রাজধানীতে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’ নিয়ে নানা শঙ্কা
রাজধানী ঢাকায় ১ হাজার ৩২৭ কিলোমিটার নদীপথ নিয়ে তৈরি করা হবে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’। এটি করা হবে সর্বশেষ বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) অনুযায়ী।
তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, এ ধরনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। অতীতেও দেখা গেছে নদী-খাল দখলমুক্ত ঠিকই করা হয়েছে। কিন্তু সেই নদী-খাল দখলমুক্ত থাকেনি। নতুন করে অন্য কেউ দখল করে নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ড্যাপের প্রস্তাবনা অনুযায়ী এই ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির বিষয়টি নিয়ে আগানো হচ্ছে। জলাশয় ও নৌপথের সমন্বয়ে এই নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ড্যাপে তো আগেই প্রস্তাব করা ছিল। সে অনুযায়ীই অগ্রসর হচ্ছে সরকার।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৭৪ কিলোমিটার নৌপথকে এর অন্তর্ভূক্ত করা হবে। বাকি খালগুলো নৌচলাচলের অনুপযোগী ও সরু হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ হবে।
রাজউকের সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্প এলাকায় মোট ১ হাজার ৩২৭ কিলোমিটার নদী ও খাল রয়েছে। ড্যাপে প্রায় ৫৭৪ কিলোমিটার নৌপথকে শ্রেণি ক্রম অনুসারে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
আন্তঃআঞ্চলিক, অভ্যন্তরীণ আঞ্চলিক ও সংগ্রাহক নৌপথ-এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ৫৭৪ কিলোমিটার নৌপথকে। বাকী খালগুলো নৌচলাচলের অনুপযোগী ও সরু হওয়ায় কিছু কিছু পদক্ষেপেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
এ সব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— প্রকল্প এলাকায় সমস্ত কালভার্ট ভেঙে সেখানে ব্রিজ প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া বাকি ব্রিজগুলোর নিচ দিয়েও যাতে নৌযান চলাচল করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সদরঘাট ও নারায়ণগঞ্জের নৌ টার্মিনালকে মাল্টিমোডাল টার্মিনালে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ড্যাপে। এ ছাড়া ভাটিতে একটি মাল্টিমোডাল টার্মিনাল তৈরিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, নদী-খাল দখলমুক্ত করেই তো এই প্রকল্প করতে হবে। অতীতে দেখা গেছে নদী-খাল অবৈধ দখলমুক্ত করার পর আবার দখল হয়ে গেছে। শুধু মেগাপ্রকল্পের নামে টাকাই নষ্ট হয়েছে।
তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত তো বৃত্তাকার নৌপথই করতে পারল না। এ ছাড়া অতীতে যতো ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে সবক্ষেত্রেই দেখা গেছে উচ্ছেদের পর আবার দখল হয়ে যেতে। কাজেই এখানে সদিচ্ছার অভাব সবসময়ই দেখা গেছে।
জানতে চাইলে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সভাপতি আবু নাসের খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এ ধরনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প আমরা অতীতেও দেখেছি। নদীর সীমানা নির্ধারণের বিষয়গুলোও দেখেছি। কাজ হয়নি। কাজেই সদিচ্ছাটা আগে দরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে আবু নাসের খান বলেন, শীতকালে এক্সকেভেটর দিয়ে নদী খনন করলেই হয়। ড্রেজিংয়ের মতো বড় কাজ সেক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই লাগে না। কিন্তু সেটা তো করা হয় না কখনোই।
এনএইচবি/আরএ/