রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

উচ্চশিক্ষায় সংকট: প্রসঙ্গ বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজ

দেশের প্রান্তিক মানুষের উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার অল্পদিনের মধ্যে চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে সবার নজরে চলে আসে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। ক্যাম্পাসের সংখ্যাধিক্য ও শিক্ষার্থী আয়তনে বিশ্বের অদ্বিতীয় এই প্রতিষ্ঠানটি নানাদিক দিয়ে আজও প্রথম। লুটপাট দুর্নীতি আর চরম অব্যস্থাপনায়ও বিশ্ববিদ্যালয়টি অদ্বিতীয়, এই তকমাটিও এখন মাঝে মাঝেই সামনে আসে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এই প্রতিষ্ঠানটি শায়ত্বশাসন ভোগ করার কথা থাকলেও সূচনা লগ্ন থেকেই সরকারি হস্তক্ষেপ ও সরকারের অনুগত ভিসি নিয়োগের ভিতর দিয়ে স্বেচ্ছারিতা ও দুর্নীতির ষোলোকলা পূরণ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে বেসরকারি অনার্স কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নানা অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য, নবায়নের নামে অধিভুক্ত কলেজের নিকট থেকে অর্থ আদায়, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতনের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অধ্যক্ষদের লুটপাটে ইন্ধন, মিনিস্ট্রি অডিটের নামে অর্থ আদায় সহ নানা অনিয়ম সেচ্ছাচারিতা ইত্যাদি কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজ এখন একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম। শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে বোধগম্য নয়।

দেশের সর্বত্র উচ্চশিক্ষা বিস্তারের যে মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এটি যাত্রা শুরু করে আজ অনেকটাই দূরে চলে এসেছে তার লক্ষ্য থেকে। তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজগুলোর শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে যে নতুন দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার পাঁয়তারা করছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষকদের স্ব স্ব কলেজগুলো বেতন দেবে বলে তাদের কলেজ নিয়োগ দেয়। অনেক কলেজ সে শর্ত আমলে নেয় না। নামমাত্র বেতন দিয়ে কলেজগুলোর বেশির ভাগ শিক্ষককে শ্রমদাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অনার্স কলেজের আয়ের সম্পূর্ণ অংশ শিক্ষকদের বেতন হিসেবে দেওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ কলেজ সেটি দেয়নি কিন্তু অভিভাবক প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই সমস্যার কোনো আশু সমাধান করেনি। উল্টো অধ্যক্ষদের লুটপাটে উসকে দিয়েছেন। বলা বাহুল্য অধিভুক্ত এই বেসরকরি অনার্স মাস্টার্স কলেজগুলো জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের লুটপাটের এজেন্ট। তাদের লুটপাটে সহযোগী হিসেবে কাজ করে এসব প্রতিষ্ঠান। করোনাকালে শিক্ষকদের এসব কলেজ কোনো বেতন দেয়নি। আর তখনই এই সংকট আবারও নতুন করে সবার সামনে চলে আসে। এই নিয়ে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষকগণ গত ১৬ ই মে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের মূল ফটকে মানব বন্ধন করে।

গত ১৬ মে শিক্ষকগণ যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ভিসিসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান রাখার শপথ করে। উপায় না দেখে ভিসি প্রতিশ্রুতি দেন শিক্ষামন্ত্রী দেশে আসলে তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে যৌক্তিক সমাধান দেবেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ গুলোতে কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে এসএসসি ৩.৫০ও এইচএসসিতে ৩.০০ সবমিলিয়ে ন্যূনতম যোগ্যতা জিপিএ ৬.৫০ থাকতে হবে। আর এই শর্ত বহাল থাকলে গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী এমনকি শহরের শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ মতো কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকরা। আর এতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ আছে বলেই মনে হচ্ছে।

সরকার শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে সমাধানের দৃষ্টিতে বিবেচনা না করে উল্টো কৌশলে দমননীতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা আমাদের সমগ্র শিক্ষাবৗবস্থার জন্য সুখকর কোনো সংবাদ নয়। শিক্ষকরা আন্দোলনের মাঝপথে বাড়ি ফিরে যান আর তখনই আসে এমন সিদ্ধান্ত। মূলত এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে শর্তের বেড়াজালে অধিভূক্ত কলেজ গুলোকে শিক্ষার্থী শূন্য করাই এর মূল উদ্দেশ্য যা বুঝতে কারও বাকি নেই। শিক্ষামন্ত্রীর জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় নিয়ে করা এক বছরের মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি তিনি শিক্ষামন্ত্রক এর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বরত অবস্থায় সবসময় এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলে আসছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এমন তালবাহানার সময়সীমা আরও বাড়বে বৈ কমার কোনো সম্ভাবনা শিক্ষকনেতারা দেখছেন না। মন্ত্রী একবার বলেন শর্টকোর্স খুলে শিক্ষকদের পুর্নবাসন করা হবে একবার বলেন লংকোর্স খোলা হবে ইত্যাদি কথা চরম অব্যস্থাপনার লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে, সেইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সময়ে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মূলত বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজকে অকার্যকর করতেই সরকারের এই চক্রান্ত। আধুনিক গণতান্ত্রিক কল্যাণকর রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য শিক্ষাকে সেবা হিসেবে বিবেচনা করে এর প্রসারেরর লক্ষে কাজ করা কিন্তু আমাদের দেশে সরকারের এই শিক্ষা সংকোচন নীতি বলে অন্যকথা। শিক্ষায় সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এমন নজির বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।

সরকারের নেতিবাচক এমন সিদ্ধান্তে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয় চূড়ান্ত বিচারে শিক্ষার্থীরাও হবে ভুক্তভোগী।। শিক্ষার্থীদের কোনো কথা না ভেবে শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য শিক্ষক সমাজ মেনে নিতে পারেনি। শিক্ষার্থী ভর্তির এমন প্রক্রিয়া আবারও ভাবিয়ে তুলেছে শিক্ষকসমাজকে। এভাবে সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে অনার্স কলেজগুলো কোনো শিক্ষার্থী পাবে না। অনেক শিক্ষার্থীর বন্ধ হবে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার জন্য ফলপ্রসু, টেকসই সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছে শিক্ষকসমাজ সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা। উচ্চ শিক্ষার সম্প্রসারণকে সরকার বেকারত্ব সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে অপব্যাখা করে, যদি সত্যিকার অর্থেই তেমনটি হয় তাহলে সে দায় কি সরকারের নয়? আর আমরা জানি শুধু কর্মসংস্থান নয় আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য তাহলে শুধু বেকারত্ব তৈরির দোহাই দিয়ে উচ্চশিক্ষাকে কোনঠাসা করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করে দেশের সুশীল সমাজ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপিত হচ্ছে এটা কম সময় নয়। এর চাইতে কম সময়ের মধ্যে প্রতিবেশী অনেক দেশ শিক্ষায় ঈর্ষাণীয় উন্নতি সাধন করতে পেরেছে। নেপাল, ভুটান এমনকি পাকিস্থানও শিক্ষায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে এগিয়ে। শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে প্রত্যাশিত মান অর্জনে এগিয়ে আছে এসব দেশ। মানসম্মত শিক্ষক সরবরাহ, শিক্ষকদের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদানে প্রতিবেশী সকল দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান তলানিতে। শিক্ষায় যথার্থ বিনিয়োগ বার্ষিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিউ এস যারা সারা বিশ্বের উচ্চশিক্ষার মান বিশ্লেষণ করে ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে যে বিশ্বের এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এটা আমাদের জন্যে সত্যি লজ্জার। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যেখানে আফগানিস্থান, পাকিস্থান নেপালের মত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকে সেখানে আমরা সবার পিছনে। কারণ, হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ, গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরিতে সরকারের অনীহা, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, সরকারের পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ইত্যাদি কারণে স্বাধীনাত্তোর বাংলাদেশে শিক্ষার মান কেবল পিছিয়েছে।

আর যদি সত্যিকার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পেতে চাই দেশকে যথার্থভাবে উৎপাদন ও উন্নয়নের কাছাকাছি নিয়ে যেত চাই তাহলে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের এখনই সময়। দেশের প্রকৃত উন্নয়ন পেতে হলে পদ্মা সেতুর মত শিক্ষাখাতকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় এনে শিক্ষকদের স্বার্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করাটা এখন বৈশ্বিক উন্নয়নের সহায়ক বলে মনে করেন দেশের আপামর জনগণ।

লেখক:গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষা গবেষক এ্যাসিসন্ট্যান্ট ম্যানেজার, সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ঝঊউচ) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলামোটর ঢাকা

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি