শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষ নিবন্ধ

ডা. মুরাদের দম্ভ চূর্ণ এবং অন্যদের জন্য শিক্ষা

অর্থ এবং ক্ষমতা মানুষকে দাম্ভিক করে তোলে। আর দাম্ভিকতা মানুষকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। এ ক্ষেত্রে প্রকৃতি বড়ই নিষ্ঠুর। প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না। তার কাছে ধনী-দরিদ্র, ক্ষমতাবান কিংবা ক্ষমতাহীন সবাই সমান। দুনিয়ার বিচারালয়ে বিচার না পেলেও প্রকৃতির বিচার অনিবার্য। তাকে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কারও নেই। কিন্তু মানুষ এটা বোঝে না। বুঝতে চায় না।

মহান সৃষ্টিকর্তা তার বান্দাকে সীমা অতিক্রম না করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অর্থ এবং ক্ষমতা পেলে মানুষ বেসামাল হয়ে যায়। দাম্ভিকতা তাকে পেয়ে বসে। সে ভুলে যায় তার সীমার কথা। তখন সে কথায় কথায়, কারণে অকারণে সীমা অতিক্রম করে। আমরা সবাই জানি, আমাদের দেশে অর্থ সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে গেছে। এখানে নীতি-নৈতিকতা বলে কিছু নেই। ন্যায়-অন্যায় কেবল বইয়ের পাতায় শোভা পাচ্ছে। মানবজীবনে তার কোনো প্রতিফলন আমরা দেখি না। অর্থ আছে তো সাত খুন মাফ। যুগযুগ ধরে এসব কথা আমরা শুনে আসছি। এখনো শুনছি। অর্থ থাকলে বাঘের চোখও নাকি মেলে। অর্থ দিয়ে খুনের আসামিও পার পেয়ে যায়। আর ভালো মানুষ হয়ে যায় খুনি!

সাম্প্রতিক সময়কালে অসংখ্য ঘটনা আমরা দেখেছি। অর্থ কিভাবে সত্য ঘটনাকে মাটিচাপা দিয়েছে তার অসংখ্য উদাহরণ আমরা দিতে পারব। আবার এমন উদাহরণও দিতে পারব, যে সব ঘটনা অর্থ দিয়ে চাপা দেওয়া হয়েছিল; সেগুলো যারা ঘটিয়েছিল তাদেরকে খুব সহসাই প্রকৃতি কঠিন সাজা দিয়েছে। দুনিয়ার বিচারালয়ে বিচার পেতে দেরি হলেও প্রকৃতি দেরি করে না।

মন্ত্রিসভার সদস্য ডা. মুরাদ হাসান বেশ কিছুদিন ধরেই বেফাঁস কথা বলে সমালোচিত হচ্ছিলেন। কখনও কখনও তিনি এমন সব মন্তব্য করেছেন যা, তার শপথ ভঙ্গের কারণ হয়েছিল। রাশ টানা যায়নি কিছুতেই। তিনি অনেক সময়ই প্রধানমন্ত্রীকে বিব্রত করেছেন। দলকে তো করেছেনই। তিনি কথায় কথায় বলতেন, তিনি নাকি যা বলেন, তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বলে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী কি তাকে খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে বা তাঁর নাতনি সম্পর্কে আজে-বাজে মন্তব্য করার কোনো নির্দেশনা দিয়েছিলেন! এও কি সম্ভব!

আসলে গত কয়েকমাস ধরেই ডা. মুরাদের আচার আচরণ, কথাবার্তা, চাল-চলন কোনও কিছুই ঠিক ছিল না। কখনও কখনও মনে হয়েছিল, তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। তার কথাবার্তা ছিল অসংযত। অসুস্থ মানুষের মতো। সেটা মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও অনুভব করেছেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, গত কয়েক মাস ধরেই তাকে আমার স্বাভাবিক মনে হয়নি।   

অবশ্য গত সোমবার খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে ডা. মুরাদের বক্তব্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে মতামত জানতে চান সাংবাদিকরা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বক্তব্য প্রত্যাহারের প্রশ্নই ওঠে না। তিনি যা বলেছেন তা নাকি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বলেছেন। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আমাকেও বিভ্রান্ত করবেন না। ডা. মুরাদের বক্তব্য যে সঠিক ছিল না; তা একদিনের মধ্যেই প্রমাণিত হলো। প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন।

ডা. মুরাদ নিজেই স্বীকার করেছেন, তার মুখ খুব খারাপ। তাই বলে মন্ত্রীর পদে বসে যা খুশি তা বলা যায়? যা খুশি তা করা যায়? অবশ্য হিতাহিত জ্ঞান হারালে মানুষ যা খুশি তা বলতেই পারেন?

গত সোমবার সকাল থেকেই ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। এর আগেও বিএনপি প্রতিমন্ত্রী মুরাদের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। সোমবার বিএনপি ডা. মুরাদের অপসারণ দাবি করে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সমাবেশে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ডা. মুরাদ এক সময় ছাত্রদল করত। পরে সে ছাত্রলীগে যোগ দেয়। ছাত্রদলের স্থানীয় কমিটি থেকে প্রেরণ করা সাংগঠনিক কমিটির তালিকাতেও মুরাদের নাম দেখা গেছে। এ বিষয়ে ডা. মুরাদ নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা দেবেন।

শুধু ডা. মুরাদই নন, মন্ত্রিসভার আরও কয়েকজন সদস্য প্রায়ই বেফাঁস কথা বলে সরকারকে বিব্রত করে থাকেন। বেশি কথা বললে বেফাঁস কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক। কথা বলার সময় তারা ভুলে যান যে, তারা দায়িত্বশীল পদে আছেন। দায়িত্বে থাকলে অনেককিছুই করা যায় না। অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। আবার সহ্যও করতে হয়। কঠিন সমালোচনার মুখোমুখি হলেও হাসিমুখে পরিস্থিতি সামলাতে হয়। অথচ আমাদের মন্ত্রীরা সমালোচনা সহ্যই করতে পারেন না। তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পুরো পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঠেলে দেন।

সবারই মুখের লাগাম টানা দরকার। সেই সঙ্গে নিজের লাগামটাও টেনে ধরা দরকার। ডা. মুরাদের লাগামহীন কথাবার্তাই তার জন্য কাল হয়েছে। গত কয়েক মাস তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তার কর্মকাণ্ড সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। কেউ কেউ তাকে লাগাম টানার পরামর্শও দিয়েছিল। কিন্তু তিনি গুরুত্ব দেননি। তাকে প্রধানমন্ত্রী হয়তো স্নেহ করতেন। কিন্তু তার মূল্য দেননি ডা. মুরাদ।

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তিনি সময়মত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগাছা কখন তুলে ফেলতে হয় তা তিনি ভালো করেই জানেন। জানেন বলেই তিনি গণমানুষের নেত্রী। তিনি দক্ষ শাসকও। তিনি এও জানেন, কখন এবং কোথায় থামতে হয়। সে অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর ধ্যানজ্ঞান হচ্ছে বাংলাদেশ। এই দেশের ভালোর জন্য, দেশকে গড়ে তোলার জন্য যা যা করা দরকার তা তিনি করবেন। আশা করি, মন্ত্রি-এমপিরা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন এবং নিজেদেরকে সংযত রাখবেন। যথাযথভাবে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।

 

লেখক : প্রধান সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ ও সাহিত্যিক  

Header Ad
Header Ad

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। এর ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে।

এ তালিকায় রয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, সিগারেট, টিস্যু পেপার, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, বিমান টিকিট এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারের খরচসহ আরও অনেক পণ্য। বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ উদ্যোগ সাধারণ জনগণের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা জানান, বাজেটের সময় ভ্যাট পরিবর্তন করা হয়, তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে এ পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে চাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্কছাড় দিলেও মাঝপথে ভ্যাট বৃদ্ধির এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়কে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক দুশ্চিন্তা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ, ডকুমেন্টারি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে একটি বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। এসব তথ্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসাধারণের কাছে থাকা এসব তথ্য গুগল ড্রাইভে (muspecialcell36@gmail.com) আপলোড করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে এসব তথ্য পেনড্রাইভে ধারণ করে সরাসরি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের কার্যালয়ে (২য় তলা, ভবন নং-২, বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ১ মিন্টু রোড, ঢাকা-১০০০) হস্তান্তর করারও সুযোগ রয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র সংরক্ষণ করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান হবে।

Header Ad
Header Ad

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন সেই দোয়া করেছেন সেনাপ্রধান। এ সময় সেনাপ্রধানের সাথে ছিলেন তার স্ত্রী। খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান ও তার স্ত্রী প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি
বছরের শুরুতেই উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারীসহ আহত ১৫!
বিপিএলে এক ম্যাচেই ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিনের রেকর্ড
সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক