বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

নতুন বছরে পুরোনো পথে হাঁটা

নতুন বছর এল ঘাড়ে নিয়ে পুরোনো দুশ্চিন্তা। দুর্নীতি, লুণ্ঠন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া এবং যা আর ফেরত পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা, দেশের টাকা পাচার, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারা, আইএমএফ এর কাছে শর্ত যুক্ত ঋণ নেওয়া, শর্তের অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিষেবার দাম বাড়ানোর উদ্যোগ, আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় বছর জুড়েই উদ্বেগ ও আলোচনার বিষয় ছিল। আগামী বছরেও এর হাত থেকে মুক্তি মিলবে না এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে সরকারি দমন-পীড়ন আর বিরোধীদের প্রতিরোধ জনগণকে উদ্বিগ্ন করে ছিল গত বছরে, এবারে কি তার ব্যতিক্রম হবে?

ব্যাংকিং খাতে পেশাগত দক্ষতার পরিবর্তে পেশাগত লুণ্ঠন চালিয়ে ৮০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আজ অনামে–বেনামে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। নানা প্রক্রিয়ায় পুনঃ তফসিলিকরণ না করলে এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকায় ঠেকত। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই অন্যায় ও বিপজ্জনক প্রবণতা বেড়েই চলেছে।

দেশের মোট সাড়ে ১৪ লাখ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে এই খেলাপি নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। এত বেশি পরিমাণ খেলাপি কি কোনো অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর? এই প্রবণতা মারাত্মক ব্যাধির মতো সংক্রামক। দেখা যাচ্ছে যে, খেলাপি আর অর্থ পাচারকারীরা একই গোষ্ঠীর লোক। খেলাপি ঋণের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, রিজার্ভের মারাত্নক কমে যাওয়া, টাকার মানের অধঃপতন, রেমিট্যান্সের দুর্বলতা, ব্যাংক আমানতকারীর অনাস্থা বৃদ্ধি, ব্যাংক থেকে সঞ্চয় উত্তোলন, তারল্যসংকট, মূলধন ঘাটতি, রাজস্ব অনাদায়, শেয়ারবাজারের ক্রম নিম্নগমন—এই সবকিছুর পেছনে কারণ চিহ্নিত করা কঠিন নয়। এর প্রধানত তিনটি কারণ।

ক. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি নির্ধারণ ও কর্ম পরিকল্পনায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ব,
খ. ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পারিবারিক কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করতে আইন পাল্টে ফেলা,
গ. খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তন ও পুনঃতফসিলিকরণ করা। এসব কারণে সংকটের যেটুকু দৃশ্যমান হয়েছে পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেকগুণ ভয়াবহ।

২০২২ সালের শুরুতে অজুহাত ছিল করোনার। কিন্তু করোনা মহামারি কেবল মৃত্যু, দ্রব্যমূল্য, বেকারত্ব আর বিশৃঙ্খলাই বাড়ায়নি, ধনীদের সম্পদও বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে করোনা মহামারির ২১ মাসে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ১৯ হাজার ৩৫১ জন। আর ইউক্রেন যুদ্ধের টালমাটাল পরিস্থিতিতেও ২০২২ সালের জুন-আগস্ট তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬০ জন। এ যেন কোটিপতি তৈরির কারখানা! ব্যাপারটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই ঘটছে তা নয়। এটা ঘটছে বিশ্বব্যাপী। এর কারণ পুঁজিপতিদের শোষণ, লুণ্ঠন আর ফলাফল বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে বৈষম্য বৃদ্ধি।

অক্সফামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির মধ্যে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় নতুন করে একজন বিলিয়নিয়ার জন্ম হয়েছে। বিপরীতে ১০ লাখ মানুষ হয়েছে দরিদ্র। করোনা মহামারি চলাকালে বিশ্বের ১৩১ জন বিলিওনিয়ারের সম্পদ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে শুধু ২০২০ সালেই প্রায় ৯ কোটি ৭০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই, বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর ভূমিকাও লক্ষ্য করার মতো। দেখা যাচ্ছে যে বিশ্বের প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ২০২০ সাল থেকে ১১ লাখ কোটি ডলারের (১১ ট্রিলিয়ন) বেশি বিনিয়োগ করেছে।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার বাড়ানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ও নিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের ঋণ নেওয়া কমলেও বড় ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে নতুন নতুন বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু কর্মসংস্থান তো বাড়ছে না। মহামারি ও মন্দার মধ্যে অর্থনীতি চাঙা করতে অনেক দেশ অর্থের সরবরাহ বাড়ানো, কর সুবিধা ও আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে। কিন্তু তা কাদের জন্য?

অক্সফামের জরিপে দেখা গেছে, কারোনাকালে বিশ্বের ১৬১টি দেশের মধ্যে ১৪৩টি দেশ ধনীদের জন্য কর সুবিধা বাড়িয়েছিল। এ ছাড়া আরও ১১টি দেশ করের হার কমিয়েছিল। ফলে ধনীরা সুবিধা পেয়েছে দুদিক থেকেই। এসব কারণে ধনীদের সম্পদ বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে অর্থনীতির অন্যান্য খাতেও।

শেয়ারবাজারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনসের তথ্যানুসারে, করোনার মধ্যে এক বছরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বেড়েছে ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার, যার ৪০ শতাংশ ২৫টি কোম্পানির হাতে।

বাংলাদেশেও স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রের বয়স যত বাড়ছে ততই পাল্লা দিয়ে বৈষম্যও বেড়ে চলেছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় সে অনুপাতে বাড়ছে না। রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ আসে যে গার্মেন্টস খাত থেকে সেই খাতের শ্রমিকদের মজুরি বিশ্বের সবচেয়ে কম। দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানির দেশ বলে যতোটা গর্ব করা হয় সবচেয়ে কম মজুরির শ্রমিক আখ্যায়িত হলে লজ্জাও কি সেই পরিমাণ বাড়ে না? মুনাফা অর্জনের কাছে লজ্জার কোনো মূল্য নেই, কম মজুরির শ্রমিক সেখানে বিনিয়োগ আকর্ষণের লোভনীয় হাতছানি, বেকারত্ব সেখানে সুযোগ মাত্র।

বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সরকারিভাবে আগামী অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারও একই অর্থাৎ ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম বাড়ানো, রিজার্ভ সংকটে আমদানি ঝুঁকি ইত্যাদি কারণে এই প্রবৃদ্ধি হবে কীভাবে সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন।

বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫.৬ শতাংশ। দুই মাসের মাথায় এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গত আগস্টে মূল্যস্ফীতি ওঠে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে। এখন বলা হচ্ছে প্রবণতা নিম্নমুখী। সাধারণ মানুষ কি এ কথা বিশ্বাস করে? আগামী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এটা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? কারণ সরকারি হিসেবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নামলেও ওষুধ, কাপড়সহ খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি। নানা ধরনের ব্যয় সংকোচনের কথা বলা হয়েছিল কিন্তু তার ফল তো দেখা গেল না। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমছে কিন্তু দেশে কমছে না কেন তার জবাবও পাওয়া যায়নি। মূল্যস্ফীতি কমানোর অভ্যন্তরীণ কৌশল কী তা দৃশ্যমান না হলেও সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে।

২০২৩ সাল দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার তীব্রতা বাড়াবে এটা সহজেই অনুমান করা যায়। কিন্তু যে অর্থনৈতিক সংকট ২০২২ সালে মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছিল সেই বিপন্ন দশা থেকে মানুষ মুক্তি না পাক স্বস্তি পাওয়ার আশা কি করতে পারবে নতুন বছরে? আশা তো মানুষ করবেই কিন্তু পুরোনো পথে হাঁটলে কি তা পূরণ হবে?

রাজেকুজ্জামান রতন: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

এসএন

Header Ad
Header Ad

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র আজ (বুধবার) রাতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের আহ্বানে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হয়ে বাড়িটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘শেখ বাড়ি’তে প্রথম দফায় আগুন লাগানো হয়। সেদিন বাড়িটি খালি থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একসময় যেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, আজ সেটির অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।

প্রসঙ্গত, ‘শেখ বাড়ি’ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার মালিকানাধীন। এ বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন পরিবারের সদস্য বসবাস করতেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা ছিল।

বুলডোজার চালানোর সময় ছাত্র-জনতার বিপুল উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। তাঁদের দাবি, বৈষম্যমূলক রাজনৈতিক শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই বাড়ি, তাই এটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব