মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের কারিকুলাম

আধুনিক শিক্ষাক্রমের প্রবক্তা Ralph Tylor ১৯৫৬ সালে শিক্ষাক্রমের একটি ধারণা দেন। এর মূল কথা হচেছ-‌‘শিক্ষার্থীদের সকল শিখন যা শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের দ্বারা পরিকল্পিত ও পরিচালিত হয় তাই শিক্ষাক্রম।

(All the learning of students which is planned  and directed by the school to attain its educational goals.) তিনি চারটি প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষাক্রমের ধারণাটি স্বচছ করার চেষ্টা করেন। প্রশ্নগুলো হচেছ (ক) শিক্ষা কি কি উদ্দেশ্য অর্জন করবে (খ) কী কী শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বিদ্যালয় উল্লেখিত উদ্দেশ্য অর্জন করবে (গ) এ সকল শিখণ অভিজ্ঞতা কী উপায়ে সংগঠন ও বিন্যাস করা যাবে এবং ( ঘ) উদ্দেশ্যগুলো অর্জিত হয়েছে কিনা তা কিভাবে যাচাই করা যাবে। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-বিষয়বস্তু-সংগঠন-মূল্যায়ণ এই চারস্তর মডেল বলা হয়ে থাকে টেলরের ধারণাকে। ১৯৭০ সালে Mauritz Johnson বলেন, Ó“Curriculum is concerned not with what students will do in the learning situation, but with what they will learn as a consequence of what they do. Curriculum is concerned with results. ১৯৭৯সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) শিক্ষাক্রমের একটি ধারণ প্রদান করে। এতে শিখণ-শেখানো প্রক্রিয়াকে প্রাধ্যান্য দেয়া হয়। এখানে বলা হয়, A curriculum is an educational project defining: (a) the aims, goals and objectives of an educational action; (b) the ways, means and activities employed to achieve these goals; (c) the methods and instruments required to evaluate the success of the action.

বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর তৃতীয় বছর থেকেই অতি উচ্চাশা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ থেকে আট বছরে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় কিন্তু ২০২১ সালে এসেও আমরা এ শিক্ষার মেয়াদ অধিকাংশ দেশের মতো ষষ্ঠ শ্রেণিতেও উন্নীত করতে পারিনি। এটিকে কি বলব-বাস্তবতা না আমাদের অপারগতা? প্রাথমিক শিক্ষা এখনও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত থাকার ফলে মাধ্যমিক স্তরের ব্যাপ্তি হয়েছে সাত বছর। এখানে উল্লেখ্য যে, মাধ্যমিক স্তর কিন্তু দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। সেটিও আমরা আজ পর্যন্ত ঠিক করত পারিনি কারন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে আমরা কলেজ বানিয়ে আলাদা শিক্ষক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছি। এগুলো শুধুমাত্র একাডেমিক সিদ্ধান্ত নয়, এর সাথে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একাডেমিক সিদ্ধান্ত যারা নিতে পারেন, মতামত দিতে পারেন তাদের তো আর প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাই বিষয়টি অবহেলিত কিংবা সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যেই রয়ে গেছে। সাত বছরের মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর আবার তিনটি উপস্তরে বিভক্ত: নিম্ন মাধ্যমিক তিন বছর ( ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম), মধ্য-মাধ্যমিক ( আমরা একে শুধু ’ মাধ্যমিক নামে ডাকি। দু’বছর (৯ম-১০ম শ্রেণি) এবং উচচমাধ্যমিক ( ১১শ-১২শ শ্রেণি) দু’বছর। ’আধুনিক বিশ্বের সব দেশেই ১৭-১৮ বছরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ এই তিনটি স্তরে বিন্যস্ত।

স্তুরগুলোর ব্যাপ্তিও প্রায় সমান (৫ থেকে ৭ বছর)। অষ্ট্রেলিয়ার মতো যেসব দেশে একশ্রেণির প্রাক-প্রাথমিক (যাকে ’জিরো ইয়ার’ নামে ডাকা হয়) শিক্ষা ছয় শ্রেনির প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একীভূতি, সেসব দেশে মোট সাত শ্রেণির প্রাথমিক, ছয় শ্রেণির মাধ্যমিক এবং পাঁচ-ছয় বছরের উচচশিক্ষার ব্যপ্তি (৭+৬+৫) একটি সুন্দর পিরামিডের আকৃতি ধারন করে। আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে যদি ষষ্ঠ শ্রেনি পর্যন্ত করা যেত, বাকী সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক তাহলে অনেক ঝামেলাই চুকে যেত। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আর একটি শ্রেণি বৃদ্ধি করলে শিক্ষকদের পাঠদানেও খুব একটা সমস্যা হতো না, ইনফ্রাস্ট্রকাচারেও খুব বেশি একটি খরচ হতো না। আর সপ্তম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তো আমাদের একটি মডেল ইতিমধ্যে আছে-যেতন ক্যাডেট কলেজ। এভাবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও তারপর উচচশিক্ষা-এই তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হলে বৈশ্বিক শিক্ষাস্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ন হতো।

আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার প্রান্তিক যোগ্যতা ধরা হয়েছিল ৪৯টি। এটিও সম্ভবত অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষাকে ধরে করা হয়েছিল। বর্তমানে এগুলোকে কমিয়ে ২৯টি করা হয়েছে। যেমন-(১) সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা/সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসস্থাপন, সকল সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসায় উদ্দীপ্ত হওয়া। (২) নিজ নিজ ধর্ম প্রবর্তকের আদর্শ এবং ধর্মীয় অনুশাসন অনুশীলনের মাধ্যমে নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করা (৩) সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্দীপ্ত ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া। (৪) কল্পনা, কৌতুহল, সৃজনশীলতা ও বুদ্ধির বিকাশে আগ্রহী হওয়া (৫) সংগীত, চারু ও কারুকলা ইত্যাদির মাধ্যমে সৃজনশীলতা, সৌন্দয্যচেতনা, সুকুমারবৃত্তি ও নান্দনিকবোধের প্রকাশ এবং সৃজনশীলতার আনন্দ ও সৌন্দর্য উপভোগে সামর্থ অর্জন করা। (৬) প্রকৃতির নিয়ম গুলোর জানার মাধ্যমে বিজ্ঞানের জ্ঞান অর্জন করা (৭) বিজ্ঞানের নীতি ও পদ্ধতি এবং যৌক্তিক চিন্তার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের অভ্যাস গঠন এবং বিজ্ঞানমনস্কতা অর্জন করা (৮) প্রযুক্তি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা ও প্রয়োগের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা (৯) বাংলাভাষার মৌলিক দক্ষতা অর্জন এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা (১০) বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষার মৌলিক দক্ষতা অর্জন ও ব্যবহার করা (১১) গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা অর্জন করা (১২) যৌক্তিক চিন্তার মাধ্যমে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারা (১৩) মানবাধিকার, আন্তর্জাতিকতাবোধ, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বসংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া (১৪) স্বাধীন ও মুক্তচিন্তায় উৎসাহিত হওয়া এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলন করা (১৫ নৈতিক ও সামাজিক গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে ভালো-মন্দের পার্থক্য নিরূপন এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা (১৬) ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণে যত্মশীল হওয়া (১৭) বিশেষ চাহিতসম্পন্ন শিশুসহ নারী-পুরুষ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ন সহ-অবস্থানের মানসিকতা অর্জন করা। (১৮) অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে ত্যাগের মনোভাব অর্জন ও পরমসহিষ্ণুতা প্রদর্শন ও মানবিক গুণাবলী অর্জন করা। (১৯) সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নিজের দায়িত্ত ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া। (২০) প্রতিকূলতা ও দুর্যোগ সম্পর্কে জানা এবং তা মোকাবেলায় দক্ষ ও আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া। (২১) নিজের কাজ নিজে করা এবং শ্রমের মর্যাদা দেওয়া। (২২) প্রকৃতি, পরিবেশ ও বিশ্বজগত সম্পর্কে জানা ও ভালোবাসা এবং পরিবেশের উন্নয়ন ও সংরক্ষনে উদ্ধুদ্ধ হওয়া। (২৩) আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণে সচেষ্ট হওয়া। (২৪) মানুষের মৌলিক চাহিদা ও পরিবশের ওপর জনসংখ্যার প্রভাব এবং জনসম্পদের গুরুত্ব সম্পর্কে জানা। (২৫) শরীরচর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন এবং নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করা। (২৬) নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের অভ্যাস গঠন করা। (২৭) মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উদ্দীপ্ত হওয়া এবং ত্যাগের মনোভাব গঠন ও দেশ গড়ার কাজে সক্রিয় অংশগ্রহন করা। (২৮) জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা এবং এগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। (২৯) বাংলাদেশকে জানা ও ভালোবাসা। প্রশ্ন হচেছ আমাদের প্রাথমিক শিক্ষাদান, মূল্যায়ন এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা কি এগুলো নিশ্চিত করতে পারছে।

