স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!

স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
বৈশ্বিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানায়, স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেট পরিসেবায় একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। এর ফলে শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালু হলো।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় সরকারের ধারাবাহিক ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনার প্রেক্ষিতে জনগণের পক্ষ থেকে স্টারলিংকের দাবি উঠে আসে। জনগণের সেই দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এ সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি এটি বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব দেশ হিসেবে উপস্থাপন করবে।”
তিনি বলেন, দেশের দুর্গম হাওর, দ্বীপ, পার্বত্য ও উপকূলীয় এলাকায় মানসম্পন্ন এবং নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পৌঁছাতে স্টারলিংক কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এখনো অনেক এলাকায় ফাইবার সংযোগ না থাকায় প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্পেসএক্স সিইও ইলন মাস্ককে ফোন করে ৯০ দিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরুর অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বিটিআরসি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যৌথভাবে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করেছে।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, ‘লোডশেডিং চলাকালে মোবাইল টাওয়ার বা আইএসপির ব্যাটারি শেষ হলে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্টারলিংক সেখানে নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে।’ দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার এখনো ফাইবার সংযোগের বাইরে, যেগুলো মাইক্রোওয়েভ নির্ভর—এবং সেইসকল সীমাবদ্ধতা দূর করতে সহায়ক হবে স্টারলিংক।
স্টারলিংকের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বাসাবাড়িতে এই সেবা নিতে প্রয়োজনীয় স্টারলিংক কিট (অ্যান্টেনা, রাউটার, তার, পাওয়ার সাপ্লাই) কিনতে হবে, যার দাম ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩ থেকে ৭৪ হাজার টাকা)।
আবাসিক গ্রাহকদের জন্য মাসিক ফি ১২০ ডলার বা প্রায় ১৫ হাজার টাকা। করপোরেট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এই খরচ দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্টারলিংকের আগমনে বাংলাদেশের মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গতি আসবে।
