বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫ | ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশেষ নিবন্ধ

ক্ষতিপূরণ আদায়ে টর্ট আইনের গুরুত্ব অপরিসীম

আমাদের দেশে টর্ট আইনের যথেষ্ট ব্যবহার ও প্রয়োগ না থাকায় অনেকেই টর্ট এবং টর্ট আইনের সঙ্গে পরিচিত নন। অথচ আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে এমন গুরুত্বপূর্ণ আইনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম এবং তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

লাতিন শব্দ Tortum থেকে Tort শব্দটি এসেছে–যার অর্থ বাঁকা বা সোজা পথে না চলে বাঁকা পথে চলা। যদিও বাংলা ভাষায় Tort-এর কোনো উপযুক্ত আইনি প্রতিশব্দ ব্যবহার হতে দেখা যায় না। সাধারণত টর্টকে দেওয়ানি ক্ষতি বা নিমচুক্তি কিংবা কখনো ব্যক্তিগত অপকার হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। সাধারণ অর্থে টর্ট বলতে বোঝায়, কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান। টর্টের কোনো বিধিবদ্ধ আইন নেই। তথাপি পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে এ আইনের প্রয়োগ এবং বিস্তার অনেক বেশি। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে টর্ট আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ আইনটির যথাযথ ও সুষ্ঠু প্রয়োগ ঘটালে একদিকে যেমন দেশ থেকে অনেক অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব, তেমনি অপরদিকে এই আইনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সত্যিকারের আইনি প্রতিকার দেওয়াও সম্ভব। তবে এই ক্ষতিপূরণের কোনো নির্দিষ্টতা নেই।

বাংলাদেশে অন্যান্য বিধিবদ্ধ আইনের মতো টর্ট আইন বিধিবদ্ধ নয়। এখানে প্রযোজ্য টর্ট আইন ইংল্যান্ডের সাধারণ আইন অনুসারে গঠিত। টর্টের মামলা বিচারের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও যুক্তিসঙ্গত কারণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। এ দেশে টর্টের যে দু-চারটি মামলা হয়ে থাকে, তা মূলত Defamation বা মানহানি কেন্দ্রিক। টর্টের অন্যান্য বিষয় যেমন-দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, উৎপাত, গণউৎপাত বা Public nuisance, অনধিকার প্রবেশ ইত্যাদি বিষয়ক মামলা আদালতে যেন অজ্ঞাত কারণে দায়ের হতে দেখা যায় না। ফলে আইনের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখাটি আমাদের দেশের আইন অঙ্গনে উপেক্ষিত থাকায় এর প্রয়োগ ও প্রতিকার সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। এ দেশের বেশির ভাগ জনগণই জানেন না যে, শারীরিক আঘাতের জন্য দোষী ব্যক্তি কারাবরণের পাশাপাশি বাদির (ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি) চিকিৎসার খরচসহ অন্যান্য ক্ষতির দায়স্বরূপ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। দোষী ব্যক্তিকে জেল বা অর্থদন্ড দিয়ে থাকে আদালত তথা রাষ্ট্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাদী কোনো সুবিধা পান না। কিন্তু টর্ট আইনের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তির কাজের জন্য বাদী ব্যক্তিগতভাবে যে ক্ষতির সম্মুখীন হন, তা পুষিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। এতে বাদী নিজের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে আইনি প্রতিকার পেয়ে থাকেন।

একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা যেতে পারে। মনে করা যাক, কোনো এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির হাত বা পা কেটে ফেললো বা ভেঙ্গে দিলো। এ ক্ষেত্রে যদি দোষী ব্যক্তিকে আদালত কর্তৃক অপরাধের ধরন ও প্রকৃতি অনুয়ায়ী আইন মোতাবেক নির্দিষ্ট মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে এতে বাদীর বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির তেমন কিছু আসে-যায় না। তার চিকিৎসা খরচ ও হাত-পা কাটা বা ভেঙে ফেলার কারণে তিনি যে কতদিন কাজ করতে পারলেন না এবং তার আনুষঙ্গিক ক্ষতির জন্য কেবল টর্টে মামলা করার মাধ্যমেই ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব। টর্টে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকারের বিধান রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে আর্থিক জরিমানাই বেশি দেওয়া হয়ে থাকে। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা (Injunction) জারি বা সুনির্দিষ্ট প্রতিকারের আদেশ দেওয়া হয়ে থাকে। আধুনিক বিশ্বে টর্ট আইনের মাধ্যমে মানসিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও চালু আছে।

আমাদের দেশে টর্ট আইনের প্রয়োজনীয়তা কেন? এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, এ দেশে প্রতিনিয়ত আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে। যেমন–মানুষের জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ও খাদ্য-দ্রব্যে ভেজাল মেশানেো; হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হওয়া; ভুল চিকিৎসায় রোগীর জীবন কেড়ে নেওয়া বা জীবন বিপন্ন করে তোলা; বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মসূচির কারণে জনগণের ক্ষতি সাধিত হওয়া, বিশেষ করে রাস্তা বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করার ফলে জনগণের ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হওয়া; মক্কেলের সঙ্গে আইনজীবীর অসদাচারণ; অকারণে মানুষকে হেনস্তা বা হয়রানি করা, বিশেষ করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক); বিনা বিচারে আটক রাখা; একই নামের ভুল ব্যক্তিকে আটক করা ও কারাগারে পাঠানো; অকারণে জেল খাটানো; ডাক বিভাগের পিয়ন কর্তৃক প্রাপকের ঠিকানায় চিঠিপত্র সময়মতো না পৌঁছানো; চালকের অসাবধানতার জন্য প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটা; মালিকের অবহেলাজনিত কারণে শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা, যেমন–সাভারের রানা প্লাজার ঘটনা; পণ্য কিনে প্রতারিত হওয়া ইত্যাদির ন্যায় নানা অন্যায়-অপরাধ, ঘটনা-দুর্ঘটনাসমূহ আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে।

টর্ট আইনের ব্যাপক প্রয়োগ থাকলে উক্ত আইনের মাধ্যমে এসব ঘটনা-দুর্ঘটনা ও অন্যায়-অপরাধের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। যেমন–খাদ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান টর্টের মাধ্যমে সফলতা আনা সম্ভব। খাদ্য মানুষের প্রথম ও প্রধান মৌলিক চাহিদা। তাই খাদ্যের ব্যাপারে মানুষ সর্বদাই সতর্ক ও সচেষ্ট থাকেন। কিন্তু আমাদের দেশে জনগণের তথা ক্রেতার বিশ্বাসকে ও অসহায়ত্বকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বা বিক্রেতা অধিক মুনাফার লোভে প্রতিনিয়ত খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছে। শুধু খাদ্যে ভেজাল নয়, প্রায় সময়ই আমরা পত্রিকায় চিকিৎসকের অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার কারণে রোগী মারা যাওয়া বা রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার খবর পড়ে থাকি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পক্ষে কেউ পূর্ব থেকে চিকিৎসক বা হাসপাতালের সঙ্গে করে রাখা একটি চুক্তির জন্য কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন না। কিংবা নেওয়ার সাহস করেন কিংবা এ ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহ দেখান না। অথচ এ ক্ষেত্রে যদি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার বিষয়টি প্রমাণ করা যায়, তাহলে সহজেই ভুক্তভোগী রোগী বা রোগীর পরিবার কিছুটা হলেও সহায়তা পেতে পারেন। আমাদের দেশের সড়ক মহাসড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা দুর্ঘটনা যেন ভাগ্যদেবীর আশীর্বাদ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতিনিয়ত অসখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও প্রতিটি দুর্ঘটনার পর দোষী ব্যক্তিরা যেন ‘দাদা ভাই’ বা ‘গড ফাদার’-এর ন্যায় পর্দার অন্তরালেই থেকে যায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে যদি টর্ট আইনে মামলা (অসাবধানতার জন্য ক্ষতি হলে) হতো, তাহলে দোষী ব্যক্তিদের বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হতো। তাই জনগণের উচিৎ হবে, এ ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে আদালতে গিয়ে টর্ট আইনের অধীনে মামলা করা। আর এ জাতীয় মামলা সরকারের পক্ষ থেকে নয়; বরং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকেই করতে হবে। এসব ঘটনায় মামলা না হওয়ার কারণে দোষী ব্যক্তিরা বারবার রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে টর্টের মামলা করলে অসাধু ব্যবসায়ী বা দায়িত্বে অবহেলাকারী চিকিৎসক কিংবা অসতর্ক গাড়ি চালক কেউ তাদের দায় এড়াতে পারবে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আইনের উপযুক্ত ও যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিকার ও সুফল পেতে পারেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, একবার কেউ ফৌজদারী অপরাধের জন্য জেল খাটলে, জরিমানা দিলে এবং এসবের পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিলে সে আর দ্বিতীয়বার ওই ধরনের অন্যায়-অপরাধ করতে চাইবে না। আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলাসমূহের বেলায় আদালত কর্তৃক দায়ী ব্যক্তির কৃত অপরাধের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রেওয়াজ প্রবল মাত্রায় বাড়ালে এবং অপরাধের সাথে জড়িত কাউকে কোনোভাবেই ছাড় না দিলে দেশ থেকে এ ধরনের অপরাধসমূহ সহজেই হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।

