বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

গবেষণা ক্ষেত্র

আমি সবসময় একটা জিনিস ভীষণভাবে খেয়াল করি যে, প্রেমিক প্রেমিকারা একে অপরের হাতটা সবসময় ধরে রাখে। আচ্ছা এটা কেন? হাত না ধরে রাখলে কি ছেলেটা পালাবে নাকি মেয়েটাকে কেউ তুলে নিয়ে যাবে? প্রশ্ন গুলো মাথার মধ্যে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে কারণ প্রশ্নের উত্তর যদি সঙ্গে সঙ্গে মিটিয়ে না ফেলি তাহলে সেখান থেকে আরেক প্রশ্নের উদ্ভব হবে আমার মস্তিষ্কে। তাই ঠিক করলাম আজ পার্কে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে আর প্রেমিকার সামনে প্রেমিককে জিজ্ঞাসা করবো, এক অপরের হাত তারা কেন ধরে? খুঁজতে খুঁজতে অনেক কষ্টে একটা যুগল দেখলাম। সেখানে মেয়েটা ছেলেটার হাতটাকে এমন ভাবে শক্ত করে ধরেছে মনে হয় ছেলেটা হিলিয়াম গ্যাসে তৈরী, যেকোনো সময় উড়ে যেতে পারে। আমি দৌড়ে গিয়ে তাদের সামনে দাঁড়ালাম।

-আপনাদের সঙ্গে একটু কথা বলতে পারি? ছেলেটা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল-
-জ্বী বলুন।
-আসলে প্রশ্নটা আপুর কাছে। আপু আপনি ভাইয়ার হাতটা এত শক্ত করে ধরেছেন কেন? উনার হাঁটার অসুবিধাও তো হতে পারে? আর তা ছাড়া উনিও তো আপনাকে ভালই বাসে। আপনাকে রেখে তো আর চলে যাবে না।
আমার কথাটা শুনে প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনেই বড় বড় চোখে তাকিয়ে ফেলল। মেয়েটা রেগে গিয়ে বলল-
-ও আমার বিএফ। ওর হাত আমি যেভাবে ইচ্ছা ধরব। আপনি বলার কে? এই তুমিও কিছু বলছো না কেন?
-আরে রাগ করো না। ভাই মনে হয় সিঙ্গেল। তাই এভাবে হাঁটার শান্তি সম্পর্কে জ্ঞান নাই। ভাই আপনি কি সিঙ্গেল? আমি তাদের দু’জনের কথা শুনে একটু ভেবে বললাম-
-আমি তো একাই আছি। আমার কোন ভাই বোন নেই।
-আরে ভাই আমি বলতেছি যে আপনি প্রেম করেন না?
-ওহ! না।
-তাহলে আপনি এই শান্তি থেকে দূরে আছেন।
এটা বলেই তারা চলে গেল। আমি তাদের দিকে তাকিয়ে আছি। মেয়েটা ছেলেটার হাতটা এখন আর ধরছে না। কিন্ত দুজনেই বার বার হাসি দিয়ে তাকাচ্ছে পিছনের দিকে। আমার শরীর কেমন যেন কাঁপছে। কেন কাঁপছে? এটা ভাবতেছি এমন সময় চা ওয়ালা তালেব মিয়া এসে বলল-
-ভাই আপনের ফোনে রিং অইতাছে। কল টা ধরেন।
আমি খেয়াল করলাম ফোনের ভাইব্রেশনের কারণেই আমার মনে হচ্ছিল শরীর কাপঁছে। ফোন রিসিভ করে বললাম-
-কে বলছেন?
-আমি তোর মামা বলছি। তোর ফোনে আমার নাম্বার সেভ করা নেই?
-আসলে কলটা কেটে যেত তাই খেয়াল না করেই রিসিভ করেছি।
-কোথায় তুই?
-আমি তো এখন পার্কে।
-এরকম দুপুরবেলা পার্কে কি তোর?
- একটা গবেষণার কাজে এসেছি।
- থাক আর গবেষণা করতে হবে না। আমার বাসায় আয়।
-আমার গবেষণাতো এখনো শেষ হয়নি মামা।
-আমি আসতে বলেছি আয়।

মামা ফোন রেখে দিল। আমি কিছুই বললাম না। আমার গবেষণা শেষ না হলে আমি কোথাও যেতে পারব না। তাই আবার গেলাম অন্য একটা যুগলের কাছে। বাড়িতে এসে দেখি সবাই গোমড়া মুখে বসে আছে। চারদিকে ভাল করে খেয়াল করে দেখলাম মামাও এসেছে। আমি তেমন ভ্রুক্ষেপ না করে আমার রুমের দিকে পা বাড়ালাম।
-দাঁড়া এখানে। মামার ডাক শুনে দাঁড়ালাম। তারপর বললাম-
-জ্বী মামা।
-তোর আমার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল।
-আসলে একটা কাজে আটকে গেছিলাম।
-কাল তুই সারাদিন বাড়িতে থাকবি। কোথাও যাবি না।
-আমার একটা জরুরি কাজ আছে। কথাটা শুনে মামা কিছুক্ষণ চুপ থেকে আম্মুকে বলল-
-আপা আপনার ছেলেকে কাল তালা দিয়ে হলেও আটকে রাখবেন।
আমি রুমে চলে গেলাম। মামা আমার রুমে এসে ঘুম থেকে উঠাল। বলল রেডি হতে। আমি ঘুমো চোখ নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা টি-শার্ট পরলাম। আর একটা কালো প্যান্ট। মামা আমাকে দেখে বলল-
-এসব কি পরেছিস? তোকে নিবোই না আমি। আমি মামাকে বললাম-
-ধন্যবাদ মামা। আমি ঘুমাতে যাই। উনি রেগে ধমক দিয়ে বলল-
-থাপ্পড় দিয়ে কান গরম করে ফেলব। ভাল জামা কাপড় পরে আয়।

আমি চুপচাপ ওয়াশ রুমে গিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখলাম। অনেক দিন পর এত মনোযোগ দিয়ে নিজের মুখটা দেখছি। তারপর একটা সাদা কালারের শার্ট পরে নিলাম। নিজেকে তখন সাদাকালো টেলিভিশন মনে হচ্ছিল। তারপর মামার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই উনি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন। এ রকম দীর্ঘশ্বাস ফেলার কারণ বিরক্তি প্রকাশ। এরকমভাবেই মানুষ নীরব বিরক্তি প্রকাশ করে থাকে। তারপর বললেন-
-চল। আমি একটা বিশাল বাড়িতে প্রবেশ করলাম। মামা আমাকে ফিসফিস করে বললেন-
-এটা খুব ধনী ব্যক্তির বাড়ি।

সত্যিই এটা খুব বড় লোক মানুষের বাসা। চারদিকে অনেক কর্মচারী ঘর গুছানোর কাজে মহাব্যস্ত। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে এই বাড়ির মালিকের কাছে আমরা আসিনি। মামা নিশ্চয়ই এখানকার কোনো কর্মচারীর কাছে এসেছেন। মনের সংশয় কাটানোটাই এখন আমার কাছে সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই মামাকে বলেই ফেললাম-
-মামা আমরা এখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করতে এখানে আসলাম কেন? কর্মচারীদের নিজের বাসায় গেলেই পারতাম।
-মামা আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। আর সঙ্গে সঙ্গে এক জন ভদ্রলোক এসে বলল-
-আরে আলমগীর। তুমি এসেছো তাহলে?

মামা আমার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে লোকটার সঙ্গে কুশল বিনিময় করল। তারপর আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল। আমরা গিয়ে সোফাতে বসলাম। মামা আমার পাশেই বসেছে। হঠাৎ মামা লোকটাকে বলল-
-শরীফ তোমার বাড়িটা কিন্তু খুব ভাল করেই সাজিয়েছো। শুনেই আমি মামার দিকে তাকালাম। তারপর ঐ লোকটার দিকে। মনেই হচ্ছে না মামার বন্ধুর বাড়ি এটা।
-তোমার মেয়েকে ডাকো। মামার কথা শুনে লোকটা ভিতরে গিয়ে একটা মেয়েকে নিয়ে আসলো। মেয়েটা সুন্দরী। কিন্তু আমাদের সামনে এভাবে আসার কারণটা জানতে মামাকে বললাম-
-মামা মেয়েটা এভাবে আমাদের সামনে বসে আছে কেন? মামা আমার কানের সামনে ফিসফিস করে বলল-
-তোর বিয়ে এ মেয়ের সঙ্গে হবে।
-বিয়ে?
-হুম। বিয়ে। যদি কিছু জানার ইচ্ছা থাকে জিজ্ঞাসা কর।
আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। মেয়েটা হাতের আঙ্গুল মোচড়াচ্ছিল। এ রকম করার কারণ হলো অস্বস্তি। আমি মেয়েটাকে সরাসরি বললাম-
-আপনি কি এই বিয়েতে রাজি না? কথাটা শুনে মেয়েটা আমার দিকে তাকাল আমিও তাকালাম। আর তখনি মেয়েটার বাবা বলল-
-আমার মেয়ে আমার কথা কখনো অমান্য করে না বাবা। মেয়েটা ব্যক্ত করতে না পারলেও ওর ভাবভঙ্গী দেখেই আমি বুঝতে পারছি ও রাজি না। কিন্তু আমি এমন ভাব করলাম যেন কিছুই বুঝিনি। আমি মামাকে বললাম-
-মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে। মামা খুশি হয়ে বলল-
-আলহামদুলিল্লাহ। সামনের সপ্তাহে তাহলে দিন তারিখ ঠিক করা হবে। আমরা তারপর বাসায় চলে আসলাম।
রাত বারোটা বেজে ছত্রিশ মিনিট। জানালার পাশে বসে আছি। হাতে একটা জ্বলন্ত সিগারেট। এই পর্যন্ত সাতটা সিগারেট শেষ করলাম। কিন্তু একটাতেও টান দেইনি। আমি সিগারেট খাই না। খেতে পারি না। কিন্তু চিন্তা করার সময় আমি হাতে সিগারেট রাখি। এটা হাতে থাকলে চিন্তায় গভীর ভাবে আচ্ছন্ন থাকতে পারি। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। একটা অচেনা নাম্বার। রিসিভ করলাম। কানে দিয়ে বললাম-
-খুব দোটানায় ছিলেন। ফোন করবেন কি না ঠিক করতে পারছিলেন না। তাই না?
-চিনতে পারলেন কি করে?
-সিমটা আজই নিয়েছি। আর নাম্বারটা আপনার বাবার কাছে ছাড়া আর কারো কাছে নেই। এত রাতে নিশ্চয়ই আপনার বাবা আমাকে কল দিবেন না।
-বিরক্ত করলাম?
-যদি বলি বিরক্ত হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম?
-একটু কথা ছিল আপনার সঙ্গে।
-জানি। কলটা আপনি কথা বলার জন্যই করেছেন।
-কথাটা খুব জরুরি।
-বিয়েটা করব না আমি। ভয় পাবেন না।
-আপনি জানলেন কীভাবে আমি এটার জন্য কল দিয়েছি?
-আপনার আচরণ দেখে আমি তখনি বুঝতে পেরেছিলাম।
-তাহলে বললেন কেন আমাকে পছন্দ হয়েছে?
-সেটাই তো। বলেন তো কেন বলেছি?
-টাকা পয়সার জন্য।
-নাহ। একটা গবেষণা করার জন্য।
-গবেষণা?
-হুম।
-শুনেছি আপনি কিছুই করেন না। তাহলে কিসের গবেষণা করেন আপনি? আর কিছু করছেন না কেন?
-নিজেকে বাচাচ্ছি।
-মানে?
-চাকরি কারা করে বলুন তো?
-যাদের টাকা দরকার।
-আমার বাবার সে টাকা আছে। আর আমি ছাড়া আর কেউ সে টাকার ভাগ নিতে আসবে না।তাই শুধু শুধু কষ্ট করে লাভ কী?
-হাহাহা।
-হাসছেন যে?
-না এমনি। কতদিন আপনার গবেষণা চলবে?
-সাতদিন। এই সাতদিন আপনি আমার প্রেমিকা হয়ে থাকবেন।
-গবেষণাগার কোথায়?
-আপাতত ধানমন্ডি লেকে।
-আচ্ছা কাল দেখা হচ্ছে।

প্রথম দিন-
ফোনে রিং হচ্ছে। আমি ঘুম থেকে উঠে রিসিভ করে বললাম-
-কে?
-আমি।
-ওহ। সরি আজ আমার এক জায়গায় যেতে হবে। আজ আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারব না।
-কোথায় যাবেন?
-আমি বাতাসের মতো। কখন কোথায় যাই ঠিক নেই। রাখছি। ফোন রেখে দিলাম। আমি ঘুমাব এখন। ঘুম আমার কাছে এখন সব চেয়ে বেশি ইম্পর্টেন্ট।

দ্বিতীয় দিন-
-কেমন আছেন ভাই?
-আরে তালেব মিয়া। কেমন আছো?
-আমাগো আর থাহা। আছি আর কি। চা খাইবেন না?
-হুম। দাও দাও।
ও একটা কাপ ধুয়ে ফ্লাক্স থেকে চা বের করতে ব্যস্ত হয়ে গেল। আর আমি অপেক্ষা করছি একটা মেয়ের জন্য। লোকটা চায়ের কাপ এগিয়ে দিল। আমি চায়ে চুমুক দিচ্ছি আর ভাবছি আজ প্রথম আমি কোন মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। চা শেষ করতেই মেয়েটা এসে সামনে দাঁড়াল।
-কাল আসলেন না কেন?
-কারণটা কাল বলেছিলাম।
-কেমন আছেন?
-ঘোলা!! চা খাবেন?
-খেতে পারি।
-তালেব মিয়া ওনাকে একটা চা দাও। তালেব মিয়া ওনাকে এক কাপ চা দিল। আমি বললাম-
-বসে খান। উনি চায়ে একটা চুমুক দিয়ে বলল-
-এটাই আপনার গবেষণাগার?
-হুম। পুরো পার্কটাই আমার জন্য গবেষণাগার।
-আপনি আমার নাম জানেন না?
-প্রয়োজন হয়নি তাই জানার চেষ্টা করিনি।
-মানে?
-আমার প্রয়োজনীয় ছাড়া তেমন কিছু আমার মস্তিষ্কে রাখি না। যেমন আমার যদি কোনো তথ্য এখন দরকার পরে তাহলে সেটা জানার আগ্রহ থাকে। আর আমি সেটা জানতে চাই তখন। প্রয়োজনীয়তা ফুরালে আমি সেটা আর দ্বিতীয় বার ভাবি না। আস্তে আস্তে সেটা আমার মাথা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে আপনার নামটা আমার দরকার পরবে এখন। বলুন।
-আমি ময়ুরী।
-ওহ আচ্ছা। আর আমি হলাম কথাটা শেষ না করতেই ময়ুরী বলল-
-আপনি পোলেন। আমি জানি।
আমি একটা হাসি দিলাম। তারপর দেখলাম যে ময়ুরীর চা শেষ। তাই আমি তালেব মিয়া কে খুঁজতে চারদিকে একবার মাথাটা ঘুরালাম। দেখলাম দূরে তালেব মিয়া চা বিক্রি করছে। কাপটা নিতে ভুলে গেল। আমি উচ্চ স্বরে ডাকলাম-
-তালেব মিয়া!!! তালেব মিয়া আমার ডাক শুনে বলল-
-ভাইসাব আইতাছি। ময়ুরী বলল-
-ওনাকে চিনেন কীভাবে?
-ওর ছেলেকে আমি পড়াই। সেই কারণেই পরিচয়। আমার কাছে টাকাও নেয় না।
-কিন্তু আজ তো আমাকেও খাইয়েছে। টাকা দেব আমি।
-দিবেন? দিন তাহলে। তালেব মিয়া চায়ের কাপ নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আমি বললাম-
-দাঁড়াও। টাকাটা নিয়ে যাও।
-না না। আমি টাকা নিমু না।
-আরে মেমসাহেব খুব ধনী। সমস্যা নেই। নাও। ময়ুরী একটা পাঁচশো টাকার নোট বের করে দিল। তালেব মিয়া একটা হাসি দিয়ে বলল-
-আমার কাছে খুচরা নাই। আমি বললাম-
-রেখে দাও পুরোটা।
তালেব মিয়া পান খেয়ে দাঁতগুলো লাল করে ফেলেছে। আর সেই দাঁত গুলো বের করে একটা হাসি দিল আর আমার কানের কাছে এসে বলল-
-ভাইজান ভাবীটা কিন্তু মাশা আল্লাহ। অনেক সুন্দর।
-হাহাহা। যাও। তালেব মিয়া চলে যাবার পর ময়ুরী বলল-
-কী বলল লোকটা?
-আপনার নাকটা যদি বোঁচা না হতো তাহলে নাকি আপনাকে অনেক সুন্দর লাগতো।
-মানে? আমি সুন্দর না?
-ও তো সেটা বলেনি। ময়ুরী রাগে নাক ফুলিয়ে বলল-
-ওকে পাঁচশো টাকা দেওয়াটাই ভুল হইছে।
-আমার কাছে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগে। যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।
এটা শুনে ওর মুখে হাসি চলে আসলো। খুব খুশি হয়েছে তা বুঝা যাচ্ছে। মেয়েরা এরকমই। প্রশংসা করে তাদের মনে জায়গা করতে বিশাল এক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। তারপর আমি বললাম-
-পাঁচশো টাকা দিন তো।
-কেন?
-আপনার প্রশংসা করলাম। তালেব মিয়া প্রশংসা না করায় টাকা দেওয়াটাই ভুল মনে হচ্ছে আপনার। আর আমি প্রশংসা করলাম তাই আমাকে পাঁচশো টাকা দিলে নিশ্চয়ই খুব একটা খারাপ লাগবে না। তাই না?
এবার ময়ুরী হেসে ফেলল। খুব জোরে জোরে হাসল। আমিও হাসলাম ওর হাসি দেখে তবে দাঁত দেখিয়ে নয়। মুচকি হাসি যেটাকে বলে।

তৃতীয় দিন-
-আপনার গবেষণা কতটুকু এগোল?
-থেমে আছে।
-প্রেমিক প্রেমিকাদের হাত ধরা নিয়ে এত টেনশন করার কি আছে?
-আপনি জানলেন কি করে আমি হাত ধরা নিয়ে টেনশন করছি?
-মনে করে দেখেন তো আমাকে চিনতে পারছেন কি না?
-নাহ চিনি নাই।
-কিছুদিন আগে আপনি আমাকে আমার বিএফকে লেইকে প্রশ্ন করেছিলেন। আমি কেন তার হাত ধরে রেখেছি। দুদিন ইচ্ছা করেই বলিনি। ভাবছিলাম আমাকে চিনতে পারবেন। কিন্তু না।
-ওহ। হুম। মনে পরেছে। আপনার বিএফ কেমন আছে?
-ভাল। আচ্ছা আপনি আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন না কেন? আমি কি দেখতে খারাপ?
-আগে বলুন আপনার কাছে বিয়ে মানে কী?
-বিয়ে মানে এমন একটা সম্পর্ক যেটা আজীবন থাকে। সুখে দুঃখে একে অপরের পাশে থেকে এগিয়ে চলা। ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখা দুজন দুজনকে।
-তাহলে আপনি দেখতে খারাপ অথবা সুন্দর হলেই বা কী? আপনার কথায় তো সুন্দর হওয়ার ব্যাপারটা বললেন না।
-আপনি কি জানেন আপনি খুব বেশি ভালো মানুষ?
-আজ জানলাম। আচ্ছা আপনার বিএফ জানে আপনি আমার সঙ্গে আছেন? আর সাতদিনের জন্য যে আমার প্রেমিকা হয়েছেন?
-সেটা না হয় পরেই বলব। আগে বলুন কেমন মেয়ে পছন্দ আপনার? আমি মাথাটা একটু চুলকাতে চুলকাতে বললাম-
-যে মেয়ে পার্কে আমার হাত ধরে হাঁটবে। আমি মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই ওর হাত থেকে ছুটে দৌড়ে লুকিয়ে যাব। ও আমাকে খুঁজে বের করে আমার হাতটা আরও শক্ত করে ধরবে যেন আমি পালাতে না পারি। কিন্তু আমি আবার পালাব। ময়ুরী হাসতে হাসতে বললৃ
-আর কেমন কেমন গুণ থাকতে হবে?
-রান্না ভাল জানতে হবে। যে আমাকে আমার পছন্দের রান্না করে খাওয়াবে। তবে তা খুউউব অল্প হতে হবে।
-অল্প কেন?
-মজাদার খাবার অল্প খেতে হয় তাহলে বেশ সুস্বাদু লাগে।
-আর কী কী?
-যে আমাকে রাগাতে পারবে।

চতুর্থ দিন-
আমি আর ময়ুরী হাঁটছি। হঠাৎ ময়ুরী আমার হাতটা ধরল। আমি হাতটা ছাড়িয়ে নিলাম। ময়ুরী বলল-হাতটা ছেড়ে দিলেন কেন?
-আপনার বিএফ যদি দেখে রাগ করবে।
-আপনি তো এখন আমার বিএফ। অন্তত সাতদিনের জন্য।
ময়ুরী আবার আমার হাতটা ধরল। খুব শক্ত করে ধরল। আমার ইচ্ছা হচ্ছে হাতটা ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে কোথাও লুকাতে। কিন্তু হাতটা ছাড়তে পারছি না। এটা কেমন যেন এক আকর্ষণ। ঠিক এই কারণেই প্রেমিক প্রেমিকারা হাত ধরে রাখে বুঝতে পারলাম।

পঞ্চম দিন-
আজ ময়ুরীর হাতে একটা ছোট বক্স। এতটাই ছোট যে যেগুলো দিয়ে বাচ্চারা হাড়ি পাতিল খেলে। আমি বললাম
-এটাতে কী?
-এটাতে বিরিয়ানি। আপনার জন্য।
-এত ছোট বক্সে করে বিরিয়ানি কেন?
-আপনিই তো বললেন আপনার ভালবাসার মানুষের আপনার পছন্দের খাবার অল্প করে খাওয়াবে।
-কিন্তু আপনি তো কথাটা না শুনেই ময়ুরী একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল
-আমিতো আপনার প্রেমিকা।
-ধন্যবাদ।
-প্রেমিকা হওয়ার জন্য?
-না বিরিয়ানির জন্য।

ষষ্ঠ দিন-
আজ অনেকক্ষণ হলো পার্কে ময়ুরীর জন্য অপেক্ষা করছি। ওর আসার কোনো খবরই নাই। ফোনে চার্জ আছে কিন্তু টাকা নাই। তাই কল দিতে পারছি না। কেমন যেন রাগ হচ্ছে আমার। আমি কারও উপর খুব সহজে রাগ করি না। কিন্তু ময়ুরীর উপর রাগ হলো। কিন্তু কেন? মানুষের তো সমস্যা থাকতেই পারে। এটা ঠিক ও আসবে বলেছে। কিন্তু আসেনি। এতে আমার এত রাগ হচ্ছে কেন? কি হচ্ছে এসব? এসব ভাবতেই দেখলাম কে যেন পিছন থেকে ডাকছে-
-পোলেন সাহেব। আমি মাথা ঘুরিয়ে দেখি ময়ুরী। তারপর ও বলল-
-রাগাতে পারলাম, তাই না? আমি একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়ালাম।

সপ্তম দিন-
ময়ুরীর সঙ্গে একটা ছেলে এসেছে। ওর বিএফ। আমাকে দেখে লোকটা বলল-
-আপনার গবেষণা কেমন চলল? আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম-
-গবেষণা শেষ হয়নি এখনো! তবে আপনার প্রেমিকা হেল্প করাতেই অনেকটা হয়েছে। ময়ুরী তারপর বলল-
-ও আমার বন্ধু। বিএফ না।
-মানে? আমার মানে শুনে ময়ুরীর সঙ্গের ছেলেটা বলল-
-জ্বী ভাই। ও আমার ফ্রেন্ড। খুব ভালো ফ্রেন্ড। ওইদিন ও এমনিতেই আমার হাতটা ধরেছিল আর তখনি আপনি এসে বললেন আমার প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলবেন। তাই ও ফাজলামো করেছিল।
-ওহ। আচ্ছা ময়ুরী আমি যাই। আর কাল এঙ্গেজমেন্টে আমি যাব না। আপনার সঙ্গে আর কথা হবে না মনে হয়।
-চলে যাবেন?
-হুম।
এটাই বলেই চলে আসলাম। ভাবতেই অবাক লাগছে ওর সঙ্গে কাটানো ছয়টা দিন কতই মধুর ছিলো। এখন নিজের উপর রাগ হচ্ছে কেন যে প্রথমদিন ওর সঙ্গে দেখা করলাম না? আজ সকাল ভোরেই আমি বাসা থেকে চলে এসেছি। আমার গবেষণাগারে। আজকে আমি যদি ময়ুরীদের বাড়িতে না যাই তাহলে বিয়েটা ভেঙে যাবে। কিন্তু আমার খারাপ লাগছে কেন? আমি যেরকম মেয়ে পছন্দ করি ময়ুরী সেই গুণ গুলোর অধিকারী। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি। এটাই কি ভালবাসা? না না। আমার এসব ভাবলে হবে না। এখন আমার মস্তিষ্ক কোন চিন্তাতে ব্যস্ত রাখতে হবে। যেমন, গাছের পাতা গুলো যদি ডালার মতো হতো আর ডালা গুলো যদি পাতার মতো হতো তাহলে কেমন হতো? এসব ভাবতে ভাবতেই দেখলামকে যেন আসছে। দূর থেকে মুখটা বুঝা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে ময়ুরী। এটাই হ্যালোসিনেশন। ময়ুরী আর আসবে না এখানে। কিন্তু একটু পর খেয়াল করে দেখলাম এটা ময়ুরীই। ও আমার সামনে এসে বলল-
-এখানে বসে বসে সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখলেই গবেষণার নামে কথা বলতে চান। তাই না?
-মানে? কি বলছেন এসব? আবোলতাবোল বলবেন না।
-উঠুন। আপনাকে আমিই বিয়ে করব। তারপর আপনাকে গবেষণা করে দেখব আপনার আসল মতলব কী। উঠুন।
ও আমার হাত ধরে হাটছে। হাতটা খুব শক্ত করে ধরেছে। ছুটে যেতে চাইলেও পারব না। এটাই গবেষণার ফলাফল। কি হচ্ছে এসব কিছুই বুঝতে পারছিনা। ময়ুরীর মুখে কেমন যেন দুষ্টুমির হাসি। আচ্ছা এ হাসি দিয়ে ও কী বুঝাচ্ছে?

 

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’