দারিদ্র্য নির্মূলে কোয়ান্টাম পর্যটন
আজ ২২ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য নির্মূল দিবস। ১৯৯২ সালে জাতিসংঘ এই দিনটি বিশ্বব্যাপী পালনের ঘোষণা দেয়। পর্যটনের মাধ্যমে দারিদ্র্য নির্মূলের কৌশল নির্ণয়ে এই প্রবন্ধ—
সূচনা
বাংলাপিডিয়া বলছে, দারিদ্র্য এমন অর্থনৈতিক অবস্থাকে বুঝায় যখন মানুষ জীবনযাত্রার স্বল্প আয়ের কারণে জীবনধারণের অপরিহার্য দ্রব্যাদি ক্রয় করার সক্ষমতা হারায় এবং ন্যূনতম মান অর্জনে ব্যর্থ হয়। সাংস্কৃতিক স্বেচ্ছাচারিতা, আগ্রাসন, জনসংখ্যার চাপ, অর্থনৈতিক দুর্দশা, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এবং বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দারিদ্র্য সৃষ্টি করে। জাতিসংঘ বলছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতাও দারিদ্র্য এবং পৃথিবীর প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ হতদরিদ্র।
উপরে বর্ণিত অবস্থাগুলো দারিদ্র্যের বিনাশী রূপ। বিনাশী দারিদ্র্য সৃষ্টির অনেকগুলো কারণের মধ্যে সুশাসনের অভাব অন্যতম। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দারিদ্র্য হ্রাস ও পুনঃদারিদ্র্য জন্মানোকে রোধ করা সম্ভব। অর্থনৈতিক দ্রারিদ্র্য মানুষকে ভোগায়, সামাজিক দারিদ্র্য সামাজিক পরিবর্তনের গতি রোধ করে। কিন্তু দর্শনের দারিদ্র্য মানুষের অস্তিত্বকে বিলীন করে দেয়। যুগে যুগে দারিদ্র্যের বিনাশী রূপ সভ্যতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিপরীতক্রমে, দারিদ্র্যের প্রগতিশীল রূপও আছে। এইরূপে দারিদ্র্য একটি গতিশীল শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং এর গতিশীলতা দরিদ্র মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য আবশ্যকীয় সম্পদ আহরণে প্রেরণা যোগায়।
দারিদ্র্যের সঙ্গে অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজনীতির আন্তঃক্রিয়া
দারিদ্র্যের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক এই ৩টি উপাদানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই দারিদ্র্যকে বাহ্যিকভাবে যেভাবে দেখা যায়, তা অভ্যন্তরীণ দৃশ্যপট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। দারিদ্র্যের উপাদানগুলোর সঙ্গে আন্তঃক্রিয়ার মাধ্যমে দারিদ্র্যের প্রকৃত রূপ প্রতিভাত হয়। অর্থনৈতিক দারিদ্র্য সামাজিক দারিদ্র্য থেকে এবং রাজনৈতিক দারিদ্র্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক দারিদ্র্য থেকে আলাদা। এখান থেকে পরিষ্কার হয় যে, দারিদ্র্যের রূপ নানা বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। দারিদ্র্যের প্রকৃত রূপ অজানা। তাই এই বিষয়টি নিশ্চয়ই গবেষণার দাবিদার। দরিদ্র মানুষরা দারিদ্র্যের সঙ্গে কী রীতিতে বাস করেন, তার প্রকৃত রূপ এখনো অনুদ্ঘাটিত।
দারিদ্র্য নির্মূলে কোয়ান্টাম পর্যটন
পর্যটন দারিদ্র্যের প্রগতিশীল রূপের উৎকর্ষ সাধন করে এবং বিনাশী রূপকে ধ্বংস করে। দারিদ্র্যের রাশ টেনে ধরার জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ামক মিশ্রের প্রয়োগ হতে পারে পর্যটনের অন্যতম কাজ। কিন্তু এইসব নিয়ামক প্রয়োগের জন্য অনুসঙ্গ দরকার। পর্যটনের কোয়ান্টাম শক্তির প্রয়োগ সেই রকম একটি অনুসঙ্গ। পর্যটনের কোয়ান্টাম শক্তি উক্ত তিনটি নিয়ামকের সঙ্গে যুক্ত করে দারিদ্র্যের উপর আঘাত করলে তা শক্তিরূপে প্রকাশিত হবে।
কণা ও তরঙ্গ হিসেবে প্রকাশিত একটি পরমাণুর শক্তি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিকিরিত হয় না। বরং নির্দিষ্ট মাত্রায় বিকিরিত হয়। পদার্থবিদ্যায় একে কোয়ান্টাম তত্ত্ব বলে। একইভাবে সব ধরনের পর্যটন দারিদ্র্য দূরীকরণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে না। বরং নির্দিষ্ট ধরনের পর্যটন পরমাণু শক্তির মতো প্রবল তরঙ্গ অভিঘাতে দারিদ্র্যের উপর আঘাত করতে পারে— একেই কোয়ান্টাম পর্যটন বলতে পারি।
কোয়ান্টাম পর্যটন হলো সেই পর্যটন— যা ভালোবাসাকে কেন্দ্রে রেখে জনগোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক ধরে রাখতে পারে। একটি গন্তব্যে পর্যটক, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও অন্যান্যদের মধ্যে জীবন ও কাজের জন্য ভালোবাসাকে কেন্দ্রস্থলে রাখতে হয়— এটি পর্যটনের কোয়ান্টাম তত্ত্ব।
ভালোবাসার মতো পারমাণবিক তরঙ্গ শক্তিকে মানবিক বিকাশের জন্য প্রয়োগ করাই এই তত্ত্বের মূল কথা। মানুষ কেবল শ্রমিক নয়, ভালোবাসাজনিত জৈবিক সত্তা। তাই সামাজিক বিবর্তনে দারিদ্র্যের মূলে ইতিবাচক আঘাত করতে হলে কোয়ান্টাম পর্যটন এক অনন্য শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। এইক্ষেত্রে কোয়ান্টাম শক্তি নেতৃত্বদানের পরিবর্তে মেন্টরের ভূমিকা পালন করবে এবং দারিদ্র্য নির্মূলে অসম্ভবকে সম্ভব করবে। কোয়ান্টাম কণিকার অনন্ত শক্তির মতো কোয়ান্টাম পর্যটনের প্রচ্ছন্ন শক্তি মহাপ্রকট শক্তিতে রূপান্তর করা সম্ভব।
কোয়ান্টাম পর্যটনের বহুমাত্রিক ব্যবহারিক রূপ থাকতে পারে। প্রয়োগের ভিত্তিতে এর তিনটি রূপ নিচে উপস্থাপন করা হলো—
ক. দরিদ্রের কোয়ান্টাম পর্যটন (Quantum Tourism for the Poor)
দরিদ্র মানুষকে সাধারণত পর্যটন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা হয় না। মনে করা হয় এরা বিনিয়োগে অক্ষম, পর্যটন পণ্য উৎপাদনে অদক্ষ, সেবাদানে আনাড়ি ও সমকালীন পর্যটন বিষয়াবলি সম্বন্ধে অজ্ঞাত। মোদ্দাকথা, এদেরকে ভালোবাসার স্পর্শ থেকে বাইরে রাখা হয়। ফলে এই জনগোষ্ঠী যোগাযোগের বাইরেও থেকে যায় এবং এদের সঙ্গে প্রকৃত মানবিক সম্পর্ক গড়ে উঠে না। অনেকের মতে দরিদ্রদের পর্যটনে যুক্ত করলে পর্যটনের গন্তব্য স্থানের সেবা প্রশ্নের মুখে পড়বে। একটি সমাজে অন্তত ১০ শতাংশ মানুষও যদি পর্যটন থেকে দূরে থাকে, তাহলে সমাজ থেকে কোনোভাবেই দারিদ্র্য দূর করা যাবে না।
গবেষকরা বলছেন যে, কোয়ান্টাম পর্যটন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের পর্যটনে যুক্ত করা সম্ভব, যা তাদের দারিদ্র্য মুক্ত করতে পারে। বলা বাহুল্য যে, দরিদ্র মানুষদের রয়েছে স্বচ্ছ জীবনবোধ, বাস্তবোচিত অর্থনৈতিক ধারণা, আতিথেয়তার প্রাকৃতিক জ্ঞান এবং জীবনঘনিষ্ঠ প্রায়োগিক শিক্ষা। গন্তব্যে বসবাসরত দরিদ্র মানুষরা কম মজুরিতে অনুগত শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কাজের প্রতি এদের শ্রদ্ধা উল্লেখ করার মতো। এদের মধ্য থেকে দারিদ্র্যরেখার অব্যবহিত নিচে অবস্থিত ব্যক্তিরা মানবিক পর্যটনের উৎকৃষ্ট কর্মী হতে পারে। এই শ্রেণির দরিদ্ররা মর্যাদাপূর্ণ, সাহসী ও প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে গ্রামীণ পর্যটনের সবচেয়ে কার্যকর কর্মী হিসেবে নিজেদের প্রমাণিত করতে পারে। দরিদ্রদের নিয়ে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে তা তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস সৃষ্টি করবে। এই পর্যটনকে দরিদ্রের কোয়ান্টাম পর্যটন বলে অভিহিত করা যায়।
খ. দারিদ্র্য বিমোচনকারী কেয়ান্টাম পর্যটন (Poverty-breaking Quantum Tourism)
যে সব দরিদ্ররা সাধারণ দরিদ্রের চেয়ে একধাপ ঠিক নিচে রয়েছে, এদেরকে মধ্যম দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরা হতদরিদ্র থেকে খানিকটা উপরে, কিন্তু যথার্থ দারিদ্র্য এদেরকে অনন্নোপায় ও অক্ষম করে রাখে। এই শ্রেণিভূক্ত দরিদ্র মানুষরা দারিদ্র্য বিমোচনে নিরুপায় হয়ে দারিদ্র্যকে আঁকড়ে ধরে রাখে। এরা সমাজের ভালোবাসা বর্জিত সবচেয়ে অসহায় ও অসাড় অংশ। দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সামান্য সরকারি সহযোগিতা ছাড়া রাষ্ট্র এদের জন্য কোনো কর্মসৃজন করে না। ফলে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে এরা সর্বদাই ঘুরপাক খায়। মধ্যম শ্রেণিভূক্ত দরিদ্রদের অর্থনৈতিক কর্মে যুক্ত করা বেশ কঠিন। কারণ মনস্তাত্ত্বিকভাবে এরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ভঙ্গুর ও অমনোযোগী। তবে কোয়ান্টাম পর্যটনের শক্তিমত্তা প্রয়োগ করা হলে এরা বিনিয়োগ বহির্ভূত কায়িক শ্রমের কাজগুলো সপরিবারে করতে পারবে। যেমন পর্যটকদের জন্য স্থানীয় যানবাহন চালান, খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশন করা, পণ্য ও সেবা বাজারজাত করা, স্থানীয়ভাবে গাইডিং করা, বিনোদন কার্যাবলি ও নাইট লাইফে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। এইজন্য এদের পর্যটন প্রশিক্ষণ প্রদান করা আবশ্যক। ফলে এই শ্রেণিভূক্ত দরিদ্রদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে সক্ষম হবে। সময় দিয়ে ধীরে ধীরে এদেরকে পর্যটন কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বিনিয়োগ বহির্ভূত কোয়ান্টাম পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনায় এদের সম্পৃক্ততার কোনো বিকল্প নেই। পর্যটনের বর্ণিত কাজগুলো সহজেই এদের মধ্য থেকে দারিদ্র্য দূর করতে সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য, কমিউনিটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে ক্ষুদ্র পুঁজি সংগ্রহ এবং তা পর্যটনের নানা উপখাতে বিনিয়োগ করে সমাজের দরিদ্র মানুষগুলোকে দারিদ্র্য থেকে পূর্ণ মুক্তি দেওয়া সম্ভব।
গ. দারিদ্র্য মুক্তির কোয়ান্টাম পর্যটন (Quantum Tourism for No Poverty)
হতদরিদ্ররা দারিদ্র্যের নির্মম কষাঘাতে ধুঁকে ধুঁকে মরে। কেউ এদের দিকে ফিরেও তাকায় না। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন অভীক্ষার মধ্যে প্রথমটিই হলো দারিদ্র্য মুক্তি (No Poverty)। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত সম্পদ অনুন্নত জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ না করা হলে কখনোই এই অভীক্ষা অর্জন করা যাবে না। সম্পদসৃজন ও তার সুষ্ঠু বিতরণের জন্য কোয়ান্টাম পর্যটনকে যুক্ত করার মাধ্যমে দারিদ্র্য মুক্তি ঘটানো সম্ভব। হতদরিদ্রদের দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য ভালোবাসা ও আস্থা অর্জনের মাধ্যমে পর্যটনে যুক্ত করা অপরিহার্য। এই উদ্দেশে একটি কমিউনিটির সমস্ত হতদরিদ্র মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করাই মূলত কোয়ান্টাম পর্যটন। এই উদ্দেশ্য এদেরকে নিয়মিত ও নিবিড়ভাবে পর্যটন কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। তবেই হতদরিদ্ররাও প্রগতিশীল শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
সব মানুষকে তার শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিলেই মোট উৎপাদনশীলতা বাড়বে। দরিদ্র মানুষের ভালোবাসাজনিত অংশগ্রহণে পণ্য ও সেবা উৎপাদন ও তার সঠিক বণ্টন দারিদ্র্য মুক্তি ঘটাবে। দারিদ্র্যের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে পর্যটনের প্রায়োগিক কাঠামোতে কোয়ান্টাম শক্তির সন্নিবেশ ঘটাতে হবে।
কোয়ান্টাম পর্যটনের চ্যালেঞ্জ
কোয়ান্টাম পর্যটন একটি অত্যন্ত নতুন ধারণা। তাই এর প্রকৃত স্বরূপ নির্ধারণ ও মডেল উদ্ভাবন সময়সাপেক্ষ। তবে পর্যটন দিয়ে দরিদ্রের জীবন উন্নয়নে অর্থায়ন, কারিগরি উৎকর্ষ সাধন ও দক্ষ জনশক্তির সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে পর্যটন ভাবনা তথা দারিদ্র্য নির্মূলীকরণে কী কাজ করে তা নির্ণয় করা কঠিন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধির চেয়ে এদের পর্যটন কর্মকাণ্ডে ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দরিদ্ররা কাজের সঙ্গে তখনই মনযোগী হয়, যখন এরা বুঝে যে কাজের সঙ্গে মর্যাদাবোধ যুক্ত। বিশেষত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংযুক্তি অনুপস্থিত থাকলে দরিদ্ররা কখনোই পর্যটনকে ধারণ করবে না। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কোয়ান্টাম পর্যটনকে দারিদ্র্য নির্মূলে সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ামক কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
উপসংহার
সমকালীন পর্যটন বিষয়ভিত্তিক ও দ্রুত বর্ধনশীল। পর্যটন দিয়ে যত সহজে কর্মসৃজন ও আয় বৃদ্ধি করা যায়, ততো সহজে সম্ভবত দারিদ্র্য নির্মূল করা যায় না। আবার কিছু পর্যটন আছে, যারা সাময়িকভাবে দারিদ্র্য বিমোচন করে - নির্মূল করতে পারে না। পর্যটনের কোয়ান্টাম শক্তি দারিদ্র্যের উপর প্রবলভাবে আঘাত করতে সক্ষম। এই কোয়ান্টাম শক্তির পরিমাপ ও প্রয়োগ করতে পারলে দারিদ্র্য নির্মূলের পন্থা উদ্ভাবন করা সম্ভব। কোয়ান্টাম পর্যটনের মৌলিক বিষয়াবলি সমন্বয়ের মাধ্যমে পর্যটনের নতুন অবয়ব উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। দারিদ্র্যের মতো জটিল বিষয়কে কার্যকরভাবে মোকাবিলার এই প্রায়োগিক শক্তি আমাদের দেশে যে কতটা প্রয়োজন, তা বলাই বাহুল্য। দরিদ্র মানুষদের ভালোবেসে পর্যটন কর্মকাণ্ডে যুক্তকরণ এবং ধরে রাখা সত্যিই দুরূহ। গ্রামীণ দারিদ্র্যের প্রধান কারণ হচ্ছে সুশাসনের অভাব। তাই দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিশীলতা, স্থানীয় দুর্নীতি, স্থানীয় সরকারের অযোগ্যতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ইত্যাদি মোকাবিলার মধ্য দিয়ে দারিদ্র্যকে নির্মূল করতে হবে। সঙ্গে প্রায়োগিক পর্যটন প্রযুক্তির সম্পৃক্ততাও জরুরি। বিশেষত জনগণের প্রতি ভালোবাসা, জ্ঞান ও যোগাযোগ প্রভৃতি উপাদান কোয়ান্টাম পর্যটনের বিশেষ সহায়ক শক্তি হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে।
মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা
আরএ/