ঝিনাইদহে খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছি

খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনাইদহের গাছিরা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুরের গুড় ও রসের চাহিদা বাড়তে থাকায় গাছিদের ব্যস্ততাও বাড়ছে। প্রতিদিন বিকাল হলেই খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে দা-ঠুঙ্গি-পাতিল নিয়ে মাঠে মাঠে ছুটছেন গাছিরা।
দেশে খেজুরের গুড় ও রসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় জেলার প্রতিটি গ্রামের গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরির পর তা বাজারে বিক্রি করছেন তারা। আবার অনেকে গাছিদের বাড়িতে হাজির হয়ে দেখেশুনে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের গুড় ও রস।
জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিকাল হলেই গাছিরা গাছ কাটার বিশেষ অস্ত্র ‘গাছি-দা’ নিয়ে ছুটছেন মাঠের দিকে। কেউ কেউ রাস্তার পাশে বা জমির আইলে থাকা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন। টাটকা রস পেতে গাছিরা প্রতিদিন বিকালে গাছ কেটে তাতে মাটির ভাড় (পাতিল) ঝুলিয়ে রাখছেন। পরদিন ভোরবেলা সেই রস তারা সংগ্রহ করেন। এরপর বিশেষ প্রক্রিয়ায় রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরির কাজ করেন গাছিরা। এভাবে সপ্তাহ ধরে গুড় জমিয়ে তা হাটে বিক্রি করেন।
এ বছর ঝিনাইদহের বিভিন্ন হাটে গুড়ের দাম মান ভেদে একেক রকম। তবে সবচেয়ে খাঁটি খেজুরের গুড়ের কেজি প্রায় তিনশ টাকা। তবে সরাসরি গাছিদের কাছ থেকে গুড় কিনলে দাম কিছুটা কম হতে পারে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যসত্বভোগী ব্যবসায়ীরা ঝিনাইদহের খেজুর গুড়ের হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছেন। গুড়ের মান অনুযায়ী হাটগুলোতে কেনাকাটাও শুরু হয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী আফসার আলী বলেন, ‘এখনও হাটে ভালো গুড় পাওয়া যাচ্ছে। তবে খাঁটি গুড় ও পাটালির দাম একটু বেশি।’
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের গাছি আকবার মিয়া বলেন, ‘এ বছর অসময়ের বৃষ্টির কারণে ধান গোছাতে সময় লেগেছে। এজন্য খেজুর গাছের পরিচর্যা সঠিক সময়ে করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে হাটে খেজুরের গুড় উঠতে দেরি হয়েছে। এখন বাজারে ভালো মানের গুড় পাওয়া যাচ্ছে।’
সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের গাছি সামাদ হোসেন বলেন, ‘অন্য বছর ডিসেম্বর মাসেই খেজুরের গুড় বাজারে পাওয়া যায়। এবার বৃষ্টির কারণে গাছ কাটতে দেরি হওয়ায় গুড়ের যোগান কম। আর সপ্তাহখানিক পর থেকে বাজারে প্রচুর গুড় পাওয়া যাবে। ভালো গুড়ের দাম একটু বেশি।’
এসএন/এএন
