মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এটি কী করোনার লার্নিং লস নাকি মৌলিক জায়গাতেই সমস্যা?

জুন (২০২২) মাসের ২৭, ২৮ ও ২৯ তারিখ খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখেছি, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি, শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে কথা বলেছি ও ক্লাস নিয়েছি তাদের অবস্থা বোঝার জন্য। একটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখলাম শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘Tag Question’ এর ওপর ক্লাস নিচ্ছেন এবং বোর্ডে শিক্ষার্থীদের এই বাক্যগুলো লিখে দিয়ে বলছেন যে, এগুলোর Tag Question তৈরি কর। (i) Everybody loves them----? (ii) the mother rose in her----(iii) He is a presenter----(iv) How nice the school is---- (v) There is little water in the field---?

দেখলাম কোনো শিক্ষার্থীই করতে পারছে না। কেউ কোনো কথাও বলছে না, শিক্ষককে কিছু জিজ্ঞাসাও করছে না। শিক্ষক শুধু বলছেন যে, এগুলো কর। বাক্যগুলো লেখার পর সেগুলো নিজের পড়তে হয়, শিক্ষার্থীদের দ্বারা পড়াতে হয়। তারপর একটি দুটি উদাহরণ দিয়ে একই ধরনের বাক্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের এক্সারসাইজ করানো উচিত। তা না হলে কেউ বুঝবে না। পরে আমি একই ধরনের বাক্য দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি Tag Question করানোর চেষ্টা করলাম। কয়েকজন শিক্ষার্থী পেরেছে, সবাই তখনও পারেনি। বুঝলাম এ ধরনের প্রাকটিস শ্রেণিকক্ষে করানো হয় না। করালে প্রায় সব শিক্ষার্থীই মোটামুটি বিষয়টি আয়ত্ত্ব করতে পারত।

অন্য একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে গেলাম। এ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কোভিডের সময় অষ্টম শ্রেণিতে ছিল। তাদের জিজ্ঞেস করলাম অষ্টম শ্রেণিতে ইংরেজি বইয়ে কি কি পড়েছ। কেউ বলতে পারল না। আমি যখন বললাম , নকশীকাঁথা পড়েছ কিনা। তখনই বলল যে পড়েছে। নকশীকাঁথা প্রবন্ধের অধিকাংশ বাক্যই Passive Voice-এ লেখা। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে শোনার জন্য বহু চেষ্টা করলাম, কেউ বলতে পারল না। অবশেষে আমি বলে দিলাম। তারপর এই বাক্যটি বোর্ডে লিখলাম ‘Nakshikantha is sold outside the country’ শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করলাম এটি Active form এ নাকি ‘Passiv form’এ আছে। ওরা বললো Active form এ আছে। বললাম তাহলে এটিকে passive কর। যেহেতু বিষয়টি চিনতেই পারেনি, কিভাবে করবে? একই ধরনের আর একটি বাক্য দিলাম Medicine is sold in this shop. বললাম এটি Active form এ নাকি ‘Passiv form’এ । একই ধরনের উত্তর দিল। পরে বললাম আমাদের ক্লাসে ৮৮ জন শিক্ষার্থী আছে- এই বাক্যটি ইংরেজিত বলতে। একজনমাত্র বললো class ten student 88. এই হচ্ছে শিক্ষার বাস্তব চিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ভর্তি পরীক্ষায় যখন দেখি যে, ৮ শতাংশ কিংবা ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয় বাকিরা অকৃতকার্য তখন, অনায়াসে বুঝতে পারি শিক্ষার প্রকৃত চিত্র এটিই।

একটি মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম শিক্ষক ‘narration’ পড়াচ্ছেন। শিক্ষক মোটামুটি ইংরেজি বলছেন যেটি একটি ভাল দিক কিন্তু ‘narration’ পড়াচ্ছেন পুরো পুরানা স্টাইলে। ‘direct speech’ কাকে বলে, ‘indirect speech’, কাকে বলে, একটি থেকে আর একটিতে পরিবর্তনের প্রচুর নিয়মাবলী পড়াচ্ছিলেন, নিয়ম কানুন ব্যাখ্যা করছেন কিন্তু কোনো এক্সারসাইজ করতে দেননি। শিক্ষক যেভাবে তার ছাত্রজীবনে narration --- পড়েছেন তার শিক্ষকদের কাছে, এখন এসব পড়ানোতে অনেক পরিবর্তন এসেছে, নিয়ম মুখস্থ’ করানোর চেয়ে সরাসরি বাক্য ও পরিবর্তন করে দুটির মধ্যে তফাৎ দেখানো এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কি পরিবর্তন হয়েছে, কেন পরিবর্তন হলো ইত্যাদি বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই শুনতে হয়। এভাবে তাদের এনগেজ করতে হয় এবং তাদের চিন্তা করার সুযোগ দিতে হয়। বুঝা গেল এসব বিষয় শিক্ষকের অজানা এবং এ ধরনের পড়ানোর সঙ্গে তার পরিচিতি নেই। একই অবস্থা করোনার আগেও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখেছি। তাহলে এটিকে কি আমরা করোনার লানিং লস বলব, নাকি বেসিক জায়গাতেই সমস্যা বলব নাকি আধুনিক উপায়ে গ্রামার পড়ানো বা ল্যাংগুয়েজ পড়ানোর সমস্যা বলব? যাই বলিনা কেন, সমস্যা আছেই।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে টানা প্রায় ১৮ মাস সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ ছিল। তবে বন্ধের ওই সময়ে টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে ক্লাস নেওয়াসহ নানাভাবে শিক্ষার্থীদের শেখানোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা ছিল। যদিও এসব কার্যক্রমে সব এলাকার সব শিক্ষার্থী সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কতটুকু শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা নিরূপনের উদ্যেগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য ’বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট’ বা বেডুর মাধ্যমে একটি গবেষণা করানো হয়। এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে কী মাত্রায় শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা উঠে এসেছে এই গবেষণায়। এসব শিক্ষার্থী এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে। তারা ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেবে। দৈবচয়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী ও প্রায় ছয় হাজার শিক্ষকের ওপর গবেষণাটি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ওই তিন বিষয়ে অনলাইন পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ ছাড়া এ তিন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি সম্পর্কে শ্রেণিশিক্ষকের মতামত নেওয়া হয়। মাত্রা বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতিকে স্বল্প, মধ্যম ও উচ্চ---এ তিন ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। এটিও একটি ভালো দিক। অনলাইন পরীক্ষায় যেসব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি না পারাকে উচ্চ মাত্রার শিখন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ৫০ থেকে ৫৯ শতাংশ না পারাকে মধ্যম মাত্রার শিখন ঘাটতি হিসেবে ধরা হয়েছে।

গবেষণার তথ্য বলছে বাংলায় ৩১শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যম মাত্রায় ও ২৪শতাংশের উচচমাত্রায় শিখণ ঘাটতি রয়েছে। বাংলায় স্বল্প মাত্রায় শিখন ঘাটতি থাকা শিক্ষার্থী ২৫ শতাংশ। ইংরেজিতে মধ্যম মাত্রায় শিখন ঘাটতি থাকা শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৮শতাংশ, উচ্চমাত্রায় ১৮ শতাংশ এবং স্বল্প মাত্রায় শিখন ঘাটতি রয়েছে ২০ শতাংশের। গণিতে মধ্যম মাত্রায় শিখন ঘাটতি রয়েছে ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর, উচ্চমাত্রার ক্ষেত্রে এই হার ৩৯ শতাংশ এবং স্বল্প মাত্রার ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে তিনটি বিষয়েই বেশি শিখন ঘাটতি দেখা গেছে। খুলনা ও রংপুর বিভাগের শিখন ঘাটতির মাত্রা সবচেয়ে কম। জেলা বিবেচনায় তিনটি বিষয়েই রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত উচ্চ মাাত্রায় শিখন ঘাটতি শিক্ষার্থী চিহ্নিত হয়েছে। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতির ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। তবে গ্রাম ও শহরভেদে শিখন ঘাটতির মাত্রায় বেশ ভিন্নতা রয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে উচ্চমাত্রার শিখন ঘাটতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীর হার শহরে সর্বোচচ ৩৬ শতাংশ এবং গ্রামে সর্বোচচ ৪৩ শতাংশ। সমতলের চেয়ে পাহাড়, উপকুল, চর, হাওড় অঞ্চলে বেশি শিখন ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীদের চেয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মধ্যম ও উচ্চ মাত্রার শিখন ঘাটতি পূরনে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার, অনলাইন ক্লাস ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়াসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এখানে একটি বিষয় হচেছ, যখন সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ ছিল তখন এসব মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছিল যা প্রশংসার দাবি রাখে। তারপরেও নানা সীমাবদ্ধতা, অসংগতি ও অনভিজ্ঞতার কারণে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থীই এর দ্বারা উপকৃত হয়েছিল। যদিও শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের জোড়ালো যুক্তিছাড়া বার বার বলা হতো যে, প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের আওতায় এসেছে। এটি নিয়ে কার্যকর একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত, যদি সরকার সেভাবে চাইত। সেটি কিন্তু হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ে কিছু গবেষণা করেছেন বা সার্ভে হয়েছে— যার ফল খুব হতাশাজনক। সেই বাস্তবতায় টেলিভিশনের ক্লাস কতটা কাজ দেবে সেটি আবারও ভেবে দেখা প্রয়োজন। তবে, ইউটিউবে কিছু ভিডিও ছেড়ে দিলে যার যখন প্রয়োজন সেটি দেখে নিতে পারবে। এই যুক্তিটি খারাপ নয়। টেলিভিশনে চলতে পারে। তবে, সবচেয়ে জোর দিয়ে যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে, নিজ নিজ শ্রেণিকক্ষেই সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হবে। যেসব বিষয় বেশি কঠিন ও শিক্ষার্থীরা সমস্যা বেশি ফেস করে সেসব বিষয়গুলোতে, বাকিগুলোতেও কমপক্ষে একদিন অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হবে। সেজন্য শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের তরফ থেকে, অভিভাবকদের কাছ থেকে এবং সরকারি তরফে কিছু ফি প্রদান করতে হবে।

সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে ২০২৩ সালেও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের সামনে রেখে গবেষণাটি করা হয়, যাতে চিহ্নিত ঘাটতি পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। উদ্যোগটিকে সাধুবাদ জানাই। করোনা মহামারির জেরে দেশের সব পর্যাযের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হয়েছে। মহামারিকালে অষ্টম শ্রেণির অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে মধ্যম উচ্চমাত্রায় শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বাকি বিষয়গুলোতেও কিন্তু তাদের অবস্থা ভালো নয়। সার্বিক ঘাটতি পূরনের নিমিত্তে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়াসহ বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

লেখক: কান্ট্রি ডিরেক্টর-ভলান্টিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ (ভাব) এবং প্রেসিডেন্ট- ইংলিশ টিচার্স এসোসিশেয়ন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)
সাবেক বিশেষজ্ঞ-ব্র্যাক শিক্ষা ও সাবেক শিক্ষক-ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ক্যাডেট কলেজ, রাজউক কলেজ ও বাউবি।

ইমেইল: masumbillah65@gmail.com

আরএ

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা