শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৯ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

উচ্চশিক্ষায় সংকট: প্রসঙ্গ বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজ

দেশের প্রান্তিক মানুষের উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার অল্পদিনের মধ্যে চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে সবার নজরে চলে আসে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। ক্যাম্পাসের সংখ্যাধিক্য ও শিক্ষার্থী আয়তনে বিশ্বের অদ্বিতীয় এই প্রতিষ্ঠানটি নানাদিক দিয়ে আজও প্রথম। লুটপাট দুর্নীতি আর চরম অব্যস্থাপনায়ও বিশ্ববিদ্যালয়টি অদ্বিতীয়, এই তকমাটিও এখন মাঝে মাঝেই সামনে আসে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এই প্রতিষ্ঠানটি শায়ত্বশাসন ভোগ করার কথা থাকলেও সূচনা লগ্ন থেকেই সরকারি হস্তক্ষেপ ও সরকারের অনুগত ভিসি নিয়োগের ভিতর দিয়ে স্বেচ্ছারিতা ও দুর্নীতির ষোলোকলা পূরণ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে বেসরকারি অনার্স কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নানা অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য, নবায়নের নামে অধিভুক্ত কলেজের নিকট থেকে অর্থ আদায়, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতনের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অধ্যক্ষদের লুটপাটে ইন্ধন, মিনিস্ট্রি অডিটের নামে অর্থ আদায় সহ নানা অনিয়ম সেচ্ছাচারিতা ইত্যাদি কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজ এখন একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম। শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে বোধগম্য নয়।

দেশের সর্বত্র উচ্চশিক্ষা বিস্তারের যে মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এটি যাত্রা শুরু করে আজ অনেকটাই দূরে চলে এসেছে তার লক্ষ্য থেকে। তেমনি সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজগুলোর শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে যে নতুন দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার পাঁয়তারা করছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষকদের স্ব স্ব কলেজগুলো বেতন দেবে বলে তাদের কলেজ নিয়োগ দেয়। অনেক কলেজ সে শর্ত আমলে নেয় না। নামমাত্র বেতন দিয়ে কলেজগুলোর বেশির ভাগ শিক্ষককে শ্রমদাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অনার্স কলেজের আয়ের সম্পূর্ণ অংশ শিক্ষকদের বেতন হিসেবে দেওয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ কলেজ সেটি দেয়নি কিন্তু অভিভাবক প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই সমস্যার কোনো আশু সমাধান করেনি। উল্টো অধ্যক্ষদের লুটপাটে উসকে দিয়েছেন। বলা বাহুল্য অধিভুক্ত এই বেসরকরি অনার্স মাস্টার্স কলেজগুলো জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের লুটপাটের এজেন্ট। তাদের লুটপাটে সহযোগী হিসেবে কাজ করে এসব প্রতিষ্ঠান। করোনাকালে শিক্ষকদের এসব কলেজ কোনো বেতন দেয়নি। আর তখনই এই সংকট আবারও নতুন করে সবার সামনে চলে আসে। এই নিয়ে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষকগণ গত ১৬ ই মে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের মূল ফটকে মানব বন্ধন করে।

গত ১৬ মে শিক্ষকগণ যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ভিসিসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান রাখার শপথ করে। উপায় না দেখে ভিসি প্রতিশ্রুতি দেন শিক্ষামন্ত্রী দেশে আসলে তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে যৌক্তিক সমাধান দেবেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ গুলোতে কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে এসএসসি ৩.৫০ও এইচএসসিতে ৩.০০ সবমিলিয়ে ন্যূনতম যোগ্যতা জিপিএ ৬.৫০ থাকতে হবে। আর এই শর্ত বহাল থাকলে গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী এমনকি শহরের শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ মতো কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকরা। আর এতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ আছে বলেই মনে হচ্ছে।

সরকার শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে সমাধানের দৃষ্টিতে বিবেচনা না করে উল্টো কৌশলে দমননীতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা আমাদের সমগ্র শিক্ষাবৗবস্থার জন্য সুখকর কোনো সংবাদ নয়। শিক্ষকরা আন্দোলনের মাঝপথে বাড়ি ফিরে যান আর তখনই আসে এমন সিদ্ধান্ত। মূলত এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে শর্তের বেড়াজালে অধিভূক্ত কলেজ গুলোকে শিক্ষার্থী শূন্য করাই এর মূল উদ্দেশ্য যা বুঝতে কারও বাকি নেই। শিক্ষামন্ত্রীর জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় নিয়ে করা এক বছরের মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি তিনি শিক্ষামন্ত্রক এর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বরত অবস্থায় সবসময় এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলে আসছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এমন তালবাহানার সময়সীমা আরও বাড়বে বৈ কমার কোনো সম্ভাবনা শিক্ষকনেতারা দেখছেন না। মন্ত্রী একবার বলেন শর্টকোর্স খুলে শিক্ষকদের পুর্নবাসন করা হবে একবার বলেন লংকোর্স খোলা হবে ইত্যাদি কথা চরম অব্যস্থাপনার লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে, সেইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সময়ে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মূলত বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজকে অকার্যকর করতেই সরকারের এই চক্রান্ত। আধুনিক গণতান্ত্রিক কল্যাণকর রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য শিক্ষাকে সেবা হিসেবে বিবেচনা করে এর প্রসারেরর লক্ষে কাজ করা কিন্তু আমাদের দেশে সরকারের এই শিক্ষা সংকোচন নীতি বলে অন্যকথা। শিক্ষায় সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এমন নজির বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।

সরকারের নেতিবাচক এমন সিদ্ধান্তে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয় চূড়ান্ত বিচারে শিক্ষার্থীরাও হবে ভুক্তভোগী।। শিক্ষার্থীদের কোনো কথা না ভেবে শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য শিক্ষক সমাজ মেনে নিতে পারেনি। শিক্ষার্থী ভর্তির এমন প্রক্রিয়া আবারও ভাবিয়ে তুলেছে শিক্ষকসমাজকে। এভাবে সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে অনার্স কলেজগুলো কোনো শিক্ষার্থী পাবে না। অনেক শিক্ষার্থীর বন্ধ হবে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একনায়কতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার জন্য ফলপ্রসু, টেকসই সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছে শিক্ষকসমাজ সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা। উচ্চ শিক্ষার সম্প্রসারণকে সরকার বেকারত্ব সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে অপব্যাখা করে, যদি সত্যিকার অর্থেই তেমনটি হয় তাহলে সে দায় কি সরকারের নয়? আর আমরা জানি শুধু কর্মসংস্থান নয় আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য তাহলে শুধু বেকারত্ব তৈরির দোহাই দিয়ে উচ্চশিক্ষাকে কোনঠাসা করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করে দেশের সুশীল সমাজ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপিত হচ্ছে এটা কম সময় নয়। এর চাইতে কম সময়ের মধ্যে প্রতিবেশী অনেক দেশ শিক্ষায় ঈর্ষাণীয় উন্নতি সাধন করতে পেরেছে। নেপাল, ভুটান এমনকি পাকিস্থানও শিক্ষায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে এগিয়ে। শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে প্রত্যাশিত মান অর্জনে এগিয়ে আছে এসব দেশ। মানসম্মত শিক্ষক সরবরাহ, শিক্ষকদের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদানে প্রতিবেশী সকল দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান তলানিতে। শিক্ষায় যথার্থ বিনিয়োগ বার্ষিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিউ এস যারা সারা বিশ্বের উচ্চশিক্ষার মান বিশ্লেষণ করে ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে যে বিশ্বের এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এটা আমাদের জন্যে সত্যি লজ্জার। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যেখানে আফগানিস্থান, পাকিস্থান নেপালের মত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকে সেখানে আমরা সবার পিছনে। কারণ, হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ, গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরিতে সরকারের অনীহা, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, সরকারের পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ইত্যাদি কারণে স্বাধীনাত্তোর বাংলাদেশে শিক্ষার মান কেবল পিছিয়েছে।

আর যদি সত্যিকার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পেতে চাই দেশকে যথার্থভাবে উৎপাদন ও উন্নয়নের কাছাকাছি নিয়ে যেত চাই তাহলে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের এখনই সময়। দেশের প্রকৃত উন্নয়ন পেতে হলে পদ্মা সেতুর মত শিক্ষাখাতকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় এনে শিক্ষকদের স্বার্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করাটা এখন বৈশ্বিক উন্নয়নের সহায়ক বলে মনে করেন দেশের আপামর জনগণ।

লেখক:গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষা গবেষক এ্যাসিসন্ট্যান্ট ম্যানেজার, সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ঝঊউচ) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলামোটর ঢাকা

Header Ad
Header Ad

মধ্যরাতে ডাকসু নিয়ে উত্তাল ঢাবি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিন্ডিকেটে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) বিষয়ে আলোচনা না করতে উপাচার্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার অভিযোগ উঠে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডাকসুর রূপরেখা প্রণয়নের আল্টিমেটাম দেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা এমন আল্টিমেটাম দেন।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‌‌‘যারা ডাকসু বন্ধের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় আছি। আমরা লীগকে বিতাড়িত করেছি, কোনো ছাত্রসংগঠনের ভয়ে ডাকসু থেকে পিছু হটব না। যারা ডাকসুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কবরস্থান, টেম্পুস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করে তাদের আমরা ১৭ জুলাই লাল কার্ড দেখিয়েছি। প্রশাসনের কাছে বলব, আপনারা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবি জোবায়ের বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থীরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। সুতরাং নতুন করে যদি দানব তৈরি হয় শিক্ষার্থীরা তাদের পালাতে বাধ্য করবে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা আর কোনো দানবকে দেখতে চায় না। ছাত্রদল যখন দেখেছে তারা ডাকসুতে জিততে পারবে না, তখন তারা ভিসি স্যারের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করার সাহস দেখিয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এই প্রশাসনের সঙ্গেই আছি। অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিয়ে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বক্তব্যের শুরুতেই ছাত্রদল কর্তৃক হেনস্তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। তিনি বলেন, উপাচার্যকে অপমান করার মাধ্যমে ছাত্রদল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কেই অপমান করেছে। উপাচার্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের আর পুনরাবৃত্তি চাই না।

Header Ad
Header Ad

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধুর অপ্রয়োজনীয় ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে, সাবেক সরকারের কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে দুদকের কমিশন বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সংস্থার মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গার সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩৭ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএফআইইউ-এর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের প্রায় দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধেও মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক শুধাংশ শেখর ভদ্রের বিরুদ্ধে ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুদক। এছাড়া বিদেশে পালানোর আশঙ্কায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ঋণের নামে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। পাশাপাশি, সাংবাদিক মুন্নি সাহার বিরুদ্ধে ১৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭১ জন ফিলিস্তিনি। ইহুদিবাদী দেশটি এই সময়ে গাজায় ৩৪টি বিমান হামলা চালিয়েছে।

এখন পর্যন্ত এই সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ৬০০ জনে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় আহত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪টি বিমান হামলা চালিয়েছে। গাজা উপত্যকাজুড়ে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে গাজার মিডিয়া অফিস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসরায়েলি সেনাবাহিনী চিকিৎসা ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলকে নিহতদের লাশ সরিয়ে নেওয়ার জন্য হামলাস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে এবং বিশেষ করে গাজা এবং উত্তর গাজায় রাস্তায় লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।”

“নৃশংস এই অপরাধের” জন্য মিডিয়া অফিস ইসরায়েলকে দায়ী করেছে এবং গণহত্যা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মধ্যরাতে ডাকসু নিয়ে উত্তাল ঢাবি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত
বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি