শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ (শেষ পর্ব)

সৎ সাংবাদিকতার জন্য দরকার আর্থিক নিরাপত্তা

পেশা, মর্যাদাবোধ, গুণগতমান–শব্দগুলো খুব বেশি রকম সংশ্লিষ্ট। যখনই বিচ্ছিন্ন হয়, পেশাটি পড়ে যায় হুমকির মুখে। গুণগতমান আর মর্যাদাবোধ অনেকটাই খুঁইয়ে সাংবাদিকতা এখন পড়েছে সেই হুমকির মুখে। আমরা দাঁড়িয়ে আছি সীমানা দেয়ালের খুব কাছে। সাংবাদিকের ব্যক্তিমান খুব বেশি সম্পর্কিত সংবাদপ্রতিষ্ঠানের মানের সঙ্গে। প্রতিষ্ঠানের আদর্শগত অবস্থান, আর্থিক সক্ষমতা, সম্মানজনক বেতন কাঠামো সাংবাদিকের মর্যাদাবোধ তৈরির কাজকে সহায়তা করে। সেই কাজ করার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানেরই। তবে দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই পেশা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন-সংগঠনগুলোরও। ব্যাঙের ছাতার মতো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান, রাস্তার মোড়ে মোড়ে সম্পাদক এবং অলিগলিতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন গড়ে উঠলেও পেশাগত নিরাপত্তা, মানোন্নয়ন ও মর্যাদাবোধ গড়ে তোলা কতটা সম্ভব হয়েছে এ পেশায়? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ঢাকাপ্রকাশের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হওয়া গণমাধ্যম গবেষক ও সাংবাদিকদের। ‘প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক ধারাবাহিক আয়োজনের আজ থাকছে শেষ পর্ব

বর্তমানে সাংবাদিকতায় গুণগতমান, পেশাদারিত্ব ও নীতিমালার কোনো বালাই নেই। ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যেখানে সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, আইপি টেলিভিশন ও সংবাদ পত্র। আর এসব প্রতিষ্ঠান শুধু পরিচয়পত্র ও বুম ধরিয়ে দিয়েই বেতন-ভাতার দায় সারে। এটি চলছে জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে খোদ রাজধানীতেও। মানা হচ্ছে না সম্পাদক নিয়োগের নিয়মও।

আরো পড়ুন

ক্ষমতাবান ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধক

সাংবাদিকতা পেশায় আসতে হলে একটি নিবন্ধন প্রক্রিয়া থাকা দরকার বলে মনে করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হয়ে সাংবাদিকতা পেশায় ঢুকতে হবে। সেখানে নৈতিকতার স্ট্যান্ডার্ড ঠিক হবে। কী লিখবেন, কী বলবেন, কী উচিত, অনুচিত, আইনকানুন কী, কে সাংবাদিক হবেন, তার প্রশিক্ষণ কী, আইন কাঠামো তিনি মানবেন কি না–এসব বিবেচনায় নিতে হবে। আরেকটি দিক হলো–ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে কি না, ভালো বেতন দিচ্ছে কি না, যে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করছে, সে প্রতিষ্ঠান এগুলো দেখভাল করছে কি না, অভিজ্ঞ সম্পাদকের নেতৃত্বে সম্পাদকীয় নীতি গড়ে উঠছে কি না–এগুলোর সমন্বয় করতে না পারলে, এসব রোগ বা ব্যাধি মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে যাবে।’

এ সম্পর্কে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘একজন সম্পাদকের ১৫ বছর সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। সেই অভিজ্ঞতা নেই তারপরও একজন সম্পাদক হচ্ছেন কীভাবে? একজন মালিক সম্পাদক হচ্ছেন, কীভাবে হচ্ছেন? অথবা একজন রিপোর্টার সম্পাদক হচ্ছেন। এগুলোর নীতিমালা করতে হবে।’

আর্থিক নিরাপত্তার সঙ্গে পেশাগত মানোন্নয়ন ও মর্যাদাবোধ জড়িত। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘মফস্বল সাংবাদিকদের যদি একটি পরিচয়পত্র ধরিয়ে বলা হয়, এটা দিয়ে সব সুযোগ-সুবিধা নিতে হবে। তাহলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এসব সমস্যা সরকার ও সাংবাদিক নেতাদের দেখা উচিত।’

সাংবাদিক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘ন্যায্য পাওনা দিতে না পারলে মানসম্পন্ন সাংবাদিকতা আশা করা যাবে না। শুধু একটি পরিচয়পত্র দিয়ে সাংবাদিকতা হয় না। ভালো সাংবাদিকতা চাইতে হলে ন্যায্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। শুধু পরিচয়পত্র দিয়ে ছেড়ে দিলে ভালো সাংবাদিকতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়। একটি বিশেষ সুরক্ষা আইন দরকার, ওয়েজ বোর্ড দরকার, নবম ওয়েজ বোর্ড কার্যকর করা দরকার।’

আরো পড়ুন

স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

গণমাধ্যম গবেষক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কিছু পত্রিকা আছে, যেগুলো বাজারে দেখা যায় না। দেয়ালে সেঁটে দেওয়া থাকে। সেই পত্রিকাগুলোর সাংবাদিকরা কী করবেন? বেতন তো দেয় না।’

গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বা নিবন্ধন দেওয়ার আগে মালিকের সক্ষমতা যাচাইয়ের ওপর গুরুত্ব দিলেন এ গবেষক ও সাংবাদিক। তিনি আরও বলেন, ‘একজন মালিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালানোর যোগ্য কি না, ট্যাক্স ঠিক মতো দিচ্ছে কি না, সরকারের নিয়ম-কানুন মেনে চলছে কি না, প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম কি না সেটি দেখতে হবে। এ ছাড়া কাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সেটিও দেখতে হবে।’ তবে বিষয়গুলো যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সরকার ও সাংবাদিক উভয়পক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সম্মানজনক বেতনভাতা না দেওয়া এবং ওয়েজ বোর্ড না মানার ক্ষেত্রে শুধু মালিক নয়, সাংবাদিক নেতারাও দায়ী বলে মনে করেন জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘এটা আদায় করার দায়িত্ব তো ইউনিয়নের। একটা সময় ছিল–বেতন না দিলে ইউনিয়ন গিয়ে মালিক পক্ষকে ঘেরাও করত বা আলোচনায় বসত। তারপর মালিকপক্ষ দিতে বাধ্য হতো। অথচ এখন ইউনিয়নেরই কেউ কেউ গিয়ে সার্টিফিকেট দিচ্ছে, অমুক প্রতিষ্ঠানে ওয়েজ বোর্ড দেওয়া হচ্ছে, আসলে দেওয়া হচ্ছে না। যার যার দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না।’

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা মানহীন এসব আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার নিবন্ধন প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান চালু করতে হলে নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। অবাধ মানে এই নয় যে, যে আসবে তাকেই লাইসেন্স দিতে হবে।’

যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা গণমাধ্যম বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেন সাংবাদিক নেতা সাজ্জাদ আলম খান তপুও। তিনি বলেন, ‘শুধু একটি ল্যাপটপ দিয়ে কেউ কেউ হয়তো অনলাইন পোর্টাল করার স্বপ্ন দেখছেন, প্রতিনিধি নিয়োগ করছেন। আমি বলব তাদের নিয়তে এক ধরনের সমস্যা রয়েছে। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কাঠামো, বেতন কাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার, মর্যাদার প্রশ্নে সবচেয়ে বড় জায়গাটি হচ্ছে তার অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, সেটি তৈরি করে দিতে হবে। এটিকে কুটির শিল্প হিসেবে দেখলে চলবে না।’

আরো পড়ুন

গোপন সমঝোতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকতা

পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ওপর জোর তাগিদ দিয়ে সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘সাংবাদিকতায় যেটার বড়ই অভাব। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতার বেসিক জ্ঞান দেয়। আর কিছু এনজিও, সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেমন–নিমকো, পিআইবিও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তবে সেগুলোর মান নিয়ে সন্দেহ আছে। এনজিওগুলো তো সাংবাদিকতার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেয় না। এরা টাকা নিয়ে ব্যবসা করে। বিদেশ থেকে টাকা আসে, একটা অংশ প্রশিক্ষণের নাম করে খরচ করে, আরেকটা অংশ প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে নেয়। এটা দিয়ে খুব বড় পরিবর্তন হবে না।’

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক আরও বলেন, ‘পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত চর্চা করতে হয়। চর্চাটা নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে করতে হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর সিস্টেমের মধ্যেই থাকতে হবে প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ চলতেই থাকবে। পেশাদারিত্ব বাড়াতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ও সাংবাদিকদের নীতি-নৈতিকতার একটি চার্ট থাকতে হবে। কোনটা করতে পারবে কোনটা করতে পারবে না এগুলোর নীতিমালা থাকতে হবে। এর বাইরে গেলেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এ ছাড়া প্র্যাকটিক্যাল ফিল্ডে প্রশিক্ষণের বিষয়ে সংগঠনগুলোর ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এ গবেষকের মতে, ক্লাব, ইউনিয়ন, বিটভিত্তিক সংগঠনগুলো পিকিনিক, আউটিং, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের, পাশাপাশি কিছু ওয়ার্কশপ, সিম্পোজিয়াম, সেমিনার করতে পারে। সাংবাদিকতার মূল বিষয়, অনুসন্ধানী, ব্যবসা বা অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার নিয়ম-নীতি শেখাতে ডিআরইউ একটা কোর্স চালু করতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে যেটুকু হচ্ছে তা সংগঠিত নয়। সাংবাদিককে আত্ম উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত পড়াশোনা বাড়াতে হবে।
জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘একজন রিপোর্টারের জানতে হবে তার লেখার কারণে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্র ক্ষতির মুখে পড়ছে কি না।’

সাংবাদিকতার যে বিচ্যুতি ঘটেছে সেখান থেকে বের হতে হলে প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক, মালিক, স্টেকহোল্ডার এমনকি পাঠককেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে মত দেন এ গণমাধ্যম গবেষক।

আরো পড়ুন

স্বার্থের দ্বন্দ্বে পরাজিত সাংগঠনিক শক্তি

পেশাগত মান উন্নয়নের বিষয়ে একই রকম মত দিলেন সাংবাদিক নেতা সাজ্জাদ আলম খান। তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সেটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত।’

পেশাগত মান উন্নয়ের ক্ষেত্রে আচরণবিধি প্রণয়ন করতে সাংবাদিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করছে, তাদের সরাসরি সংগঠন থেকে এমনকি পেশা বিদায় করতে হবে।’ এটি করতে পারলে সরাকারি নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

এসএন/এসএ/

Header Ad
Header Ad

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজার রহমান তার ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায় আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। আজ শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিস-সংলগ্ন একটি বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপণ জারির দাবিতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী। অবশ্য এরই মধ্যে তারা কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে করে মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন তারা। আজকের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমাদের অনশন কর্মসূচি শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কারো মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা। যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। রাতে সড়ক অবরোধ ছাড়লেও ফের অবরোধ করা হবে। রাতে রাজধানীতে কাঁচামালবাহী বিভিন্ন সবজির গাড়ি প্রবেশ করে। তাই তারা সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

তারা বলেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিতুমীর ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে থেকে অনশন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। আমরা ৭ দফা দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।

২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।

৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।

৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সদরে ফুলচান (২০) নামে এক রডমিস্ত্রীকে গলাকেটে করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বসাকপাড়া রোড ছোট বিন্নাফৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফুলচান ওই এলাকার স্বন্দেশ মিয়ার ছেলে। দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু জানান, রাত ৮টার দিকে স্থানীয় তার বাড়ির পাশে লোকজন রাস্তার উপর ফুলচানের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তার ধারণা রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮ টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে জবাই করে মরদেহটি ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের চিহিৃত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ
গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪২ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
ছাত্রদল নেতার সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়নে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছাত্রদের চাপে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের হাতে হাতকড়া, ডিম নিক্ষেপ
ওভাল ক্রিকেট টিমের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনল আম্বানি পরিবার
সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস
প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম