উপকূলীয় পর্যটন
উপকূল হলো সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা যা সমুদ্র সংলগ্ন উপকূলীয় রেখার সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। উপকূল প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল। জাতিসংঘের একটি অ্যাটলাস অনুসারে, ৪৪ শতাংশ মানুষ সমুদ্রের ১৫০ কিমি-এর মধ্যে বাস করে। গুরুত্ব ও জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্বের কারণে, উপকূল বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত সহায়ক। উপকূলীয় স্থানে সৈকত এবং সমুদ্রতীরের রিসোর্টগুলো পর্যটনের মাধ্যমে প্রচুর রাজস্ব আয় করে। উল্লেখ্য যে, আমাদের উপকূলীয় রেখা প্রায় ৭২০ কি.মি. দীর্ঘ।
সমুদ্রকেন্দ্রিক মোট ৪ ধরনের পর্যটন রয়েছে। এরা হলো জলাভূমি পর্যটন, সৈকত পর্যটন, সমুদ্র পর্যটন (Maritime Tourism) ও উপকূলীয় পর্যটন। উপকূলীয় পর্যটন সমুদ্র পর্যটনের চেয়ে জলাভূমি ও সৈকত পর্যটনের সঙ্গে অধিক নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। নিচে এদেরকে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
সমুদ্রভিত্তিক জলাভূমি পর্যটন: রামসার কনভেনশন অনুযায়ী জলাভূমি হলো এমন একটি স্থান বা এলাকা, যার মাটি মৌসুমভিত্তিক বা স্থায়ীভাবে আর্দ্র বা ভেজা থাকে। সমুদ্রের ক্ষেত্রে জলাভূমি হলো কম গভীরতাসম্পন্ন সামুদ্রিক এলাকা যার গভীরতা ৬ মিটারের কম ও অল্প স্রোতযুক্ত। সৈকত ও সমুদ্রের ৬ মিটার গভীর পানিতে পরিচালিত পর্যটন হলো সমুদ্রভিত্তিক জলাভূমি পর্যটন।
সৈকত পর্যটন: সমুদ্র তীরকে কেন্দ্র করে বিশ্রাম ও বিনোদনভিত্তিক যে পর্যটন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়, তাকে সৈকত পর্যটন (Coastal Tourism) বলে। সূর্যস্নান, সমুদ্রের পানিতে বিনোদনমূলক গোছল, সৈকতে হাঁটা, ঘুড়ি উড়ানো, প্যারাগ্লাইডিং, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা, সৈকতে বালুর ভাস্কর তৈরি, সৈকতে ফুটবল বা ভলিবল খেলা, অভিনয় ও সংগীতানুষ্ঠান উপভোগ করা ইত্যাদি বহুল প্রচলিত সৈকত পর্যটন কর্মকাণ্ড। এই পর্যটন বিশ্ব পর্যটনের বৃহত্তম একটি অংশ হিসেবে স্বীকৃত। গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় পর্যটকদের প্রায় ৬০ শতাংশ-ই সৈকত পর্যটক।
সমুদ্র পর্যটন: সমুদ্রের জলাভূমি অঞ্চল পার হয়ে সমুদ্রকে নিয়ে যে পর্যটন পরিচালিত হয়, তাকে সমুদ্র পর্যটন (Maritime Tourism) বলে। উল্লেখ্য যে, সমুদ্রে নৌকা ও জাহাজে চড়াকে (Boating and Sailing) কেন্দ্র করে তৈরি পর্যটনকে নটিক্যাল ট্যুরিজম (Nautical tourism) বলে। এটিও সমুদ্র পর্যটনের অংশ। সাঁতার, সার্ফিং, ডাইভিং, স্নর্কেলিং, সি-বার্ড ওয়াচিং, জলযানে চড়ে সমুদ্রে ভ্রমণ, নটিক্যাল স্পোর্টস ইত্যাদি সবই সমুদ্র পর্যটনের কর্মকা- হিসেবে বিবেচিত। উল্লেখ্য যে, আমাদের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এর অনেকগুলো অনুশীলন করা হচ্ছে।
উপকূলীয় পর্যটন: উপকূলীয় রেখা থেকে ১৫০ কিমি পর্যন্ত ভূমি এবং তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় জলসীমার মধ্যে পরিচালিত পর্যটকে উপকূলীয় পর্যটন বলে। তথ্য ও ব্যবহারিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, উপকূলীয় পর্যটন সমুদ্রভিত্তিক জলাভূমি পর্যটন ও সৈকত পর্যটনের সমষ্টি।
উপকূলীয় পর্যটন সম্পদ: বাংলাদেশের ১৯টি উপকূলীয় জেলার উপকূলীয় পর্যটন সম্পদ অন্যান্য পর্যটন সম্পদের চেয়ে ভিন্ন। এদের অবস্থান, স্বরূপ ইত্যাদি ভিন্নতার জন্য এরা ভিন্নরূপ পর্যটনের সৃষ্টি করে। এইসব সম্পদের ব্যবহার ও সংরক্ষণ রীতি সঙ্গত কারণেই আলাদা। নিচে এইসব সম্পদের বিবরণ দেওয়া হলো, যা থেকে উপকূলীয় পর্যটনের নানা ধরনের প্রডাক্ট লাইন তৈরি করা যায়।
১. প্রাকৃতিক পরিবেশ: চর ও আন্তঃজোয়ার এলাকাসমূহ, মোহনার গতি প্রকৃতি, মৎস্য ও অন্যান্য জলজ সম্পদ, সমভূমি ভূমি বন, ম্যানগ্রোভ, কৃষি জমি, পুকুর এবং ঝরনা ইত্যাদি।
২. প্রাকৃতিক মূলধন: বায়ু, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, সূর্যের আলো, বায়ু, গ্যাস ও তেল, বালি ও খনিজ পদার্থ, গভীর সমুদ্র, উপকূলীয় জল, প্লাবনভূমি, বহুবর্ষজীবী জলজ স্থান, নদী ইত্যাদি।
উপকূলীয় পর্যটনের প্রডাক্ট লাইন: আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত পর্যটন সম্পদসমূহ ব্যবহার করে অন্তত নিচের ১০ (দশ) ধরনের পর্যটন প্রডাক্ট লাইন তৈরি করা যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, সমবায়ভিত্তিক পর্যটন পরিচালনা এর মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
১. চর পর্যটন: চর ও আন্তঃজোয়ার এলাকাসমূহ নিয়ে গড়ে উঠতে পারে উপকূলীয় চর পর্যটন। চরের জীববৈচিত্র্য, সামুদ্রিক মাছের শুটকি প্রস্তুত ও মোহনার গতি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি অনুসন্ধিৎসু পর্যটক বা গবেষকদের জন্য বিশেষায়িত পর্যটন হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে।
২. সাংস্কৃতিক পর্যটন: সমুদ্র পাড়ের মানুষের কৃষিকাজ, খাদ্য রীতি, প্রাকৃতিক শিক্ষার ধরন, মাছ ধরার নিয়ম-রীতি, সামজিক সংস্কার, জীবনধারা ও অন্যান্য জলজ সম্পদ এবং তাদের চলমান জীবনের উপাদানসমূহ নিয়ে গড়ে উঠতে পারে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক পর্যটন।
৩. বন পর্যটন: উপকূলীয় বনভূমি সাধারণ বনভূমির চেয়ে আলাদা এবং ম্যানগ্রোভ সমৃদ্ধ। তাই উপকূলীয় বন, বিভিন্ন বন সম্পদ ও বনের জীববৈচিত্র্য নিয়ে গড়ে উঠা বন পর্যটন দেশি-বিদেশি সকল পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে।
৪. প্রকৃতি পর্যটন: এক সময় আমাদের চিকিৎসকরা রোগীদেরকে সমুদ্র পাড়ে হাওয়া বদলের জন্য পরামর্শ দিতেন। উপকূলস্থ ঋতুভিত্তিক বায়ু, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, সূর্যের আলো ইত্যাদি মানুষের মন ও মননের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষা, বিনোদন ও মানসিক গঠনে এই পর্যটন অপরিসীম ভূমিকা রাখতে পারে।
৫. শিক্ষা পর্যটন: প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাসের অবস্থান পর্যবেক্ষণ, সামুদ্রিক বালি ও খনিজ পদার্থ নিয়ে গবেষণা ইত্যাদি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য উচ্চাঙ্গের শিক্ষা পর্যটন সৃষ্টি করতে পারে।
৬. সমুদ্র পর্যটন: গভীর সমুদ্রে ভ্রমণ পৃথিবীর অনেক দেশে অত্যন্ত সুপরিচিত ও জনপ্রিয়। বিশেষত বহুতল বিশিষ্ট বিলাসী ক্রুজবোট দিয়ে প্রমোদভ্রমণ অত্যন্ত আকর্ষণীয় হিসেবে বিলাসী ভ্রমণকারীদের নজর কেড়েছে। এই জাতীয় পর্যটন ব্যবস্থা আমাদের মতো দেশে বৈদেশি মুদ্রা উপার্জনের অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
৭. জলাভূমি পর্যটন: উপকূলীয় জলাভূমি, প্লাবনভূমি, বহুবর্ষজীবী জলজ স্থান, নদী ইত্যাদি উপাদান নিয়ে উপকূলীয় জলাভূমি পর্যটন গড়ে উঠতে পারে। সমতলের জলাভূমির চেয়ে উপকূলীয় জলাভূমি সব শ্রেণির পর্যটকদের কাছে অধিক আকর্ষণীয়। আমাদের সমগ্র উপকূল জুড়ে এই পর্যটন আরও বেশি উপযোগী করে গড়ে তোলা যায়।
৮. সৈকত পর্যটন: কক্সবাজার, আনেয়ারা, পতেঙ্গা ও কুয়াকাটা-এই ৪টি জনপ্রিয় সৈকতের মাধ্যমে আমাদের দেশে সৈকত পর্যটন বিকশিত হয়েছে ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এখন দায়িত্ব হলো সৈকতের সুরক্ষা বজায় রেখে সৈকতে এমিনিটিস বৃদ্ধি করা। উল্লেখ্য যে, সৈকত পর্যটন ও সংশ্লিষ্ট সেবা সংক্রান্ত ISO 13009: 2015 মেনে চলা উচিত। অন্যথায়, আইএও কমপ্লায়েন্ট বিচ না হওয়ার জন্য হয়তো বিদেশি পর্যটকরা এক সময় আমাদের সৈকতগুলো বর্জন করবে।
৯. স্বাস্থ্য পর্যটন: পেশা, জীবনধারা ও অবস্থানের ভিন্নতার জন্য উপকূলীয় মানুষের স্বাস্থ্য ও রোগ-বালাই মিঠাপানি এলাকার মানুষের চেয়ে আলাদা। এই ভিন্নতার জন্য উপকূলে জন্মানো বহুমুখী উদ্ভিদ এদের রোগ প্রশমন ও নিরাময়ে বিশেষ কার্যকর। স্বাস্থ্য রক্ষা ও রোগ নিরাময়ের এই শিক্ষা ও অনুশীলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে উপকূলীয় নতুন ধরনের স্বাস্থ্য পর্যটন।
১০. উপকুলীয় ক্রুজিং: সাতক্ষীরা থেকে পুরো উপকূলীয় রেখা ধরে সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ পর্যন্ত একটি ক্রুজিং লাইন চালু করার সুযোগ রয়েছে। যা আমাদের উপকূলীয় পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সরকারের নীতি উদার হলে দেশের ভেতর থেকেই এমন উদ্যোক্তা বের হয়ে আসতে পারে। কিংবা পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বের মাধ্যমেও যৌথভাবে একটি ক্রুজ লাইন চালু করা যেতে পারে।
ভবিষ্যতের উপকূলীয় পর্যটন: আমাদের দেশ অন্যান্য দেশের উপকূলীয় পর্যটনের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে নাই। তবে সময়ের চাহিদা পূরণের জন্য ভবিষ্যতে উপকূলীয় পর্যটন অবশ্যই এগিয়ে যাবে। এই অগ্রসরমানতা উপকূলে নানা ধরনের উপকরণ ও প্রযুক্তি সংযুক্ত করবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভবিষ্যতের উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে টাইডাল-পুল এক্সপ্লোরেশন, ইয়টিং (Yachting), রেডিও-কন্ট্রোলড্ বোটিং (Radio-controlled Boating), হ্যাঙ্গ গ্লাইডিং (Hang Gliding), ওয়েক বোর্ডিং (Wake-boarding), সি কায়াকিং (Sea Kayaking), কাইট সার্ফিং (Kite Surfing), উইন্ড সার্ফিং (Wind Surfing), ড্রাগন-বোট প্যাডেলিং (Dragon-boat Paddling) এবং স্ট্যান্ডআপ প্যাডেল বোর্ডিং (Standup Paddle Boarding) ইত্যাদি চালু হবে আমাদের উপকূলীয় এলাকায়।
উপকূলীয় পর্যটন পদ্ধতি: সমাজবিজ্ঞানী Miller & Auyong ১৯৯৮ সালে বলেন যে, উপকূলীয় পর্যটনের সঙ্গে ৩ (তিন)টি নিয়ামক সম্পৃক্ত; এরা হলো ট্যুরিজম ব্রোকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী (Locals) ও পর্যটক। বিজ্ঞানীরা একে ব্রোকার-লোকালস্-ট্যুরিস্ট মডেল (Broker-Locals-Tourist Model/BLT Model) নামে অভিহিত করেন এবং বলেন যে, এদের পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়ার ফলে উপকূলীয় পর্যটনের রীতি ও উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। এই মডেলের প্রতিটি নিয়ামককে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে, উপকূলীয় পর্যটন পদ্ধতিকে গতিশীল করতে হলে BLT Model-এর প্রতিটি নিয়ামককে আলাদা ও যৌথভাবে নজর দিতে হবে।
এখানে ট্যুরিজম ব্রোকার বলতে পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি ও বেসরকারি পেশাজীবি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, গবেষক, সমাজকর্মী, অলাভজনক উন্নয়নকর্মী ও প্রতিষ্ঠান, পরিবেশকর্মী ইত্যাদি যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদেরকে বুঝানো হয়েছে। লোকালস্ অর্থ উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত অধিবাসী যারা পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমন সব সাধারণ মানুষ। আর ট্যুরিস্ট হলো যে সকল দেশি ও বিদেশি ব্যক্তিবর্গ উপকূলীয় গন্তব্যে ব্যবসায়, বিনোদন, শিক্ষা ও অন্যান্য কাজের উদ্দেশে স্বল্প সময়ের জন্য গমনাগমন করেন। পর্যটন প্রক্রিয়া স্থানীয় মানুষ ও ট্যুরিজম ব্রোকারদেরকে আর্থিক, সামজিক ও কর্মসংস্থানগত সুবিধাদি প্রদান করে। উল্লেখ্য যে, উপকূলীয় পর্যটন প্রক্রিয়ায় ট্যুরিজম ব্রোকারদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
উপকূলীয় পর্যটনের জন্য আশু করণীয়: উপকূলের সকল সম্পদই প্রাকৃতিক। এই দেশে দায়িত্বশীল পর্যটন অনুশীলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য উপকূল। ক্ষেত্রমতে এখানে ইকোট্যুরিজমের অনুশীলনও সম্ভব। তাই এর সকল সম্পদের সযত্ন সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহারের প্রতি নজর দেওয়া জরুরি। এই উদ্দেশে রাষ্ট্রকে অবশ্যই নিচের ৩ (তিন) টি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
১. জালবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর পর্যটনভিত্তিক জীবনধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এতদোদ্দেশ্যে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উপকূলীয় সকল সম্পদ, জৈববাস্তু ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিরক্ষণের জন্য বাস্তবোচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
২. উপকূলীয় পর্যটনের জন্য ভিন্নরূপ পর্যটন নীতি, পরিকল্পনা, কর কাঠামো নির্ধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক অর্থায়নে পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে হবে।
৩. উপকূলীয় পর্যটনের ভৌত কাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে বায়োমিমিক্রি অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয়। এতে পর্যটনের মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন সাধন ও ধরে রাখা সম্ভব হবে।
উপকূলীয় পর্যটনের চ্যালেঞ্জ: উপকূলীয় পর্যটন উন্নয়ন একটি জটিল ও অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। কারণ এর সঙ্গে রয়েছে সমুদ্র পাড়ের মানুষের জীবনধারা এবং উপকূল ও সমুদ্রে বসবাসকারী উদ্ভিদ ও প্রাণিদের বাস্তু নিরাপত্তার বিষয়। উপকূলীয় পর্যটনে আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রাদি ব্যবহারের সংশ্লেষ রয়েছে। তাই কেবল অর্থনীতি নয় পর্যটন উন্নয়নের সাথে সাথে এর উৎকর্ষ সাধন ও নিয়ন্ত্রণ সমানভাবে জরুরি। উপকূলীয় পর্যটনকে কাঙ্ক্ষিত রূপদানের মাধ্যমে এর সমগ্র অবয়ব উন্মোচনের জন্য পর্যটন শিক্ষা, গবেষণা, বহুমুখী পর্যটন ব্যবস্থাপনা এবং পর্যটকদের ভ্রমণকালীন আচরণকে বিশেষ মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে হবে। উপকূলীয় পর্যটনে ব্যবহৃত যানবাহন প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষত জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে জল দূষণ ও যন্ত্রাদি দিয়ে শব্দ দূষণ ইত্যাদি রোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা