বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ১)

বাজারের উপর ছেড়ে দিলে কখনো অভিন্ন শিক্ষা হবে না

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন দেশের শিক্ষানীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং করোনাকালের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহেরীন আরাফাত। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারটির প্রথম পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ: অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, আমরা এখনই প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরগুলোতে একমুখী শিক্ষা করতে পারি কিনা। একমুখী শিক্ষার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

আনু মুহাম্মদ: প্রথমেই একমুখী শিক্ষার অর্থটা খেয়াল করতে হবে। সবার কাছে তো এর অর্থ একরকম নয়। আমরা যতদূর দেখছি, বাংলাদেশে সর্বশেষ শিক্ষানীতি হয়েছিল ২০১০ সালে। সেখানেই প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছিল যে, একমুখী শিক্ষা তারা করবে। বাস্তবে তারা যেটাকে একমুখী শিক্ষা দাবি করছে, তার সঙ্গে একমুখী শিক্ষার কোনো সম্পর্ক নাই। আমি যেভাবে বুঝি, একমুখী শিক্ষার মানে হলো অভিন্ন শিক্ষা। একটা দেশের নাগরিক হিসেবে শিশুকাল থেকে শুরু করে তার যে শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া, তাতে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকতে হবে। সবাই যে একরকম করবে, এক রকম ফলাফল থাকবে বা সবার একই দিকে মনোযোগ থাকবে তা নাও হতে পারে; কিন্তু তার জন্য অভিন্ন একটা পদ্ধতি রাখতে হবে।

শিশুরা একেকজন একেকমানের পড়াশোনা করবে, একক ধারায় পড়াশোনা করবে–এটা সমাজে যে বৈষম্যটা আছে, তা আরও বাড়ানো বা একটা বিশাল অংশকে পঙ্গু করে ফেলার মতো। যেমন–আমরা যদি চিন্তা করি যে, বর্তমান সময়ে কী ধরনের শিক্ষা চলছে–একটা শিক্ষা আমরা দেখি সরকারি প্রাথমিক স্কুল, সরকারি মাধ্যমিক স্কুল পাশাপাশি আমরা দেখছি কিন্ডারগার্টেন–এর মধ্যে খুবই উচ্চ ব্যয়বহুল আছে, আবার সাধারণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কিন্তু ব্যয়বহুল নয় এমনও আছে। মানের দিক থেকে আকাশ-পাতাল তফাৎ। আমরা দেখছি মাদ্রাসা শিক্ষা আছে। মাদ্রাসা শিক্ষার মধ্যেও দুটো প্রধান ধরন আছে–একটাতে খুবই সাধারণভাবে পড়াশোনা হয়, গরিব ছেলে-মেয়েরা পড়ে। আরেকটা হলো–ব্যয়বহুল ইংলিশ মিডিয়াম ক্যাডেট মাদ্রাসা, সেটাতে উচ্চবিত্তরা পড়ে। সাধারণ মাদ্রাসায় যে ধরনের পড়াশোনা হয়, সেদিক থেকে ইংলিশ মাদ্রাসা বা ক্যাডেট মাদ্রাসাগুলোর যে পড়াশোনার মান, তাদের যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, সাজ-সরঞ্জাম কিংবা বইপত্র, তাদের যে ইনটেনসিভ কেয়ার সেটার তুলনাই হয় না। দুটোর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। এদিকে আবার ক্যাডেট কলেজ বলে আরেকটা জিনিস আছে। এই যে বহুধরনের শিক্ষা–এর মধ্যে যে ছেলে-মেয়েরা বড় হচ্ছে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গীও ভিন্ন। মাদ্রাসায় যে পড়ছে সে এক ধরনের বিশ্বদৃষ্টি নিয়ে পড়ছে, আবার ক্যাডেট মাদ্রাসা যেগুলো, সেখানে তারা ইংলিশ ও আরবি শিখছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আবার কিন্ডারগার্টেনের যে ইংলিশ মিডিয়াম, সেখানে বাংলাদেশ থেকে যতদূরে থাকা যায়, তত চেষ্টা। সেগুলোর ব্যাপারে সরকারের কোনো কাঠামো নাই, নজরদারি নাই। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সবচেয়ে অবহেলিত। যদিও সেটা একটা স্ট্যান্ডার্ড জায়গায় যাওয়া উচিত ছিল, সেটাও নাই। এই যে বহু ধরনের শিক্ষা, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা হওয়া উচিত–শিশুরা জন্ম থেকে শুরু করে তাদের জগৎকে জানা-বোঝা, নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো, ভাষার সঙ্গে পরিচিত হওয়া, গণিত-ইতিহাস-ভূগোল-সমাজ এগুলো সম্পর্কে তার ধারণা তৈরি হওয়া, তার শরীর সম্পর্কে তার ধারণা তৈরি হওয়া। এগুলো দিয়েই সাধারণ বা প্রাথমিক ভিত্তিটা মানুষের তৈরি করা দরকার। সবার মধ্যে সমান সুযোগ থাকলে তখন বোঝা যাবে কে, কোন বিষয়ে মনোযোগ পাচ্ছে। তাকে যদি বাধ্যতামূলকভাবে এক ধরনের শিক্ষার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে তাকে আমরা একটা গণ্ডিতে বন্দি করে ফেলছি।

আবার ব্যয়ের তারতম্যের কারণে, যার টাকা আছে সে উচ্চমানের লেখাপড়া করবে এবং বাংলাদেশ থেকে ক্রমান্বয়ে বিচ্ছিন্ন হতে থাকবে। আর যার টাকা নাই সে হীনমন্যতায় ভুগবে এবং সে অদক্ষ, অক্ষম হয়ে থাকবে। এটা তো জাতীয় পর্যায়ে নাগরিকদের প্রতি বড় ধরনের একটা বৈষম্য এবং বেঈমানি এক ধরনের। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিশ্রুতি আছে যে, সবার জন্য শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে। অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা যদি করতে হয়, তাহলে এর জন্য রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। বাজারের উপর ছেড়ে দিলে কখনো অভিন্ন শিক্ষা হবে না। কারণ বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার মানে–টাকার শক্তি দিয়ে প্রকাশিত হবে সেটা। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রকাশিত হবে। নানা ধরনের মতাদর্শ, নানা ধরনের আগ্রহ, নানা রকম অগ্রাধিকার দ্বারা শিক্ষা নানা রকম সমস্যার মধ্যে পড়বে। শিক্ষা থাকতে হবে রাষ্ট্রের দায়িত্বে, এখানে কোনো আর্থিক বিষয় থাকা উচিত না। আর্থিক কোনোরকম চিন্তা, টাকা-পয়সার চিন্তা যদি কোনোরকম অভিভাবককে তাড়িত করে তাহলে তাদের পক্ষে সন্তানের লেখাপড়ার যে চাহিদা পূরণ সম্ভব না। আমরা অনেক ছেলে-মেয়ের কথা জানি, যারা অর্থের অভাবে মেধা থাকা সত্ত্বেও সফল হতে পারেনি। করোনাকালে অনেকের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে এবং করোনা ছাড়াও আমরা ঝরে পড়ার হার দেখি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

শিক্ষার ব্যবস্থার যে প্রতিশ্রুতি ছিল–আমরা যদি ৬০-এর দশক থেকে শুরু করি–৫৪ সালে যে যুক্তফ্রন্ট গঠনের যে ২১ দফা, সেখান থেকে শুরু করে ৬৯ সালের যে ১১ দফা, স্বাধীনতার পর যতগুলো শিক্ষা আন্দোলন হয়েছে, সেগুলোর যে বিভিন্ন দাবি–সে সবগুলো দাবির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এখনকার শিক্ষাব্যবস্থা চলছে। প্রত্যেকটার মধ্যেই এ দাবিটা ছিল–সবার জন্য শিক্ষার অভিন্ন ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রের সে দায়িত্ব নিতে হবে। দাবিগুলো ছিল বলেই সেটার প্রতিফলন আমরা সংবিধানে দেখি। দাবিগুলো যারা করেছিলেন–সে সময় অনেকে রাজনীতিবিদ ছিলেন বা ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন, তারা অনেকেই পরে মন্ত্রী হয়েছেন; কিন্তু ওই দাবিগুলো আর পূরণ হয়নি।

শৈশব থেকে শুরু করে শিক্ষাটা কখনো বোঝা হতে পারে না। আমাদের এখানে ব্যয়বহুল হোক, অব্যয়বহুল হোক–সবখানে আমরা দেখি, যারা নীতিনির্ধারণ করে তাদের মধ্যে এরকম একটা ধারণা–যত বেশি বই, যত বেশি বোঝা চাপানো যাবে শিশুদের উপর, সেই স্কুল তত উচ্চ মানসম্পন্ন। এর চেয়ে ভুল আর কিছু হতে পারে না। শিশুদের থেকে শুরু করে প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে, আসলে সকল পর্যায়েই শিক্ষাটা হওয়া উচিত একটা আনন্দের বিষয়। আর শিক্ষার কাজ, শিক্ষকদের কাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে–শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করা, আনন্দ তৈরি করা এবং প্রশ্ন তৈরি করা। যাতে সে নতুন নতুন বিষয়ে অনুসন্ধানে নিজে থেকে আগ্রহী হয়, সে যেন আরও বই পড়তে চায়, সে যেন আরও জানতে চায়। আমাদের লেখাপড়ার সিস্টেমটাই এরকম–খুব ব্যয়বহুল কিন্ডারগার্টেন কিংবা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে শুরু করে মাদ্রাসা পর্যন্ত সবজায়গায় আমরা দেখি মুখস্ত করানো, গাইড বই পড়ানো। এগুলো একেকটা বোঝা হিসেবে আসে এবং শিক্ষার বোঝাটা বলা যায় শিক্ষার প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তোলে। আমরা যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা নিয়ে ভয় দেখি, পরীক্ষা নিয়ে ভয় দেখি কিংবা তাদের মধ্যে কোনো রকমে পাস করার প্রবণতা দেখি, নোট বইয়ের প্রতি আগ্রহ দেখি, গাইড বইয়ের প্রতি আগ্রহ দেখি; এগুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে–প্রধানত, শিক্ষার কোনো অভিন্ন অবকাঠামো নাই; দ্বিতীয়ত, অভিন্ন কোনো সিলেবাস নাই; আর তৃতীয়ত, কাঠামোটাই এমন যে, শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে যায়, বোঝা সৃষ্টি হয়। এটা থেকে পুরোপুরি শিক্ষাব্যবস্থাকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমাদের উপায় নাই।

ঢাকাপ্রকাশ: আমরা অনেক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে পাচ্ছি, এই শিক্ষাব্যবস্থা কি আসলে আমাদের সংস্কৃতি থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে?

আনু মুহাম্মদ: আমাদের সংস্কৃতি বলে তো কোনো স্থির জিনিস নাই। সংস্কৃতিরও তো পরিবর্তন হয়; কিন্তু প্রধান বিষয় হচ্ছে–তার যে সামাজিক দায়, একজন শিশু নাগরিক হিসেবে যেভাবে বড় হয়, মানুষ হিসেবে তার মধ্যে যেটা হওয়া উচিত বলে মনে করি, প্রাকৃতিকভাবে যেটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে আছে, সেটা হচ্ছে তার মধ্যে পরিপার্শ্ব সম্পর্কে একটা দায় সৃষ্টি হয়। প্রথমত পরিবার, তারপর সমাজ, তারপর রাষ্ট্র, এরপর বিশ্ব। আশপাশের মানুষ, তার প্রাণ-প্রকৃতি–এগুলোর সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই সম্পর্ক তৈরি করার মধ্য দিয়ে তার একটা দায় তৈরি হয়, দায়-দায়িত্ববোধ তৈরি হয়; কিন্তু তাকে যদি ছোটবেলা থেকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, তাকে আত্মকেন্দ্রিক বানানো হয়। যে কোনোভাবে টাকা-পয়সা কীভাবে পাওয়া যাবে, কিংবা সমাজের মধ্যে তার একটা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠা হবে–সেখানে সে প্রাণ-প্রকৃতি সম্পর্কে জানে না, মানুষ সম্পর্কে তার কোনো দায় নাই, সমাজ সম্পর্কে জানে না বা সমাজ সম্পর্কে কোনো দায় নাই।

আমরা দেখি যে, অভিভাবকদের মধ্যেও এ প্রবণতা অনেকের আছে, যারা সন্তানদের যতটা সম্ভব আত্মকেন্দ্রিক করতে চেষ্টা করে, স্বার্থপর হতে চেষ্টা করে; কিন্তু শিক্ষা তো এটা হওয়া উচিত না। তার ফলে দেখা যায়–ইংলিশ মিডিয়াম, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা এগুলোর প্রধান প্রবণতাই হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে, সে যে দেশের মানুষ সেখান থেকে কত বিচ্ছিন্নতা তৈরি করা যায়। সেখানকার কিছু সম্পর্কে তার ধারণা নাই। এমনকি সে যে কবিতা পড়ে, গল্প পড়ে, যে কাহিনি পড়ে, প্রবাদ পড়ে, ইতিহাস-ভূগোল পর্যন্ত, সমাজ সম্পর্কে সে যে পড়াশোনা করে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নাই। এরকম একটা প্রজন্ম যদি হয় যে, বাংলাদেশে সে আউটসাইডার, বহিরাগত; সে বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছুই জানে না। বাংলাদেশকে বাইরে থেকে দেখে এবং বাংলাদেশকে দেখে একটা শাসকের দৃষ্টি থেকে–ঔপনিবেশিক প্রভুদের সন্তানেরা যেভাবে দেখত। সেটা তো বড় বিপদের কথা, ভবিষ্যতের জন্য একটা বড় বিপর্যয়ের বিষয় এবং যে সন্তানেরা এভাবে বড় হচ্ছে, এটা তাদের জন্যও একটা দুঃখজনক অবস্থা। কারণ সে আনন্দটা পাচ্ছে না এবং সে সম্পর্কটা তৈরি করতে পারছে না অন্যদের সঙ্গে। চারদিকে প্রাণশক্তির যে অনেক উৎস আছে, সেগুলো থেকে সে বঞ্চিত হচ্ছে।

(চলবে)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ২)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (পর্ব ৩)

সাক্ষাৎকারে আনু মুহাম্মদ (শেষ পর্ব)

Header Ad
Header Ad

এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  

ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর। ছবিঃ সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর আদাবর থানায় দায়েরকৃত রুবেল হত্যা মামলায় ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত গ্রেফতার দেখানোর এ আদেশ দেন।

এদিন সকালে আসামিদের আদালতে হাজির করে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে সে আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।। সোয়া ৯ টার পর তাদের এজলাসে তোলা হয়। তিন জনের মধ্যে সামনে ছিলেন শাহজাহান ওমর।

এই সময় সাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলতে গেলে। তখন শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এই ফটো তোলোস কেন?’ পরে তাদের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে অনেকটাই স্বাভাবিক ছিলেন শাহজাহান ওমর। আইনজীবী-পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সময় পার করেন। কখনও হেসেছেন। আইনজীবীদের কাছে মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। জানতে চান তিনি এজাহারনামীয় আসামি কি না।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা সকাল ১১টার দিকে আদাবর থানাধীন রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতীলীগ, কৃষকলীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম।

Header Ad
Header Ad

মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  

প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবিঃ সংগৃহীত

মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এবং গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, সংবাদ মাধ্যমটি (বিবিসি বাংলা) যখন শেখ হাসিনার বিষয়ে লেখে, তখন তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পটভূটি বাদ দেয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর উনি ভারতে চলে গেছেন এমন শব্দ ব্যবহার করতে তারা অধিকতর পছন্দ করে। বাস্তবতা হচ্ছে শেখ হাসিনা অসংখ্য শিশু হত্যা, নজিরবিহীন সহিংসতা, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।

তিনি লেখেন, গত সপ্তাহে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি বলছে, শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে হত্যা এবং গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের কিছুই উল্লেখ ছিল না। তারা বিপ্লবের পরে গণগ্রেপ্তার নিয়ে কথা বলতে বেশি পছন্দ করে।

শফিকুল আলম লেখেন, কোনো গণগ্রেপ্তার হয়েছে? কতজনকে গত ছয় মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? আমরা জানতাম যে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পুলিশ বিএনপির সমাবেশকে জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করেছিল। তারপর কমপক্ষে ২৫ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করেছিল।

প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। গতকাল তারা একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে যে, হাসিনা নয়াদিল্লি থেকে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন। প্রকৃতপক্ষে, এটি ‘বাংলার কসাইয়ের’ জন্য একটি নিখুঁত প্ল্যাটফর্ম! এটি কি কখনো নির্বাসিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে একই রকম প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে? হাসিনার স্বৈরশাসনের আমলে তারেক রহমান লন্ডনে কীভাবে সময় কাটাচ্ছিলেন সে সম্পর্কে লিখেছিল? এটি কি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিল?

Header Ad
Header Ad

কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন ও

পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  

বাংলাভিশন টেলিভিশনের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরন। ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাভিশন টেলিভিশনের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরনকে বেধড়ক কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।

মিরনের শরীরে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে। তার এক হাতের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে, অন্য হাতের কব্জি ঝুলে গেছে। মাথা, কপাল ও পেটে গুরুতর আঘাতের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুয়াকাটা পৌরসভায় নিজ বাসার সামনে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়।

মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য মিরনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মিরনের পরিবার জানায়, তিনি ঢাকা থেকে রাতে কুয়াকাটা ফিরেছিলেন। কুয়াকাটা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসায় ফেরার পথে বাসার সামনে পৌঁছামাত্র দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে জখম করে। চিৎকার দিয়ে মিরন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন।

মিরনের শরীরে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে। এক হাতে রগ কেটে দেয়া হয়েছে, অন্য হাতের কব্জি ঝুলে গেছে। মাথা, কপাল ও পেটে গুরুতর আঘাতের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ  
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাত আবদুল্লাহর  
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ    
সুইডেনে স্কুলে বন্দুক হামলা নিহত ১০ জন  
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত গ্রেফতার  
জাবিতে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের ঘোষণা  
মুসলিম লীগ যেমন বিলুপ্ত হয়েছে, আওয়ামী লীগও বিলুপ্ত হবে : সলিমুল্লাহ খান
ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বীসহ ৮ বুয়েট শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার  
জীবননগর সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বাংলাদেশি যুবক আটক
নগদের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে ৬৪৫ কোটি টাকা জালিয়াতির মামলা
৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হচ্ছে নতুন মার্কিন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
ক্যাম্পাসের মসজিদে কোরআন পুড়িয়েছে রাবি ছাত্র, জানা গেল পরিচয়
মার্কিন ভিসার জন্য প্রার্থনা করতে মন্দিরে ভিড় ভারতীয়দের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন আটক
পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট ইস্যু ও নবায়ন
বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীতে ২১ কোম্পানির বাস চলবে টিকিট-কাউন্টার ভিত্তিতে