সাক্ষাৎকার
‘জাতীয় সরকারের কথা আমরা বলিনি’
শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে দু’বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় এই ছাত্রনেতা ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কৃষক দলের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই নেতা।
বিএনপির কাউন্সিল,সরকার পতনের আন্দোলন, আগামী নির্বাচন, নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ, সরকারের দুর্নীতিসহ সমসাময়িক নানান বিষয়ে তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ-এর স্টাফ রিপোর্টার মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক।
ঢাকাপ্রকাশ: নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো কী?
শামসুজ্জামান দুদু: দলীয় সরকারের বাইরে নির্বাচন করা অর্থাৎ ’৭৩ থেকে সর্বশেষ নির্বাচনের দিকে তাকালে দেখা যাবে দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে কোনো সরকারের পতন হয় না। এই পর্যন্ত পতন হয়নি। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক এমন এক সরকার ব্যবস্থা যারা নির্দিষ্ট সময়ের পর ক্ষমতায় থাকতেও পারে না, ফিরেও আসতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে এই দুটি পদ্ধতির বাইরেও সামরিক শাসন-সামরিক সরকার ছিল, তাদের অধীনেও নির্বাচন হয়েছে। তবে এই তিনটি পদ্ধতির মধ্যে তুলনামূলকভাবে মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছিল। যেটি আওয়ামী লীগ বাতিল করেছে। আমরা মনে করি- তুলনামূলকভাবে ভালো হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক ভাবনা, দল নিরপেক্ষ সরকার।
ঢাকাপ্রকাশ: বর্তমান সরকার যদি আগামীতে একতরফা নির্বাচন করতে চায় সেক্ষেত্রে বিএনপি কী করবে? আন্দোলনেরই বা প্রস্তুতি কতটুকু?
শামসুজ্জামান দুদু: বিএনপির আন্দোলন প্রস্তুতি পর্যায়ে আছে… এখন আমরা যা করছি সেটাকে আন্দোলনের ‘ওয়ার্মআপ‘ বলা যায়। লোডশেডিংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান, প্রায় এক দেড় মাস ধরে দ্রব্যমূল্যে নিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। চূড়ান্ত আন্দোলনের সিদ্ধান্তটা দল এখনো ঘোষণা করেনি, তবে শিগগিরই ঘোষণা করতে পারে।
ঢাকাপ্রকাশ: নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন কে?
শামসুজ্জামান দুদু: আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান। তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করলেও সার্বক্ষণিক আমাদের হৃদয়ের মনিকোঠায় আছেন। সব সময়ই আছেন, আমি যদি মনে করি তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলব তাহলে এখনই কথা বলতে পারি। তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই, কিন্তু আধুনিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে দিয়ে তিনি আমাদের সামনেই রয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই দেশের জনগণ ও বিএনপির জনসমর্থন তারেক রহমানের প্রতি অনুগত।
ঢাকাপ্রকাশ: নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রস্তুতি কতটুকু? খালেদা জিয়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তারেক রহমান নির্বাসিত। তাহলে বিএনপি নির্বাচিত হলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী?
শামসুজ্জামান দুদু: নির্বাচনের জন্য আমরা একশ ভাগ প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে সংসদীয় ব্যবস্থায় পার্লামেন্টারি দল সেটা নির্ধারণ করে থাকে। এখন পর্যন্ত দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বেঁচে আছেন, তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী না হতে চান তাহলে তার সম্মতিক্রমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তা ছাড়া খালেদা জিয়া একটি ভুয়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে কোর্টের কাছে যেতে পারেন। কোর্ট তাকে (খালেদা জিয়া) সাজাপ্রাপ্ত করেছেন, তাই কোর্ট যদি মুক্ত করেন তাহলে তো কোনো অসুবিধা নেই। তখন কোনো বিতর্ক থাকবে না।
ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় সরকার যদি নাম হয় তাহলে তো আওয়ামী লীগসহ সব দলের সেখানে থাকার কথা, তাই নয় কী?
শামসুজ্জামান দুদু: জাতীয় সরকারের কথা আমরা বলিনি। আমরা বলেছি নির্দলীয় সরকার। জাতীয় সরকার বি চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব বলেছেন। জাতীয় সরকার নিয়ে আমরা আন্দোলনটা করতে চাই না। আমাদের আন্দোলন হচ্ছে একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ অবস্থান তৈরি করে নির্বাচন করা। এই নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলনে যারা অংশ নেবেন তারা যদি আন্দোলন পরবর্তী নির্বাচনে পরাজিতও হন তাহলেও তাদের জাতীয় সরকারে রাখা হবে। কারণ নির্বাচন পরবর্তী সরকার হবে জাতীয় সরকার। আন্দোলনকারী ছোট ছোট রাজনৈতিক দল থেকে বড় রাজনৈতিক দল সবাই জাতীয় সরকারে ঠাঁই পাবে।
ঢাকাপ্রকাশ: সরকার আবারও এক তরফা নির্বাচনের উদ্দ্যোগ নিলে কী করবে বিএনপি? কোন পথে হাঁটবে বিএনপির নেতৃত্ব?
শামসুজ্জামান দুদু: সময় মতো সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। সময় বলে দেবে ভবিষ্যত করণীয় কী হবে, কী হওয়া উচিত।
ঢাকাপ্রকাশ: দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার উপলব্ধি কিংবা মূল্যায়ন কী?
শামসুজ্জামান দুদু: দেশ এখন সংকটকাল অতিক্রম করছে। গত ১৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ শাসন করছে। একবারে শেষ মুহূর্তে এসে ১৩/১৪ বছরে এখন এমন একটা সেক্টর নেই যেখানে বিতর্ক বা আস্থাহীনতা তৈরি হয়নি। তারমধ্যে এক নম্বর হচ্ছে সম্প্রতি দেখা দেওয়া জ্বালানি সংকট। বিশেষত বিদ্যুতের সংকট তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে। ঢাকা শহরের একদিক সজ্জিত মনে হচ্ছে, কিন্তু ঢাকা শহরেরই কোনো কোনো জায়গায় তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। সারাদেশে জেলা ও থানাতে কোনো কোনো জায়গায় ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ আসছে না।
দ্বিতীয়ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সংকট। মানুষ থানায় যেতে ভয় পায়, মানুষ পুলিশ দেখলে ভয় পায়। বিশেষত মেয়েরা রাস্তায় একেবারই অনিরাপদ, শিক্ষাঙ্গনেও অনিরাপদ। খাদ্য সংকট অন্য যেকোনো সময় থেকে প্রকট। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।
এ ছাড়া সরকারের যখন শেষ সময় আসে তখন একটা ভোটের মুখোমুখি হতে হয়। এই বছরের শেষে অর্থাৎ আগামী বছরের প্রথমে এই সরকারকে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু অতি সম্প্রতি সরকারের নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একটা ভয়াবহ আত্মসংকটে ভুগেছে। তারা জাতির সর্বনিম্ন আস্থাও অর্জন করতে পারেনি। সেটা কুমিল্লা সিটি নির্বাচন এবং কয়েকটি পৌরসভা, ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে চায় বলে দেশবাসী মনে করেছে। বর্তমান সিইসির বক্তব্য ও পদক্ষেপগুলো সরকারের চিন্তাধারার প্রতিফলন বলে মনে করছে বিরোধীদল।
ঢাকাপ্রকাশ: আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনে কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে বিএনপির। আপনার মূল্যায়ন কী?
শামসুজ্জামান দুদু: এটা নিয়ে নানান জায়গায় নানা কথা রয়েছে। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে সরকার ফেলে দেওয়া ছাড়া যতগুলো ইস্যু যেমন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা –গ্রেপ্তার-নির্যাতন, সরকারের দুর্নীতিসহ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো অব্যাহতভাবে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত সেই আন্দোলন শুরু করিনি।
আমার নেতা তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেছেন- ‘ফয়সালা হবে রাজপথে’। যেটা কে তিনি গণঅভ্যূত্থান বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপির কাউন্সিল হচ্ছে না কেন? কাউন্সিল হতে বাধা কোথায়?
শামসুজ্জামান দুদু: ২০১৬ সালে দলের সর্বশেষ ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী কাউন্সিল হচ্ছে না, এর মানে এই নয় যে, কাউন্সিল আর হবে না। কাউন্সিল হচ্ছে না দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে। হয়তো এমনও হতে পারে এই সরকারের পতনের মধ্যে দিয়ে নতুন একটা পরিস্থিতি তৈরি হলে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতির পরবির্তন হলে আমরা ধুমধাম করে কাউন্সিলের মতো কাউন্সিল করব। সেই কাউন্সিল এই বছরের শেষ দিকে নতুবা আগামী বছরের মাঝামাঝি হতে পারে।
ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপি জনগণ নয়, বিদেশিদের দিকে থাকিয়ে রয়েছে। বিদেশিরা বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী?
শামসুজ্জামান দুদু: এই দেশে বিদেশিদের কাছে ধর্ণা যদি কেউ দিয়ে থাকে সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিদেশিদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্যাডে দলের সভানেত্রীর স্বাক্ষরে দেশে যেন খালেদা জিয়ার সরকারকে সাহায্য না করে সে বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আজকের যিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতি তিনিও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- অর্থনৈতিক সহযোগীদের অধিকার আছে বাংলাদেশে কী হচ্ছে, সেটা জানার । আজকে তারা আবার বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
অতি সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন সরকার-দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। আমেরিকা যখন পুলিশ-র্যাবের ৬/৭ বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তখনেই তারা এই লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তারা অভিযোগ করে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে। কিন্তু তারা এই ধরনের কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
বিদেশিরা আমাদের কাছে দেশের অবস্থা জানতে চাইলে আমরা বলি। তারাও (বিদেশিরা) নিজের থেকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সূত্রে এই সমস্ত বিষয়গুলো জানাতে থাকেন। কথা বলেন। আওয়ামী লীগ নিজেদের কৃতকর্ম ভুলতে পারছে না।
ঢাকাপ্রকাশ: বার্ধক্য ও অসুস্থ হয়েও খালেদা জিয়া জেলে যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে তারেক রহমান দেশে আসার ঝুঁকি নিতে ভীত কেন?
শামসুজ্জামান দুদু: ভীত বলে আমার কাছে মনে হয় না। দেশে এলে ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব এটা যদি তিনি (তারেক) না মনে করেন তাহলে আমি দোষ দেব না। কারণ দুর্নীতির প্রশ্নে নিম্ন আদালত তাকে বেকুসর খালাস দিয়েছেন। সেই বিচারককে কিন্তু দেশ ছাড়া করা হয়েছে। এমনকি সেই বিচারকের স্ত্রী যখন মারা যায় তখনও সেই বিচারক দেশে আসতে পারেননি। তাই যে মানুষ দুর্নীতির মামলায় বেকুসর খালাস পেয়েছেন, উচ্চ আদালতে গিয়ে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। কাজেই এই আদালত নিয়ে বিস্তারিত বলা কঠিন ব্যাপার। কারণ এই আদালতের কতটা স্বচ্ছতা আছে তা বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশে গত ৫০ বছরের ভেতরে বর্তমান সরকারের অধীনে একজন প্রধান বিচারপতিকে জীবন বাঁচানোর জন্য দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিপূর্ণভাবে জামিন পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু কোর্ট দেননি। তার সন্তান এই ঝুঁকিটা নেবেন কি না- আমি মনে করি, এটা তারেক রহমানের বিষয় নয়। বিষয়টি হচ্ছে দলীয় সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত দল তাকে দেবে কি না, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দল নেয়নি, তার আইনজীবীরাও দেননি। সেই হিসেবে প্রথমে তার দল ও আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নেবেন, পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। সেজন্য আমার কাছে মনে হয় তিনি দেশে আসেননি এতে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই।
ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপিতে নেতৃত্ব সংকট আছে কী? আপনি কী মনে করছেন?
শামসুজ্জামান দুদু: বিএনপিতে নেতৃত্বের সংকট নেই বরং সমসাময়িক সময়ে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব দলে কাজ করছেন। প্রবীণ, যুবা, তরুণরা সব মিলে মিশে কাজ করছে।
ঢাকাপ্রকাশ: ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকারের সময়ে শুরুতে মাইনাস টু ফর্মূলা বলা হলেও পরবর্তীতে বিএনপি দাবি করে মাইনাস ওয়ান ফর্মূলা? এর ব্যাখ্যা কী?
শামসুজ্জামান দুদু: এটা তো প্রমাণিত। মাইনাস টু যদি হতো তাহলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকতেন না। তারও পরিণতি হতো বেগম জিয়ার মতোই। বেগম জিয়ার পরিণতি এখন তিনি জেলখানায় আছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আছেন শেখ হাসিনা। কাজেই প্রথমত ‘ফর্মূলা টু নয়, ফর্মূলা ওয়ান’। দ্বিতীয়ত, যে কোর্ট ও সরকারের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাজাপ্রাপ্ত করা হয়েছে, যে কেসটা দেখানো হয়েছে সেটা তো একটা ভুয়া কেস। কারণ গায়েবি মামলা বলে লক্ষ লক্ষ মামলা আছে। পুলিশ বলেছে কিছু ঘটুক আর না ঘটুক মামলা তো হয়েছে। তেমনি ভুয়া একটি মামলায় খালেদা জিয়াকে একটি ভুয়া বিচারের মুখোমুখি করে আদালতে রাখা হয়েছে। এখানে সংবিধান আদালত কাজ করছে না, নীতি নৈতিকতা কাজ করছে বলে আমার কাছে মনে হয় না।
ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপি ঢাকায় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বলে দলের ভেতরে-বাইরে কথার গুঞ্জন রয়েছে। একই দাবি আদায়ে পরবর্তী আন্দোলনে কী সেই সংকট উত্তোরণ সম্ভব?
শামসুজ্জামান দুদু: খারাপ থাকলে ভালো থাকবে। এখন এদের খারাপ সময় তো, ভালো সময়ও আসবে। খারাপ সময়ে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা তো ভালো করতে পারছে না। আর যারা ভালোর জন্য নেতৃত্ব দিছে সেও তো বিএনপি। তাই আগামী দিনে বিএনপির নেতৃত্বেই পরিবর্তন আসবে। অতীতে আন্দোলন নিয়ে সাফল্য ব্যর্থতা যাই থাকুক না কেন- এখন ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আগামী দিনের যে পরিবর্তন আনতে হবে গণতন্ত্র স্বাধীনতার স্বপক্ষে। এই দেশে কখনই গণতন্ত্রের আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। এখন পর্যন্ত যত আন্দোলন গণতন্ত্রের স্বপক্ষে হয়েছে সব সফল হয়েছে। হয়তো এক বছর আগে নয়তো এক বছর পরে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
ঢাকাপ্রকাশ: অভিযোগ আছে বিএনপি জনসম্পৃক্ত ইস্যুর চেয়ে দল ও দলের নেতা-নেত্রীদের গুরুত্ব দেয়?
শামসুজ্জামান দুদু: সব কথা বাদ দেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিতে বলেছেন…এতে বুঝা যায় হারিকেন জ্বালানোর যে ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী করেছেন, এই দাবি নিয়ে তো বিএনপি রাস্তায় নেমেছে। আর রাস্তায় নামার কারণে প্রধানমন্ত্রীর মুখে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দলের নেতাদের হারিকেন ধরিয়ে দিতে বলেছেন মানে তিনি অস্থির হয়ে গেছেন। সেই কারণে দ্রব্যমূল্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি, মানুষের নিরাপত্তা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়া নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করেছে।
ঢাকাপ্রকাশ: ঢাকাপ্রকাশ-কে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
শামসুজ্জামান দুদু: ঢাকাপ্রকাশ-কে ধন্যবাদ।
এসএন