রেকর্ড এডিট দাবি, দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা
দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
নওগাঁয় বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন সৌখিনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাত থেকে ওই দুই নেতার কথোপকথনের ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এর আগে উপজেলার গোবরচাঁপা বাজারে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে স্থানীয় থানায় মামলা করেন বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন সৌখিন। এ মামলায় আরও ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে "এডিট করা ফেক মোবাইল কল" সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে তার এবং দলীয় ইমেজ ক্ষুণ্ন করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাময়িক বহিষ্কৃত ওই বিএনপি নেতা।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বদলগাছী সাংবাদিক সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন সৌখিন।
এসময় তিনি বলেন, বিগত ২০১৩ সালে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলকভাবে আওয়ামী লীগ দুইটি মামলা করে। একটি বিষ্ফোরক ও একটি দ্রুত বিচার আইনে। আমাকে গ্রেফতার করা হয় ক্লিন হার্ট অপারেশনে। সেখানে আমাকে অনেক নির্যাতন করা হয় শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতি করার জন্য। আমি জানতে পেরেছি যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম খানের সাথে আমার একটি কল রেকর্ড প্রকাশিত হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যা সম্পূর্ণ এডিট করা ফেক মোবাইল কল। কল রেকর্ডটি আগস্ট মাসের।
প্রকৃত তথ্য এই যে, শামসুল আলম খান ইতঃপূর্বে তার একটি ব্যাংক চেক গচ্ছিত রেখে আমার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করেন। যার নম্বর: CD /A- ২৮৮৫০৯২ (ডাচ বাংলা ব্যাংক)। এভাবে তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আরও অনেকের কাছ থেকেই তিনি টাকা ধার করেছেন বলে লোকমুখে জেনেছি। অতি সম্প্রতি জানতে পারি যে, তিনি কিছু কিছু পাওনাদারদের ধারের টাকা পরিশোধ করছেন। এ কারণে আমি তার নিকট আমার পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য কল করেছিলাম। এছাড়া আমার পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য তার সামনাসামনি হলে সে আমাকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ভয় দেখাতো। আমি গত ২০১৪ সালের ৫নভেম্বর আওয়ামী লীগের বিস্ফোরক মামলার বিবাদী হওয়ার কারণে আগস্ট মাসের কল রেকর্ডটি নতুন করে "এডিট" করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত শামসুল আলম খানের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, পাওনা সংক্রান্ত ও কল রেকর্ডটি এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেটা আবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশও করা হয়েছে। শুধুমাত্র আমাকে এবং আমার দল বিএনপিকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই ফেক কল রেকর্ডটি ছেড়ে দেওয়া দেয়। মর্যাদাহানি করার জন্যই তারা এই মিথ্যা এবং বানোয়াট রেকর্ড ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মামলার বিবাদী হওয়ার কারণেই আগস্ট মাসের আমার টাকা সংক্রান্ত রেকর্ডটি ছেড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সেই সাথে দুষ্কৃতিকারীদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খান বলেন, ঘটনার দিন নওগাঁয় আদালতে একটা কাজে গিয়েছিলাম। ওই সময় একটা অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। নিজেকে চাংলার সৌখিন পরিচয় দিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।