ছেলেদের নির্যাতনে থানায় পিতার অভিযোগ
জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরে ছেলেদের নির্যাতন সইতে না পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ বাবা মফিজ আলী (৮০)। উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের চৈতাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। (০৫ নভেম্বর) শনিবার দুপুরে দুর্গাপুর থানায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ বাবা। সোমবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব উল আহসান।
পিতাকে মারধরের ঘটনায় পুত্রদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিলের পর ওইদিন রাতেই বৃদ্ধ বাবাকে হুমকি ও তার মেয়ে মাহমুদা আক্তার (৪০) কে মারধর করে গুরুতর আহত করে ছোট ছেলে রাসেল আলী। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে (০৭ নভেম্বর) সোমবার সকালে ওই মেয়ের ছেলে মামুন (১৬) কে মারধর করে অভিযুক্ত দুই ছেলে। পরে তাকেও দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করা হয় এবং ছেলেদের মারধরের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বৃদ্ধ মফিজ আলী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মফিজ আলীর দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছেন। তবে বড় ছেলে মোঃ রাশিদ আলী (৩৫) ও পুত্রবধূ মর্জিনা খাতুন (২৫) এবং ছোট ছেলে মোঃ রাসেল আলী (২৫) ও পুত্রবধূ জোবেদা খাতুন (২২) অনেক সময়ই অহেতুক বিষয়ে অশালিন আচরণ ও মারপিট করে। বৃদ্ধ বাবার বাকি জীবনের সঠিক ভাবে ভরণ পোষন করবে এই শর্তে জীবনের শেষ সঞ্চয় ১৮ লাখ টাকা নেন ছেলেরা।
কিন্তু এক মাস পর হতেই ভরণ পোষন বন্ধ করে দেয়। এদিকে (০২ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বসত বাড়ীর উত্তর পাশের্ব জমিতে এক মেয়ের লাগানো আমগাছ ছেলেরা কেটে নিতে চাইলে নিষেধ করেন বাবা। এ-সময় ছোট ছেলে রাসেল আলী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও টেনে হিঁচড়ে মাটিতে ফেলে রাখে বৃদ্ধ বাবাকে। পরবর্তীতে এই বিষয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করলে খুন করার হুমকি প্রদান করেন ছেলেরা।
বৃদ্ধ মফিজ আলী বলেন, আমার দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। আমার এক মেয়ের নিজের কেনা এক কাটা জমিতে থাকা দু'টি গাছ কেটে নিতে চাইলে আমি নিষেধ দিলে বড় ছেলের হুকুমে আমাকে মারধর করে ছোট ছেলে। তিনি আরও বলেন, আমার বাকি জীবনের সঠিক ভাবে ভরণ পোষন করবে এই শর্তে জীবনের শেষ সঞ্চয় ৪টি গরু বিক্রির ১৮ লাখ টাকা নেয় বড় ছেলে কিন্তু কিছুদিন পরই ভরণপোষণ বন্ধ করে দেই বর্তমানে মেয়েরা আমার দেখাশোনা করছে।
কিন্তু মেজো মেয়ে আমাকে রান্না করে খাওয়াই তাকেও বাড়ি থেকে দৌড়িয়ে দিতে চায় এবং মেঝো মেয়েকে জবাই করতে গেছিলো। আমি বিষয়টি গ্রামের মড়লদের জানালে তাঁরা সালিস বসিলে তাদেকেও অপমানিত করছে বড় ছেলে ও দুই পুত্রবধূ। তাই আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী পিতা থানায় অভিযোগ করেছেন। ঘটনাস্থলে আমরা গিয়েছিলাম কিন্তু অভিযুক্ত ছেলেদের পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান মোবাইল ফোনে বলেন, বাবাকে নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো অভিযুক্ত ছেলেরা পলাতক রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এএজেড