সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

করপোরেট গিলে খাচ্ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতারাও

করপোরেট প্রতিষ্ঠানের আগ্রাসনে হারিয়ে যেতে বসেছেন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তারা মুড়ি, চানাচুর তৈরি করে তা কম দামে বিক্রি করেন। হাসকিংসহ অটো রাইস মিল থেকেও কম দামে চাল বিক্রি করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিটি গ্রুপ, আকিজ, প্রাণসহ বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান মুড়ি, চানাচুর, চালের ব্যবসায় নেমে প্যাকেটজাত করে অনেক বেশি দামে বিক্রি করছে। এসব খাতে তারা একেবারে বাজার দখল করে নিয়েছে। যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।

শিল্পনীতির ফাঁকফোকরেই তারা গিলে খাচ্ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আহার। শিল্পনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিকাশের কথা বলা হলেও কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পখাতে বিনিয়োগে করপোরেটদের নিষেধ করা হয়নি। ফলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা হারিয়ে যাচ্ছেন। করপোরেটদের বিনিয়োগে মন্ত্রী থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যবসায়ীরাও ক্ষুদ্ধ। তারা বলছেন, করপোরেটরা সব জায়গয়ে বিনিয়োগ করলে ক্ষুদ্র ও ছোটরা যাবে কোথায়?

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, সিটি গ্রুপের তীর মিনিকেট ২৫ কেজি বস্তার দাম ১৮৫০ টাকা। প্রতি কেজির মূল্য ৭৪ টাকা। এটি পাইকারি দাম। তবে খুচরা প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। একইভাবে আকিজ গ্রুপের এসেনসিয়াল ২৫ কেজি মিনিকেট চালের দামও ১৮৫০ টাকা। যেখানে মোজাম্মেল, রশিদসহ অন্যান্য মিনিকেট চালের কেজি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির আব্দুল আওয়ালসহ অন্যান্য চাল ব্যবসায়ীরা করপোরেট কোম্পানির চালের বাড়তি দামের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

দীর্ঘ দিনের ব্যবসার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ওই চাল ব্যবসায়ীরা করপোরেটদের বেশি দাম নেওয়ার ব্যাপারে বলেন, গুণাগুণ একই হলেও প্যাকেটজাত করার কারণেই করপোরেট কোম্পানির চালের দাম বেশি। এতে ভোক্তাদের বাড়তি টাকা করপোটেরদের পকেটে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, কোম্পানি থেকে লোক এসে বলে ভালো চাল, আমরাও রাখি। কারণ অনেকে মনে করে, বেশি দাম তাহলে বেশি ভালো হবে।

আটারও একই দশা। হাজী স্টোরের জসিম, জব্বার স্টোরের জব্বারসহ অন্যান্য মুদি ব্যবসায়ীরা জানান, তীর, ফ্রেশসহ বিভিন্ন করপোরেটের দুই কেজি আটা ১৩০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা। পোলাও চালও বেশি দামে বিক্রি করছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। খোলা চাল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি করা হলেও প্রাণ, তীর কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

ভাই ভাই ট্রেডার্সের মুনির হোসেন ও মেসার্স রফিক ট্রেডার্সের রফিক জানান, কুষ্টিয়া, গাজীপুরের খোলা মুড়ি প্রতি কেজি ৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আর বরিশালের মোটা চালের মুড়ি প্রতি কেজির দাম ১২০ টাকা। কিন্তু একটু দূরেই প্রাণসহ বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মুড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা।

ওই মার্কেটের দ্বিতীয় তলার রফিক ট্রেডার্সের রফিক জানান, বিসমিল্লাহ বেকারির ৯০০ গ্রামের চানাচুর ৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ৩০০ গ্রামের রুচি চানাচুরের দাম ৬৫ টাকা।

এটা যে শুধু কারওয়ানবাজারের চিত্র, তা কিন্তু নয়। মোহাম্মদপুরের পাইকারি বাজার কৃষিমার্কেট, টাউনহলের মতো বড় বড় বাজার থেকে শুরু করে পাড়া মহলায়ও করপোরেটরা ঢুকে গেছে। মোহাম্মদপুরের ফিউচার টাউন হাউজিং এর আলআমিন এন্টারপ্রাইজের মো. আনোয়ার এ প্রতিবেদককে বলেন, আগে বিভিন্ন এলাকার মুড়ি, চানাচুর কম দামেই বিক্রি করতাম। কিন্তু প্রাণ, সিটিসহ বিভিন্ন কোম্পানিও মুড়ি, চানাচুর, চাল, ডাল নিয়ে আসছে। তাদের পণ্যের দামও বেশি। তীর মিনিকেট ২৫ কেজি ১৮৭৫ টাকা। প্রতি কেজির মূল্য ৭৫ টাকা। ৫ কেজির মিনিকেট রুপচাঁদা চাল ৪৬০ টাকা। অথচ অন্য মিনিকেট কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তারা প্যাকেটজাতের কারণেই বেশি দাম নিচ্ছে।

এভাবেই বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানি বেশি দামেই চাল, আটা, ময়দা, তেল, চানাচুর বিক্রি করছে। তাদের ব্যবসার পরিধিও বাড়ছে। কিন্তু কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওই সব পণ্য কম দামে বিক্রি করা হলেও তাদের ব্যবসা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ এ শিল্পখাতের উন্নয়নের ব্যাপারে বলা হয়েছে-এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এর আলোকে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বিসিক উদ্যোক্তা উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখসহ এর সার্বিক কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হবে এবং অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে কটেজ ও মাইক্রো শিল্পের বিকাশকে ত্বরান্তিত করা হবে। শিল্পখাতে নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার ব্যাপারেও বলা হয়েছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ প্রদানে বিসিকের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষিভিত্তিক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত পরিবেশবান্ধব শিল্প পার্ক গড়ে তোলা হবে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা একেবারেই ভিন্ন। বৃহৎ শিল্প বা করপোরেটদের চাপে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ দূরের কথা, দিনে দিনে তলিয়ে যাচ্ছে। কারণ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তারা ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ না করেও চানাচুর, মুড়ি সরবরাহ করছে। তারা কম দামেও ভোক্তাদের এসব পণ্য সরবরাহ করছে।

অপরদিকে জাতীয় শিল্পনীতির আলোকে আমদানি বিকল্প পণ্য হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পেও কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এরফলে সম্প্রতি সিটি গ্রুপ, প্রাণ, আকিজের মতো বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এসব ব্যবসায় নজর দিয়েছে। ফলে তাদের প্রভাবে ছোট উদ্যোক্তারা হারিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে ভোক্তাদেরও চাল, আটা, ময়দা, তেল, মুড়ি, চানানচুর বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এভাবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বাজার করপোরেটদের দখলে চলে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সিটি গ্রুপের তীর ব্র্যান্ডের আটা, চাল, ডাল নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাব চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা আমি দেখি না। যারা দেখেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা দেখে থাকেন।

বিশ্বজিৎ সাহার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, করপোরেটরা ব্যবসা করবে। কিন্তু চাল প্যাকেটজাত করে কেজিতে ৫ টাকা বেশি দাম নিবে, এটা হতে পারে না। আমাদের কাছেও অন্য চাল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছে। বাজারে আসলে দাম বাড়াচ্ছে করপোরেটরা। কারণ তারা নিজে ধান কিনে মজুদ করে রাখছে। কিন্তু তথ্য প্রমাণ না পেলে তো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। শিল্পনীতিতে কী আছে তাও দেখার বিষয়।

এদিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইএর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সম্প্রতি বলেছেন, সিটি গ্রুপসহ বড় বড় সাহেবরা চাল ব্যবসায়ে ঢুকে পড়েছে। একেকটা মিল দেড় থেকে দুই কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে। সিটির তীর চাল তারা খুচরাও বিক্রি করছে। এটা কেন? সব জায়গায় কেন তাদের যেতে হবে। এটা সরকারের দেখা উচিৎ। কারণ এভাবে চললে মুদির দোকানও বন্ধ হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দিনাজপুর চেম্বারের পরিচালক শহিদুর রহমান পাটওয়ারী (মোহন) বলেন, পুঁজি থাকলে যে কেউ ব্যবসা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছুটা নিয়ম মেনেই তা করতে হবে। যেভাবে পারব ভোক্তাদের কাছে বেশি দাম নেব, এটা কোনো ব্যবসা না। করপোরেটরা মিনিকেট চাল বাজারে বিক্রি করছে আমরাও অটো রাইস মিল থেকে সেই মিনিকেট চাল বিক্রি করছি কম দামে। ভোক্তাদের তা দেখতে হবে। তাহলে তারা একচেটিয়ে বাজার দখল করতে পারবে না। অন্যরা টিকে থাকবে।

পলিশ করে মিনিকেট নামে চিকন চাল বাজারে বেশি দামে বিক্রি করার ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষি অর্থনীতিবিদ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, যে কেউ আইন মেনে বৈধপথে ব্যবসা করবে এটা দোষের কিছু না। কিন্তু বর্তমানে মিনিকেটের নামে ভোক্তাদের সঙ্গে ডাহা প্রতারণা করা হচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকেও বলা হয়েছে মিনিকেট নামে কোনো জাত নেই। তারপরও কেন বাজার থেকে সরকার বন্ধ করছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এজন্য আইন করতে হবে। অর্থনীতিবিদ হিসেবেই আমি বলছি এক ধানকে তিনবার কেটে অন্য চাল হিসেবে বিক্রি করা ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।

এনএইচবি

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে