মঙ্গলবার নয়াপল্টন থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারা । সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন তারা।
এ সময় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি’র দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি নেতা আজিজুল বারী হেলাল, তাইফুল ইসলাম টিপু, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।
বিএনপি নেতারা গত ৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভাঙচুর হওয়া বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করেন। আগামী ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সামনে থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করবে বিএনপি।
সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলের সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী নজিরবিহীন বর্বরতা চালিয়েছে বিএনপি অফিসে। ফাইলপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, অর্থ লুট, সকল অঙ্গ সংগঠনের অফিস ভাঙচুর, জিয়াউর রহমানের মুরাল পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। ৭ তারিখ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে পুলিশ। যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নাই। অফিস থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ৪ শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পণ্ড করা। মধ্যমপন্থী গগতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি তাদের কর্মসূচি করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সমাবেশে বাধা দিয়েছে সরকার। সরকার কোন ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটালো তা আমাদের হিসেবে মেলে না। তাদের হিসেবে খেলা কিন্তু বিএনপি এই খেলায় বিশ্বাস করে না। জনগণ বিক্ষুব্ধ, জনগণ রায় দিয়েছে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব না।
জনগণ সরকারকে আর চায় না। ৭ ডিসেম্বরের আচরণ প্রমাণ করে এ সরকার গায়ের জোরের সরকার। ১০ দফা দিয়েছি। এই ১০ দফাকে সমর্থন করে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টন অফিসের সামনে থেকে গণমিছিল করবে বিএনপি।
মোশাররফ আরও বলেন, গতকাল অফিসে আসতে পেরেছি, কি কি খোয়া গেছে তার তালিকা করছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেব কী করব। ১০ ডিসেম্বরে যা প্রত্যাশা করেছিলাম তার থেকে বেশি জনসমাগম হয়েছে। তারপর সরকার যদি এটাকে ব্যর্থ বলে তাহলে কিছু বলার নাই। সরকার দিশেহারা, তারা কোন সময় কী বলবে তা নিয়ে আমরা ভ্রুক্ষেপ করি না। দেশের জনগণও জানে সরকার যা বলে তা করে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের নির্দেশের তাদের দলের কর্মীরা ১০ তারিখ ঘিরে এমন কোনো অপকর্ম নাই করেনি। আতঙ্কিত করছে সরকার বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে করব, এবং এই সরকারের বিদায় জানাব।
আব্দুল মইন খান বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশের লক্ষ্য ছিল মানুষের সামনে তুলে ধরা বর্তমান সরকারের চরিত্র। বিরোধী দল সরকারের একটি অঙ্গ, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিলে রাস্ট্রব্যবস্থা থাকতে পারে না এবং নেইও।’
গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন রাত থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও নাইটিংগেল থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ।
গত রবিবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিএনপির কর্মীরা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় অফিসে আসতে পারবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নিষেধ নেই। এ জন্য তাদের সহযোগিতা করা হবে।
এরপর রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় আসেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এমএইচ/এমএমএ/