বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

আন্তর্জাতিক ও কূটনীতিক মহলে বাড়ছে তারেক রহমানের গুরুত্ব

বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতনের পর দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ ও কূটনীতিকরা।

গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুকসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পৃথক এসব বৈঠকে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দলটির অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন।

এসব বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, দল ঘোষিত ৩১ দফার ওপর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপির বর্তমান অবস্থান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে জাতীয় সরকার ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করাসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা স্থান পায়। অনেক দেশই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা দেখিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নসহ একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহের কথাও জানিয়েছে।

সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে গত বছরের ১৩ জুলাই ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি, যা ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার পাশাপাশি প্রশংসাও পায়। ফের নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিষয়টি। এখন রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের সেই ৩১ দফা শুধু মুখের কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে তার অর্থবহ বাস্তবায়নও চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলের বিভিন্ন ফোরামে কথা বলছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি নানাভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেও রাষ্ট্র সংস্কারে এই রূপরেখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে সেই ৩১ দফা বাস্তবায়নই হবে মূল লক্ষ্য। কয়েকদিন ধরে দলের ধারাবাহিক মতবিনিময় সভায় জনগণের সমর্থন নিয়ে জাতীয় সরকার ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট সংবিধানে সংযুক্ত, একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়াসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান।

রাষ্ট্র মেরামতে ঘোষিত ৩১ দফা শুধু কথার কথা নয়; এর বাস্তবায়ন চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলীয় বিভিন্ন ফোরামে দলের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টির পক্ষে ব্যাখ্যা প্রদানসহ দলের অবস্থান তুলে ধরছেন। গত কয়েক দিন ধরে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এ বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তারেক রহমানের বক্তব্যের পর বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

দলটির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, তারেক রহমান একজন ডায়নামিক ও আইকনিক নেতা, যা গত ১৬ বছরে তিনি প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বক্তব্য, কথা বলার ধরন ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিএনপিকে বিশ্বদরবারে উঁচু স্থানে নিয়ে গেছে।

সর্বশেষ গত বুধবার ঢাকা বিভাগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে গত বছর আন্দোলন চলাকালে রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে প্রথমে ২৭ দফা এবং পরবর্তী সময়ে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়। তখন অনেকেরই ধারণা ছিল, এটা কথার কথা। কিন্তু গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর এক নতুন তারেক রহমানকে দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বক্তব্যে নেতাকর্মীরা মুহূর্তের মধ্যেই শান্ত হয়েছেন। আর কোনো ফ্যাসিবাদ যেন রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দখল করতে না পারে, সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।

২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেন। যার ৬নং দফায় বলা আছে, বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চ-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা’ (আপার হাউস অব দ্য লেজিসলেচার) প্রবর্তন করা হবে। মূলত দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর বর্তমান সরকার (আওয়ামী লীগ) হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে বিএনপি জানায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. নূরুল আমীন বেপারি বলেন, বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য দলের ভেতরেও গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। এ কথা সত্য যে, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জনগণের বিপুল ভোটে ক্ষমতায় আসবে। সুতরাং সেভাবেই এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। একপর্যায়ে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে ব্যাপকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চায় দলটির হাইকমান্ড। রূপরেখাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩১ দফার প্রতিটি দফা নিয়ে সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরিকল্পনা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্র মেরামতের এ রূপরেখায় কিছু সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে পেশাজীবী ও সুধী সমাজের মতামত নেওয়ার চিন্তা করা হয়। যার মুখ্য ভূমিকায় থাকবে দলের মিডিয়া সেল। এসব পরিকল্পনা নিয়ে একাধিকবার মিডিয়া সেলের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন তারেক রহমান।

জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের মালিকানা দেশের জনগণের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবার মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা দিয়েছেন। যেমনটি দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা ঘোষণা করেছিলেন। সবমিলিয়ে ৩১ দফাকে সামনে রেখে এগোলে বাংলাদেশ হবে একটি দৃষ্টান্ত। বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

 

বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা 

১. সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী একটি নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।  

২. গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি  ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

৩. সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী সভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করা হবে।

৪. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

৫. বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে।

৬. আস্থাভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এমন বিষয় ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। 

৭. রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও বিশিষ্টজনের মতের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ সংশোধন করা হবে। ইভিএম নয়, সকল কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা হবে।

৮. রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠান আইনি সংস্কারের মাধ্যমে পুনঃগঠন করা হবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।    

৯. বাংলাদেশের সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা হবে। অধঃস্থন আদালতগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের কর্তৃত্ব সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত হবে। বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক সচিবালয় থাকবে। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে বর্ণিত ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হবে। এজন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে বিচারক নিয়োগ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৫ (গ) ধারা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও মানদণ্ড সংবলিত ‘বিচারপতি নিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করা হবে।

১০. যোগ্য, অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন সংস্কার ও পুনঃগঠন করা হবে। বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে যোগ্যতা একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

১১. গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা ও সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, মিডিয়া সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী এবং অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য মিডিয়া ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা হবে। স্বাধীন সাংবাদিকতার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাগর-রুনি হত্যাসহ সকল সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।  

১২. গত দেড় দশকে অর্থপাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে 'দুদকের' স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।

১৩. সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অবসান ঘটানো হবে। সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ প্রদান করা হবে। 

১৪. অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হবে। প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা হবে।  

১৫. দলমত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতি-গোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত অধিকার ও পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে। 

১৬. মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হইবে। শিশু-শ্রম বন্ধ করে তাদের জীবন বিকাশের উপযোগী পরিবেশ ও ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হইবে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা হবে। পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকলসহ সব বন্ধ শিল্প কারখানা আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা, দেশে বিমানবন্দরসহ সব ক্ষেত্রে হয়রানি মুক্ত সেবা ও ভোটাধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হবে। চা-বাগান, বস্তি, চরাঞ্চল, হাওড়-বাওর ও মঙ্গাপীড়িত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সুষম উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।  

১৭. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি বাতিল করা হবে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ করা হবে। আমদানি নির্ভরতা পরিহার করে নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং উপেক্ষিত গ্যাস ও খনিজ সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৮. বৈদেশিক সম্পর্কের সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের মধ্যে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাশত করা হবে না। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

১৯. স্বকীয় মর্যাদা বহাল রেখে প্রতিরক্ষা বাহিণীকে সব ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হবে।

২০. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও অন্য কোনো জনপ্রতিনিধির খবরদারি মুক্ত স্বাধীন স্থানীয় সরকার নিশ্চিত করা হবে। মৃত্যুজনিত কারণ কিংবা আদালতের আদেশে পদ শূন্য না হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ করা হবে না। আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশবলে বরখাস্ত করা হবে না।

২১. স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা হবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা হবে এবং তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।

২২. যুবসমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাঙ্খাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

২৩. নারী ও শিশুদের জীবনমান বিকাশে যুগোপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

২৪. শিক্ষাক্ষেত্রে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই মানের শিক্ষা ও মাতৃভাষায় শিক্ষা অগ্রাধিকার পাবে। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে। 

২৬. স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করে সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে। দারিদ্র্য বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করা হবে।

২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্যবীমা, পশুবীমা, মৎস্য বীমা ও পোল্ট্রি বীমা চালু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে। রপ্তানিমুখী কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প খাতকে প্রণোদনা দেওয়া হবে।

২৮. সারা দেশে সমন্বিত বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। দেশের সমুদ্র বন্দর ও নৌবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে।

২৯. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও ক্ষতি মোকাবিলায় টেকসই ও কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে। বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। বন্যা ও খরা প্রতিরোধে খাল-নদী খনন পুনঃখনন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। 

৩০. তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সর্বক্ষেত্রে এর প্রয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। মহাকাশ গবেষণা এবং আনবিক শক্তি কমিশনের কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক সুযোগ সমৃদ্ধ করা হবে।

৩১. একটি জাতীয় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহরে ও গ্রামে কৃষি জমি নষ্ট না করে এবং নগরে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ কমিয়ে পরিকল্পিত আবাসন ও নগরায়নের নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠির আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নির্বাচন আগে না সংস্কার—এমন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। তবে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার হলে বিএনপি তা মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশে কোনো সংঘাতের শঙ্কা নেই। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রকাশ করবে এবং জনগণের সামনে নিজেদের নীতিমালা উপস্থাপন করবে। পরে জনগণ তাদের উপযুক্ত নেতৃত্ব বেছে নেবে—এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ। তাই নির্বাচন জরুরি।

সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের মিল রয়েছে। তবে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখলে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম থাকে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডানপন্থি রাজনীতির উত্থান হচ্ছে এবং তারা বলছেন যে গণতন্ত্র এখন হুমকির মুখে। যদি কোনো দল স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে, তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে। তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

বিএনপির ভেতরে কিছু ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারসহ কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এসব ঘটনা অনেকটাই কমে এসেছে।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। জানা গেছে, উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (চায়না অফিস) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন— ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন (২৬), মো. শাহ আলম (৩৬), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৯), মো. মোস্তাফিজুর রহমান (২৬) ও মো. রতন রানা (২৫)। গত ৩০ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, বিরামপুর পৌরশহরের ঘাটপাড় এলাকার অধ্যাপক ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ডা. মোখলেছুর রহমান তার জমির দেখাশোনার জন্য ফারুক হোসেন নামে একজনকে নিয়োগ দেন। ফারুক সেখানে একটি দোকান নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান। গাছগুলোতে পর্যাপ্ত ফল ধরার পর আসামিরা জমি দখলের পরিকল্পনা করে এবং চাঁদা দাবি করে।

গত রবিবার (৩০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা চালায়। তারা ১৫৭টি বড়ই গাছ, ৮৪টি কমলা গাছ ও ২৩টি আম গাছ কেটে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধরের একপর্যায়ে লোহার শাবল দিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করা হয়। ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ব্যবসার নগদ ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়।

হামলার পর ফারুক হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়।

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ফারুক হোসেনের দায়ের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Header Ad
Header Ad

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই

অভিনেতা ভ্যাল কিলমার। ছবি: সংগৃহীত

হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই। ‘টপ গান’ এবং ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ খ্যাত এই তারকা ১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) লস অ্যাঞ্জেলেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কণ্ঠনালীতে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া শেষ সময়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন, যা তার শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তোলে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভ্যাল কিলমার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যায়। অভিনেতার মেয়ে মার্সিডিজ কিলমার জানান, শেষ সময়ে তার বাবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারছিলেন না।

আশির ও নব্বই দশকে হলিউডে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন ভ্যাল কিলমার। তার সোনালি চুল, আকর্ষণীয় চেহারা এবং অনবদ্য অভিনয়ের কারণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের প্রিয় তারকা। ‘টপ গান’, ‘রিয়াল জিনিয়াস’, ‘উইলো’, ‘হিট’ এবং ‘দ্য সেন্ট’-এর মতো ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয় এখনো দর্শকদের মনে অমলিন।

বিশেষ করে ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য ডোর্স’ সিনেমায় কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী জিম মরিসনের চরিত্রে তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ১৯৯৫ সালে ‘ব্যাটম্যান ফরএভার’ ছবিতে তিনি ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন, যা তাকে সুপারহিরো সিনেমার জগতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। যদিও ১৯৯৭ সালের ‘ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন’ সিনেমায় এই চরিত্রে জর্জ ক্লুনি অভিনয় করেন, কিন্তু ভক্তদের মনে ব্যাটম্যান হিসেবে গেঁথে ছিলেন ভ্যাল কিলমারই।

ক্যান্সারের কারণে বহু বছর অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন কিলমার। তবে ২০২১ সালে ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় ফিরে আসেন। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারতেন না, তবুও তার প্রত্যাবর্তন দর্শকদের মনে নস্টালজিয়ার ঝড় তোলে।

ভ্যাল কিলমারের মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হলিউডে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল