শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১১ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হিসেবে এমপির ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা

ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে থাকার সময় আমি একটি ওয়ার্কিং পেপার লিখি যেখানে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারে এমপির উপদেষ্টা ভূমিকা মূল্যায়ন সম্পর্কিত একটি অধ্যায় ছিল। সেই অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করে ঢাকাপ্রকাশের জন্য একটি ছোট লেখা লিখেছি।

তৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়া কেবল গণতন্ত্রের সম্প্রসারণই নয় বরং এর সৌন্দর্যকেও বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণের ধারণা থেকে স্থানীয় সরকারের ধারণাটি এসেছে। জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করে সরকারের সেবা তৃণমূলে পৌঁছে দেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উদ্ভব। আর এ জন্যই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রের উর্বর ভূমি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র তখনই পূর্ণতা লাভ করে যখন সর্বাধিক সংখ্যক প্রান্তিক ব্যক্তিসহ সব জনগণ গভর্ন্যান্স প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার ক্ষমতা থাকে এবং জবাব পেতে পারে। বর্তমান বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাটি কেন্দ্রীয় সরকারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং জবাবদিহিতার একটি আদর্শ মডেল হিসেবে আরও বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে পৌঁছাতে পারে এবং তাদের চাহিদাগুলো শনাক্ত করতে পারে। আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা আমলাতন্ত্র, স্থানীয় সরকার পরিষদ ও সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে কতটা সহযোগিতার পাচ্ছেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

স্থানীয় সরকার পরিষদ ও সাধারণ মানুষের মাঝে দূরত্ব কতটা বিদ্যমান এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ, এসবও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ১৯৭০-৮০-র দশক-পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় এবং উন্নয়ন কাঠামোয় যেভাবে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সে তুলনায় বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার কাঠামোয় ততটা পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০০৮ সালের মে মাসের জারিকৃত অধ্যাদেশ অনুসারে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নিুলিখিত স্তরগুলো বিদ্যমান: গ্রামাঞ্চল (ক) ইউনিয়ন পরিষদ (খ) উপজেলা পরিষদ (গ) জেলা পরিষদ; শহরাঞ্চল (ক) পৌরসভা ও (খ) সিটি করপোরেশন। তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল উপজেলা পরিষদ। কারণ সরকারের উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় সরকারের সেতুবন্ধ হিসেবে উপজেলা পরিষদ কাজ করে থাকে। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের গোটা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। আর এর অন্যতম প্রধান শর্ত হল স্থানীয় সরকার পরিষদকে স্বাধীনভাবে কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া।

বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর ২৫ অনুচ্ছেদের বলা আছে, ১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর অধীন একক আঞ্চলিক এলাকা হইতে নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য পরিষদের উপদেষ্টা হবেন এবং পরিষদ উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণ করবে। ২. সরকারের সহিত কোনো বিষয়ে পরিষদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিষদকে উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত রাখতে হবে।

আবার উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর ৪২(৩) অনুচ্ছেদে ‘পরিষদ স্থানীয় সংসদ সদস্যর সঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা করার অনুমতি দেয়।’ এসব আইন অনুযায়ী, উপদেষ্টা হিসেবে একজন সংসদ সদস্যের উচিত স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। সর্বোপরি, স্থানীয় সরকার পরিষদকে বিভিন্ন পরামর্শদানের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং সরকারের উন্নয়ন এজেন্ডা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা।

উপজেলা পরিষদ ২০০৯ আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংসদ সদস্যের ভূমিকা বিরোধপূর্ণ নয় বরং সংসদ সদস্য তার নিজ এলাকার স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় উন্নয়নের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কী লক্ষ করা যায়? স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধির দ্বারা উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ডে যাতে গতিশীলতা বজায় থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য যথাযথ সহযোগিতা করবেন- এটাই কাম্য।

উপদেশ দেয়ার মাধ্যমে কোনো সংসদ সদস্যের কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে কোনো কারণে দূরত্ব সৃষ্টি হলে এর ফলে নানা রকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে যার কারণে উপজেলা সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, স্কুল-কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি, সরকারি টিউবওয়েল, কাবিখা, ভিজিডি ও ভিজিএফ এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য কতটা হস্তক্ষেপ করেন এটাও বিভিন্ন আলোচনায় আসে। বস্তুত সংসদ সদস্যদের পরামর্শ ও আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এ জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের বিরোধপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এতে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের শাস্তিপূর্ণ সম্পর্ক যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান- তারা একই ভোটারের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় কোনো সংসদ সদস্য অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপ করলে সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং গণতন্ত্রের বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থার প্রকৃত সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জবাবদিহিতার আদর্শ মডেল প্রতিষ্ঠিত করতে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যরা সব ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক মনোভাব গ্রহণ করবেন- এটাই প্রত্যাশিত।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় সরকার যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে জন্য সুযোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল স্থানীয় সরকারের কমিটিগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করা। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে একই সুতোয় গাঁথতে স্থানীয় সরকার পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

যদিও বিকেন্দ্রীকরণ গ্রামীণ বাংলাদেশে জনসমর্থক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অনুঘটক, তবুও এমপি এবং মাঠ প্রশাসক এবং স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে সম্পর্ককে আরও বিশ্বস্ত করা উচিত। সংসদ সদস্যদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, তারা তাদের নির্বাচনী এলাকার জনগণের সাধারণ স্বার্থের কথা চিন্তা করা এবং জাতীয় পর্যায়ে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই নির্বাচিত হন। তারা জনগণকে শাসন করার জন্য নির্বাচিত হন না, এবং এটি তাদের কাজের অংশও নয়।

এসডিজির অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং তদনুসারে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার ক্ষমতা, অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া এবং সরকার ও স্থানীয় মানুষের মধ্যে নিয়মিত আর্থিক আলোচনার সঙ্গে একটি সুস্পষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ভাবনী এবং সামগ্রিক কৌশলগুলিকে গ্রামীণ অর্থনীতি সম্প্রসারণের জন্য উত্সাহিত করতে হবে এবং দরিদ্রদের জন্য আয়-উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ প্রদানের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সহায়তাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে এমপিকে তার নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় সরকার সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

মোটকথা, স্থানীয় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং স্থানীয় জনগণকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়নের অংশীদাররূপে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু স্থানীয় উন্নয়নই দেশের সার্বিক উন্নয়ন বয়ে আনতে পারে। আশা করা যায়, গত সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এ বিষয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেসব বাস্তবায়নে তারা অধিকতর যত্নশীল হবেন।

লেখক: ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার (অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ)।

ইমেইল: t.islam@juniv.edu

Header Ad
Header Ad

পারভেজ হত্যার ঘটনায় সেই দুই নারী শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন দুই নারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে পূর্ব জুরাইনের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই ২ শিক্ষার্থী হলেন- ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা।

ডিবি জানায়, ওই দুই নারী শিক্ষার্থী জুরাইন আশরাফ মাস্টার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের হোল্ডিং একটি ভবনের ২য় তলায় ২ দিন আগে বাসা ভাড়া নেয়। এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির টিম অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।

এর আগে পারভেজ হত্যার ঘটনায় দুই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স। গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে পারভেজ হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় ৩ নম্বর আসামি মো. মাহাথির হাসান আদালতে সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ নিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আলোচিত এই মামলায় মোট দুই আসামি জবানবন্দি দিল। এর আগে দায় স্বিকার করে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন আরেক আসামি আল কামাল শেখ।

Header Ad
Header Ad

আমাদের মধ্যে হিংসা নেই, আমরা আওয়ামী লীগ নই: রুমিন ফারহানা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। ছবি: সংগৃহীত

নতুন রাজনৈতিক শক্তি মাঠে এলেও বিএনপির কোনো আপত্তি নেই উল্লেখ করে দলটির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, আমাদের মধ্যে হিংসা নেই, আমরা আওয়ামী লীগ নই। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে দিনাজপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির 'রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি' বিষয়ক কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

রুমিন বলেন, “আমরা যখন দেখি কেউ রাজনীতি করতে চায়, স্বচ্ছ পথে সামনে আসতে চায়, তখন তাদের স্বাগত জানাই। বাংলাদেশে একসময় সব দল নিষিদ্ধ ছিল, কেউ ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারত না। সেই অন্ধকার থেকে দেশকে বের করে এনেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে যখন দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য আর লজ্জা নিবারণের জন্য নারীকে জাল পরতে হতো, তখন বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। সেখান থেকে রেমিট্যান্স, কৃষি ও গার্মেন্টসে বিপ্লব ঘটিয়েছেন জিয়া। আর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।”

বর্তমান সরকার ও অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়ে রুমিন বলেন, “যে সরকার সুপ্রিম কোর্টের একটি অর্ডারে ‘দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে নেওয়ার’ দায়িত্ব পেয়েছে, তারা কীভাবে রাষ্ট্রীয় সব সিদ্ধান্ত নেয়? এই সরকার অনির্বাচিত, জনভিত্তিহীন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও জানে, তাদের স্থায়িত্ব নেই।”

তিনি বলেন, “যদি দলীয় সরকার হতো, তাহলে তার কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত একটা জবাবদিহিতা থাকত। এই সরকারের ক্ষেত্রে সেটা নেই বলেই পুলিশও নিরুৎসাহিত।”

নির্বাচনের সময় ও অবস্থান নিয়ে সরকারের টালবাহানার সমালোচনা করে বলেন, “ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি, জুন—কখন হবে নির্বাচন, কেউ জানে না। এটা প্রমাণ করে সরকার নিজের অবস্থান নিয়ে নিশ্চিত নয়।”

কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, “আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবই। আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো, সেটা যেকোনো মূল্যে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, অধ্যাপক মোরশেদ হাসান, ডা. মওদুদ হোসেন পাভেল, সাত্তার পাটোয়ারী ও অ্যাডভোকেট শারমিন ফারহানা পুতুল প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে ঢুকে আটক বিএসএফ জওয়ান, দু’দেশের সীমান্তে ফের উত্তেজনা

পাকিস্তানে ঢুকে আটক বিএসএফ জওয়ান। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে চাপে পড়েছে সম্পর্ক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর এক জওয়ান পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক হয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২৩ এপ্রিল), ভারতের পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরের আন্তর্জাতিক সীমান্তে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, বিএসএফ-এর ১৮২ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল পিকে সিং ভুলবশত সীমান্ত পার হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাকে আটক করে পাকিস্তান রেঞ্জার্স।

জানা গেছে, সামরিক পোশাকে এবং রাইফেলসহ সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় তিনি স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করছিলেন। সে সময় অসাবধানতাবশত তিনি সীমান্তের ওপারে চলে যান।

তাকে ফিরিয়ে আনতে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্মকর্তারা। আলোচনার মাধ্যমে জওয়ানকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

এদিকে, জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই হামলার জেরে ভারত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করলে, পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তান।

পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আওতায় ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ, ওয়াগাহ সীমান্তে চলাচল বন্ধ, দ্বিপাক্ষিক সব চুক্তি স্থগিত, এবং বিনা ভিসার সব সুবিধা বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি, ইসলামাবাদ থেকে পাঠানো এক কড়া ভাষার বিবৃতিতে জানানো হয়, ভারত যদি সিন্ধু নদের পানির প্রবাহ ব্যাহত করে, তাহলে তা ‘যুদ্ধের উসকানি’ হিসেবে দেখা হবে এবং উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পারভেজ হত্যার ঘটনায় সেই দুই নারী শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
আমাদের মধ্যে হিংসা নেই, আমরা আওয়ামী লীগ নই: রুমিন ফারহানা
পাকিস্তানে ঢুকে আটক বিএসএফ জওয়ান, দু’দেশের সীমান্তে ফের উত্তেজনা
টাঙ্গাইলে ফাঁকা গুলি ছু‌ড়ে ৭৮ লাখ টাকা ডাকাতি, গ্রেফতার ২
পাবনায় ইজিবাইক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ২ এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
পাকিস্তানের আকাশে ঢুকতে পারবে না ভারতীয় বিমান, নতুন চাপে মোদি
টানা ৫ দিন চুয়াডাঙ্গায় বইছে তাপপ্রবাহ, বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশ সফর স্থগিত করলেন পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আমাদের নিয়ত পরিষ্কার, যা কমিটমেন্ট করেছি তা বাস্তবায়ন করবো: তারেক রহমান
টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিং: দেশের শীর্ষে বুয়েট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়
অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগে ডা. জাহাঙ্গীর কবির-তাসনিম জারার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ (ভিডিও)
তন্ময়সহ শেখ পরিবারের ৪ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চলতি বছরে দেশে আরো ৩০ লাখ মানুষ দরিদ্র হতে পারে: বিশ্বব্যাংক
৮ দিন পর মুক্তি পেলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী
পাকিস্তানের সঙ্গে কখনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না ভারত
৮ দিনের নোটিশে সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে তদন্ত ছাড়াই
ভেঙে গেল সামিরা খান মাহির ৪ বছরের প্রেম
বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের বৈষম্য নিরসনের দাবি জানিয়ে রাবিতে বিক্ষোভ
কাশ্মিরে উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতীয় সেনা নিহত