শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশের উদ্যোগ বাস্তবায়নে সমন্বিত সহায়তা প্রয়োজন

বাংলাদেশ মানবিক কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে প্রায় ছয় বছর ধরে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। আশ্রয় এবং সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রথম থেকেই মিয়ানমার, চীন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার এগিয়ে না আসার কারণে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম এখনও সফলতার মুখ দেখছে না।

২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি মোতাবেক ২০১৮ সালে এক দফা প্রত্যাবাসনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর চীনের মধ্যস্থতায় ২০১৯ সালে আবার প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা হয়েছিল তবে তা সফলতার মুখ দেখেনি। গত প্রায় ছয় বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত আলোচনায় চীনের সম্পৃক্ততার পর ২০২০ সাল থেকে ছোট পরিসরে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলছিল এবং এ বিষয়ে চীন মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছিল। সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমার সেদেশে নিযুক্ত ৮ দেশের ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিটওয়ে শহরে অর্ন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায়।

মিয়ানমার হাজার খানেক রোহিঙ্গা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে, তবে এই প্রক্রিয়ায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনেক সময় লাগবে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে এই দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের ফলে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তার মোকাবিলায় কক্সবাজার থেকে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তর জরুরি হয়ে পড়েছে।

রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে ও মানবেতর জীবনযাপন করার কারণে সেখানে সামাজিক ও নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বিরোধ, মারামারি, অপহরণ, পাচার ও জিম্মি করার ঘটনা ঘটছে। অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন ধরনের মাদক ও অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে এবং এসব ঘটনায় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গুলিকরে কিংবা কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পাশাপাশি ক্যাম্পে নাশকতামূলক আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটছে।

বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), দুইটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং সাতটি ডাকাত দলসহ ১০টি দুর্বৃত্ত দল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আরসা বেশিরভাগ ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ করছে। আরসার উপস্থিতি ও সন্দেহজনক কার্যক্রম ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করেছে। গত ৫ মার্চ বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগে প্রায় ২ হাজার ঘর পুড়ে যাওয়ার ফলে ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘরগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো এবং ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পগুলোতে ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। আরসা সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এই আগুন দিয়েছে বলে অনেকে মনে করে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে গঠিত তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত নাশকতা বলে প্রমাণ পেয়েছে। তদন্ত কমিটি কমিটির প্রতিবেদনে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আধিপত্য বিস্তার করতে বা এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো ঘটনার কারণে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা, নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোসহ ১০টি সুপারিশ করেছে। ২০২১ সালের ২২ মার্চেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১১ জন প্রাণ হারায়, প্রায় পাঁচ’শ আহত হয় ও ৯ হাজারের বেশি ঘর পুড়ে যায়। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০২১ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত, ৬০টি নাশকতামূলক বাকি ৬৩টির কোনো কারণ জানা যায়নি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাতের বেলায় সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি-সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের আতঙ্কে রাত কাটে। ক্যাম্পগুলোতে প্রায় ছয় বছর ধরে স্বাস্থ্য, খাদ্য, শিক্ষা, আবাসনসহ বিভিন্ন ধরনের মানবিক সেবায় দেশ-বিদেশের শতাধিক সংস্থার ২০ হাজারের ও বেশি কর্মী কাজ করছে। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি ক্যাম্পে কাজ করতে যাওয়া এনজিও-আইএনজিওর কর্মীরাও এ সব ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং তাদের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অপহরণ, খুন ও আরসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণে ২০টির বেশি এনজিও ক্যাম্পগুলোতে তাদের সেবা কার্যক্রম সীমিত রেখেছে এবং কয়েকটি এনজিও তাদের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় কৃষকদের অপহরণ করে দুর্গম জায়গায় নিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনগণও আতঙ্কে রয়েছে। দ্রুত এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করলে জননিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সাধারণ রোহিঙ্গা, স্থানীয় অধিবাসী, ক্যাম্পে কর্মরত দেশি-বিদেশি এনজিও-আইএনজি কর্মী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এতে ক্যাম্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ বৈশ্বিক ফোরামে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সবসময় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ১০ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বালি প্রসেস ফোরামের মানবপাচার ও চোরাচালান সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং সমস্যা সমাধানে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসনে সব দেশকে সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানায়। প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ। মানবিক সাহায্যের পাশাপাশি শরণার্থী ভিসার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অস্ট্রেলিয়া নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোকে যুক্ত করতে এবং এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতা চাওয়া হয়।

চলমান প্রেক্ষাপটে দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় এবং কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তর করতে আগ্রহী।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জীবিকার ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেখানে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি জাপান, চীন, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ ১৬ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ভাসানচর পরিদর্শন করে সেখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা ও সুযোগ সুবিধা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে।

মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম’বিষয়ক সভায় সরকার রোহিঙ্গাদেরকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরে বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তার আহ্বান জানিয়ে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথম প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার খরচ বহন এবং দ্বিতীয় প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে আরও নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ নিজ ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসন তৈরি করেছে এবং কক্সবাজার থেকে এপর্যন্ত সেখানে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এই স্থানান্তর ব্যয়বহুল এবং বাংলাদেশের একার পক্ষে এই ব্যয়বহন করা কষ্টসাধ্য। রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়ার ব্যয়বহনে সহায়তা করতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরের তিন ভাগের একভাগ জায়গায় ক্যাম্প নির্মাণ করেছে, বাকি দুইভাগ জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করলে আরও রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা যাবে। ভাসানচরে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বন্ধু দেশগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। দ্রুততম সময়ে যত বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া যাবে ততই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের কারণ উদ্ঘাটন ও মোকাবিলায় জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোলিন হাইজারকে জোরালো ভূমিকা পালন এবং ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর কাছে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরার আহ্বান জানায়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পগুলোতে ত্রান ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানে নিয়োজিত কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সাথে সাথে স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও তাদের মধ্যে বিরাজমান আতঙ্ক কাটাতে সহায়তা জোরদার করতে হবে।

প্রত্যাবাসন দ্রুত ও টেকসই করতে জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের পাশাপাশি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে এপিবিএনের সাথে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মিলে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তদন্ত কমিটির সুপারিশ মোতাবেক বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দরকার। কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরেও বাংলাদেশের সহায়তা অতি জরুরি। চলমান প্রেক্ষাপটে, ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের নেয়া কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণকরে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে এটাই প্রত্যাশা।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসান মো. শামসুদ্দীন: মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি