দলে ফিরতে আরও ভালো করতে হবে নাসিরকে!
বিপিএলে ঢাকা মানেই যেন একটি শক্তিশালী দল। তা যে নামেই দল গঠন করুক না কেন। তারা শিরোপার জন্য গড়ে দল। প্রথম ছয় আসরের মাঝে পাঁচবারই তারা খেলেছে ফাইনালে। তিনবার জিতেছে শিরোপা। দুইবার রানার্সআপ। এরপর থেকে তারা আর শক্তিশালী দল গড়তে পারেনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এবার ঢাকা খেলতে নেমেছিল ঢাকা ডমিনেটর্স নামে। একটি করে ম্যাচ খেলে আর হারতে থাকে। কিন্তু দলের কাপ্তান নাসির হোসেন ছিলেন সেখানে উজ্জ্বল। ব্যাট হাতে ছড়াতে থাকেন দ্যুতি। সঙ্গে বল হাতেও।
বিপিএল যত এগোতে থাকে পয়েন্ট টেবিলে ঢাকা ডমিনেটর্স তত নামতে থাকে, ঔজ্জ্বল্য বাড়তে থাকে নাসির হোসেনের। লিগ পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকে থাকে ঢাকা। প্লে-অফে উঠতে না পেরে বিদায় নেয় তারা। কিন্তু ব্যাটে-বলে উপরের দিকে থাকে নাসির হোসেনের নাম। ব্যাট হাতে ১২ ম্যাচের ১২ ইনিংসে ৩৬৬ রান করে তার অবস্থান ছিল ছয়ে। হাফ সেঞ্চুরি ছিল ২টি। সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত ৬৬। বল হাতে ১৬ উইকেট নিয়ে এখানে নাসির ছিলেন তিনে। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির দুই জনেরই উইকেট ছিল ১৭টি। একজন ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তানভীর ইসলাম, অপরজন রংপুর রাইডার্সের হাসান মাহমুদ।
ব্যাটে-বলে এমন অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে নাসিরকে অনেকেই আসরের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় ভাবতে থাকেন। একইসঙ্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও তার নাম জোরেশোরে উচ্চারিত হতে থাকে। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই আঁধার নেমে আসে নাসিরের। হতে পারেননি আসরের সেরা খেলোয়াড়। ৫১৬ রান করে এটি জিতে নেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের নাজমুল হোসেন শান্ত।
বিপিএলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার হাতছাড়া হওয়ার পর নাসিরের বাকি ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পাওয়া। বিপিএলের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার সম্ভাবনার চেয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বেশি। কিন্তু এখানেও নাসিরের জন্য আসেনি কোনো সুখবর।
বিপিএলে ভালো করার পুরস্কার হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাকা হয় ৫ জনকে। নতুন মুখ ছিলেন ৩ জন- তৌহিদ হৃদয়, তানভীর ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজা। ফিরিয়ে আনা হয় শামীম পাটোয়ারী ও রনি তালুকদারকে। কিন্তু নাসিরের আর পুরস্কার মেলেনি।
বিপিএলের পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে নাসিরের সম্ভাবনাই ছিল বেশি। বয়সও ছিল। কারণ আবার ফিরে আসা রনি তালুকদারের বয়স তার থেকে বেশি। নাসিরকে দলে না নেওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু প্লেয়ারকে নেওয়া হয়েছে প্লেস বাই প্লেস। সেটা মিডল অর্ডার বলেন, লেট অর্ডার বলেন। অনেক টেকনিক্যাল বিষয় চিন্তা-ভাবনা করেই কিন্তু এই দল দেওয়া হয়েছে। আনফরচুনেটলি ও (নাসির) সুযোগ পায়নি। সামনে অনেক খেলা আছে। পারফর্ম করলে কেউ চোখের আড়াল হবে না।’
এমন নজরকাড়া অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখানোর পরও যখন নাসিরের নৈপুণ্য নির্বাচকদের নজরে আসেনি, তখন প্রশ্ন থেকেই যায় আর কত ভালো করলে নাসিরের দুয়ার খুলবে জাতীয় দলে।
এসজি