শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫ | ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

জলবায়ু যুদ্ধে মোড়লিপনা

‘জলবায়ু’ শব্দটা ব্যাপক পরিচিত হলেও অনেকেই শব্দটার মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারেননি। বিষয়টি বোঝেন সবাই; কিন্তু বোঝাতে সক্ষম নন। যেমন, ‘জীববৈচিত্র্য’ শব্দের অর্থ বোঝেন; বোঝাতে পারেন না, তেমনি হচ্ছে জলবায়ু শব্দটি। জলবায়ুর ক্ষেত্রে একটা ছোট্ট হিসাব-নিকাশ আছে অবশ্য। হিসাবটি জানানোর আগে আমরা জেনে নেই জলবায়ুর উপাদানসমূহ। যেমন: বায়ু, বায়ুচাপ, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, মেঘ-বৃষ্টি, তুষারপাত, আগ্নেয়গিরির অগ্নৎপাত ইত্যাদি জলবায়ুর উপাদান। আর ছোট্ট হিসাবটি হচ্ছে, কোন নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলের ২৫-৩০ (মতান্তরে ১০-১২) বছরের গড় আবহাওয়াই হচ্ছে জলবায়ু। অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পরিবর্তনটাই হচ্ছে মূলত জলবায়ু পরিবর্তন।

জলবায়ু পরিবর্তনকে আমরা সাধারণত ‘জলবায়ু সংকট’ বলে থাকি। এছাড়াও আবহাওয়ার মতো জলবায়ুর উপাদানসমূহ নিয়ন্ত্রিত হয় অক্ষাংশ, ভূপৃষ্টের উচ্চতা, বনভূমি, ভূমির ঢাল, পর্বতের অবস্থান, সমুদ্র থেকে দূরত্ব, সমুদ্রে স্রোত, বায়ুপ্রবাহের দিক, মাটির বিশেষত্ব, ইত্যাদির মাধ্যমে। এই নিয়েই জলবায়ু সংকট তৈরি হয়। যার ফলেই পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে; বৈজ্ঞানিক ভাষায় যাকে গ্রিণহাউস প্রতিক্রিয়া বলা হয়। সর্বসাধারণের কাছে সেটি বৈশ্বিক উষ্ণতা নামেও পরিচিত।


জলবায়ুর প্রভাবের সঙ্গে আমাদের বেঁচে থাকার সম্পর্কটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ২০১৯ সালের বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। অন্যান্য বছরের তুলনায় সেই বছরের তাপমাত্রাবৃদ্ধি বিশ্ববাসীকে ভাবিয়ে তুলেছিল। উপমহাদেশীয় অঞ্চলেও ব্যাপক তাপমাত্রা বিরাজ করছিল ২০১৯ সালে। শুধু তাই-ই নয়, ভারতের শতাধিক লোকের মৃত্যুর খবরও আমরা জানতে পেরেছি একই বছর। এসব হচ্ছে শুধুমাত্র জলবায়ু সংকটের প্রভাবে। উল্লেখ্য, বন্যা, খরা, ঝড়, জলোচ্ছাস ইত্যাদি জলবায়ুর প্রভাবেই ঘটছে। নদী ভাঙনের বিষয়টিও জলবায়ু সংকটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জলবায়ু সংকটের কারণে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যেমন, তেমনি সেসব ঘূর্ণিঝড়গুলো খুব শক্তিশালী হয়ে উপকূলে আঘাতও হানছে। আমরা ইতিপূর্বে সুপার সাইক্লোন-৯১, সিডর, আইলা, মোরা, বুলবুল, আম্ফান ও ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলা দেখেছি। আমরা দেখেছি অসংখ্য মানুষ, গবাদি পশু আর বন্যপ্রাণীদের মৃতদেহ যত্রতত্র পড়ে থাকতে। সে সঙ্গে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়তো আছেই। এছাড়াও জলোচ্ছাসের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ভূমির লবণাক্ততা বৃদ্ধির বিষয়টি আশঙ্কা জাগিয়েছে আমাদের। যার কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষাবাদে যেমন বিঘ্ন ঘটছে, তেমনি চিংড়ি চাষে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। আবার অতিরিক্ত লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য, গাছ-গাছালি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গড় বৃষ্টিপাতও বৃদ্ধি পেয়েছে; আবার ভয়াবহ বন্যার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে। এ ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে শুধু একটি কারণেই, আর সেটি হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা জলবায়ু সংকটের জন্য মূলত দায়ী হচ্ছে শিল্পোন্নত দেশেগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা। সেই দেশগুলোর স্বেচ্ছাচারিতার খেসারত দিতে হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এখন। তারা একদিকে কার্বন নিঃসরণ বাড়িয়ে দিচ্ছে, অন্যদিকে জলবায়ু সংকটের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহকে অনুদানও দিচ্ছে। অনেকটা গোড়া কেটে জল ঢালার মতো। যার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হচ্ছে, আমাদের অনুদানের প্রয়োজন নেই, আমরা অনুদান চাই না, আমরা চাই কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক। আমরা চাই আমাদের প্রাণপ্রিয় সুন্দরবন টিকে থাকুক; টিকে থাকুক দক্ষিণ এশিয়ার গর্ব হিমালয় পর্বতমালাও।

সমীক্ষায় জানা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের বরফও গলে যাচ্ছে দ্রুততর। ২০০০ সাল পর্যন্ত হিমালয়ের বরফ শতকরা একভাগ হারে গলেছে। বর্তমানে হিমালয়ের বরফ দ্বিগুণ হারে গলছে! তাতে চীন, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটানসহ এশীয় অঞ্চলের শতকোটি মানুষ বিশুদ্ধ জল সমস্যায় পড়বে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে জার্মানির বন শহরে যখন জলবায়ু সম্মেলন চলছিল ঠিক তখনি ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এর রিপোর্টে এসব তথ্যাদি প্রকাশিত হয়েছিল।

আমরা জানি, সমগ্র বিশ্বে মোট মজুদ জলের পরিমাণ ১ হাজার ট্রিলিয়ন টন। তার মধ্যে সমুদ্রে সঞ্চিত লবণাক্ত জলের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ। যা মোটেই পানযোগ্য নয়। অন্যদিকে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ জল জমাটবদ্ধ হয়ে আছে বরফাকারে। সেটিও পানযোগ্য নয়। বাকি দশমিক ৬৫ শতাংশ জল সুপেয় হলেও প্রায় দশমিক ৩৫ শতাংশ জল রয়েছে ভূগর্ভে। যা উত্তোলনের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন পানযোগ্য জল চাহিদা পূরণ করতে হয়। এই জল আমাদের কাছে বিশুদ্ধ জল হিসেবে পরিচিত। এই জলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে প্রতিটি মানুষের জন্যে দৈনিক গড়ে ৩ লিটার হারে। ভূগর্ভস্থ জল ছাড়া নদ-নদী, খাল-বিল কিংবা পুকুর-জলাশয়ের জল সুপেয় হলেও তা বিশুদ্ধ নয়। তবে সেটিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ। বিশেষ করে গোসলাদি, রান্না-বান্না, জামা-কাপড় ধোয়ার কাজে এ জলের ব্যাপক প্রয়োজন পড়ে। তাতে করে একজন মানুষের সবমিলিয়ে গড়ে ৪৫-৫০ লিটার জলের প্রয়োজন হয়।

বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্বের মোট আয়তনের তিনভাগ জলরাশি হলেও বিশুদ্ধ জল সংকটে ভুগছেন ৮০টি দেশের প্রায় ১১০ কোটি মানুষ। এ ছাড়াও প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ১৮ লাখ শিশু প্রাণ হারাচ্ছে শুধুমাত্র দূষিত জল পান করে। বিশুদ্ধ জলের অভাবের নানা কারণও রয়েছে। এর মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, খরা, ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়া এবং আর্সেনিকের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। জানা যায়, বৈশ্বিক উষ্ণতা আর মাত্র ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই বিশ্বের ১৪৫ কোটি মানুষ সুপেয় জল সংকটের মুখোমুখি হবে। তার মধ্যে এশিয়া মহাদেশে ১২০ কোটি এবং আফ্রিকা মহাদেশে ২৫ কোটি মানুষ এর আওতায় পড়বে। এ থেকে বাদ যাবে না বাংলাদেশের মানুষও। বরং তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ বেশি জল সংকটে পড়বে। এছাড়াও অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় এশীয় অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে খানিকটা বেশি। তার ওপর আমাদের জন্য মহা অশনিসঙ্কেত হচ্ছে হিমালয়ের বরফ গলার হার দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়া। যেখানে ২৫ বছর আগে ৫০ সেন্টিমিটার বরফ গলেছে, সেখানে দ্বিগুণ হারে বরফ গলছে বর্তমানে। হিমবাহ গবেষকদের অভিমত- এই হারে বরফ গলতে থাকলে এশিয়ার কয়েকটি দেশের ১০০ কোটি মানুষ সরাসরি বিশুদ্ধ জল সমস্যায় ভুগবে। এই দুর্যোগ থেকে উত্তরণের পথও বাতলে দিয়েছেন গবেষকরা। তারা স্পষ্ট বলেছেন, কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামাতে হবে। তাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ হবে। উষ্ণতা রোধ না হলে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে গ্রহান্তরিত হতে হবে মানবজাতিকে। সুতরাং বুঝে নিতে হবে কোনটি আমাদের জন্য সহজতর; গ্রহান্তরিত, নাকি কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামানো!

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, শিল্পোন্নত দেশের বলির পাঁঠা সল্পোন্নত দেশগুলো কেন হতে যাবে! বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য বিশ্ব বিবেকের কাছে আমাদের আবেদন রইল তাই। আমাদের আর্জি ‘কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে আমাদেরকে বাঁচতে দিন; আমরা বাঁচতে চাই।’ সকলেরই জানার কথা এই গ্রহের মায়ামোহ আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। এখানে আমাদের পিতা-পিতামহ-প্রপিতামহ শুয়ে আছেন। আমরা যেমন কাউকে ছেড়ে গ্রহান্তরিত হতে পারব না, তেমনি আমাদের আগামী প্রজন্মকেও একটি অরক্ষিত গ্রহে রেখে যেতে পারব না। আর মানুষ যদি নাই-ই বাঁচতে পারল, চাঁদ কিংবা মঙ্গল বিজয়ে কি হবে ঠিক বুঝতে পারছি না আমরা! কাজেই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। কারণ এসব নিয়ে ভাবাভাবি কিংবা লেখালেখির সময় এখন আর নেই, সেই সময় ফুরিয়ে গেছে অনেক আগেই। অনেক লেখালেখি হয়েছে, অনেক সেমিনার, সিম্পোজিয়ামও হয়েছে এসব নিয়ে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই যা করার তড়িৎ গতিতেই করতে হবে এখন। কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে মানবসভ্যতার জয় জয়কার ছড়িয়ে দিতে হবে। সুতরাং মুখে মুখে নয়, তা বাস্তবায়ন করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিতে হবে মোড়ল দেশগুলোকে। তাহলে সার্থক হবে তাদের মোড়লিপনা, অন্যথায় এশিয়ার শতকোটি মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে হবে। এই চরম সত্যটাকে উপলব্ধি করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। তবে একটি ভালো খবরও আছে, সেটি হচ্ছে, ইতোমধ্যে মরুর দেশ সৌদি আরব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে রক্ষা করতে যুগান্তকারী ২টি উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। সম্প্রতি সৌদি যুবরাজ ‘সৌদি সবুজায়ন’ ও ‘মধ্যপ্রাচ্যের সবুজায়ন’ নামে ২টি বৃহৎ আকারের কর্মপরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মধ্যে সবুজায়নের লক্ষে ১০ বিলিয়ন গাছ লাগানো ও ১৩০ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য সবুজায়নের লক্ষ্যে ৫০ বিলিয়ন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছেন। সৌদি আরবের এই পরিকল্পনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। বিশ্বের অন্যান্য উন্নতশীল দেশগুলো যদি এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবে হয়তো কার্বন নিঃসরণের মাত্রা দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে; সার্থক হবে তাদের মোড়লিপনাও।


লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট।

Header Ad
Header Ad

দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা শুরু

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল রোববার (২ মার্চ) থেকে দেশে রোজা শুরু হচ্ছে। সেই হিসেবে আজ শনিবার (১ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ শুরু হবে।

শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেয়া হয়।

রমজান মাসে সিয়াম সাধনা ও ইবাদতে কাটান সারা বিশ্বের প্রায় ১৮০ কোটি মুসলমান। মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুকম্পার মাস রমজান। তাই এই রমজান মাসে ত্যাগ ও সংযমের চর্চা করে খোদার সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট থাকেন মুসলিম উম্মাহ।

এ মাসেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর কোরআন শরীফ নাজিল হয়। রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলাম ধর্মের ৫টি মূল ভিত্তির অন্যতম এবং সব স্বাস্থ্যবান মুসলিমের জন্য রোজা রাখা ফরজ।

হাজার বছর ধরে সন্ধ্যার আকাশে চাঁদ দেখে রমজান মাসের শুরু এবং দুই ঈদের দিন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বের মুসল্লিরা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সূচিত হয় রমজান মাস। তারাবির নামাজও পড়া শুরু হয় সেদিন থেকে।

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, প্রশ্ন নুরের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তার দাবি, সরকারে থাকা অবস্থায় যদি ছাত্রনেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তবে এটি সরকারী দলেরই অংশ হবে। এমনকি তিনি প্রশ্ন তোলেন, "তাহলে আওয়ামী লীগের মধ্যে এবং জাতীয়অ নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়?"

শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর বিজয়নগরের আল রাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদের একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকাকে ভুলে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট বলয়কেন্দ্রিক সরকার গঠন করা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

নুর সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ সবসময় তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করে এবং নতুন দলকে স্বাগত জানায়। তবে, আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে যদি ছাত্ররা সরকারে অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দল গঠন করে, তবে তা সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্রনেতাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, যাদের কারণে জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। নুর বলেন, সরকারে থাকা ছাত্রদের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা, যাতে সরকারে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহতদের চিকিৎসার প্রসঙ্গে নুর বলেন, এনাফ ইজ এনাফ। যথেষ্ট হয়েছে আমরা আর চুপচাপ থাকব না। গত ছয় মাসে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের অল্প কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সংবাদ সম্মেলন করে আহতদের অবস্থা বলতে হবে এবং আহত ও নিহতদের ক্যাটাগরির ব্যাপারে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তা সংশোধন করতে হবে। গত ছয় মাসে বিভিন্ন কমিউনিটির যৌক্তিক দাবি-দাওয়া আমলে নেওয়া হয়নি। সংস্কারের কোনো বাস্তবায়ন দেখছি না। পুরনো ধারায়ই চলছে দেশ। এখন জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, "জাতীয় নির্বাচন আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন। গণঅধিকার পরিষদ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে লড়বে এবং নির্বাচনের সময় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পদ্ধতি চালু করার জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে।"

এছাড়া, নুরুল হক নুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবিও তুলে ধরেন:

১. জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন।
২. আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন, শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ।
৩. গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
৪. রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন।

Header Ad
Header Ad

ভোট কারচুপিতে জড়িত ইউএনওদের বিচারের আওতায় আনতে হবে : ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। ছবিঃ সংগৃহীত

শুধু জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরই নয়, গত তিন নির্বাচনে ভোট কারচুপির সাথে জড়িত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরও (ইউএনও) বিচারের আওতায় আনতে হবে,এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।

শনিবার (১ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আবারও দেশবিরোধী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এই চক্রান্তকে রুখতে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমেই সকল সমস্যার সমাধান হবে।

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন দলকে জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন। এ সময় নতুন দলটিকে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা শুরু
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, প্রশ্ন নুরের
ভোট কারচুপিতে জড়িত ইউএনওদের বিচারের আওতায় আনতে হবে : ফারুক
শ্মশানের যায়গা দখল ও মন্দিরে ডাকাতি করেছে আ'লীগ: আব্দুস সালাম
৪৫ দিনের মধ্যে শুরু হবে শেখ হাসিনার বিচার কাজ: চিফ প্রসিকিউটর
মেট্রোরেলের নতুন নির্দেশনা: রমজানে বহন করা যাবে ২৫০ মিলি পানি
চট্টগ্রামে 'ভুয়া পুলিশ' বলে এসআইকে মারধর ও ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২
পল্লবী থেকে চায়নিজ রাইফেলের ৩০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
জামিল আহমেদের কথা সব সত্য নয়, কিছু ডাহা মিথ্যা: ফারুকী
দেশে একমাত্র শান্তির দল হলো বিএনপি: শাহজাদা  
ভারতীয়রা সীমান্ত আইন না মানলে বিজিবি আরো কঠোর হবে : ডিজি
রমজানে ঢাকায় ২৫টি স্থানে ৬৫০ টাকায় মিলবে গরুর মাংস
মিঠাপুকুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে খামারের মাছ চুরির অভিযোগ
রমজানে শপিংমল, বাস টার্মিনালে ছদ্মবেশে দায়িত্ব পালন করবে ডিবি সদস্যরা  
টাঙ্গাইলে সংস্কার দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবি সুজনের  
এনসিপির আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে সরাসরি ডাক পায়নি আবু সাঈদের পরিবার
নির্বাচনে প্রমাণ হবে নাগরিক পার্টির জনসমর্থন: বিএনপি  
জেলেনস্কিকে ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন রুবিও  
ভোলায় একদিন আগেই রোজা রাখছেন ১০ গ্রামের মানুষ  
কসবায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত