সিলেটে এবার বালতি-কলস হাতে প্রতিবাদ
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পানির বিল বৃদ্ধি নিয়ে গত ৩ মাস ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন নগরবাসী। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বালতি ও কলসি হাতে রাস্তায় নেমে আসেন নগরীর ১ ও ৭নং ওয়ার্ডের নারী-পুরুষ। প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে সিসিককে দ্রুত এ সিদ্ধান্ত থেকে হতে আসার দাবি জানান তারা।
এদিকে, নগরবাসীর এমন প্রতিবাদের মুখে পানির বিল কমাতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সিসিক। এবার পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে নগরভবনে আগামী ১ অথবা ২ জানুয়ারি সিসিক মেয়র আরিফুল হকের উপস্থিতিতে পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র মঙ্গলবার বিকেলে এসব তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) পানির বিল বাড়িয়ে দেয়। তারপর থেকে এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১৩ ডিসেম্বর নগরভবনে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সিসিক কাউন্সিলরদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মেয়রের প্রতি কাউন্সিলররা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে পানির বিল কমানোর দাবি জানান। তবে এ বিষয়ে ওই দিন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে সিসিকের সাধারণ সভা ডেকে ‘নতুন সিদ্ধান্ত’ হবে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন মেয়র আরিফ। তবে ২০ ডিসেম্বর পেরিয়ে পুরো মাস শেষ হতে চললেও এ নিয়ে আর বৈঠক হয়নি নগরভবনে। যার ফলে ক্ষুব্ধ ও হতাশ নগরবাসী প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছেন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে বিকাল ৩টায় নগরীর ফাজিলচিশত এলাকায় ১ ও ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বালতি-কলসি হাতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়।
জানা যায়, চলতি বছরের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নগরীতে মাসিক পানির বিল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয় সেই সভায় কার্যকর করা হয় ১ জুলাই থেকে। কিন্তু পানির বিল বৃদ্ধির বিষয়টি সিসিক গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে সবাইকে জানায় সিদ্ধান্তের ৪ মাস পর অর্থাৎ- গত ২ সেপ্টেম্বর। এরপর থেকে বাড়তি পানির বিল ঘিরে ‘জল ঘোলা করা’ শুরু হয় সিলেটে। করোনা পরিস্থিতিতে নানামুখী সংকটে পড়া মানুষ বাড়তি বিলের বোঝা টানতে নারাজ।
আবাসিক সংযোগে প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি ডায়ামিটারের (ব্যাস) লাইনে বিল ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বিল ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা এবং এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ১ হাজার টাকার পরিবর্তে দেড় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি সংযোগে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে মাসিক বিল ৪০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে ৭০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বাড়ানো হয়। এ ছাড়া, এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনে বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মাসিক বিল দেড় হাজার পরিবর্তে ২ হাজার ২০০ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা এবং সরকারি গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়।
এসইউ/এএন