প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির স্তরের একটি মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুদের পড়তে, লিখতে ও অনুসন্ধান করতে শেখাকে নিশ্চিত করা। শিশুরা যেহেতু এই স্তরেও ঠিকমতো মুক্ত পাঠের দক্ষতা অর্জন করেনা তাই এই স্তরের মূল শিখন-শেখানো সামগ্রী হচেছ শিক্ষক নির্দেশিকা। শিক্ষক নির্দেশিকাতে উল্লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন খেলা, কাজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিখন যোগ্যতাসমূহ অর্জন করবে। বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষক নির্দেশিকার পাশাপাশি শিক্ষার্র্থীদের জন্য তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী ওয়ার্কবুক, পাঠ্যপুস্তক, সম্পূরক পঠন-সামগ্রী, চার্ট ও কার্ডের উন্নয়নসহ খেলনা সামগ্রী, অডিও-ভিজুয়াল ও বিভিন্ন উপকরণ প্রচলন করা প্রয়োজন সেটি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি? কে করবেন এগুলো? প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনে এর সঠিক উল্লেখ ও দায়িত্ব বণ্টন করা আছে কিনা সেটিও দেখার বিষয়। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য হচেছ শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক, আধ্যাত্মিক ও আবেগ-অনুভূতির বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্মবোধে, বিজ্ঞানমনস্কতায়, সৃজনশীলতায় ও উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্ধুদ্ধ করা। প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় হচেছ শিশুদের পরবর্তী শিখনের জন্য প্রস্তুতিমূলক পর্ব, প্রাথমিক হচ্ছে ভিত্তি, মাধ্যমিক হচ্ছে সামাজিকীকরণ, উচ্চ মাধ্যমিক হচেছ বিশেষায়ণের জন্য প্রস্তুুতি আর উচ্চশিক্ষা হচেছ বিশেষায়ণ পর্যায়। এই উদ্দেশ্যগুলো দেখলে মনে হয় আমাদের শিক্ষার এত স্তর ও উপস্তর ঠিক আছে-কিন্তু আমাদের মেলাতে হবে বৈশ্বিক স্তর ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে। আমাদের দেশের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যখন বলে যে, আমরা কলেজে পড়ি তখন বাইরের যে কোন দেশ মনে করবে তারা স্নাতকের শিক্ষার্থী। আসলে বিষয়টি তো তা নয়। আবার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যখন বলে যে, আমরা হাইস্কুলে পড়ি তখন অনেক দেশেই সেটিকে মনে করা হবে নবম/দশম/একাদশ শ্রেণি। এই বিষয়গুলোকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুবিন্যস্ত করা প্রয়োজন ।

যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে শিখন-শেখানো কার্যক্রমের মূল কৌশল হচ্ছে অভিজ্ঞতাভিত্তিক সক্রিয় শিখন- যা শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান প্রক্রিয়া বা সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষার্থী বিভিন্ন কৌশলে শ্রেণিকক্ষে, বিদ্যালয়ে, বাড়িতে, নিকট পরিবেশে বিভিন্ন কার্যক্রম ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখন সম্পন্ন করে নির্ধারিত যোগ্যতাসমূহ অর্জন করে। এরূপ নানাবিধ শিখন শেখানো কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনা করতে হলে পর্যাপ্ত শিখন সময় থাকা প্রয়োজন তবে তা শুধু শ্রেণিকক্ষ ভিত্তিক নয়। বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রমে শিখন সময়কে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

ইউনেস্কোর শিক্ষাক্রম পরিভাষায় শিখন সময়ের বিভিন্ন পরিভাষা ও তার ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। যেমন: কনট্যাক্ট পিরিয়ড বলতে শ্রেণিকক্ষ ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সক্রিয় শিখন শেখানো সময়কে ধরা হয়েছে। ইন্সট্রাকশনাল টাইম বলতে সেই নির্দিষ্ট সময়কে বোঝানো হয়েছে যেখানে শ্রেণিকক্ষে বা ভার্চুয়াল পরিবেশে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে সরাসরি শিখনের জন্য সহায়তা পেয়ে থাকে। আবার শিখন সময় বলতে সেই নির্দিষ্ট সময়কে বিবেচনা করা হয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে কোনো শিখন-সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত থাকে অথবা কার্যকর শিখনে নিবিষ্ট থাকে। বর্তমান যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমে বিধৃত উদ্দেশ্যাবলির ওপর প্রধান তিনটি উপাদান অতিরিক্ত যুক্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১) মাস্টারি লার্ণিং অর্থাৎ শিক্ষণীয় বিষয়ের পুরোটা শেখা ২) শিখণ-শেখানো প্রক্রিয়ায় সব শিক্ষার্থীর বিচিত্র চাহিদার প্রতি খেয়াল রাখা যা অন্তর্ভুক্তি নামে পরিচিত এবং ৩) শিখনকালীন অবিরত মূল্যায়নের মাধ্যমে সব শিক্ষার্থীর প্রয়োজনমতো নিরাময় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। শিখণ-শেখানো প্রক্রিয়ার সময় শিক্ষক যদি এসব শর্ত মেনে চলেন তবে এ স্তরে ‘সিস্টেম লস’ অনেক কমানো সম্ভব। এসব অর্জন করতে হলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশ কম হতে হয় যাতে শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চাহিদার প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন, কিন্তু সেটি কিভাবে ও কতটা পালিত হচ্ছে সে খবর কি আমরা রাখতে পারছি?

 

মাছুম বিল্লাহ
(শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক )

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা