শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

বাজারের উপর ছেড়ে দিলে কখনো অভিন্ন শিক্ষা হবে না

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির প্রথম পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, আমরা এখনই প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরগুলোতে একমুখী শিক্ষা করতে পারি কিনা। একমুখী শিক্ষার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

আনু মুহাম্মদ: প্রথমেই একমুখী শিক্ষার অর্থটা খেয়াল করতে হবে। সবার কাছে তো এর অর্থ একরকম নয়। আমরা যতদূর দেখছি, বাংলাদেশে সর্বশেষ শিক্ষানীতি হয়েছিল ২০১০ সালে। সেখানেই প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছিল যে, একমুখী শিক্ষা তারা করবে। বাস্তবে তারা যেটাকে একমুখী শিক্ষা দাবি করছে, তার সঙ্গে একমুখী শিক্ষার কোনো সম্পর্ক নাই। আমি যেভাবে বুঝি, একমুখী শিক্ষার মানে হলো অভিন্ন শিক্ষা। একটা দেশের নাগরিক হিসেবে শিশুকাল থেকে শুরু করে তার যে শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া, তাতে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। সবাই যে একরকম করবে, এক রকম ফলাফল থাকবে বা সবার একই দিকে মনোযোগ থাকবে তা নাও হতে পারে; কিন্তু তার জন্য অভিন্ন একটা পদ্ধতি রাখতে হবে।

শিশুরা একেকজন একেকমানের পড়াশোনা করবে, একক ধারায় পড়াশোনা করবে–এটা সমাজে যে বৈষম্যটা আছে, তা আরও বাড়ানো বা একটা বিশাল অংশকে পঙ্গু করে ফেলার মতো। যেমন–আমরা যদি চিন্তা করি যে, বর্তমান সময়ে কী ধরনের শিক্ষা চলছে–একটা শিক্ষা আমরা দেখি সরকারি প্রাথমিক স্কুল, সরকারি মাধ্যমিক স্কুল পাশাপাশি আমরা দেখছি কিন্ডারগার্টেন–এর মধ্যে খুবই উচ্চ ব্যয়বহুল আছে, আবার সাধারণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কিন্তু ব্যয়বহুল নয় এমনও আছে। মানের দিক থেকে আকাশ-পাতাল তফাৎ। আমরা দেখছি মাদ্রাসা শিক্ষা আছে। মাদ্রাসা শিক্ষার মধ্যেও দুটো প্রধান ধরন আছে–একটাতে খুবই সাধারণভাবে পড়াশোনা হয়, গরিব ছেলে-মেয়েরা পড়ে। আরেকটা হলো–ব্যয়বহুল ইংলিশ মিডিয়াম ক্যাডেট মাদ্রাসা, সেটাতে উচ্চবিত্তরা পড়ে। সাধারণ মাদ্রাসায় যে ধরনের পড়াশোনা হয়, সেদিক থেকে ইংলিশ মাদ্রাসা বা ক্যাডেট মাদ্রাসাগুলোর যে পড়াশোনার মান, তাদের যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, সাজ-সরঞ্জাম কিংবা বইপত্র, তাদের যে ইনটেনসিভ কেয়ার সেটার তুলনাই হয় না। দুটোর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। এদিকে আবার ক্যাডেট কলেজ বলে আরেকটা জিনিস আছে। এই যে বহুধরনের শিক্ষা–এর মধ্যে যে ছেলে-মেয়েরা বড় হচ্ছে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গীও ভিন্ন। মাদ্রাসায় যে পড়ছে সে এক ধরনের বিশ্বদৃষ্টি নিয়ে পড়ছে, আবার ক্যাডেট মাদ্রাসা যেগুলো, সেখানে তারা ইংলিশ ও আরবি শিখছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আবার কিন্ডারগার্টেনের যে ইংলিশ মিডিয়াম, সেখানে বাংলাদেশ থেকে যতদূরে থাকা যায়, তত চেষ্টা। সেগুলোর ব্যাপারে সরকারের কোনো কাঠামো নাই, নজরদারি নাই। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সবচেয়ে অবহেলিত। যদিও সেটা একটা স্ট্যান্ডার্ড জায়গায় যাওয়া উচিত ছিল, সেটাও নাই। এই যে বহু ধরনের শিক্ষা, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা হওয়া উচিত–শিশুরা জন্ম থেকে শুরু করে তাদের জগৎকে জানা-বোঝা, নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো, ভাষার সঙ্গে পরিচিত হওয়া, গণিত-ইতিহাস-ভূগোল-সমাজ এগুলো সম্পর্কে তার ধারণা তৈরি হওয়া, তার শরীর সম্পর্কে তার ধারণা তৈরি হওয়া। এগুলো দিয়েই সাধারণ বা প্রাথমিক ভিত্তিটা মানুষের তৈরি করা দরকার। সবার মধ্যে সমান সুযোগ থাকলে তখন বোঝা যাবে কে, কোন বিষয়ে মনোযোগ পাচ্ছে। তাকে যদি বাধ্যতামূলকভাবে এক ধরনের শিক্ষার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে তাকে আমরা একটা গণ্ডিতে বন্দি করে ফেলছি।

আবার ব্যয়ের তারতম্যের কারণে, যার টাকা আছে সে উচ্চমানের লেখাপড়া করবে এবং বাংলাদেশ থেকে ক্রমান্বয়ে বিচ্ছিন্ন হতে থাকবে। আর যার টাকা নাই সে হীনমন্যতায় ভুগবে এবং সে অদক্ষ, অক্ষম হয়ে থাকবে। এটা তো জাতীয় পর্যায়ে নাগরিকদের প্রতি বড় ধরনের একটা বৈষম্য এবং বেঈমানি এক ধরনের। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিশ্রুতি আছে যে, সবার জন্য শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে। অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা যদি করতে হয়, তাহলে এর জন্য রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। বাজারের উপর ছেড়ে দিলে কখনো অভিন্ন শিক্ষা হবে না। কারণ বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার মানে–টাকার শক্তি দিয়ে প্রকাশিত হবে সেটা। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রকাশিত হবে। নানা ধরনের মতাদর্শ, নানা ধরনের আগ্রহ, নানা রকম অগ্রাধিকার দ্বারা শিক্ষা নানা রকম সমস্যার মধ্যে পড়বে। শিক্ষা থাকতে হবে রাষ্ট্রের দায়িত্বে, এখানে কোনো আর্থিক বিষয় থাকা উচিত না। আর্থিক কোনোরকম চিন্তা, টাকা-পয়সার চিন্তা যদি কোনোরকম অভিভাবককে তাড়িত করে তাহলে তাদের পক্ষে সন্তানের লেখাপড়ার যে চাহিদা পূরণ সম্ভব না। আমরা অনেক ছেলে-মেয়ের কথা জানি, যারা অর্থের অভাবে মেধা থাকা সত্ত্বেও সফল হতে পারেনি। করোনাকালে অনেকের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে এবং করোনা ছাড়াও আমরা ঝরে পড়ার হার দেখি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

শিক্ষার ব্যবস্থার যে প্রতিশ্রুতি ছিল–আমরা যদি ৬০-এর দশক থেকে শুরু করি–৫৪ সালে যে যুক্তফ্রন্ট গঠনের যে ২১ দফা, সেখান থেকে শুরু করে ৬৯ সালের যে ১১ দফা, স্বাধীনতার পর যতগুলো শিক্ষা আন্দোলন হয়েছে, সেগুলোর যে বিভিন্ন দাবি–সে সবগুলো দাবির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এখনকার শিক্ষাব্যবস্থা চলছে। প্রত্যেকটার মধ্যেই এ দাবিটা ছিল–সবার জন্য শিক্ষার অভিন্ন ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রের সে দায়িত্ব নিতে হবে। দাবিগুলো ছিল বলেই সেটার প্রতিফলন আমরা সংবিধানে দেখি। দাবিগুলো যারা করেছিলেন–সে সময় অনেকে রাজনীতিবিদ ছিলেন বা ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন, তারা অনেকেই পরে মন্ত্রী হয়েছেন; কিন্তু ওই দাবিগুলো আর পূরণ হয়নি।

শৈশব থেকে শুরু করে শিক্ষাটা কখনো বোঝা হতে পারে না। আমাদের এখানে ব্যয়বহুল হোক, অব্যয়বহুল হোক–সবখানে আমরা দেখি, যারা নীতিনির্ধারণ করে তাদের মধ্যে এরকম একটা ধারণা–যত বেশি বই, যত বেশি বোঝা চাপানো যাবে শিশুদের উপর, সেই স্কুল তত উচ্চ মানসম্পন্ন। এর চেয়ে ভুল আর কিছু হতে পারে না। শিশুদের থেকে শুরু করে প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে, আসলে সকল পর্যায়েই শিক্ষাটা হওয়া উচিত একটা আনন্দের বিষয়। আর শিক্ষার কাজ, শিক্ষকদের কাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে–শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করা, আনন্দ তৈরি করা এবং প্রশ্ন তৈরি করা। যাতে সে নতুন নতুন বিষয়ে অনুসন্ধানে নিজে থেকে আগ্রহী হয়, সে যেন আরও বই পড়তে চায়, সে যেন আরও জানতে চায়। আমাদের লেখাপড়ার সিস্টেমটাই এরকম–খুব ব্যয়বহুল কিন্ডারগার্টেন কিংবা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে শুরু করে মাদ্রাসা পর্যন্ত সবজায়গায় আমরা দেখি মুখস্ত করানো, গাইড বই পড়ানো। এগুলো একেকটা বোঝা হিসেবে আসে এবং শিক্ষার বোঝাটা বলা যায় শিক্ষার প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তোলে। আমরা যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা নিয়ে ভয় দেখি, পরীক্ষা নিয়ে ভয় দেখি কিংবা তাদের মধ্যে কোনো রকমে পাস করার প্রবণতা দেখি, নোট বইয়ের প্রতি আগ্রহ দেখি, গাইড বইয়ের প্রতি আগ্রহ দেখি; এগুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে–প্রধানত, শিক্ষার কোনো অভিন্ন অবকাঠামো নাই; দ্বিতীয়ত, অভিন্ন কোনো সিলেবাস নাই; আর তৃতীয়ত, কাঠামোটাই এমন যে, শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে যায়, বোঝা সৃষ্টি হয়। এটা থেকে পুরোপুরি শিক্ষাব্যবস্থাকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমাদের উপায় নাই।

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা অনেক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে পাচ্ছি, এই শিক্ষাব্যবস্থা কি আসলে আমাদের সংস্কৃতি থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে?

আনু মুহাম্মদ: আমাদের সংস্কৃতি বলে তো কোনো স্থির জিনিস নাই। সংস্কৃতিরও তো পরিবর্তন হয়; কিন্তু প্রধান বিষয় হচ্ছে–তার যে সামাজিক দায়, একজন শিশু নাগরিক হিসেবে যেভাবে বড় হয়, মানুষ হিসেবে তার মধ্যে যেটা হওয়া উচিত বলে মনে করি, প্রাকৃতিকভাবে যেটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে আছে, সেটা হচ্ছে তার মধ্যে পরিপার্শ্ব সম্পর্কে একটা দায় সৃষ্টি হয়। প্রথমত পরিবার, তারপর সমাজ, তারপর রাষ্ট্র, এরপর বিশ্ব। আশপাশের মানুষ, তার প্রাণ-প্রকৃতি–এগুলোর সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই সম্পর্ক তৈরি করার মধ্য দিয়ে তার একটা দায় তৈরি হয়, দায়-দায়িত্ববোধ তৈরি হয়; কিন্তু তাকে যদি ছোটবেলা থেকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, তাকে আত্মকেন্দ্রিক বানানো হয়। যে কোনোভাবে টাকা-পয়সা কীভাবে পাওয়া যাবে, কিংবা সমাজের মধ্যে তার একটা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠা হবে–সেখানে সে প্রাণ-প্রকৃতি সম্পর্কে জানে না, মানুষ সম্পর্কে তার কোনো দায় নাই, সমাজ সম্পর্কে জানে না বা সমাজ সম্পর্কে কোনো দায় নাই।

আমরা দেখি যে, অভিভাবকদের মধ্যেও এ প্রবণতা অনেকের আছে, যারা সন্তানদের যতটা সম্ভব আত্মকেন্দ্রিক করতে চেষ্টা করে, স্বার্থপর হতে চেষ্টা করে; কিন্তু শিক্ষা তো এটা হওয়া উচিত না। তার ফলে দেখা যায়–ইংলিশ মিডিয়াম, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা এগুলোর প্রধান প্রবণতাই হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে, সে যে দেশের মানুষ সেখান থেকে কত বিচ্ছিন্নতা তৈরি করা যায়। সেখানকার কিছু সম্পর্কে তার ধারণা নাই। এমনকি সে যে কবিতা পড়ে, গল্প পড়ে, যে কাহিনি পড়ে, প্রবাদ পড়ে, ইতিহাস-ভূগোল পর্যন্ত, সমাজ সম্পর্কে সে যে পড়াশোনা করে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নাই। এরকম একটা প্রজন্ম যদি হয় যে, বাংলাদেশে সে আউটসাইডার, বহিরাগত; সে বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছুই জানে না। বাংলাদেশকে বাইরে থেকে দেখে এবং বাংলাদেশকে দেখে একটা শাসকের দৃষ্টি থেকে–ঔপনিবেশিক প্রভুদের সন্তানেরা যেভাবে দেখত। সেটা তো বড় বিপদের কথা, ভবিষ্যতের জন্য একটা বড় বিপর্যয়ের বিষয় এবং যে সন্তানেরা এভাবে বড় হচ্ছে, এটা তাদের জন্যও একটা দুঃখজনক অবস্থা। কারণ সে আনন্দটা পাচ্ছে না এবং সে সম্পর্কটা তৈরি করতে পারছে না অন্যদের সঙ্গে। চারদিকে প্রাণশক্তির যে অনেক উৎস আছে, সেগুলো থেকে সে বঞ্চিত হচ্ছে।

(চলবে)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

Header Ad
Header Ad

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

ক্সবাজারে লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তারা ইফতারে অংশ নেন।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। তিনি মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, “রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে বাংলাদেশে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ে এসেছে। এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এখন বিশ্বের সহায়তা প্রয়োজন। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এই সংকটের মূল সমাধান।”

এর আগে, শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ায় গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

অন্যদিকে, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারে পৌঁছে সেখানে নির্মাণাধীন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বিকেলে তিনি উখিয়ায় গিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।

উল্লেখ্য, চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। পরে তিনি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে ঢাকার সংস্কার অ্যাজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

Header Ad
Header Ad

দোল উৎসবে বন্ধ থাকছে বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হোলি বা দোল উৎসব উপলক্ষে ভারতে সরকারি ছুটি থাকায় শনিবার (১৫ মার্চ) বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে বেনাপোল-পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের পারাপার স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে ভারতের সরকারি ছুটির কারণে শনিবার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে রোববার সকাল থেকে পুনরায় কার্যক্রম চালু হবে।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে সিঅ্যান্ডএফ মালিক, কর্মচারী, হ্যান্ডলিং শ্রমিক এবং ট্রাক চালকরা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন। ফলে শনিবার এ পথে কোনো আমদানি-রপ্তানি হবে না।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ভারতে সরকারি ছুটির কারণে শনিবার আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ভারতীয় খালি ট্রাকগুলো বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাসের পর ফিরে যেতে পারবে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঞা জানান, দোল পূর্ণিমায় এ পথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টযাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকবে।

Header Ad
Header Ad

কেউ দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে দমন করবে: মামুনুল হক

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কেউ যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হয়, তবে দেশের মানুষ তাকে কঠোর হস্তে দমন করবে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর পল্টন ফার্স হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

মামুনুল হক বলেন, “বাংলাদেশ এখন একটি উন্মুক্ত ও স্বাধীন পরিবেশে রমজানুল মোবারক উদযাপন করছে। অতীতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলো সফল হবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। ইসলামবিরোধী কোনো কালচারকে এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে একজন রূপান্তরিত পুরুষকে অদম্য নারী হিসেবে সম্মাননা দেওয়া দেশের কৃষ্টি-কালচারের অবমাননা।

মামুনুল হক নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনি ব্যবস্থার শক্তিশালী করার দাবি জানান। এছাড়াও তিনি অতীতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মাগফিরাত কামনা করেন।

ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিদেশি কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব
দোল উৎসবে বন্ধ থাকছে বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম
কেউ দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে দমন করবে: মামুনুল হক
সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩৮৩ ছিনতাইকারী-চাঁদাবাজ গ্রেফতার
‘যমুনা রেল সেতু’ উদ্বোধন  ১৮ মার্চ, প্রধান অতিথি রেলপথ সচিব
বিশ্বে প্রথমবার স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার
আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে : প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়: জাতিসংঘ মহাসচিব
আওয়ামী লীগ নেত্রী রূপালি গ্রেফতার
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট পেতে আধা ঘণ্টায় ২০ লাখ হিট
দুই বছরের কন্যাকে হারালেন আফগান ক্রিকেটার হজরতউল্লাহ জাজাই
রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব
কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ
সুন্দরবনের গহীন থেকে বৃদ্ধা নারী উদ্ধার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো সাত লাশ উদ্ধার
জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
গালি দেয়া সেই উপস্থাপিকার চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান হাসনাতের
প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী
৬০তম জন্মদিনে নতুন প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে আনলেন আমির খান