রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েই লবিস্ট ইস্যুকে দেখতে হবে

গত ১০ ডিসেম্বর র‍্যাবের সাত কর্মকর্তার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিয়ে তারপর থেকেই নানারকম বিচার বিশ্লেষণ হচ্ছে। সরকার এ নিয়ে বিব্রত হয়েছে। হতাশও হয়েছে। আমরাও খানিকটা হতাশ এবং বিব্রত। দেশের দুটি বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে–কারা এর পেছনে আছে, তাদের কর্মকাণ্ডে দেশের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না? এটি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কীভাবে সংযুক্ত হওয়া যায়? এই বিষয়গুলোই আলোচনার প্রধান ট্রেন্ড।

এ ক্ষেত্রে আলোচনায় আসে লবিস্ট নিয়োগের প্রশ্নটি। লবিস্ট নিয়োগ মার্কিন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে বৈধ। বিভিন্ন দেশের সরকার, প্রতিষ্ঠান জাতীয় স্বার্থে নিজেদের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এ ধরনের লবিং করে থাকে। কাজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে লবিস্ট নিয়োগ করা অথবা নিয়োগ পাওয়া কোনো বেআইনি কাজ নয় এবং একেবারে অপ্রচলিত ব্যবস্থাও নয়।

লবিস্ট নিয়োগ কেন? এই বিষয়টির সঙ্গে আমরা বিশেষভাবে পরিচিত না। এ কারণেই বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে লবিস্ট নিয়োগ বৈধ এবং তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় সেটি আছে। তাদের জুডিশিয়ারি অর্থাৎ জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট তাদের আইনের অনুমোদন নিয়েই তারা সেটি করে। প্রশ্ন হলো–এসব কারা করছে, কেন করছে? আমি মনে করি, বাংলাদেশের পক্ষে যা জাতীয় স্বার্থের পক্ষে, বিষয়টি তেমন হলেই উত্তম। বাংলাদেশের স্বার্থ বলতে তো আমরা এটিকে মিলিয়ে গুলিয়ে ফেলি। সেখানে আমার মনে হয় একটি স্বচ্ছতা দরকার। আমরা যেটি জাতীয় স্বার্থ বলি, তার মধ্যে সরকার থাকে, এর পাশাপাশি জনগণের স্বার্থের একটি বিষয় থাকে। এই দুটির সমন্বিত অবস্থাকেই জাতীয় স্বার্থ বলা হয়। কাজেই বিভিন্ন দেশ থেকে যে লবিস্ট নেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রে, তারা সাধারণত তাদের জাতীয় স্বার্থটুকুই দেখে। যেমন–সরকার থেকে বিজিএমইএ পর্যন্ত এই উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়। এখন যদি কেউ সরকারের দিক থেকে করে সরকার সেটি জাতীয় স্বার্থের জন্য কাজ করবে ধরে নেওয়া হয়। সবসময় যে সেটি হয়, তাও না। আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের আলোকে আমরা সবসময় সবখানে সেই স্বচ্ছতাটুকু পাই না। সরকার যখন করেন আমরা ধরেই নিই যে সরকার সেটি দেশের পক্ষেই করছেন।

আমাদের তৈরি পোশাক খাত রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম উপাদান হিসেবেই আছে এবং দেশের জনগোষ্ঠীর বিরাট একটি অংশ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ এ পেশায় জড়িত এবং তার বেশিরভাগই নারী। তা ছাড়া আমাদের একটি উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরি হয়েছে, তারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয়। বিদেশের মানুষ যখন বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পণ্য দেখে তখন তারা বুঝতে পারে যে, বাংলাদেশ আর দারিদ্রপীড়িত দেশ নয়। বাংলাদেশ এমন একটি জায়গায় এসেছে, যেখান থেকে তারা এই ধরনের কোয়ালিটি পণ্য রপ্তানি করে। এই বিষয়গুলোকে যদি আমরা সমন্বিতভাবে দেখি, তাহলে বুঝতে পারব এই বিষয়টিতেও জাতীয় স্বার্থ জড়িত। কাজেই সেই বিবেচনায় এটিকে ইতিবাচক প্রেক্ষাপটে দেখতে পারি।

বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরে আইনি কাঠামো আছে। আমরা যে কাজটি করছি সেটি সেটি সেই কাঠামোর ভিতরে পড়ে কি না। সেটি বৈধ উদ্দেশ্য নিয়ে করা হচ্ছে কি না। নাকি এটি বিশেষগোষ্ঠী বিশেষ স্বার্থের হয়ে কাজ করছে। সেটি বিচার বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রয়োজনে এ বিষয়টি নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই যে সাত জন কর্মকর্তাকে নিয়ে সমস্যাটি হলো–যে ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও সাতটি প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘের কাছে আরও আবেদন করেছে যে, র‍্যাব কর্মকর্তাদের যেন জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা না হয়। যদিও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি; কিন্তু এটি পরোক্ষভাবে বা নৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার একটি পন্থা।

এখন এখান থেকে বেরুনোর পথ কি হওয়া উচিত। আমাদের অভ্যন্তরীণভাবেই কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের যদি ঘাটতি থাকে, সেগুলো আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে দেশের পক্ষে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। আমি মনে করি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যটি ইতিবাচক। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। তাহলে এই ধরনের ঘটনা এভয়েড করা যাবে। তারা যে কাজটি করেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করবেন। কূটনৈতিকভাবেই এর সমাধানে চেষ্টা করতে হবে।

অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম আছে, সেগুলো আমরা ব্যবহার করতে পারি। এ বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে বহুমুখী আলাপ-আলোচনা আমি মনে করি, মূল বিষয়টিকে ভিন্নদিকে নিয়ে যেতে পারে। কাজেই যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠ সমাধান নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। আমাদের দেশ থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্য সমাধানের পক্ষে, এটি তাদের বোঝাতে সক্ষম হতে হবে। আমাদের দেশে যে রেমিট্যান্স আসে, তারমধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম রেমিট্যান্স কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আসে। প্রথম অবস্থানে আছে সৌদি আরব, দ্বিতীয় অবস্থানে ইউএই এবং তিন নম্বরে আছে যুক্তরাষ্ট্র। যেটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সক্রিয় করার জন্য ভূমিকা পালন করছে। তা ছাড়া আমাদের দেশের রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জোরালোভাবেই আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতেও আমাদের সমস্যা সমাধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দরকার হবে। ভবিষ্যতে মিয়ানমারকে যদি বাধ্য করা হয়, সে ক্ষেত্রেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের দরকার হবে। অর্থনৈতিকভাবে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যেন কাজে লাগে, সেক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত দুইবছর থেকেও বলছেন। আমাদের অর্থনৈতিক জায়গা অর্থাৎ যেখানে আমাদের সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে, সেই জায়গাটিতে যদি আমরা তাদের পাই, সে ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্ককে আমাদের সমৃদ্ধ করতে হবে। সেজন্য আমাদের উদ্যোগটি চালু করতে হবে এবং এ ধরনের বিষয়গুলো যেন আমাদের ইরিটেট করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

বাইডেন সরকার গত কয়েকবছর ধরে যে সমস্যাগুলো মোকাবিলা করছে, সেগুলো দূর করতেই মানবাধিকারের প্রতি বেশি গুরুত্বারোপ করেছে। বৈশ্বিক গুরুত্ব যদি আমরা মনে রাখি, তাহলে আমাদের জন্য তাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করা সহজতর হবে। আমরা তো বাংলাদেশে নির্ভেজাল গণতন্ত্রটুকুই চাই। ত্রিশ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রাণ দিয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। এখনো পর্যন্ত মানুষ গণতন্ত্র চর্চার জন্য উদগ্রীব। এরিস্টটলের ভাষায়, ‘গণতন্ত্র হচ্ছে সবচেয়ে ভালো শাসন ব্যবস্থা।’

আমাদের মতো একটি দেশ যেখানে লাখো প্রাণের বিনিময়ে দেশটি পেয়েছি, সেই দেশে বিভেদ, বিভাজন, বৈষম্যমুক্ত এবং শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখব বলে গণতন্ত্র চর্চা করব তা কিন্তু না। আমাদের অভ্যন্তরে একটি শান্তিপূর্ণ সুশাসন, শিক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে সঠিকভাবে গণতন্ত্রচর্চার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করব এবং ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মানোন্নয়নসহ এই সম্পর্ককে চলমান করতে সচেষ্ট করব। এ ধরনের সমস্যাকে খুব বেশি গুরুত্ব বা রাজনৈতিক ইস্যু না করে সমাধানের পথ তৈরি করার মাধ্যমে এই বহুমাত্রিক সম্পর্ককে আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে হবে।

লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত

এসএ/

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি