তি দেয়। আমরা চ্যালেঞ্জিং একটি ম্যাচ আশা করছি। সুইজারল্যান্ড খেলায় কী নিয়ে আসে সে সম্পর্কে আমরা পুরোপুরি সচেতন। তবে সর্বোপরি আমরা আমাদের সম্পর্কে এবং কী করতে হবে তা ভাবছি।’
ফুটবলে এখন পর্যন্ত ২৫ বার দেখা হয়েছে দুই দলের। পর্তুগাল জিতেছে ৯টিতে, সুইজারল্যান্ড ১১টি এবং ড্র হয়েছে অন্য ৫টি ম্যাচ। বিশ্বকাপে আগের দুই সাক্ষাতে সমানে সমান তারা। জিতেছে একবার করে। তাই রোনালদোকে ভয় পেলেও বিশ্বকাপ মঞ্চে জয়ের সংখ্যায় এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী ইয়াকিন।
সুইস কোচ বলেছেন, ‘একক কাউকে নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত এবং উদ্দীপ্ত।’
আরএ/