বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সমালোচনার মুখে আর এস ফাহিম
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের সঙ্গে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আর এস ফাহিম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আর এস ফাহিম চৌধুরী দেশে স্টান্ট রাইডার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তার প্রকৃত নাম কামরুল হাসান চৌধুরী। স্টান্টবাজির পাশাপাশি একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেও বেশ পরিচিত তিনি। তরুণদের প্রতি রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তবে এবার সেই জনপ্রিয়তার মাঝেই নতুন করে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে।
মূলত সমালোচনার জন্ম হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নিজস্ব ভূমিকা নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পেইজ এবং ইউটিউবে তার নামে বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন। তাদের দাবি আর এস ফাহিম একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
শুধু তাই না, সম্প্রতি একটি অডিও কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। যেখানে শোনা যায় আর এস ফাহিম ফোনের অপর পাশে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে ফোনালাপে তার বড় ভাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব শিক্ষার্থীদেরকে কীভাবে বাড়ির ছাদ থেকে গুলি করছে তার বর্ণনা দেন। এ ঘটনাটি নিয়ে ফাহিমকে এসময় হাসাহাসিও করতে শোনা যায়।
অভিযোগ উঠেছে এই রাজীবের ছত্রছায়ায় আর এস ফাহিম বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। এমনকি তার নিজের গাড়িতে সিটি কর্পোরেশনের লোগো লাগিয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রভাব খাটাতেন।
এদিকে ফোনালাপটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েছেন এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। আন্দোলনে নিজের এমন অবস্থানের কারণে প্রকাশ্যে সকলের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্যেও বলছেন অনেকে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে কাজ করার জন্য যে অর্থ তিনি পেয়েছেন তা আন্দোলনে নিহত কোনো পরিবারকে দিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন কেউ কেউ।
এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার (২১ আগস্ট) আর এস ফাহিম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে ইতোমধ্যে একটি কন্ট্রোভার্সি তৈরি হয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে আন্দোলনের সময় আমি শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম না। যে কল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়েছে সেখানে শুধুমাত্র আমার কথাগুলোই শোনা যাচ্ছে। কিন্তু কলে তো দুজন মানুষের কথোপকথন হয়।
তিনি বলেন, কলের অপর পাশে ছিল তৌহিদ উদ্দিন আফ্রিদি। যেহেতু তার কথাগুলো বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আমার কথাগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেহেতু বলাই যায় আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ভিডিও বার্তায় এমন কর্মকাণ্ডকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার সঙ্গে তুলনা করেন এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তার দাবি ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ডটিতে তাকে কল্লা (মাথা) কেটে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আর সেখান থেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই অংশটুকু কেটে নেওয়া হয়েছে।
আর এস ফাহিমের মতে, তাকে নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন তারা নিজেও আওয়ামী লীগের সমর্থক। তার ভাষ্য, কথা দুজনের মধ্যে হলেও এখন সবাই আমাকে দোষ দিচ্ছে সকলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। তবে কেউ তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে কথা বললেই তার কাছে কল আসছে ডেপুটি কমিশনারের কাছ থেকে। এসময় তিনি একটি কল রেকর্ড শোনান যেখানে একজন ব্যক্তিতে ফোনে তৌহিদ আফ্রিদিকে নিয়ে ভিডিও বানাতে নিষেধ করেন। ফাহিম সেই ব্যক্তিকে ডেপুটি কমিশনার নাজমুল বলে পরিচয় প্রকাশ করেছেন।