বাজেটে অগ্রাধিকার স্পষ্ট নয়
আমি মনে করি, বাজেট কতটা সম্প্রসারিত হল, সেটি বড় বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো, বাজেটের যে অগ্রাধিকার সেটিই স্পষ্ট নয়। সবকিছুইতো বলেছেন আমরা করেছি, করেছি। সবইতো করেছি তাহলে আমরা করবো কি? এতদিন বাংলাদেশ কি কি অর্জন করেছে সেটি বলে, তারপর বলছেন, আমরা করেছি। আমার কথা হচ্ছে সবইতো করেছি। তবে করবো কি? আমিতো বলবো স্পেসিফিক করে বলতে হবে, সেটি দেখিনি।
কৃষির কথাই যদি বলা হয়, যেমন সারে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, হারভেস্টারে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে কৃষির ব্যাপারে কি? এটিতো বলতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তার কথা যদি বলি, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার জায়গায় পেনশন, সঞ্চয়পত্রে আবার সুদের হারের টাকা আছে। খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় পঞ্চাশ লাখ লোককে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এগুলিতো অপ্রতুল।
আমি ভেবেছিলাম বাজেটটি বিশেষ সময়ে একটি বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ বাজেট হবে। অভিঘাত থেকে আমরা তো পুরোপুরি বের হইনি। কাজেই এ বিষয়েও সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া উচিত ছিল। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কি? যেমন আয় বৈষম্য সম্পদের বৈষম্যতো কমেনি। বৈদেশিক রিজার্ভ, টাকার অবমূল্যায়ন, কর্মসংস্থান তেমন নাই। কর্মসংস্থানের দিকে নজর দিতে হবে বেশি। ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিবে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। তাহলে প্রাইভেট সেক্টর বঞ্চিত হবে। তাহলে এটি কি প্রাইভেট সেক্টর অথবা কর্মসংস্থান বান্ধব হলো?
সুতরাং আমি বলবো এটি একদম গতানুগতিক হয়েছে। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু গতানুগতিকভাবে যদি ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয় একটু এদিক সেদিক বাড়িয়ে, আমার মনে হয় না সেটি খুব একটা ফলপ্রসূ হবে। মোট কথা হলো, সমসাময়িক যে চ্যালেঞ্জগুলি সেগুলিতে মনযোগ বাড়ানো উচিত ছিল। স্পেসিফিক বরাদ্দের পাশাপাশি স্পেসিফিক কৌশল অবলম্বন করা দরকার ছিল, সেটি আমি দেখিনি।
লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর