সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্রতারণা করে বিক্রি হচ্ছে ‘বিষ’ মেশানো লাল চিনি

চিনির তুমুল সংকটের মধ্যে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সাদা চিনিতে লাল রং মিশিয়ে দেশীয় চিনি পরিচয়ে চড়া মূল্যে বাজারে বিক্রি করছে। বিষয়টি ধরা পড়েছে সরকারের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানেও। তারপরও বন্ধ হয়নি প্রতারণা।

তারা বলছেন, চিনির সংকটকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু চক্র সাদা চিনিতে বিষাক্ত রং মিশিয়ে ‘দেশি লাল’ চিনির নামে ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। যা আসলে লাল চিনি না। কারণ সরকারি লাল চিনির প্রতি কেজির খুচরা বিক্রয় মূল্য ১১২ টাকা। তারপরও লাল চিনির নামে গাংচিল, সতেজ ফুড, মাশিরা বিডি, সেবা মার্কেটিং এর চিনিতে সয়লাব হয়ে গেছে।

অন্যদিকে সরকারের বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য করপোরেশন (বিএসএফসি) কর্তৃপক্ষ বলছে, ডিলারদেরকে দেওয়ার মতো তাদের পর্যাপ্ত চিনিই নেই। তা ছাড়া তাদের চিনির প্রতি কেজির খুচরা মূল্য ১১২ টাকা। এর চেয়ে বেশি দামে যেমন কেউ এটা বিক্রি করতে পারবে না, তেমনি এই চিনি নিয়ে কেউ অন্য নামে প্যাকেট করেও বিক্রি করতে পারবে না।

অথচ বাজার সয়লাব লাল চিনিতে! ভোক্তাকে শুধু ঠকানোই হচ্ছে না। প্রতারণা করে রং মেশানো বিষাক্ত চিনি যেমন পাওয়া হচ্ছে, তেমনি সাধারণ ক্রেতাদের পকেট থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ চিনি প্রতারক চক্র।

সরকার প্রতি কেজি প্যাকেট চিনির দাম ১০৭ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও সিটি, মেঘনা, দেশবন্ধু, ইগলুসহ ৫টি রিফাইনারি কোম্পানি ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের চিনি দিচ্ছে না। স্বাভাবিক সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভোক্তারাও চিনি পাচ্ছেন না। রমজানের আগে চিনির বাজারের অস্থিরতা ডিলার-পাইকার তো বটে, সাধারণ ক্রেতাদেরকেও রীতিমতো আতঙ্কিত করে তুলেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে চিনির বিষয়ে ডিলার, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেও পাওয়া যায় চিনি নিয়ে জাল-জালিয়াতির সত্যতা। তারা বলছেন, এসব অসাধু ও প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

ঢাকাপ্রকাশ-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুচরা বাজারে সাদা চিনির সংকটের সুযোগে প্রতারকচক্র বিভিন্ন নামে লাল চিনি বেশি দামে বিক্রি করে কাঁচা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন বলছে, আগে প্যাকেট লাল চিনির প্রতি কেজির খুচরা মূল্য ছিল ৯৯ টাকা। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৩ টাকা দাম বাড়িয়ে এখন বিক্রি করা হচ্ছে ১১২ টাকা। আর খোলা চিনির কেজি ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি দামে কেউ বিক্রি করলে তা প্রতারণা হিসেবে ধরে নিতে হবে। এরকম প্রতারণা করায় ঢাকার এসপি ফুড প্রোডাক্টস, গ্রামীণ ফুড প্রোডাক্টস ও ফেয়ারডিল কনজুমার প্রোডাক্টস ও গাংচিল নামে কথিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিএসএফসির প্রধান মো. মাযহার উল হক খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার পর করপোরেশনের হাতে চিনি তেমন একটা থাকে না।

তিনি বলেন, মাসে একজন ডিলারকে পাঁচ বস্তা অর্থাৎ ২৫০ কেজি চিনি দেওয়া হয়। আমরা ডিলারদের কাছে ১০৭ টাকা কেজি বিক্রি করি। তারা খুচরা বাজারে ১১২ টাকায় বিক্রি করে। কাজেই কোনো ডিলার ১১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করতে পারে না। কেউ করলে বুঝতে হবে তারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভোক্তাদের ঠকাচ্ছে। কারণ কোনো অনুমোদিত ডিলার বিএসএফসির প্যাকেট ছাড়া অন্য কোনো নামে চিনি বিক্রি করতে পারে না।

মাশিরা, গাংচিলসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের নামে প্যাকেট করে সরকারি চিনি বলে ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, এটা করলে বুঝতে হবে তারা প্রতারণা করছে। মাশিরা আমাদের ডিলার হলেও ১১২ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা জেলায় ৬০৬ জন হোলসেল ডিলার রয়েছে। এর মধ্যে মাশিরার নাম পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ আমাদের প্যাকেটও ব্যবহার করতে পারে না।

লাল চিনির নামে বিষ

ঢাকাপ্রকাশ-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাংচিল, সতেজ ফুড,মাশিরা, সিবা ফুডসহ সেসব নামে প্যাকেট করে লাল চিনি নামে ১৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে তার পুরোটাই প্রতারণা। কারণ চিনির উৎপাদন কম হওয়ায় চিনি করপোরেশন লাল চিনি সরবরাহই করতে পারছে না।

বাজার ঘুরে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, মাশিরা বিডি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাকেটজাত চিনি রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজির খুচরা মূল্য ১৫৫ টাকা। যা একেবারেই অস্বাভাবিক। আর এসব প্যাকেটের গায়ে লেখা আছে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অনুমোদিত ডিলার।

শুধু মাশিরা নয়, গত দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে একইভাবে সেবা ফুড, গাংচিল ও সতেজ ফুড তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে প্যাকেটজাত চিনি সরবরাহ করেছে লাল চিনি বলে। প্যাকেটের গায়ে দাম চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের অনুমোদিত ডিলার উল্লেখ করে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৫৫ টাকা বিক্রি করা হয়েছে।

লাল চিনির রহস্য জানতে গত তিন দিন ধরে মাশিরা বিডি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে সোমবার পাওয়া গেল প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার এস এম শহিদুল্লাহ ইমরানকে।

তিনি ঢাকাপ্রকাশ-এর কাছে দাবি করেন, আমি প্রতারণা করছি না। আমি চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অনুমোদিত ডিলার। অন্য ডিলারদের কাছ থেকে বেশি দামে ডিও কিনে থাকি। ১৭০০ ডিলারকে মাসে ২৫০ কেজি চিনি দেওয়া হয়। কিন্তু এই চিনিতে একজন ডিলারের হয় না। তখন আমরা অন্য ডিলারের কাছ থেকে ডিও কিনি। প্রতিটি ডিও কিনতে হয় ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। এত দাম দিয়ে কেনার পর ১১২ টাকায় আর বিক্রি করা যায় না।

এসময় তিনি বেশ উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি সাংবাদিকতা লাইনের লোক। আপনি ভোক্তা অধিদপ্তরে, চিনি করপোরেশনে যান। সব জানতে পারবেন। আমার ১০০ টন লাগে। প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা বেশি দিতে হয়। তাই দাম বেশি। ১১২ টাকা খুচরা রেট। ১০৭ টাকা কেজি কেনা হয়। আমি কি কম দামে লস করে বিক্রি করব নাকি?

আপনি তো ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরান বলেন, আমরা বেশি দামে কিনি তাই খুচরা বিক্রয় মূল্য ১৫৫ টাকা করেছি। আমরা কোনো জালিয়াতি করি না। কারণ আমরা বিএসটিআই থেকে ট্রেডমার্ক লাইসেন্স নিয়ে মাশিরা ব্রান্ডের নামে ধানমন্ডি, ঢাকা ঠিকানা ব্যবহার করে ব্যবসা করছি।

এসময় তিনি পাশে থাকা তার সহযোগী কামরুল হাসানকে ফোন ধরিয়ে দেন। কামরুল হাসান বলেন, আমরা দুই জনে মিলে কারখানা করেছি। সেখানে চিনি প্যাকেট করি, তারপর বাজারজাত করি। এতে অনেক খরচ। বেশি করে চিনি বিক্রি করতে না পারলে কারখানা চলবে না। সরকার ২৫০ কেজি করে বরাদ্দ দেয়। তা দিয়ে তো কারখানা চলে না। তাই বেশি দামে ডিও কিনি।

চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) আবার ইমরানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি নিজে ডিলার না। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়েছি এক ডিলারের কাছ থেকে। সে আমাকে চিনি বিক্রি করার পাওয়ার দিয়েছে। সেই ডিলারের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বলা যাবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিনি করপোরেশন কত বরাদ্দ (অ্যালটমেন্ট) দেয় তার উপর নির্ভর করে। তবে মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন চিনি বিক্রি করা হয়। পুলিশ লাইন, কচুক্ষেত থেকে প্রতি বস্তা (৫০কেজি) চিনি ৬ হাজার ২০০ টাকা বা প্রতি কেজি কেনা হয় ১২০ টাকা করে। এর সঙ্গে অফিস খরচও রয়েছে। এজন্য দাম বেশি।

ভোক্তা অধিকার যা বলছে

চিনি নিয়ে আসলে হচ্ছে কী? ১১২ টাকার লাল চিনি কেউ ১৫৫ বা ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে? জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিউজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা তথ্য প্রমাণ পেলে অবশ্যই অ্যাকশনে যাব। সরকারের বেঁধে দেওয়া রেটের বেশি কেউ কোনো পণ্য বিক্রি করতে পারে না। এর আগেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাদা চিনিতে ক্ষতিকর রং মিশিয়ে ‘লাল চিনি’ নামে বেশি দামে বিক্রি করায় সতেজ এবং গাংচিলের লাল চিনি ধ্বংস করা হয়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্যাকেট চিনি ও খোলা চিনির রেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি নিলে অবশ্যই তা দেখা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কাজ করছে। চিনির সংকট চলছে। এটা কাজে লাগাচ্ছে একশ্রেণির প্রতারক চক্র। তারা ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতারণা করছে।

এ ব্যাপারে ক্যাবের সহ-সভাপতি কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, এটা অবশ্যই প্রতারণা। এ অনিয়মগুলো দীর্ঘদিন থেকে চলছে। বিশেষ করে তেল ও চিনির ক্ষেত্রে। এজন্য কয়েকটা ফ্যাক্টরিতে অভিযানও হয়েছে। এর সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা সরকারকে অ্যাকশনে যেতে বলেছি।

প্রতারণা করলে রক্ষা নেই

বিএসএফসির চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান অপু বলেন, আমাদের ডিলার হলে বাজারে তাদের ১১২ টাকা কেজি চিনি বিক্রি করতে হবে। তারা আমাদের প্যাকেটে অন্য নামে লাল প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি করতে পারবে না। আবার আলাদা প্যাকেট করে সরকারের কোনো চিনিও বিক্রি করতে পারে না। করলে তা প্রতারণা। আর খোলা চিনিও ১০৫ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না। আমাদের কাছেও তথ্য এসেছে কয়েকটা কোম্পানি বিভিন্ন দামে চিনি বিক্রি করছে। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এনএইচবি/এসজি

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে