মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘চরমপত্র’
দেশের বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও ব্যাংক ঋণ বিষয়ে নানা সময়ে নানা মিথ্যা তথ্য প্রদান ও এর সঙ্গে বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জড়িয়ে ঢালাওভাবে সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে আপনার প্রদত্ত মিথ্যা বক্তব্যের নিন্দা, প্রতিবাদ এবং উল্লেখিত বিষয়ে নানা সময়ে আপনার প্রদত্ত বানোয়াট ও মিথ্যা বক্তব্যসমূহ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের চরমপত্র প্রদান করেছেন ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের পরিচালক কার্নিজ লিজা ।
কার্নিজ লিজা লিখেছেন: ‘চরমপত্রের প্রথমেই আমি ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের পরিচালক কার্নিজ লিজা আপনার নানা সময়ের প্রদান করা অসংখ্য ও অগণিত বক্তব্য হতে মাত্র দু’টি বক্তব্য নিম্নে উল্লেখ করছি: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে গত ১০ মে ২০১৮ তারিখে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আপনি মিথ্যাচার করে বলেছেন, ‘গত নয় বছরে ঋণের নামে ও বিভিন্ন কারসাজি করে গ্রাহকের প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও মদদপুষ্ট গোষ্ঠী লুটে নিয়েছে’।
‘আপনার দলের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান আইনজীবী আফসার আহমদ সিদ্দিকী’র ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখে আয়োজিত সভায় আপনি মনগড়া ভাবে বলেছেন, ‘ব্যাংক থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন ছাড়া কেউ লোন পায় না।ব্যাংকগুলোর পরিচালকরাও ওই দলের। ১০ কোটি টাকা লোন নিলে তাদের পাঁচ কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়। আর বাকি পাঁচ কোটি ফেরত দিতে হয় না। কারণ, আওয়ামী লীগের হুকুমে হয়েছে।’
সংগত কারণেই আমি আপনার উপরোক্ত দু’টি বক্তব্যের ঘোর বিরোধিতা ও প্রতিবাদ করছি। কেন না আমাদের প্রতিষ্ঠান ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী খালেদ ইবনে মোহাম্মদ ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ (বাহাদুর-অজয়) কমিটির প্রচার সম্পাদক; চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে করা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল অমানবিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা ২০০২ সালে প্রকাশিত বিশেষ বুলেটিন ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ’ এর সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা ওয়াজেদের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শিল্প খাতের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বলেছিলেন, ‘দেশের পিছিয়ে পড়া ও অনুন্নত এলাকায় শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে’।
উল্লেখ্য যে, আমরা ২০১৬ সালে শিল্প খাতে অনুন্নত ও মঙ্গাকবলিত জেলা গাইবান্ধার বিসিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের জন্য ১০ কোটি টাকার ঋণ আবেদন করি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সাত কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরের জন্য সুপারিশ করে (আইসিবি’র পত্র সংযুক্ত)। কিন্তু আমাদের প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়নে দশ কোটি টাকা’ই প্রয়োজন ছিল বিধায় আমরা ২০১৭ সালে আইসিবি কর্তৃক প্রস্তাবিত সাত কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি (প্রত্যাখ্যান পত্র সংযুক্ত)। এই ঘটনাটিই বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ঢালাওভাবে করা আপনার মনগড়া, বানোয়াট অযাচিত বক্তব্যগুলোকে মিথ্যা প্রমান করে। যে কারণে, জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে উল্লেখিত বিষয়ে আপনার করা নানা সময়ে নানাবিধ বক্তব্যগুলোর প্রতি চরম নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং একইসাথে উল্লেখিত বক্তব্যগুলোকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আপনাকে বিশেষ চরমপত্র প্রদান করছি। অন্যথায় আপনার অযাচিত বক্তব্যের অনুকূলে যথাযথ প্রমান উপস্থাপন অথবা আপনার ভাষায় কথিত ব্যাংক লুটেরাদের প্রমান সহ তালিকা সরবরাহ করার অনুরোধ করছি। জনাব ফখরুল, আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ও চরম দুর্নীতির উদাহরণ হিসেবে জিয়া পরিবারের নামই এখনো নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছে। আপনার কি মনে পড়ে সেই ৯০ এর দশকের শুরুতে বেগম খালেদা জিয়ার ঋণ খেলাপি ভাই মেজর সাঈদ ইস্কান্দার ও ঋণ খেলাপি পুত্র তারেক জিয়ার ব্যাংক ঋণের সুদ চল্লিশ (৪০) কোটি টাকা অবৈধভাবে মওকুফ করে দেওয়া হয়েছিল। যা হোক পরম করুনাময় আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমত ও সকলের দোয়ায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের একটি ইউনিট আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে ইনশাআল্লাহ। উক্ত অনুষ্ঠানে আপনাকেও পত্র মারফত আমন্ত্রণ জানানো হবে।
লেখক: পরিচালক, ঘানি অয়েল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড
এমএমএ/