মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা রুখবে কে?

আমরা প্রায়শই দেখি ঈদ, পূজা, পার্বণ ও যেকোনো উৎসবকে সামনে রেখে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনগণের পকেট কাটেন। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ইতোমধ্যে কারসাজি করে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চাল, পেঁয়াজ, মসলাজাতীয় পণ্যসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ধর্মীয় কোনো উৎসব উপলক্ষে যেখানে পণ্যসামগ্রীর দাম কমানো হয়, আর আমাদের সম্পূর্ণ ভিন্নচিত্র পরিলক্ষিত হয়। এখানে বাড়তি মুনাফায় ভোক্তার পকেট কেটে পকেটস্থ করার দুরভিসন্ধিতে ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়, যা ব্যবসায়িক নীতি নৈতিকতা পরিপন্থি ও অগ্রহণযোগ্য হলেও এটিই এখন রীতিতে পরিণত হয়েছে।

আপনাদের সবার মনে থাকার কথা বিগত রমজানের ১৫ তারিখের পর কোনো কারণ ছাড়াই ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মিল মালিক ও পাইকারি বিক্রেতারা বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ বন্ধ করে দেন। বাজারে ভোজ্যতেল নিয়ে চরম সংকট তৈরি হয়। ঈদের পরে যে দিন অফিস শুরু হলো সেদিনই ৩৮ টাকা প্রতি লিটারে দাম বাড়িয়ে নেন। আর নতুন দামে পুরানো মজুত তেল বিক্রিতে মরিয়া হন ব্যবসায়ীরা। পরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পানের দোকান, গ্যারেজ ও সুরঙ্গ থেকে সয়াবিন তেলের খনি আবিষ্কার করেছিলেন। আর এ সময়ে বাজারে সয়াবিন তেল উধাও। সয়াবিন তেল নিয়ে মানুষের অবর্ণনীয় কষ্টের বিচিত্র চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। আবার অনেকে তেল ছাড়া রান্নায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণে ভর্তি হওয়ার মতো ঘটনার উদ্ভব হয়। যদিও সরকারের বিভিন্ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ওই সময়ে যে পরিমান সয়াবিন আমদানি হয়েছে তা দিয়ে পুরো বছরের তেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তাহলে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মিলমালিক ও পাইকারি বিক্রেতাদের জনগণকে জিম্মি করে পকেট কাটার এই উৎসব বন্ধে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়া ত্রাণকর্তা হিসেবে আর কাউকে পাওয়া যায়নি।

ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, করোনা অভিঘাত মোকাবিলা পরবর্তী সময়ে মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের মধ্যে একটা বড় ব্যবধান রচিত হয়েছে। একারণে দৃশ্যত বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি, অভাব না থাকলেও মানুষ তা কিনতে পারছে না। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বা সামর্থ্যের অভাবই এখানে প্রধান। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির দৈশিক ও বৈশ্বিক কারণ যাই হোক, তা এতোটা বাড়ার কথা নয়। যদিও ব্যবসায়ীদের সুরে সরকারের একশ্রেণির কর্তারা মূল্যবৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক নানা যুক্তি দাঁড় করান। কিন্তু আমাদের দেশীয় কৃষি উৎপাদনে উৎপাদিত বা অনেক আগে আমদানিকৃত পণ্যও হুহু করে দাম বাড়ানোর বিষয়টি কোনোভাবে তাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হচ্ছে না। তাই বলতে দ্বিধা নেই, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ও বাড়ছে জনগণের পকেট কাটার উৎসবে মাতোয়ারা এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ও অর্থলিপ্সু ব্যবসায়ীর নীতিহীনতার কারণে। বলা বাহুল্য, নিত্যপণ্য মূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। তা এতটাই শোচনীয় যে, ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সাধারণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষও জীবন-জীবিকা নিয়ে দিশাহারা অবস্থায় পতিত হয়েছে। করোনার কারণে অধিকাংশ সাধারণ মানুষের অনেক আগে থেকেই নিত্যপণ্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছিল। এর বাইরে সাম্প্রতিক সংগঠিত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মূল্য পরিস্থিতিকে রীতিমত ভয়াবহ অবস্থায় নিয়ে গেছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ নিত্যপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিতে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়েছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া ত্রাণকর্তা হিসেবে কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।

অর্থনীতিবিদ, ভোক্তা ও বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে নিত্যপণ্য বাজারের উপরই সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ বরাবরই বলবৎ ছিল এবং আছে। চাল, ডাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপণ্য ও সেবা নেই, যার দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আছে। সরকারের পক্ষ থেকে সামান্য নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী রশি টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। সয়াবিন তেলের কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়। ভোজ্যতেলের দাম আমদানিকারক, মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দফায় দফায় বাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা তাদের ইচ্ছামতো করে বাজারে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করেছেন। সরকারের নির্দেশনা, কথা, হুমকি-ধমকি তারা কোনোভাবেই আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত সরকারই ভোজ্যতেলের আমদানি ভ্যাটমুক্ত করে দিয়েছে। বাজারে এরও প্রতিফলন দেখা যায়নি। অধিকিন্তু নতুন করে দাম আরও বেড়েছে। শুল্ক কমানোর পর তাদের বক্তব্য ছিল পরে ধাপে যখন আমদানি হবে তখন শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি কার্যকর হবে। অথচ আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশি ওই পণ্য আমদানি না হলেও দাম বাড়িয়ে দেন। আর আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম কমা বা শুল্ক হ্রাস করা হলে বলেন বেশি দামে কেনা। আবার অনেক সময় ব্যবসায়ীরা বড় গলায় বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সরকার। এর বাইরে আবার কিছু অর্থনীতিবিদও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সরকারের কিছু করণীয় নেই। সরকার কেন ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে বাজারে হস্তক্ষেপ করবেন। তার অর্থ এটাই ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম উঠানামা করাবেন, জনগণের পকেট কাটবেন, আর সরকারি লোকজন শুধুমাত্র দেখে থাকবেন। তাদের কথায় সায় দিতে গেলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিপুল অর্থ ব্যয়ে পোষার প্রয়োজন নেই। কারন গুটিকয়েক দুষ্ঠুলোক রাষ্ট্র ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি কাজ করবেন। এখানে সরকার কেন হস্তক্ষেপ করবেন? তার মতো হবে।

গণমাধ্যমের কল্যাণে সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ৫০ টাকার নৌকার ভাড়া ৫০ হাজারে, ১০ টাকার মোমবাতি ১০০ টাকায়, ৫০ টাকার পাউরুটি ৫০০ টাকায় হাঁকার খবরে মানুষের বিবেক কোনোভাবেই নাড়া দেয়নি। ঠিক এভাবে দুর্গত মানুষকে চরম বিপদে রেখে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার ঘটনা পুরানো নয়। কোভিড-১৯ এর লকডাউন চলাকালেও কিছু মানুষের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকটের পাশাপাশি ক্লিনিক ও হাসপাতালে অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের দৃষ্টান্তও কম নয়। আর এসমস্ত ব্যবসায়ী নামধারী মূল্য সন্ত্রাসী ও অমানবিক মানুষের সংখ্যা ক্রমাগতই বাড়ছে। তারা একটুখানি সুযোগ পেলেই এই সন্ত্রাসে নেমে পড়েন। তাদের এই অমানবিক আচরণকে ঘৃনা জানানো ছাড়া সাধারন মানুষের পক্ষে আর কিছুই করার থাকে না।

সহজ ও সোজা কথায় বলতে গেলে বাজারে আগুন লেগেছে ও অস্থিরতা চলমান। সেই আগুনে আমাদের বিবেক, মানবিকতা, আমাদের প্রশাসন এবং আমাদের রাজনীতি, সবকিছুই যেন জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের সীমাহীন লোভ লালসার শিকার সাধারণ মানুষ।

এ দেশের রাজনীতি বর্তমানে আর রাজনীতিবিদরা পরিচালনা করছেন না। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজনীতির বাণিজ্যিকীকরণ ঘটেছে। প্রমাণ হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা জাতীয় সংসদ সদস্যদের পেশার হিসাবনিকাশ দিয়েছেন। ১৯৭২ সালে যদি ২০ ভাগ ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য হয়ে থাকেন তাহলে তা এখন ৮০ ভাগে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদ যেহেতু দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করে থাকেন। সেখানে ব্যবসায়ী সংসদ সদস্যরা সরকারের নীতি প্রণয়নে তাদের প্রভাব অবশ্যই একটি বিবেচ্য বিষয়। সেবার পরিবর্তে জাতীয় সংসদ সদস্যরা তাদের লাভ-লোকসানের হিসাব কষবেন এটাই স্বাভাবিক। আসলে নিত্যপণ্যমূল্যের লাগামহীন ঘোড়া বেপরোয়াভাবে তছনছ করে দিচ্ছে জীবনযাত্রা। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে নিত্যপণ্যমূল্য বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। অস্বাভাবিক হচ্ছে ব্যবসায়ীদের অদম্য লোভ, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার সিন্ডিকেট। আর আইনপ্রয়োগে নিয়োজিত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন নিজেদের চাকরি বাঁচাতে এবং আখের গোছাতে জনগণের প্রয়োজনের সময়ে নিরবতা পালন ও নিষ্ঠুর নির্লিপ্ততা করে ব্যবসায়ী তোষণনীতি অবলম্বন করে যাচ্ছেন।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদ, পূজা, উৎসব-পার্বণ উপলক্ষে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয় নিত্যপণ্যে ও অন্যান্য সামগ্রীতে। দাম কমানো হয় পণ্যসামগ্রীর। সেখানে আমাদের দেশে তার বিপরীত চিত্র। উৎসব-পার্বণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ যেন অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। নানা অপকৌশলে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, ভোক্তার পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করছে। ভোক্তাদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে নির্দ্বিধায়, ঠকানো হচ্ছে অনবরত। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে অসাধু ব্যবসায়ীদের যে কারসাজি শুরু হয়েছে, তা নিতান্তই অন্যায়, অনৈতিক ও অযৌক্তিক হলে নীতি নির্ধারক মহল এই কঠিন সময়ে একে বারেই চুপ থাকবেন। তবে আমাদের প্রত্যাশা এই অপতৎপরতা অবশ্যই রুখে দিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি দায়িত্বশীল মহল সোচ্চার হবেন। কারণ দেশের ১৮ কোটি মানুষের করের টাকায় সব সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মীর বেতন ভাতা ও যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। শুধুমাত্র গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের করের টাকায় না। আর ব্যবসায়ীরা যদি কর দিয়েও থাকেন সেই টাকা জনগন থেকে আহরণ করে দেওয়া। তাই আমরা বিশ্বাস করতে চাই যার নুন খাবেন, তারগুণ একটু করে হলেও গাইতে হবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থ (যার মধ্যে ওই সরকারি কর্মকর্তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবও আছেন) ও অধিকার নিশ্চিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তারা নিষ্ঠা ও সততার বলিষ্ঠ মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে কাজ করবেন। তাহলে গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠিন পরিস্থিতি থেকে দেশের সাধারণ ভোক্তাদের সামলানো যাবে, যার দিকে তাকিয়ে আছেন ১৮ কোটি সাধারণ ভোক্তা।

লেখক: ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
ই-মেইল:cabbd.nazer@gmail.com

আরএ/

Header Ad

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) সম্প্রতি আরও ২৯ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার ব্যক্তির প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রোববার (৩ নভেম্বর) পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী এই সাংবাদিকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া কার্ডধারীদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের সম্পাদক, সংবাদ প্রধান এবং বিশেষ প্রতিনিধি।

কার্ড বাতিল হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ২৪-এর হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন প্রভাষ, দৈনিক ডেসটিনির উপ-সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সময় টিভির সিইও আহমেদ জোবায়ের, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, এবং নিউজ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার জয়দেব চন্দ্র দাস।

এছাড়া, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দীপ আজাদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী জ.ই. মামুন, বাসসের উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হায়দার আলী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দৈনিক পূর্বকোণের ঢাকা ব্যুরো প্রধান কুদ্দুস আফ্রাদ, বৈশাখী টিভির প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নী, ফ্রিল্যান্সার নাদিম কাদির, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মন্ডল, এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত।

তালিকায় আরও আছেন দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাফরউল্লাহ শরাফত, দৈনিক আনন্দ বাজারের বিশেষ প্রতিনিধি কিশোর কুমার সরকার, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, গাজী টিভির এডিটর রিসার্চ অঞ্জন রায় এবং দৈনিক ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন।

এই সাংবাদিকদের কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Header Ad

কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের। ২০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে যোগ দিলেও তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে হারুনের পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে মারধর করে আলোচনায় আসেন হারুন। এ ঘটনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেন তিনি এবং তার পর থেকেই একের পর এক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

হারুন অর রশীদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েন। বলা হয়, সাধারণত হেলিকপ্টার ছাড়া তিনি বাড়িতে আসতেন না। তার বিরুদ্ধে দেশ ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও ওঠে। মিঠামইনে নিজ গ্রামের বাড়িতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট', যেখানে রয়েছে হেলিপ্যাড এবং অত্যাধুনিক সুইমিং পুল।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টটি একসময় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিসোর্টের জৌলুসও কমে যায় এবং অবশেষে রিসোর্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে জনমানবহীন ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারুনের রিসোর্টটির জন্য এলাকার সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হয়েছিল এবং অধিকাংশ মালিক এখনো তাদের জমির মূল্য পাননি। স্থানীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি দীলিপ চৌধুরী জানান, তার কোটি টাকার মূল্যমানের জমি হারুন ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিন্তু টাকা পরিশোধ করেননি। একইভাবে মানিক মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি তার ৫ একর জমির কোনো মূল্যই পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা হারুন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।

Header Ad

হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বাতিল করা হয়েছে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কূটনৈতিক পাসপোর্টও। রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি শিরীন শারমিন আত্মগোপনে রয়েছেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

৩ অক্টোবর, তিনি এবং তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত না হয়ে তারা বাসায় বসেই আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান জমা দেন। অথচ নিয়ম অনুসারে, এসব তথ্য পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জমা দিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন এবং এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করছেন। যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে আইনের সীমার মধ্যে থেকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর কাজ করে।

সাবেক এ স্পিকারের বাসার ঠিকানা হিসেবে ধানমণ্ডির একটি বাসার উল্লেখ থাকলেও সেই ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে জানান রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মচারী শাহাবুদ্দীন। তিনি জানান, শিরীন শারমিন এ বাসায় থাকেন না এবং এখানে তার উপস্থিতি গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি।

পাসপোর্ট বিষয়ক এই বিতর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সময়ে হত্যা মামলার আসামিদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ করা সন্দেহজনক। এতে বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার এ ধরনের সুবিধা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং জানান, নিয়মের বাইরে কেউ এভাবে সুবিধা নিতে পারেন না। এদিকে মামলার তদন্তকারী রংপুর মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিরীন শারমিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে এবং তার সন্ধান পাওয়া মাত্রই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট পেপার