শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বানানরীতি নিয়ে বিশিষ্টজনদের মুখোমুখি ঢাকাপ্রকাশ

প্রতি বছর যেন অকারণে আমরা বানান না বদলাই

বাংলা বানান নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। তবে সম্প্রতি বানান নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, স্কুলে যে বানান লিখলে শিক্ষক ভুল বলে কেটে দিতেন, এখন সেসব বানানকে শুদ্ধ বলে অভিধানে জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আবার বাংলা একাডেমির বিভিন্ন অভিধানে একই শব্দের ভিন্ন বানান দেখা গেছে। এর ফলে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগও রয়েছে। আর এ নিয়ে চার বিশেষজ্ঞের মুখোমুখি হয় ঢাকাপ্রকাশ।

সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক ও সভাপতি, বাংলা একাডেমি

ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষার মাস। আমাদের ভাষার একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। দেশের তরুণরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছে। বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির নেই। ভাষার জন্য এমন ত্যাগ আমরা আগে কখনো দেখিনি। ইউনেস্কো আমাদের তরুণদের সেই অবদানকে সম্মান জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা দান করেছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। বিশ্বব্যাপী বাংলা একটি গৌরবোজ্জ্বল এবং সুপরিচিত ভাষা হিসেবে আজ বিবেচিত। কাজেই সেই ভাষার সুষ্ঠু চর্চায় আমাদের যত্নশীল হতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ভাষাচর্চায় শুদ্ধ বানানরীতির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। শুদ্ধ বানান একটি ভাষাকে অনেক বেশি শ্রুতিমধুর এবং মাধুর্যমণ্ডিত করে থাকে। বাংলা একাডেমিও সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বানানরীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এর উদ্দেশ্য মূলত সহজ-সাবলীল একটি অভিধান তৈরি করা এবং সর্বত্র সেটির বাস্তবায়ন ঘটানো। প্রতিটি ক্ষেত্রে একই অভিধান অনুসরণ করা, যাতে করে বাংলাভাষীদের মধ্যে একটি মতৈক্য তৈরি হয়। মতভেদ-বিভেদ এড়ানো সম্ভব হয়।

আমাদের উচিত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পথ চলা। অনেক আগে যেমন সংস্কৃতি ছিল, সাধু ভাষা ছিল, গোত্র ভেদেও ভাষার প্রচলন ভিন্ন রকম ছিল। এখন সেরকমটি আর নেই। বৈশ্বিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও পরিবর্তনে বিশ্বাসী। তবে হ্যাঁ,এক্ষেত্রে যে কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা যেন নিজেদের সংস্কৃতির কথা অর্থাৎ নিজস্বতাটুকু ভুলে না যাই।

অনেক ভাষাবিদ এবং গবেষক যারা আছেন, তারা অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে বাংলা বানানের নানাবিধ পরিবর্ধন পরিমার্জন করছেন। আমি এটিকে সাধুবাদ জানাই। এই যে তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না এবং এটি অবশ্যই একটি সুফল বয়ে নিয়ে আসবে বলেই আমি সর্বোতভাবে বিশ্বাস করি।

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট

বাংলা বানানের একটি অভিধান বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত আছে। সেটি অনুসরণ করলেই চলে। বানান সহজিকরণের চেষ্টা আমি করেছিলাম, কিন্তু কাজ হয়নি। পণ্ডিতেরা সহযোগিতা করেননি। এখন যেমন দীর্ঘ-ঈকার কমে গেছে, হ্রস্ব-ইকার বেশি হয়েছে, যে সমস্ত শব্দের শেষে y আছে, সেগুলোতে হ্রস্ব-ইকার দেওয়া ঠিক নয়।  একাডেমি দীর্ঘ-ঈ কার স্থলে হ্রস্ব-ই কার হয়েছে,তবে ইংরেজিতে লিখতে হলে, y লিখতে হয়। এখন y কি i এর সমান হতে পারে? এজন্য আমার মনে হয়, বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আরও ভালোভাবে আলোচনা বিবেচনা হওয়া দরকার।

বানানরীতি মানার ক্ষেত্রে শৈথিল্য আমাদের আছে। যে যার খুশিমতো লিখে। ইংরেজি শব্দের বাংলা উচ্চারণ যেমন–মেট্রোপলিটন, এর বানান metropolitan; কিন্তু ইংরেজিতে বানান তো ton নয়। gate এর বাংলা বানান গেইট কেন হবে? Face এর বানান, ফেইস। বানান করতে হয় হ্রস্ব-ই দিয়ে। বলা হয় এক, লেখা হয় আরেকভাবে। অনেক সমস্যা আছে বানানের ক্ষেত্রে।

তবে আমি মনে করি, বানান ভাবার্থ প্রকাশের সঙ্গে সহজ করে লেখা উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে যেন সেটি করতে গিয়ে বেশি হ্রস্ব না হয়ে যায়। যেমন–‘শহীদ’ শব্দের বানান ‘শহিদ’ হয়ে গিয়েছে, না হলেও ক্ষতি ছিল না। ‘লক্ষ্য’ হয়েছে ‘লক্ষ’। অযথা সরকারি অর্থ অপচয় না করে বছর বছর রীতি নীতি পরিবর্তন না করে আমি মনে করি গঠনমুলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে একটি সুষ্ঠু সহজ বানান নীতি অনুসরণ করা উচিত যেটি জ্ঞান বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ

সরকারিভাবে আমাদের কোনো বানানরীতি নেই। বাংলা একাডেমি একটি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা; যেমন–প্রথম আলোর একটি বানানরীতি আছে। আনন্দবাজার পত্রিকার একটি বানানরীতি আছে। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেরও একটি বানানরীতি থাকে। সেগুলো হচ্ছে তাদের কাজের সহায়তার জন্য। তারা যে প্রকাশনাগুলো করেন, তা একইরকম মানসম্পন্ন হওয়ার জন্য। সেখানে বানানে যেন কোনোরকম বিচ্যুতি না ঘটে। একই বানান যদি বিভিন্নভাবে লেখা হয়, তাহলে কিছু অসঙ্গতি তৈরি হয়। সে কারণে যারা একটু বড় প্রতিষ্ঠান, যেমন–বাংলা একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, তারাও নিজেদের সুবিধার জন্য একটি বানান রীতি তৈরি করে। এই রীতিটা সর্বত্র প্রযোজ্য নয়।

সবক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়, সেরকম কর্তৃত্ব অথবা আইনি অবস্থান সরকারের আওতাধীন থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যখন দায়িত্ব নেয়, তখন প্রতিষ্ঠানের কাজে তার প্রভাব পড়তে পারে। এখন গবেষণার যে বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, গবেষণা সংস্থাগুলো দুই-তিন রকমের গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে। আমরা সাহিত্যে যারা গবেষণা করি, তাদের এক ধরনের গবেষণা পদ্ধতি, বিজ্ঞানে যারা গবেষণা করেন, তাদের এক ধরণের পদ্ধতি। সেখানেও আবার পার্থক্য দেখা যায়। এখানে ভাষা হচ্ছে প্রতিদিনের ব্যবহারের বিষয়। একই দেশের ভেতর বহুরকম মানুষ ভাষা ব্যবহার করছে এবং ভাষা ব্যবহার করছে আমাদের মিডিয়া। টেলিভিশনের ভাষা একরকম। রেডিওর ভাষা একরকম। সেজন্য ভাষার ভেতরে বানানগত পার্থক্য অথবা তারতম্য থাকবেই। আমাদের উচিত হবে একটি মোটামুটি অবস্থানে নিয়ে আসা, যাতে সমস্যা না হয়।

একই বানান আগে যেটি ছিল ধ্বনি কেন্দ্রিক বানানব্যবস্থা, যেমন–‘তীব্র’ শব্দটিতে ‘ত’-এর উপর জোর দেওয়া বুঝাতে দীর্ঘ ইকার ব্যবহার করা হয়। সে রকম কিছু কিছু বানান ছিল যেখানে চাপটি পড়ছে দীর্ঘ হয়ে,সেক্ষেত্রে দীর্ঘ ইকার। আগে চীন বানান আমরা দীর্ঘ-ঈকার দিয়ে লিখতাম, এখন লিখছি হ্রস্ব-ইকার দিয়ে। আমরা এখন ‘চিন’ বলছি, ‘চীন’ বলছি না। ‘আলী’ লিখতে–এটি যদি আরবিতে লেখা হয় তাহলে, আইন লাম দা, ফলে আলী হওয়ার কথা; কিন্তু আমরা হ্রস্ব-ইকার দিয়ে লিখছি। একাডেমি যে বানান রীতিটা তৈরি করেছিল, এটি নিশ্চয়ই গ্রহণযোগ্য। কারণ এটির পেছনে কিছু না কিছু গবেষণা আছে। আমি মনে করি, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এতটা করতে পারেনি।

বানানের একটি বেখাপ্পা বিষয় হলো–বাংলা ভাষায় লেখার ব্যাপারে এবং বলার ব্যাপারে আমরা যত না যত্নশীল, ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রে তারচেয়ে অনেক বেশি যত্নশীল। আমার আরও একটি আক্ষেপ হলো–আজ আমাকে যে প্রশ্নটি করা হচ্ছে, সেটি ফেব্রুয়ারি মাস বলেই করা হলো। এপ্রিল মাস হলে কেউ বলতো না। এতে প্রমাণিত হয়, আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে গা ঝাড়া দিয়ে উঠি, তারপর এভাবে মাসটা পার হয়ে পরবর্তী মাসে চলে যায়। আমি মিডিয়াকে দোষ দেই না। আমি মনে করি, একটি স্ট্যান্ডার্ড বা প্রমিতকরণ এটি আমাদের প্রয়োজন। আমাদের লেখার স্বার্থে, আমাদের পড়ার স্বার্থে, আমাদের ভাষাকে সহজে ব্যবহারের স্বার্থে এটি আমাদের জন্য প্রয়োজন। সেজন্য ভাষার ব্যাকরণের যে নানারকম অসঙ্গতি আমরা লক্ষ্য করছি, সেখান থেকে আমাদের বেরুতে হবে। অকারণে কঠিন না করে বানানটি যেন একটু সহজ হয়, এটিও আমাদের দেখার বিষয়। কিন্তু একেবারে নিজেদের মনগড়া রীতি প্রয়োগ করাও আমাদের জন্য ভয়াবহ। সেজন্য গবেষণা প্রয়োজন। গবেষক, ভাষা তত্ত্ববিদরা ভাষাবিবর্তন পাঠ করেছেন যারা তারা পাঠ করবেন। তারপর যখন বানান রীতিতে দখল তৈরি হবে, তখন আমি মনে করি সেটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুসরণ করা উচিত। পত্র-পত্রিকাগুলোরও তা অনুসরণ করা উচিত।

আমি এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ সমর্থন করব না। কারণ শিল্প-সংস্কৃতির বিষয়গুলোতে আমি সরকারি নিয়ম মেনে চলার বিরুদ্ধে। আমি এটিকে আমাদের বিবেকের উপর ছেড়ে দিই। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ছেড়ে দিই। আমরা যদি বাংলাকে ভালবাসি তাহলে বাংলা বানানও আমরা সুন্দরভাবে লিখব এবং শিখব এবং মনে রাখব–যেন বানানের বিশৃঙ্খলা আমরা দূর করতে পারি। এটি আমাদের কাজ। সরকারের কাজ নয়। আমাদেরও দায় আছে। আমরা সব সরকারের উপর চাপিয়ে দেই, প্রতিষ্ঠানের উপর চাপিয়ে দেই–আমি তার বিপক্ষে।

বাংলা একাডেমি যে কাজটি করেছে, সেটি খুব ভালো একটি কাজ। তারা একটি গবেষণালব্ধ ফলের উপর নির্ভর করে কাজটি করেছিল। সেটি যথেষ্ট আধুনিক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তারা কাজটি করেছিল। ভাষার ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে। যখন এই অভিধানটি করা হয়েছিল, তখন অনেক কিছুই গোচরীভূত ছিল না। এখন ইন্টারনেটের ফলে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করছি। সেই নতুন জ্ঞানের মাধ্যমে দুই-তিন বছর পর আমরা যেটুকু পরিবর্তন দরকার, সেটি করব। প্রতি বছর যেন অকারণে আমরা বানান না বদলাই এবং সর্বসম্মতভাবে যদি আমরা বানান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি, সেটি ভালো দিক বলে আমি মনে করি।

মুহম্মদ নূরুল হুদা, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি

বাংলা একাডেমি তার কাজ করে যাচ্ছে। বহু ভাষাবিদ এবং গবেষকগণ বছরের পর বছর ধরে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত আজকের আধুনিক বাংলা অভিধান। অনেকেই এর পক্ষে বিপক্ষে আগেও কথা বলেছেন, এখনো বলে যাচ্ছেন। আমি এত কথায় না গিয়ে শুধু এটুকুই বলবো আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং সেটি ভাষার সহজ ও সুষ্ঠু প্রকাশ বিকাশ ও পরিমার্জনের জন্যই। এটাই মূল কথা।

কে মানছে কে মানছে না অথবা মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে কি না, এগুলো মতভেদ বাড়ায়। এই পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় না গিয়ে বরং আমরা যদি এভাবে মনে করি যে,বানানরীতি সহজিকরণে বাংলা একাডেমি যে কাজটি করছে, সেটি সব বাংলাভাষীর মঙ্গলার্থেই করছে এবং বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান যদি সর্বোতভাবে অনুসরণ করি,সেটিই সকলের জন্য সমুচিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এসএ/

Header Ad
Header Ad

মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "একটি বৈষম্যহীন, উদ্ভাবনী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ এবং উদ্ভাবনের পরিবেশ তৈরি করেই আমরা এগিয়ে যেতে পারি।"

তিনি জানান, 'আইপি অ্যান্ড মিউজিক: ফিল দ্য বিট অব আইপি'—এ বছরের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যা সৃজনশীলতার সঙ্গে প্রযুক্তির যোগসূত্র তুলে ধরে। সংগীতকে তিনি "হৃদয়ের ভাষা" আখ্যা দিয়ে বলেন, "এটি কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতাকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার শক্তিশালী হাতিয়ার।"

ড. ইউনূস আরও বলেন, "বাংলাদেশের সংগীতশিল্পীরা লোকগান থেকে আধুনিক ধারায় নানাভাবে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করে বিশ্বকে মুগ্ধ করছেন। এ শিল্পে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনের মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি অর্থনৈতিক গতিশীলতা সৃষ্টি সম্ভব।"

তিনি মনে করেন, শিল্প ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অগ্রগতি যেমন সম্ভব, তেমনি প্রয়োজন মেধাসম্পদ আইন ও নীতির কার্যকর প্রয়োগ, যাতে শিল্পীদের সৃজনশীলতা সুরক্ষিত থাকে এবং নতুন প্রজন্ম উদ্ভাবনে উৎসাহিত হয়।

বাণীর শেষাংশে তিনি বলেন, "ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই সরকার উদ্ভাবনী শক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

উল্লেখ্য, প্রতি বছর ২৬ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস’ উদযাপন করা হয়, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং মেধাসম্পদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি।

Header Ad
Header Ad

বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার

বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

যশোরের বেনাপোলে প্রতারণার জালে ফেলে এক নারীর কাছ থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ৬ নারী ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকাল ৫ টার দিকে বেনাপোল পৌরসভার দিঘিরপাড় থেকে  স্থানীয় জনতা ধরে ৬ নারীকে পুলিশে সোপর্দ করে।

গ্রেফতারকৃত নারীরা হলেন- ব্রাক্ষনবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের শিপনের স্ত্রী সাহানা আক্তার, ফিরোজের মেয়ে  ইভা আক্তার, ইয়াসিনের স্ত্রী সুলতানা খাতুন, পলাশের স্ত্রী মোর্শেদা, মালিলের স্ত্রী রাবেয়া ও জুয়েলের স্ত্রী নারগিস বেগম।

বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের উপপরিদর্শক(এসআই) পবিত্র বিশ্বাস জানান, বেনাপোল পৌরসভার দিঘিরপাড় গ্রামের এক গৃহবধূ বেনাপোল বাজার থেকে ইজিবাইক চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় পথিমধ্যে বোরকা পরা ৬ নারী ঐ ইজিবাইকে উঠে তাকে জিম্মি করে ফেলে। এক পর্যায়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে ভুক্তভোগীর চিৎকার দেয়। এসময় পথচারীরা এগিয়ে এসে ছিনতাইকারীদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।  এরা পেশাদার প্রতারক ও ছিনতাইকারী জানায় পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত

"সংস্কার না নির্বাচন—এই খেলা বাদ দিয়ে আগে বিচার নিশ্চিত করুন," বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন—জুলাই, পিলখানা ও শাপলা চত্বরের ঘটনাগুলো গণহত্যা, যার বিচার না হলে দেশে কোনো ধরনের নির্বাচন বা সংস্কার অর্থহীন হয়ে পড়ে।

সারজিস আলম বলেন, "বর্তমান সরকারের বৈধতা শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে অন্য কোনো বিষয় প্রাসঙ্গিক নয়।" তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি ২০২৪ সালের আগস্টে পূরণ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি।

আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সারজিস। তিনি বলেন, “আমরা যখন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি করি, তারা পশ্চিমাদের অবস্থানের কথা বলে। কিন্তু শাপলা, পিলখানা বা জুলাইয়ের ঘটনায় যখন রক্ত ঝরল, তখন পশ্চিমারা কোথায় ছিল?”

তিনি আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, “এই প্রজন্মের আবেগ নিয়ে খেলবেন না। এই প্রজন্ম ক্ষমতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কাউকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে পিছপা হবে না।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন—আপ বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি শেখ মাহবুবুর রহমান ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো-

১. আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশ, আদালতের রায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

২. শাপলা চত্বরের ঘটনার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে;

৩. পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে

৪. দেশের সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন
সৌদিতে মক্কার কাছেই জেনিফার লোপেজের নাচ-গান, ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে, যা বলল জাতিসংঘ
হবিগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
ময়ূখ রঞ্জনকে ‘গাধা’ বললেন অভিনেতা ঋত্বিক!
পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ৫ দিনের রিমান্ডে
ভারতীয় সেনার গুলিতে লস্করের শীর্ষ কমান্ডার আলতাফ লালি নিহত
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ
বাইক দুর্ঘটনায় প্রেমিক-প্রেমিকা নিহত