ছাত্রলীগের পাল্টাপার্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে তিন দিনে তাড়াহুড়া করে সম্মেলন ছাড়াই ছাত্রলীগের ৯ কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই পুরো জেলায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। কমিটি দেয়ার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা।
গত ৩ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি সাক্ষরিত সদর, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, ত্রিশাল, ত্রিশাল পৌর, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর, মুক্তাগাছাসহ ৯ টি জায়গায় কমিটি ঘোষণা করে। এর পর থেকেই জেলা জুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে দুই পক্ষ একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে। দুই পক্ষই পরস্পর বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে।
এরপর বিকালের দিকে নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গনে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদিকে, কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে জেলার মুক্তাগাছা ও গৌরীপুর উপজেলায় পাল্টাপাল্টি কর্মসুচি পালন করছে ছাত্রলীগ।
টাউনহলে দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ ওমর ইসলাম জানান,বিকেলে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিনের বাসার দিকে যাচ্ছিলেন তখন পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের কর্মীরা এবং বহারাগত কিছু পুলাপাইন নিয়ে টাউনহলের সামনের রাস্তায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরী করে।
এছাড়া আনন্দমোহন মোহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের আহ্বায়ক শেখ সজল বলেন, দীর্ঘ দুই বছর আমাদের কমিটি দিয়েছে। তাই, আমরা নেতাকর্মীরা এক সাথে স্লোগান দিচ্ছি। তবে, কেউ যদি হামলা করে পরিস্থিত উত্তপ্ত করে তাহলে সাধারণ ছাত্রদের রক্ষায় আমরা প্রস্তুত আছি।
এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের হুমায়ুন কবির গ্রুপের ছাত্রনেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুল আলম ফাহাদ বলেন, আমরা মুখোমুখি অবস্থানে নেই। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেয়ায় তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি।
এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যাহার আদেশ বাতিল করে আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্বহাল করেছে। আমরা তাকে আবারও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে চাই। এবিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি স্বপদে বহাল হওয়ার পরেও তাড়াহুড়া করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও সভাপতি আলামিন মিলে ৯ টি কমিটি দিয়েছে। যা সম্পুর্ণ অবৈধ ও নিয়ম বর্হিভুত।
এবিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন বলেন, আমরা অবৈধ কোন কমিটি দেইনি। কারণ, হুমায়ুন কবির ৬ তারিখে পদবি ফিরে পেয়েছে। আমরা ২ তারিখ থেকে পাঁচ তারিখ রাত ১২ টার আগেই কমিটি ঘোষণা করেছি। অর্থ সুবিধা নিয়ে কমিটি দিয়েছি। তা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নিব।
এবিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, টাউন হল এলাকায় দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন আহত হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন,টাউনহল প্রাঙ্গনে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে।
এএজেড