এ প্রসঙ্গে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। আর তা হচ্ছে, অসাবধানতার জন্য ক্ষতি হলে অবৈধ মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হলো সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ উপার্জনের বর্তমান মূল্য বা ডিসকাউন্টেড ভ্যালু অব ফিউচার ফ্লো অব আর্নিংস পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনুসারে, মৃত ব্যক্তি বেঁচে থাকলে বাকি কর্মক্ষম জীবনে তিনি যে আয় করতে পারতেন, তার বর্তমান বাজার মূল্যই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ডিসকাউন্টিং পদ্ধতিতে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ মূলত: তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তা হচ্ছে; মৃত ব্যক্তির বয়স, তাঁর ভবিষ্যৎ উপার্জনের ক্ষমতা এবং সুদের হার বা ডিসকাউন্ট রেট। মৃত ব্যক্তির বয়স অল্প হলে তাঁদের বেশি দিন বেঁচে থাকার এবং উপার্জন করার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর আয় ক্ষমতা নির্ভর করে। সুদের হার বেশি হলে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আয়ের বর্তমান মূল্য কম হবে। সুদের হার কম হলে ভবিষ্যৎ আয়ের বর্তমান মূল্য বেশি হবে। সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসে বা তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকান্ডেরে পর নিহত শ্রমিকদের জন্য ডিসকাউন্টিং পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ নিরূপণের হিসাব করলে তার সার্বিক যোগফল কত হবে তা কি সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টস মালিকপক্ষ একবারও ভেবে দেখেছেন? এ ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদেরই এ বিষয়ে মামলা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এ সকল ক্ষেত্রে না ক্ষতিগ্রস্ত, না সরকার কোনো পক্ষকেই এই আইনের আশ্রয় নিতে দেখা যায়নি।

আমাদের মতো একটি দেশে যেখানে প্রতিনিয়ত-প্রতি মুহুর্তে-প্রতিদিন আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে নানাভাবে; যেখানে সাধারণ মানুষ নিত্য হেনস্তা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন; যেখানে প্রতারণা প্রবলমাত্রায় বিরাজমান, সেখানে টর্টের মতো কার্যকর একটি আইন কেন যে আজও উপেক্ষিত রয়েছে তা বোধগম্য নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, টর্ট আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ হলে তা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ধরণ পাল্টে দিতে পারে। টর্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার। পাশাপাশি এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটলে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যহারে কমে যাবে।

সর্বোপরি দেশের সব মানুষকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করতে টর্ট আইন এক অনন্য ভূমিকা পালন করতে পারে। সুতরাং টর্ট আইনের প্রয়োজনীয়তার দিকে লক্ষ্য রেখেই এই আইনটির ব্যাপক প্রচার দরকার। সেইসঙ্গে এর সুষ্ঠু প্রয়োগ ও ব্যবহারের লক্ষ্যে সাধারণ জনগণ, বিভিন্ন গণমাধ্যম, সরকার, আইন সংশ্লিষ্টসহ সবাই একযোগে এগিয়ে এসে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দেশে টর্ট আইনের গণ্ডি কেবল মানহানির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তা মানুষের নানামুখী প্রয়োজনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে পারবে বলে আশা করা যায়।

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
kekbabu@yahoo.com

এসএ/

Header Ad
Header Ad

সিআইডি প্রধানসহ ১৮ কর্মকর্তাকে বদলি ও ৪ পুলিশ সুপার ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। এই তালিকায় সিআইডি প্রধান মো. মতিউর রহমান শেখসহ সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল, অ্যান্টি টেরোরিজম, হাইওয়ে ও শিল্পাঞ্চল পুলিশের প্রধানও রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মাহবুবর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই বদলি পদায়ন করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে সিআইডির বর্তমান প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. মতিউর রহমান শেখকে পুলিশ সদর দফতরে, পুলিশ একাডেমি সারদার প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাসুদুর রহমান ভূঞাকে পুলিশ সদর দফতরে, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) খন্দকার রফিকুল ইসলামকে পুলিশ সদর দফতরে, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি রেজাউল করিমকে পুলিশ সদর দফতরে, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি ড. শোয়েব রিয়াজ আলমকে সারদা পুলিশ একাডেমিতে, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি আশরাফুর রহমানকে পুলিশ সদর দফতরে, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি আতাউল কিবরিয়াকে ময়মনসিংহ রেঞ্জে, শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিআইজি আশরাফুজ্জামানকে রংপুর পিটিসিতে, সিআইডির ডিআইজি হারুন উর রশীদ হাজারীকে শিল্পাঞ্চল পুলিশে, সারদা পুলিশ একাডেমির ডিআইজি রখফার সুলতানা খানমকে হাইওয়ে পুলিশে, রাজশাহী মহানগরীর উপ-কমিশনার সাইফুদ্দীন শাহীনকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, খুলনার রেঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদকে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার, ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি রওনক জাহানকে যশোর জেলা পুলিশ সুপার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদ্য ডিসি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত আবুল ফজল মহম্মদ তারিক হোসেন খানকে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার ও বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরের পুলিশ সুপার জিয়া উদ্দিন আহমদকে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও সুনামগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্টকৃত আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খানকে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত ও কক্সবাজারের সাবেক পুলিশ সুপার বর্তমানে পুলিশ অধিদফতরে রিপোর্টকৃত মুহাম্মদ রহমত উল্লাহকে পুলিশ অধিদফতরে ও নীলফামারী জেলার সাবেক পুলিশ সুপার বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্টকৃত মোহাম্মদ মোর্শেদ আলমকে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার, নীলফামারী, যশোর ও সুনামগঞ্জ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার ও ময়মনসিংহ রেঞ্জে নতুন ডিআইজি পদায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার, নীলফামারী, যশোর ও সুনামঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপারদেরকে (পুলিশ সদর দফতরে রিপোর্টকৃত) ওএসডি করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

নির্বাচন পেছানোর কোনো অজুহাত জনগণ গ্রহণ করবে না: মির্জা আব্বাস

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ছবি: সংগৃহীত

‘শেখ হাসিনার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়’ জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলমের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের বিচার সবাই চাই। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া পেছানোর কোনো অজুহাত জনগণ গ্রহণ করবে না।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ দেওয়ার পর বাইরে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, একজনের চিন্তা চেতনা মতামত আরেকজনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে, তা হয় না। কিছু কিছু লোক ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করছে।

শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হতেই হবে। আদালত তার আইনের নিয়মে চলে। তার দ্রুত বিচার হতে হবে। আগে কখনো কোটা আন্দোলন বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দল গঠন করবে বলে আমরা শুনি নাই। নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার অজুহাতকে জনগণ পছন্দ করছে না আমরা তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

এর আগে দুপুরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে দেখতে ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। তিনি হাসপাতালে গিয়ে ফখরুলের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন।

উল্লেখ্য, গত রোববার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন মির্জা ফখরুল।

Header Ad
Header Ad

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত

ছবি: সংগৃহীত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আজকের সেমিফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে ভারত। গত বছর ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হারানোর পর এবার সেই প্রতিশোধ নিতে সফল হলো রোহিত শর্মার দল।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। তার ৭৩ রানের ইনিংস এবং অ্যালেক্স ক্যারির ৬১ রানের সুবাদে ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় অস্ট্রেলিয়া।

ভারতীয় ইনিংস শুরুতে কিছুটা চাপে পড়লেও, বিরাট কোহলির ৮৪ রানের অনবদ্য ইনিংসে দলকে জয় এনে দেয়। কোহলি এবং শ্রেয়াস আইয়ারের মধ্যে তৃতীয় উইকেটে ৯১ রানের পার্টনারশিপ ভারতকে স্বস্তি দেয়। আইয়ার ৪৫ রান করে আউট হলেও কোহলি এক প্রান্তে দৃঢ়তার সাথে খেলে যান।

অক্ষর প্যাটেলও ২৭ রান করে ফিরে যাওয়ার পর, কোহলি কেএল রাহুলের সঙ্গে ৪৭ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। কোহলি সেঞ্চুরির পথে থাকলেও ৮৪ রান করে আউট হন। এরপর হার্দিক পান্ডিয়া ২৪ বলে ২৮ রান করে আউট হলেও, রাহুল ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন এবং ভারতের জয় নিশ্চিত করেন।

অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই ম্যাচে ব্যাটিং ছিল বেশ কঠিন। তাদের ওপেনার কুপার কনোলি ৯ বলে ০ রান করে আউট হন। ট্রাভিস হেডও ৩৩ বলে ৩৯ রান করে আউট হন। স্মিথ কিছুটা লড়াই করলেও, তার আউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া কোনঠাসা হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত, ক্যারি ৫৭ বলে ৬১ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৪ রানের সংগ্রহে পৌঁছে দেন।

ভারতের হয়ে বোলিংয়ে শামি তিনটি উইকেট নেন, যা দলের জয়কে সহজ করে দেয়। এভাবে, ভারত প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সিআইডি প্রধানসহ ১৮ কর্মকর্তাকে বদলি ও ৪ পুলিশ সুপার ওএসডি
নির্বাচন পেছানোর কোনো অজুহাত জনগণ গ্রহণ করবে না: মির্জা আব্বাস
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত
বিরামপুরে ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশেদকে সমন্বয়ক হিসেবে নয়, যোগ্যতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে: রাবি উপাচার্য
স্ত্রী ও সন্তানসহ ১৭ মার্চ বাংলাদেশে আসছেন ফুটবলার হামজা চৌধুরী
অ্যাটলির ৬০০ কোটি বাজেটের সিনেমায় সালমানের পরিবর্তে আল্লু অর্জুন!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা বাতিল
‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে ভাইরাল হওয়া যুবদল নেতা বহিষ্কার
চোরাচালান ও জালিয়াতি করে ১৩৩ কোটি টাকা আয় করেছেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান: সিআইডি
সারা দেশে ৫ হাজার ৪৯৩ চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার
নারী হাজতখানায় শ্রমিক লীগ নেতা তুফান, স্ত্রী-শাশুড়িসহ গ্রেফতার ৫
চুয়াডাঙ্গায় পূর্বাশা পরিবহনের বাসে তল্লাশি, ৩ কোটি টাকার স্বর্ণসহ দুই পাচারকারী আটক
যুবলীগ নেতা সাদ্দাম অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত ইসরায়েল, শর্ত জিম্মি মুক্তি ও নিরস্ত্রীকরণ
'গে অ্যাক্টিভিস্ট' অভিযোগের বিষয়ে যা বললেন তাসনিম জারা  
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবাই মিলে দেশ পরিচালনা করা হবে: এ্যানী
টাঙ্গাইলে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন সিএনজি চালক
স্কুল ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা বাতিল করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়
সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় নির্বাচন!