বেপরোয়া ভেজাল খাদ্য ও ওষুধের পৃষ্ঠপোষক, শাস্তির বিধান জরুরি
সারাদেশে অসাধু মজুতদারি, পণ্যে ভেজাল মেশানো, ফরমালিন মেশানো, ভেজাল ওষুধ তৈরীসহ সব ধরনের অপরাধ বেড়ে গেছে। এর মূলে মানুষের অনৈতিকভাবে টাকার পাহাড় গড়ার স্বপ্নই মূলত দায়ী। যার বুনিয়াদি ত্রুটি দেশে সুশিক্ষার অভাব। সৎ ও নৈতিক নাগরিক সৃষ্টির শিক্ষা নিশ্চিত না হলে এ দেশে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, কালো টাকার দৌরাত্ম্য , অসাধু মজুতদারি, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার প্রবণতা থামার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেজ্ঞরা।
বিশেজ্ঞদের দাবি, শিক্ষা ব্যবস্থা যেভাবে চলছে তাতে সুনাগরিক সৃষ্টির চেয়ে নামধারী শিক্ষিত, সার্টিফিকেটধারী মুর্খ নাগরিক সৃষ্টির ব্যবস্থা মাত্র। এ অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। দেশের শিক্ষাকে আধুনিকীকরণের নামে সৃজনশীল পদ্ধতি একদিকে শিক্ষার মানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, অন্যদিকে লিখন ফল ছাড়াই বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর পাস পদ্ধতি অশিক্ষা ও কুশিক্ষাকে উৎসাহিত করছে। শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়ায় সংকট রেখে, ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করণের মাধ্যমে দক্ষ সুনাগরিক সৃষ্টি সম্ভব নয়। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হতে সুনাগরিক সৃষ্টি না হওয়া এবং শিক্ষাবাণিজ্য দেশের প্রেক্ষাপটে বেড়ে যাওয়াই এর জন্য দায়ি। তাছাড়া রাজনৈতিক, সামাজিক মূল্যবোধ তলানির দিকে চলমান হওয়ায় অসাধু, অনৈতিক এবং দুর্নীতিবাজ নাগরিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। শুধু পণ্যে ভেজাল নয় রাজধানীসহ দেশে ভেজাল ও নকল ওষুধের সরবরাহ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এসব ভেজাল ও নকল ওষধু খেয়ে অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ খাওয়া যাবে না।
এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া কাউকে কোনো প্রকার ওধুষ দেওয়া যাবে না। এসব ভেজাল ওষুধের বিষয়ে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মানুষ আর কতভাবে প্রতারিত হবে। কোনটা ভেজাল আর কোনটা ভেজাল না সেটা আমরা কীভাবে বুঝব। এসব ভেজাল ওষুধ বন্ধ হবে কবে।রাজধানীর অলি গলিতে ও বড় বড় ওষুধ মার্কেটগুলোতে ভেজাল ও নকল ওষুধে সয়লাব। মানুষের রোগমুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার অন্যতম অপরিহার্য উপাদান ওষুধ। সুস্থ জীবনযাপন করতে ওষুধের ব্যবহার কোনো না কোনো সময় করতেই হয়। জীবন রক্ষায় সহায়ক হিসেবে কার্যকরী সেই ওষুধই এখন জীবন ধ্বংসের কারণ। এমনটি কারো কাম্য না হলেও কিছু নৈতিকতা বর্জিত মানুষ মুনাফার লোভে উৎপাদন করছেন ভেজাল ও নকল ওষুধ। যা খেয়ে জীবন রক্ষা বা সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মানবদেহ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অপরাধ বিশেজ্ঞরা বলছেন, সারাদেশে হঠাৎ অপরাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি বিশেষের দুর্নীতি, প্রশাসনিক অসততার ভন্ডপরিবেশে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীবদ্ধ নানা পেশার মানুষের সাথে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থকারী অসাধু ও অনৈতিক ব্যবসাকান্ড দেশের মানুষের জীবন যাত্রাকে নরক যন্ত্রণায় পরিণত করছে। সারাদেশে অসাধু ও অনৈতিক তথাকথিত ব্যবসায়ীরা সমগ্র দেশকে টাকার জোরে অসৎ উপায়ে জিম্মি করে রেখেছে। যার ফলে একদিকে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে দরিদ্র সাধারণ মানুষ তথা স্বল্প আয়ের জনগণ দিন দিন দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় নিপতিত হচ্ছে। প্রথম পক্ষ জাগতিক স্বর্গ সুখের ভেলায় ভেসে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে নানা রকম বিড়ম্বনা ও হতদরিদ্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
অন্যদিকে এদেশের সাধারণ মানুষ সুখ-শান্তি এবং সুস্বাস্থ্য হারিয়ে নানা রকম নরক যন্ত্রণায় ভুগছে। নির্যাতিত, নিপীড়িত, হতদরিদ্র মানুষের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান, শিক্ষা-চিকিৎসার নিশ্চিয়তা প্রতিহত হচ্ছে। বাস্তবে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ তরকারি রান্নার জন্য পিঁয়াজ কিনতে পারে না, অথচ টনকে টন পিঁয়াজ নদীতে ও ভাগাড়ে জমা হতে দেখা যায়। সয়াবিন তেলের অসাধু মজুতদারির কারণে দোকানে-বাজারে সয়াবিন তেল মিলেনা।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের সাময়িক নজরদারিতে সয়াবিন তেলের অবৈধ মজুত ধরা পড়লেও সংশ্লিষ্টদের এহেন অনৈতিক কান্ড বন্ধ করার মতো তেমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অপরাধিদের দিতে দেখা যায়নি। সামান্য টাকা জরিমানা এবং সয়াবিন তেলের গায়ে যে দাম পাওয়া গেছে সে দামে তেল বিক্রিতে বাধ্য করাতে অসাধু মজুতদারদের প্রকৃত শাস্তি হয়েছে বলে সাধারণ মানুষ মনে করেনা। তাদের সকল মজুত করা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা সরকারি ভাবে করা হলে ভয়ে অবৈধ মজুতদাররা এমন মজুতদারির সাহস আর করতো না।
সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসছে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেলের অসাধু মজুতের পর চাল ব্যবসায়ীরা নতুন করে চাল নিয়ে একটি চক্র চালবাজি করছে। আসলে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা ও শাস্তি না হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা একের পর এক সমগ্র দেশের নিত্যপণ্যের বাজারকে কৃত্রিমভাবে অস্থিতিশীল করে যাচ্ছে। যার ফলে সাধারণ নাগরিকের ক্রয় ক্ষামতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। একবার কোন দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি হলে তা পরবর্তীতে আর কমতে দেখা যায় না। এমন অবস্থা থেকে দেশের বাজার ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে সরকার প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দয়ভাবে শাস্তির কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এমন পদক্ষেপ ছাড়া দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার স্থিতিশীল করা সম্ভব নয় বলে মতামত দিচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ।
এদিকে ঢাকাপ্রকাশ-এর আরেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভেজাল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ ব্যক্তিরা বলছেন, 'একটি ভুল চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য দিনের পর দিন ভুগতে হচ্ছে।' মিরপুরের শাপলা ফার্মেসির সহকারী নজরুলের দেওয়া ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রিকশাচালক আবুল মিয়া। আবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, 'আমাকে নজরুল কী ওষুধ দিল, সেটা খেয়ে আমার পেটে জ্বালা করে, ব্যথা করে, পরে আমি হাসপাতালে ১৫ দিন ধরে ভর্তি চিকিৎসা নিচ্ছি। নিয়ম-কানুন মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপন করেও ভেজাল, মানহীন ওষুধের প্রভাবে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। কেউ চরম কষ্টে জীবন পার করছেন, কেউবা অল্প বয়সেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন।
ভেজাল ওষুধ বাজারে সয়লাব এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভবান হওয়ার জন্য ভেজাল ওষুধ তৈরী করে বাজারজাত করে আসছে। ওই সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্হা নেব। ইতিমধ্যে আমাদের পক্ষথেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে জোরালো ভাবে পদক্ষেপ নিবো।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সক্ষমতা অনুযায়ী চাহিদার ৯৫ শতাংশ ওষুধের জোগান দিচ্ছে প্রস্তুতকারক দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া আমেরিকা, কানাডা, জাপানসহ বিশ্বের ১৫৬টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়ানোর পাশাপাশি ২০১৮ সালে ‘মেডিসিন প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ পদকে ভূষিত হয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে এত সক্ষমতা অর্জন সত্ত্বেও বাজারে কেন ছড়াচ্ছে নকল ওষুধ, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরেও।
প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সমন্বয় করে অভিযান চালাচ্ছে। অধিদপ্তরও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট কম থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান মেলে। পরে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের ভিত্তিতে এসব কারখানায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের পর ভেজাল ওষুধ তৈরির কার্যক্রম কিছুটা কমলেও নিয়মিত নজরদারি না থাকায় ফের তা শুরু হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ভেজাল ওষুধ ও নিম্নমানের ওষুধ কারবারি চক্রের প্রধান টার্গেট ঢাকা। এসব ওষুধ খেয়ে অনেক মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন। রাজধানীর মিটফোর্ড ও এর আশপাশের এলাকায় এ চক্রের সদস্যরা কারখানা গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে চাহিদা বাড়তে থাকায় তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে তোলে কারখানা। এসব কারখানার তৈরি নকল ওষুধ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি ভেজাল খাবার ও ওষুধের অসাধু একটি চক্র ধরার পর পুলিশ বলছে, একমি ল্যাবরেটরিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের ওষুধ নকল করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিত তারা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ভেজাল খাবারের কেমিকেল ও একমি, স্কয়ার, জেনিথ, কোম্পানিসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ, ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও খাবারে ভেজাল দেওয়া কেমিকেল উদ্ধার করা হয়।
এসব অপরাধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, ডেমরা, কাজলা, আরামবাগ, লালবাগ, মিটফোর্ড, বাড্ডা ও মিরপুর এলাকা থেকে কয়েকজন নকল ওষুধ প্রস্তুতকারকদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, এই চক্রটি সারাদেশে নকল ওষুধ ও খাবারে কেমিকেল ছড়িয়ে দিত। তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলকে টার্গেট করে ভেজাল পণ্য বাজারজাত করে আসছিলো। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং এ এসব চক্রদের নজরে রাখা হয়েছে।
আইনে খাবারে ভেজাল ও নকল ওষুধ উৎপাদনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আছে ১০ বছরের কারাদন্ড। তবে জরিমানার অঙ্ক নির্দিষ্ট না থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হয় না। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের ও বিধান রয়েছে। কিন্তু মামলা হওয়ার পর তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ফেলে খাবারে ভেজাল দেওয়া ও নকল ওষুধ উৎপাদনকারীরা। তাদের টাকার অভাব নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারদের ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া কাউকে ওষুধ দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, তাছাড়া ভেজাল কেমিকেলের ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. নাজমুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ভেজাল খাবার ও নকল ওষুধ সেবনের কবলে পড়ে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে এবং মানুষ অল্পতেই বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। এসব কেমিকেল ও ওষুধ খেয়ে প্রতিনিয়তই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কিছু সুবিধাভোগী এসব কাজ করছে এদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
জানতে চাইলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, খাবারে কেমিকেল ও ভেজাল ওষুধ বিপণন করা গণহত্যার সমান। এদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। খাবার এবং ওষুধ দেখে চিনে খেতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল মালেক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, যারা সাধারণ মানুষের খাবারে কেমিকেল মিশায় তারা মানুষ না আমানুষ। যারা খাবারে কেমিকেল ও নকল ওষুধ দিয়ে মানুষের ক্ষতি করছে তাদের বিচার হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. বেলাল হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেছেন, যারা খাবারে ভেজাল, কেমিকেল ও নকল ওষুধ এবং ভুয়া ডায়াগনিস্টিকের ব্যবসা করছে তাদের ধরতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভিন্ন সময় অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া ভোক্তা অধিদপ্তরের সহ-পরিচালক ফাহমিনা আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা ভেজাল ও নকল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। এবং কোনো প্রকার অনিয়ম পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সারাদেশে খাদ্যে ভেজাল ও অবৈধ্য মজুতদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছেন। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
এসব বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, খাবারে কেমিকেল ও ভেজাল ওষুধের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলেছে। যারা খাবারে ভেজাল ও নকল ওষুধের কার্যক্রম চালায় তাদের বিরুদ্ধে শক্ত আইনে শাস্তির বিধান দরকার। তাহলে হয়তো এসব অপরাধ কমে আসবে।
এএইচ/কেএম/এএজেড/এএস