মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সম্ভব হলে বিদেশি ঋণ না নেয়াই শ্রেয়

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ১৮-২০ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত ৫৮তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। কোভিড-১৯ মহামারীর বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এই বছরের সম্মেলনটি সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হলেও মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে আলোচনার আধিপত্যই লক্ষ্য করা গেছে। ১৯৬৩ সাল থেকে প্রতিবছর মিউনিখে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নীতিকে কেন্দ্র করে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ইতোমধ্যেই ইহা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নীতি-নির্ধারকদের মতামত বিনিময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরপেক্ষ ফোরাম হয়ে উঠেছে।

১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘ইন্দো-প্যাসিফিকে আঞ্চলিক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তায় বড় পরিবর্তন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেওয়ার সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, বাংলাদেশের অবকাঠামোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে চীন ‘আগ্রাসী এবং সাশ্রয়ী’ প্রস্তাবসহ 'টাকার ঝুড়ি’ নিয়ে এগিয়ে এসেছে যখন অনেক দেশের সাহায্যই কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ার, বিশেষ করে অবকাঠামোগত উন্নয়নের, কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন যে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও তহবিল প্রয়োজন। তবে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে নানা শর্ত যোগ করার ফলে তা গ্রহণ করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্কর যথার্থই বলেছেন যে প্রতিটি দেশ সুযোগের খোঁজ করবে এবং তারা কী করতে পারে তা দেখবে। তিনি বলেন, "দেশগুলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থের ব্যাপারে বিচক্ষণ হতে হবে। তাদের বুঝতে হবে, তারা আসলে কী পেতে যাচ্ছে। আমাদের অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে আমরা ঋণে জর্জরিত দেশ দেখতে পাচ্ছি। আমরা এমন প্রকল্প দেখেছি যেখানে বাণিজ্যিকভাবে টেকসই নয় এমন বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে ফ্লাইট আসে না। আমরা এমন পোতাশ্রয় নির্মাণ হতে দেখছি, যেখানে জাহাজ ভেড়ে না। তাই আমি মনে করি, কী পাচ্ছি, তা নিজেকে জিজ্ঞেস করাটা ন্যায়সংগত হবে।”

যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে কোয়াড সদস্য দেশগুলোতে, চীনা ঋণের টোপ নিয়ে বিতর্ক চলছে হয়তো সেই প্রেক্ষিতে মন্ত্রী মহোদয় উপরের কথাগুলো বলার তাগিদ অনুভব করেছেন। হয়তো তিনি চীনের নাম উল্লেখ করেছেন এ কারণে যে চীন বাংলাদেশের অনেক প্রকল্পের অর্থায়নেই জড়িত। এদিকে দুদিন আগে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয় যে চীন নিজস্ব অর্থে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণ করতে চায় এবং বিনিময়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের উপকূলে একটি স্মার্ট শহর তৈরি করবে। তবে চীন ছাড়াও বেশ কিছু দেশ ও সংস্থা রয়েছে যারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং জাইকা থেকে যথেষ্ট পরিমানে ঋণ নিয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বা অন্যান্য বেসরকারি স্থানেও বেশ কয়েকটি খাতে আমাদের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে।

দেশে আরও অবকাঠামোগত সুবিধার চাহিদার কথা উল্লেখ করে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমাদের কাছে টাকা নেই। আমাদের কাছে প্রযুক্তিও নেই।’ নিঃসন্দেহে, আমরা বিদেশি ঋণ, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এখন আমরা আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ নই। আমরা গর্ব করে বলতে পারি যে, আমরা পদ্মা সেতুর মতো একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি এবং তা আমাদের নিজস্ব অর্থেই সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বন্ধ দৃষ্টি উন্মোচন করে দেখিয়েছেন ‘আমরাও পারি’। ইহাই হতে পারে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের সমস্ত মিথস্ক্রিয়া এবং লেনদেনের অনুপ্রেরণা।

ইহা সত্য যে বাংলাদেশের এখনও অবকাঠামোগত নেটওয়ার্ক, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থানের সুযোগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুবিধা, সুশাসন ইত্যাদিসহ সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য যথেষ্ট নিজস্ব তহবিল নেই, যদিও তার নিজস্ব তহবিল থেকে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং আগামীতে নিজেদের অর্থেই দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। ততদিন পর্যন্ত অনেক উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশও তার সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিদেশি ঋণ গ্রহণ বা বিদেশি বিনিয়োগকে অভ্যর্থনা না জানিয়ে পারবে না। তবে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে ‘ডেইলি সান’ পত্রিকায় আমি আমার লেখায় কয়েকটি দেশে চীনা ঋণ দ্বারা অর্থায়ন করা কিছু প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেছিলাম। সেসব প্রকল্প শুধু অর্থনৈতিকভাবে অনুপযুক্তই ছিল না, বরং সেসব দেশের জন্য ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর চীনা ঋণে নির্মিত দুটি বিমানবন্দর ঋণ পরিশোধ করতে না পারার কারণে সংশ্লিষ্ট চীনা কোম্পানির মালিকানায় চলে যায়। চীন কলম্বোতে ইক্যুইটির জন্য কঠিন ঋণের ব্যবস্থা করতে বাধ্য করেছে, উদাহরণস্বরূপ হাম্বানটোটা বন্দরের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া। একটি চীনা রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ৯৯ বছরের জন্য সেই বন্দরটি ইজারা নেয়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। পাকিস্তান অবকাঠামো নির্মাণ কর্মসূচির জন্য চীনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে এবং তা পরিশোধ করা খুবই কঠিন হবে। আমরা লাওস এবং কম্বোডিয়ায় এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। কিরগিজস্তান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া এবং তাজিকিস্তানের মতো আরও অনেক দেশে বিদেশি ঋণের সম্ভাব্য হুমকি উপেক্ষা করা যায় না। আমাদের প্রতিবেশী মিয়ানমারে চীনা ঋণের ভবিষ্যৎ যে ব্যতিক্রম কিছু ঘটাবে মনে হয় না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ২০২১ সালের জুন মাসে আমাদের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের জিডিপির ২২ শতাংশের সমতুল্য। দুই বছর আগে ঋণের সঙ্গে জিডিপি অনুপাত ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা অনেকটাই বেড়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে উল্লেখ করা যায় যে, বাংলাদেশে চলমান বেশ কয়েকটি প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত তহবিল এবং সময় বাড়ানোর অনুমোদন আমাদের ঋণের বোঝাকে আরও বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্ভবত, এই সমস্যাটি আমাদের ঋণ বৃদ্ধির জন্য দায়ি বড় ত্রুটিগুলোর মধ্যে একটি। এটি এড়ানো যেতে পারে, যদি প্রাকৃতিক কারণ ব্যতীত অন্য কোন কারণেই তহবিল বা সময় বাড়ানো কোনো সুযোগ না দেয়া হয়, বরং এ বিষয়টি মাথায় রেখে শুরু থেকেই প্রকল্পগুলোর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চিন্তা করা হয়।

কষ্টার্জিত অর্থ না হওয়ায় ঋণ প্রায়শই মানুষকে অপব্যয়ী করে তোলে। ঋণ করা অর্থের যেন কোনো অপচয় না হয় আমাদেরকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া, এ অর্থ ব্যবহারের সময় দুর্নীতি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়, সে বিষয়েও সজাগ থাকা আবশ্যক। আরেকটি কথা, আমাদেরকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে যাতে বিদেশি ঋণ না নিতে হয়। তাতে না হয় আমরা আরও আত্মসংযমী হলাম, কষ্টই করলাম। আত্মসম্মান অনেক বড় জিনিস। তা অর্জন এবং রক্ষা করার প্রবল ইচ্ছাই আমাদেরকে একদিন আত্মনির্ভর জাতি হিসাবে গড়ে তুলবে। আমাদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে তেমন দৃঢ় প্রত্যয়ই আমরা প্রত্যাশা করি।

আমরা বিশ্বাস করি, ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি এড়াতে বিদেশি ঋণের উৎপাদনশীল ব্যবহার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নের নামে এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত নয় যা আমাদের দেশ ও জনগণের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না। একটি প্রকল্প যদি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে না পারে, তাহলে আমাদের নিজের টাকা দিয়েও ওই প্রকল্পকে বিবেচনা করা উচিত নয়। আমরা জানি, আমাদের নীতিনির্ধারকেরা একইসঙ্গে এই পরিস্থিতি এবং দেশের অর্থনৈতিক-সামর্থ্য সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। তারা অবশ্যই বিদেশি ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন। কোনো প্রকল্পের জন্য বিদেশি ঋণ তখনই নেওয়া উচিত যখন আমরা আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে তা বহন করতে অক্ষম, অথচ প্রকল্পটি দেশের জন্য অতীব প্রয়োজন। তবে, আমরা আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোসহ অন্যান্য দেশ থেকে ঋণ নেয়ার কথা তখন অবধি ভাববো যতক্ষণ না তা পরিশোধের জন্য কোনো ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। মোদ্দা কথা, সম্ভব হলে বিদেশি ঋণ না নেয়াই শ্রেয়।

 

লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা