মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা

বছরের প্রথম দিন। শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে, যদিও সবাই এতে শামিল হতে পারে না। ২০২২ সালের প্রথমদিনও কি সে রকমটি হবে? এনসিটিবি বলছে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের বই দেওয়া হয় না, তাদের দেওয়া হয় শুধু খাতা, তা না-কি ছাপা হয়ে গেছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য গত ৯ নভেম্বর প্রেস মালিকদের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে এনসিটিবি। নিয়ম অনুযায়ী, চুক্তির পর বই ছাপাতে প্রেস মালিকরা ৮৪ দিন সময় পান। সেই হিসাবে, ৩১ ডিসেম্বরের আগে এই দুই শ্রেণির বই ছাপার কাজও শেষ হবে না। এর ফলে ১ জানুয়ারি এই দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবকটি বই নাও পেতে পারে।

এ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। এই আংশিক বই নিয়েই আগামী ১ জানুয়ারি পাঠ্যবই উৎসব করতে চায় শিক্ষা প্রশাসন। প্রতিবছরই বিনামূল্যের বই ছাপানো, দেশের বিভিন্ন স্থানে সেগুলো প্রেরণ করা এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা, সমালোচনা এবং শেষে বিলম্ব হতে দেখা যায়। বই উৎসবও অনুষ্ঠিত হয়; কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা কোনো বছরই সময়মতো বই পায় না। বিলম্বের কারণ হিসেবে যেসব কারণ সামনে চলে এসেছে, সেগুলো হলো–পাঠ্যবই ছাপানোর জন্য বাজার উপযোগী দাম নির্ধারণ করতে না পারা, বারবার দরপত্র আহ্বান করা, নির্ধারিত সময়ের বহু পরে ছাপার কাজ শুরু করা, অদক্ষ ও অযোগ্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া, যোগ্য কর্মকর্তাদের ওএসডি করে রাখা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঢিলেমি।

এনসিটিবি বলছে, তারা পাঠ্যবই ছাপানোর কাজের অনুমোদনের জন্য সময়মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিল; কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পায়নি। এর মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরে এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে কাজ গতি পায়। এ ছাড়া চলতি ডিসেম্বরের শেষ দিকে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অবসরোত্তর ছুটিতে যাবেন। এনসিটিবির সদস্যরা পাঠ্যবইয়ের কাজ দেখভালের পরিবর্তে তারা চেয়ারম্যান হওয়ার তদবিরে ব্যস্ত। এর ফলে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পিছিয়ে যায়। আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রি-প্রাইমারি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সোয়া দুই কোটি শিক্ষার্থীর জন্য সাড়ে ৩৫ কোটি বই ছাপা, বাঁধাই এবং স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বিতরণ করতে যে সময় আছে তাতে সমস্যা হবে এবং মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বিষয়টি এক রকম অসম্ভব।

জানা যায় যে, শিক্ষার্থীরা যাতে সময়মতো পাঠ্যবই হাতে পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এনসিটিবির কাজে হস্তক্ষেপ করেছে। বছরজুড়ে ঢিলেমি দেখিয়ে গত আগস্টের পর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে বেশি তৎপর হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ও ১০টি পরিদর্শন টিম গঠন করেছে, যারা ঘুরে ঘুরে পাঠ্যবই ছাপানোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। একইসঙ্গে এনসিটিবিও ৩৯টি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। এমন হতাশাজনক তৎপরতার মধ্যেই এনসিটিবি বলছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিও চাওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩০ অথব ৩১ ডিসেম্বরে প্রধামন্ত্রী বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন। ১ জানুয়ারি শিক্ষা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে স্কুলে বই উৎসব পালন করবে।

বই ছাপানোর এই মহাযজ্ঞ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করতে গিয়ে এনসিটিবির সবাই ব্যস্ত, মহাব্যস্ত। বই ছাপানো হয়েছে কি না এ নিয়েই পুরো এনসিটিবি ব্যস্ত, এতে তাদের উৎসাহেরও কমতি নেই। এনসিটিবিতে গেলে দেখা যায়, অনেক বিভাগে তালা মারা, আর যেসব বিভাগ বা রুমে তালা নেই সেখানকার চেয়ারগুলো খালি। জিজ্ঞেস করলে বা পরিচিতজনদের ফোন করলে জানা যায়, তারা প্রেসে বই ছাপা পরিদর্শনে গেছেন। প্রশ্ন হলো–বই ছাপানো নিয়ে সবাই ব্যস্ত; কিন্তু বইয়ের ভেতর কী লেখা আছে, কীভাবে লেখা আছে, এ নিয়ে কিন্তু কারও খুব একটা চিন্তা নেই। বই ছাপাতে হবে, ছাপানো হচ্ছে, তা সে যে কোনো মূল্যেই হোক। পরে দেখা যায়, একটি বইয়ে গণিতের সঙ্গে কিছু অধ্যায় কিংবা কিছু পৃষ্ঠা এসেছে কৃষি বিজ্ঞান কিংবা ইসলামিয়াতের। সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণির বাংলা, আবার সমাজবিজ্ঞান বইয়ের সঙ্গে কিছু কবিতা যুক্ত হয়ে শিশুদের কাছে যায়। এমনটি হয় প্রতিবছরই। আর শিশুদের কাছে বই যাওয়া তো চলে পুরো বছর ধরে। গত বছর (২০২০) অক্টোবর নভেম্বর পর্যন্ত বই বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেহেতু বিনামূল্যে বই পাচ্ছে তাই আর এ নিয়ে খুব একটা কথা কেউ বলে না, সাংবাদিকরাও সেভাবে বিষয়টিকে গুরুত্বে দেন না।

বিনামূল্যের বই না পাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের ভেতরেও তেমন হা-হুতাশ নেই–তার আরেকটি কারণ হলো–অনেক শিক্ষার্থী, অনেক শিক্ষক এনসিটিবি টেক্সট ব্যবহারই করেন না। বইয়ের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নাত্তর তৈরি করা হয়েছে। তারা সেগুলোই দেখে ও প্রস্তুতি নেয়। আর এ ছাড়া করারই বা কী আছে? হাতে সময়মতো বই পায় না প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা ইচ্ছে করলেও কোথাও থেকে বই ক্রয় করতে পারেন না। বই পেতে হবে মাঠ পর্যায়ের পেটি-অফিসারদের কাছ থেকে তৈলমর্দন করে, পোহাতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। তারপর কোনো বই নষ্ট হলে, হারিয়ে গেলে, ছিঁড়ে গেলে দ্বিতীয়বার সেই বই পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই, অতএব বিকল্প পথ তো থাকতে হবে।

অনলাইনে বই? সে তো ভাগ্যের ব্যাপার! ঢাকায় বসেই ঠিকমতো পাওয়া যায় না, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বই ডাউনলোড দিতে হয়তো আধাবেলা অপেক্ষা করতে হবে। এগুলো বাস্তবতা, এগুলো নিয়ে তেমন কেউ কথাও বলেন না। এমনিতেই শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকরা বই পড়তে চান না, তার মধ্যে আবার এত ঝামেলা। অতএব ঝামেলা এড়াতে বই নিয়ে উচ্চবাচ্য না করাই উত্তম!

২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২হাজার ১৩০ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের মোট বই ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৪ কপি। আর মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৪ কোটি ৭১ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৬ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এনসিটিবির পরিসংখ্যান বলছে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ১৬ কোটি বই ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে ১০ কোটি বই উপজেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবি জানিয়েছে যে, বাকি সময়ের মধ্যে বাকি বইগুলো পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, জীবনে যে শিশু প্রথমবার স্কুলে যাচেছ সে জানুয়ারির ১ তারিখ বই পাচেছনা। বই না দিতে পারলে উৎসব হবে কিভাবে? তাদের সংগঠনের হিসেবে ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে ৬০ শতাংশ বই ছাপা শেষ হবে। নোয়াখালীতে অবস্থিত অগ্রণী প্রিন্টার্স একাই পেয়েছে প্রাথমিকের ৬০শতাংশ বই ছাপার কাজ। কিভাবে তারা এটি শেষ করবে?অগ্রণী প্রিন্টার্স রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। এটির ছাপাখানা নোয়াখালীতে, তারা সর্বাধিক ১০০ কোটির অধিক বই ছাপার আদেশ পেয়েছে। এত বই ছাপার মতো অবকাঠামো না থাকার পরও এ কার্যাদেশ তারা পেয়েছে। কীভাবে তারা পেল এ নিয়ে কোন কথা হবেনা কারন তারা প্রভাবশালী। তাদের বই ছাপা ও কাগজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে এনসিটিবির কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেছে মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতি।

এনসিটিবির চেয়ারম্যন বলছেন, প্রতিদিন ৫০ লাখ করে বই ছাপা হচ্ছে, প্রতিদিনই বই যাচেছ উপজেলা পর্যায়ে। ফলে সমস্যা হবে না। অপরদিকে, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জাতীয় সংগঠন মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির উপদেষ্টা বলছেন, নানা তথ্য ধামাচাপা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানো হচ্ছে। আসলে আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবে না। ডিসেম্বরে চেয়ারম্যান অবসরে যাচেছন, পরিস্থিতি সামাল দিতে তাকে পাওয়া যাবেনা।

অবস্থা নাকি অনেকটাই হ-য-ব-র-ল। কখনো বলা হচ্ছে করোনার প্রভাব, কখনো বলা হচ্ছে কারিকুলামের অনুমোদন দেয়নি মন্ত্রণালয়। আবার দফায় দফায় টেন্ডার ও রি-টেন্ডার করে টেন্ডারের শর্ত লঙ্ঘন ও বিধিমতো টেন্ডারের শর্ত সংশোধন না করে সময়ক্ষেপন করার কারণেই বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকে পাঠ্যপুস্তকের কারিকুলাম প্রণয়ন-সংশোধন-পরিমার্জনের জন্য বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এনসিটিবি হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে এনসিটিবিই হয়ে উঠেছে বই ছাপা ও বিতরণের মতো বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রক-পরিচালক সংস্থা। আসলেই এনসিটিবি এখন কারিকুলাম ও পাঠ্যবইয়ের বোর্ডের পরিবর্তে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মতোই মনে হচ্ছে।
এনসিটিবিকে যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে এনসিটিবির চেয়ারম্যানকে পূর্ণ সচিব মর্যাদায় উন্নীত করে মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষা না হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এনসিটিবিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে কারিকুলাম প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট সব কাজে। মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। মন্ত্রণালয়ে কোনো কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই। তারা কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য অযথা নিদের্শনা ও বিলম্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এনসিটিবিতে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করেন এবং করতে পারেন তাদেরই পদায়ন করতে হবে। আত্মীয় কিংবা অন্যকোন পরিচয়ে যারা এনসিটিবিতে আছেন তাদের সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে। মন্ত্রণালয়কে শুধু অবগত করতে হবে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে, মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল করে রাখা যাবে না। এখানে লেখক, গবেষক, পাঠ্যক্রম বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় ঘটাতে হবে। রাজনৈতিক কিংবা অন্য পরিচয়ে যারা এখানে আছেন তাদের সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে। যুগ যুগ ধরে এখানে থেকে এখানকার ব্যবসা যারা ভালো বুঝে ফেলছেন, তাদের এখান থেকে সরানো যাচ্ছে না; কিন্তু সরাতে হবে আমরা যদি একটি প্রকৃত শিক্ষাক্রম জাতিকে উপহার দিতে চাই।

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসএ/

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা