বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হিসেবে এমপির ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা

ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে থাকার সময় আমি একটি ওয়ার্কিং পেপার লিখি যেখানে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারে এমপির উপদেষ্টা ভূমিকা মূল্যায়ন সম্পর্কিত একটি অধ্যায় ছিল। সেই অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করে ঢাকাপ্রকাশের জন্য একটি ছোট লেখা লিখেছি।

তৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়া কেবল গণতন্ত্রের সম্প্রসারণই নয় বরং এর সৌন্দর্যকেও বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণের ধারণা থেকে স্থানীয় সরকারের ধারণাটি এসেছে। জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করে সরকারের সেবা তৃণমূলে পৌঁছে দেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উদ্ভব। আর এ জন্যই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রের উর্বর ভূমি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র তখনই পূর্ণতা লাভ করে যখন সর্বাধিক সংখ্যক প্রান্তিক ব্যক্তিসহ সব জনগণ গভর্ন্যান্স প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার ক্ষমতা থাকে এবং জবাব পেতে পারে। বর্তমান বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাটি কেন্দ্রীয় সরকারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং জবাবদিহিতার একটি আদর্শ মডেল হিসেবে আরও বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে পৌঁছাতে পারে এবং তাদের চাহিদাগুলো শনাক্ত করতে পারে। আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা আমলাতন্ত্র, স্থানীয় সরকার পরিষদ ও সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে কতটা সহযোগিতার পাচ্ছেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

স্থানীয় সরকার পরিষদ ও সাধারণ মানুষের মাঝে দূরত্ব কতটা বিদ্যমান এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ, এসবও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ১৯৭০-৮০-র দশক-পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় এবং উন্নয়ন কাঠামোয় যেভাবে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সে তুলনায় বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার কাঠামোয় ততটা পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০০৮ সালের মে মাসের জারিকৃত অধ্যাদেশ অনুসারে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নিুলিখিত স্তরগুলো বিদ্যমান: গ্রামাঞ্চল (ক) ইউনিয়ন পরিষদ (খ) উপজেলা পরিষদ (গ) জেলা পরিষদ; শহরাঞ্চল (ক) পৌরসভা ও (খ) সিটি করপোরেশন। তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল উপজেলা পরিষদ। কারণ সরকারের উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় সরকারের সেতুবন্ধ হিসেবে উপজেলা পরিষদ কাজ করে থাকে। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের গোটা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। আর এর অন্যতম প্রধান শর্ত হল স্থানীয় সরকার পরিষদকে স্বাধীনভাবে কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ করে দেয়া।

বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর ২৫ অনুচ্ছেদের বলা আছে, ১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর অধীন একক আঞ্চলিক এলাকা হইতে নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য পরিষদের উপদেষ্টা হবেন এবং পরিষদ উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণ করবে। ২. সরকারের সহিত কোনো বিষয়ে পরিষদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিষদকে উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত রাখতে হবে।

আবার উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর ৪২(৩) অনুচ্ছেদে ‘পরিষদ স্থানীয় সংসদ সদস্যর সঙ্গে স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা করার অনুমতি দেয়।’ এসব আইন অনুযায়ী, উপদেষ্টা হিসেবে একজন সংসদ সদস্যের উচিত স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। সর্বোপরি, স্থানীয় সরকার পরিষদকে বিভিন্ন পরামর্শদানের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং সরকারের উন্নয়ন এজেন্ডা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা।

উপজেলা পরিষদ ২০০৯ আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংসদ সদস্যের ভূমিকা বিরোধপূর্ণ নয় বরং সংসদ সদস্য তার নিজ এলাকার স্থানীয় সরকার ও স্থানীয় উন্নয়নের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কী লক্ষ করা যায়? স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধির দ্বারা উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ডে যাতে গতিশীলতা বজায় থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য যথাযথ সহযোগিতা করবেন- এটাই কাম্য।

উপদেশ দেয়ার মাধ্যমে কোনো সংসদ সদস্যের কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে কোনো কারণে দূরত্ব সৃষ্টি হলে এর ফলে নানা রকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে যার কারণে উপজেলা সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, স্কুল-কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি, সরকারি টিউবওয়েল, কাবিখা, ভিজিডি ও ভিজিএফ এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য কতটা হস্তক্ষেপ করেন এটাও বিভিন্ন আলোচনায় আসে। বস্তুত সংসদ সদস্যদের পরামর্শ ও আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এ জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের বিরোধপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এতে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের শাস্তিপূর্ণ সম্পর্ক যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান- তারা একই ভোটারের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় কোনো সংসদ সদস্য অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপ করলে সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং গণতন্ত্রের বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থার প্রকৃত সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জবাবদিহিতার আদর্শ মডেল প্রতিষ্ঠিত করতে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যরা সব ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক মনোভাব গ্রহণ করবেন- এটাই প্রত্যাশিত।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় সরকার যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে জন্য সুযোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল স্থানীয় সরকারের কমিটিগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করা। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে একই সুতোয় গাঁথতে স্থানীয় সরকার পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

যদিও বিকেন্দ্রীকরণ গ্রামীণ বাংলাদেশে জনসমর্থক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অনুঘটক, তবুও এমপি এবং মাঠ প্রশাসক এবং স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে সম্পর্ককে আরও বিশ্বস্ত করা উচিত। সংসদ সদস্যদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, তারা তাদের নির্বাচনী এলাকার জনগণের সাধারণ স্বার্থের কথা চিন্তা করা এবং জাতীয় পর্যায়ে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই নির্বাচিত হন। তারা জনগণকে শাসন করার জন্য নির্বাচিত হন না, এবং এটি তাদের কাজের অংশও নয়।

এসডিজির অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং তদনুসারে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার ক্ষমতা, অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া এবং সরকার ও স্থানীয় মানুষের মধ্যে নিয়মিত আর্থিক আলোচনার সঙ্গে একটি সুস্পষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ভাবনী এবং সামগ্রিক কৌশলগুলিকে গ্রামীণ অর্থনীতি সম্প্রসারণের জন্য উত্সাহিত করতে হবে এবং দরিদ্রদের জন্য আয়-উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ প্রদানের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সহায়তাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে এমপিকে তার নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় সরকার সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

মোটকথা, স্থানীয় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং স্থানীয় জনগণকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়নের অংশীদাররূপে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু স্থানীয় উন্নয়নই দেশের সার্বিক উন্নয়ন বয়ে আনতে পারে। আশা করা যায়, গত সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এ বিষয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেসব বাস্তবায়নে তারা অধিকতর যত্নশীল হবেন।

লেখক: ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার (অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ)।

ইমেইল: t.islam@juniv.edu

Header Ad
Header Ad

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায় আবারও ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন।

আজ (বুধবার) সকাল ৭টার দিকে চুনতি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সামনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ও আহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।

লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র জানান, চট্টগ্রামগামী একটি বাসের সঙ্গে কক্সবাজারমুখী দুটি মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। প্রথমে বাসের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এর পরপরই পেছনে থাকা আরেকটি মাইক্রোবাস এসে ধাক্কা দেয়। এতে প্রথম মাইক্রোবাসে থাকা বেশিরভাগ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, যার মধ্যে গাড়িচালকও ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মাত্র দুই দিন আগেই, ঈদের দিন (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একই এলাকায় বাস ও মিনিবাসের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছিলেন। একের পর এক দুর্ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’

উপস্থাপক হানিফ সংকেত। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র ঈদের বিশেষ পর্ব আজ (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে। হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় নির্মিত এই বিশেষ পর্বে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। বরাবরের মতোই অনুষ্ঠানের শুরু হবে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে থাকছে দেশাত্মবোধক গান, যেখানে কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আরও ১০ জন তরুণ শিল্পী। সংগীত পরিবেশনায় থাকছেন হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসান। এ ছাড়া সিয়াম আহমেদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিও গানে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় চার অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে তিন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি—শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী, এফ এস নাঈম ও নাদিয়া আহমেদ, ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকতউল্লাহ গানে গানে অনলাইন কেনাকাটার মজার অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত মিউজিকাল ড্রামাতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র‍্যাপ শিল্পী মাহমুদুল হাসান।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলির নৃত্য পরিবেশনা। পাশাপাশি, ‘গুজব’ নামের ছোট নাটিকায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের অংশগ্রহণ দর্শকদের জন্য বাড়তি চমক হয়ে আসবে। এছাড়াও নিয়মিত চরিত্র নাতি ও কাশেম টিভির রিপোর্টার, সামাজিক অসঙ্গতি ও সমসাময়িক ঘটনাও উঠে আসবে ‘ইত্যাদি’র বিশেষ পর্বে।

অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছে ফাগুন অডিও ভিশন এবং রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় রয়েছেন হানিফ সংকেত। ঈদের আমেজে ভরা ‘ইত্যাদি’র এই বিশেষ পর্ব দর্শকদের জন্য চমক ও বিনোদনে ভরপুর হতে যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

প্রতিদিন যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীর জন্য ঈদের ছুটিতে ঢাকা যেন এক অন্য রকম শহর। কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন শান্ত, ফাঁকা ও যানজটমুক্ত। যারা ঈদে ঢাকায় রয়ে গেছেন, তারা উপভোগ করছেন এক ভিন্ন পরিবেশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ ছিল কম। অলস দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় হালকা বাতাসে খেলা করছিল রোদের ছায়া। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকায় মানুষের চলাচল বাড়তে দেখা গেছে।

ঈদে যারা ঢাকায় থেকে গেছেন, তারা অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। মিরপুর চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাকিব হাসান জানান, "ঈদের ছুটিতে ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে পুরো শহরটা ঘুরেছি, দারুণ লেগেছে।"

তবে, কর্মজীবীদের জন্য এই ফাঁকা ঢাকা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, "সারা বছর এই যানজট নিয়ে অফিস করতে হয়। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ঢাকাকে অন্য রকম মনে হয়। যদি সারা বছর এমন থাকত, তাহলে জীবন আরও সহজ হতো।"

যাত্রী কম থাকায় আয় কমে গেছে রিকশাচালকদের। সায়েন্সল্যাবে অপেক্ষমাণ রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ জানান, "যাত্রী নেই বললেই চলে। আয় কমেছে, তবে ভালো দিক হলো জ্যাম নেই, রিকশা চালানো সহজ লাগছে।"

অন্যদিকে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তানে আসা চালক লোকমান বলেন, "গুলিস্তান ও বাবুবাজার এলাকায় কিছুটা যানজট পেয়েছি, তবে বাকি রাস্তা ফাঁকা ছিল।"

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালত ফাঁকা থাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, "সাইবার মনিটরিংসহ গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"

সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে অফিস-আদালত খুলবে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর আগেই খুলবে, ফলে ধীরে ধীরে রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
রাজধানীতে মেট্রোরেল ও সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
যমুনা সেতু দিয়ে একসপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ হাজার যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিল: ১০ জেলায় নিহত ২১
টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা