মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়: খালেদা জিয়া কি আইনের ঊর্ধ্বে?

বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা-যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা তা-ই আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য। আইনের শাসনের মূল কথা হলো আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির থেকে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের জন্য আইন একইভাবে প্রযোজ্য হবে। আমাদের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। সুতরাং নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য করা চলবে না।

এদিকে অপরাধ যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপসারণ করার উদ্দেশে মারাত্মক রাজনৈতিক সহিংসতা এবং নৃশংস আক্রমণ কখনোই বিচারের আওতামুক্ত থাকা উচিৎ নয়। রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদের নিকৃষ্ট উদাহরণ হলো যখন একটি রাষ্ট্র বা ওই রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন সরকার তার রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী আচরণ শুরু করে।

বিদেশি অথবা নিজের দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কর্তৃক এই ধরনের সন্ত্রাসবাদকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ আদতে খুবই হতাশাজনক। কেন না নাগরিকদের জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মূলত একটি রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। আর সেখানে কিনা রাষ্ট্র নিজেই নাগরিকদের জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা হরণ করে দানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকে!

নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একটি রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদের নগ্ন উদাহরণ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বিরাজনীতিকীকরণের জন্য তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং দলের অন্যান্য সদস্যদের ওপর প্রাণঘাতি হামলা পরিচালনা করে। আর শুধু তা-ই নয়, সেই বর্বর গ্রেনেড হামলার পরে তৎকালীন বিএনপি সরকার মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত উধাও করার সবোর্চ্চ চেষ্টা করে। একই সঙ্গে গ্রেনেড হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যা রাজনৈতিক নাটকও সাজায়।

এ কারনেই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার দীর্ঘ প্রতিক্ষীত রায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদকে রূখে দেওয়ার জন্য এবং সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

আবার, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়; বরং এই রায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সমগ্র দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রসমূহের জন্যও হয়ে উঠবে একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ।

আমরা দেখেছি দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রসমূহ নৃশংস রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উর্বর আবাসভূমি। পাকিস্তানের লিয়াকত আলী খান হত্যাকাণ্ড (১৯৫১), জিয়াউল হক হত্যাকাণ্ড (১৯৮৮) অথবা বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ড (২০০৭), ভারতের মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী হত্যাকাণ্ড (১৯৪৮), ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ড (১৯৮৪) অথবা রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড (১৯৯১), শ্রীলঙ্কার বান্দারনেয়েকে হত্যাকাণ্ড (১৯৫৯), ভিজায়া কুমারাতুঙ্গা হত্যাকাণ্ড অথবা রানাসিংহে প্রেমাদাসা হত্যাকাণ্ড (১৯৯৩), ভূটানের জিগমে পালডেন দর্জি হত্যাকাণ্ড (১৯৬৪) অথবা মালদ্বীপের ড. আফরাশিম আলী হত্যাকাণ্ড (২০১২) ইতিহাসের পুনারাবৃত্তি ঘটিয়েছে বার বার।

এর সবই ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদের’ নগ্ন উল্লাস। সুতরাং, গণতান্ত্রিক সমাজ রক্ষায় ও এই সকল জঘন্য ধারাবাহিক রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদের সমাপ্তি ঘটাতে, প্রকৃত অপরাধীদের ও তাদের মদদদাতাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা অপরিহার্য।

১৪ বছর পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হলো। মামলার জীবিত ৪৯ আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, মাওলানা তাজউদ্দিন, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া, মামলায় সরাসরি সংশ্লিষ্টতার দায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল-১-এ রায় ঘোষণার সময় ৩১ জন আসামি আদালতে হাজির ছিল। মামলার পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মামলায় মোট ১৪টি বিষয় আদালত বিবেচনায় নিয়েছে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য। ৭ নম্বর বিবেচ্য বিষয় ছিল-‘গুলশান থানার লালাসরাই মৌজার রোড নং ১৩, ব্লক নং ডি, বাড়ি নম্বর ৫৩, বনানী মডেল টাউনের জনৈক আশেক আহমেদ, বাবা-আবদুল খালেক। তার বাসাটি ‘হাওয়া ভবন’ নামে পরিচিত। ওই ‘হাওয়া ভবন’ বিএনপি জামায়াত ঐক্য জোট সরকারের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কি না? ওই ঘটনাস্থলে পলাতক আসামি তারেক রহমান অপরাধ সংঘটনের জন্য ষড়যন্ত্রমূলক সভা করে কি না ও জঙ্গি নেতারা তারেক রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন সময় মিটিং করে কি না?’

নিঃসন্দেহে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে হাওয়া ভবনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আর সে কারণেই আসামি তারেক জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। যদি তা-ই হয়ে থাকে তাহলে অন্য ষড়যন্ত্রকারীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও আসামি তারেক জিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো না কেন?

আদালতের ১০ থেকে ১৩ নম্বর বিবেচ্য বিষয় ছিল–

১০. অভিন্ন অভিপ্রায়ে ও পূর্ব পরিকল্পনার আলোকে পরস্পর যোগসাজশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেনেড আক্রমণ চালানোর সুবিধার জন্য ও অপরাধীদের রক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না।

১১. অভিন্ন অভিপ্রায়ে ও পূর্ব পরিকল্পনার আলোকে প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত অবিস্ফোরিত সংরক্ষণযোগ্য তাজা গ্রেনেড আলামত হিসেবে জব্দ করার পরও তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে এবং আদালতের অনুমতি না নিয়ে অপরাধীদের বাঁচানোর উদ্দেশে সেনাবাহিনী কর্তৃক ধ্বংস করার ও আলামত নষ্ট করায় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না।

১২. অভিন্ন অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত সভা ও পূর্ব পরিকল্পনার আলোকে পরস্পর যোগসাজশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মূল আসামিদের সহায়তা করার লক্ষ্যে আসামিদের নির্ভিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে ও পরবর্তী সময়ে আসামিদের অপরাধের দায় থেকে বাঁচানোর সুযোগ করে দেওয়ার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না।

১৩. প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তাদের রক্ষা করার জন্য প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্য লোকের ওপর দায় বা দোষ চাপিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার লক্ষ্যে মিথ্যা ও বানোয়াট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না।

উপরের সব কয়টি বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সচেষ্ট ষড়যন্ত্রের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে আদালত মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত করেছেন। গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা এটাও জেনেছি যে তদন্তে ও আসামিদের জবানবন্দীতে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, শুধু তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর-ই হামলা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। একই সঙ্গে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে জানতেন। তিনি নিজেও হামলার আলামত নষ্ট করার আদেশ দিয়েছিলেন এবং ডিজিএফআইকে এ হামলা সম্পর্কে তদন্ত করতে নিষেধ করেছিলেন। তাহলে, আমার প্রশ্ন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সচেষ্ট ষড়যন্ত্রের কারণে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র-প্রতিমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম জিয়াকে ছাড় দেওয়া হলো কেন?

আইনের শাসন তো বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার কথা বলে। আইনের সমান প্রয়োগের কথা বলে। তাহলে ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম জিয়াকে আইনের আওতা থেকে মুক্ত রাখার মাধ্যমে আইনের শাসন কি প্রতিষ্ঠিত হলো? বেগম খালেদা জিয়া কি তাহলে আইনের ঊর্ধ্বে?

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা