রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকার এবং টেকসই উন্নয়ন

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ একটি দেশ। কার্যকর ও নিয়মতান্ত্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়াস ছাড়াও আইনি প্রচেষ্টা বাংলাদেশের দুর্যোগকবলিত মানুষের দুর্যোগ প্রশমনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় বজায় রাখতে এবং দুর্যোগ আক্রান্ত জনগণের ভোগান্তি হ্রাস করার লক্ষ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পারে। এই লেখাটি একটি গবেষণা পত্রের সারাংশ যা আমি লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (SOAS)-এর ভিজিটিং স্কলার হিসেবে লিখেছিলাম।

সংক্ষেপে বলি কিভাবে দুর্যোগ উন্নয়নকে প্রভাবিত করে? দুর্যোগ উন্নয়নের উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলে। পরিবারগুলি বাড়িঘর, জীবিকা এবং প্রিয়জন হারায়, মানুষ ব্যবসা, চাকরি এবং পরিষেবা হারায়, শিশুরা এবং বিশেষ করে মেয়েরা স্কুল মিস করে এবং বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকে ৷ দুর্যোগ দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি বাতিল করতে পারে। এগুলি ছাড়াও, ঘন ঘন দুর্যোগের কারণে, মানুষের নির্ভরতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ সরকার বিগত কয়েক বছরে জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যায় পর্যন্ত কার্যকর ও পদ্ধতিগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তার জন্য বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, লাইন এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় বজায় রাখার জন্য এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য তাদের যথাযথ কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য, বাংলাদেশ সরকার গত দশক থেকে কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। তৃণমূল স্তর এই প্রক্রিয়াগুলিকে কার্যকর করার জন্য, স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি) একটি গাইড বই হিসাবে কাজ করে। এসওডি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে।

এসওডি অনুসারে ৩৬ জন সদস্য সমন্বয়ে ইউডিএমসি গঠিত, যেখানে কমিটির চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ আরও তিনজন সদস্য সংযোজিত করতে পারেন এবং স্থানীয় বাস্তবতা ও বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় দল এবং উপ-দল গঠন করতে পারেন।ইউডিএমসিকে গ্রামীণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আকর হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তার দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রশমন, জরুরি প্রতিক্রিয়া এবং দুর্যোগ-পরবর্তী পুনর্বাসনে ভূমিকা রাখার কথা রয়েছে।

ইউডিএমসিকে নিশ্চিত করতে হয় যে, স্থানীয় জনগোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ সম্পর্কে অবহিত এবং তারা পারিবারিক ও সম্প্রদায় পর্যায়ে দুর্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি হ্রাস করার ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম। একইসঙ্গে এ কমিটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবার ও সম্প্রদায় পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত সাফল্যের গল্পগুলো ছড়িয়ে দেয় এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগের আশঙ্কা, দুর্বলতা ও ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা এবং আকস্মিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।

ইউডিএমসি ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভার মাধ্যমে উন্নয়ন সংস্থা এবং পরিষেবা সরবরাহকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের কাজ করবে। দুর্ভাগ্যক্রমে, ইউডিএমসির সভায় আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অত্যন্ত সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। এর দ্বারা বোঝায় স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা, নির্দেশনা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে স্থানীয় প্রান্তিক জনগণের কাছে তথ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আসলে দুর্যোগ-পূর্ববর্তী সময়ে ইউডিএমসির কার্যকর ভূমিকা খুবই সীমিত।। স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে অগ্রাধিকার পায়নি। যেসব ব্যক্তি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিচালনা করেন এবং নেতৃত্ব দেন, তারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিশেষ জ্ঞান রাখেন না, যদিও এসওডি তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক সমন্বয় ও পরিচালনা করার ক্ষমতা দিয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় এ ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ এবং জবাবদিহিতার বোধ প্রতিফলিত হয় না। এর ফলে দুর্যোগের ঝুঁকিমুখী জনগণ বঞ্চিত হয়, কেননা তারা কোনোভাবেই জানতে পারে না, স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কী কী এবং কোন ধরনের কর্মসূচি রয়েছে। অন্যদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও কমিটি পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। এছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকির নাজুকতা এবং বিদ্যমান সম্পত্তি বা সংস্থান পরিমাপ, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমন প্রচেষ্টা কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ খুবই সীমিত।

সত্যি বলতে, ইউডিএমসির কর্মকাণ্ডে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং প্রশমনে তাদের আত্মবিশ্বাস এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে। ইউডিএমসির মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে এবং সর্বোপরি তাদের নিজস্ব দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমন প্রচেষ্টায় সক্ষম করে তোলে। ইউডিএমসিগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ নিছক অলংকরণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে বেশকিছু কার্যক্রম চালু রয়েছে বলা হয়ে থাকে, তবে এ সম্পর্কিত তথ্যেও পর্যাপ্ততা বা কমিটিগুলো কোথায়, কীভাবে কাজ করছে এবং কোথায় করছে না তা জানার সুযোগ স্থানীয় জনগণের যৎসামান্যই আছে।

দুর্যোগ প্রস্তুতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইউডিএমসির কার্যকারিতার জন্য দুর্যোগের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী উভয় সময়েরই নিয়মিত ভিত্তিতে ইউডিএমসির সভা পরিচালনার আবশ্যকতা রয়েছে। দুর্যোগের আগে, সময় এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিতভাবে ইউডিএমসির সভা আয়োজন করা; দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য নিবেদিত তহবিল সংগ্রহ; প্রতিটি ইউপি অফিসে দুর্যোগ সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা; ইউপি কমপ্লেক্সের মধ্যে দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ; জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রতিটি ইউপির অধীনে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা; দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ শুরু করা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা তৈরি করা; এবং দ্রুত এবং সময়মত সমন্বয় নিশ্চিত করা । এর পাশাপাশি, ঝুকি মূল্যায়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রস্তুতি এবং প্রশমন সমাধানের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে ।

অধিকন্তু, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভবিষ্যতের জন্য উন্নয়ন টেকসই হতে হলে এটি অপরিহার্য। শুধুমাত্র যদি একটি দেশের শাসন কাঠামো একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক জননীতির বাস্তবায়ন ও প্রয়োগকে সক্ষম করে তাহলেই টেকসই জীবিকা অর্জন করা সম্ভব এবং দুর্যোগের সংবেদনশীলতা হ্রাস করা সম্ভব। কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করা আমাদের স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করতে এবং একটি সাধারণ বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নতুন অংশীদারিত্ব তৈরি করতে সক্ষম করবে যা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

গ্রামীণ বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রকৃত অর্থে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ, কর্তৃত্ব, জনশক্তি এবং প্রশিক্ষণসহ একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার সময়ের দাবি। তৃণমূল পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সবার দায়িত্ব’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মডেল অনুযায়ী ধনী-গরিব, শিক্ষিত, নিরক্ষর, ধর্ম ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে জনগণকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পুরো প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত থাকতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তিনটি ধাপে (দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময় এবং দুর্যোগ পরবর্তী) অবদান রাখার জন্য তাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত এবং তবেই আমরা ইউনিয়ন পরিষদের একটি কার্যকর এবং ফলপ্রসূ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি আশা করতে পারি।

 

লেখক: ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার (অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ)।

 

ইমেইল: t.islam@juniv.edu

 

Header Ad
Header Ad

ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফর ও স্টারলিংক চালুর আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির প্রধান ও খ্যাতনামা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে, আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট সেবা চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সপ্তাহখানেক আগে ইলন মাস্কের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভার্চুয়াল সেই বৈঠকে বাংলাদেশে স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর, গত বুধবার মাস্ককে চিঠি পাঠিয়ে বাংলাদেশে দ্রুত স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট চালু ও সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।

চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে স্টারলিঙ্ক চালু হলে এর প্রধান সুবিধাভোগী হবেন দেশের তরুণ-তরুণীরা। তিনি মাস্ককে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, "আসুন, উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য এবং আমাদের পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করি।"

চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অবকাঠামোর সঙ্গে স্টারলিঙ্কের সংযোগ একীভূত হলে তা রূপান্তরমূলক প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে যুব উদ্যোক্তাদের জন্য। একইসঙ্গে, গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত নারী এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল সংযুক্তি আরও সহজ হবে।

Header Ad
Header Ad

পাঁচ দফা দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, একাডেমিক শাটডাউন ও লংমার্চের ঘোষণা

ঢামেকের সামনে বিক্ষোভ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন পাসসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। দাবি আদায়ে আগামীকাল সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একাডেমিক শাটডাউন এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘সাধারণ মেডিকেল শিক্ষার্থী’র ব্যানারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না। বিএমডিসির নিবন্ধন কেবল এমবিবিএস/বিডিএস উত্তীর্ণদের দেওয়া, ম্যাটসদের নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ করা এবং বিএমডিসির আইনের বিরুদ্ধে করা রিট মামলা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।

২. চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি (ওভার দ্য কাউন্টার) তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া আর কেউ ওটিসি তালিকার বাইরে ওষুধ লিখতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ, চিকিৎসকদের বিসিএসে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

৪. সব ধরনের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং মানহীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। এরইমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদবি বাতিল করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সভাপতি ডা. জাতির হোসেন বলেন, “এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবেন না—এই নীতির বিরুদ্ধে আমরা রিট করেছি। ৯০ বার শুনানি হলেও এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। ২৫ ফেব্রুয়ারি শুনানি আছে, আমরা চাই দ্রুত সিদ্ধান্ত আসুক।” তিনি আরও বলেন, “ম্যাটস থেকে উত্তীর্ণরা অপচিকিৎসা দিচ্ছেন, যা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।”

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। আগামীকাল সোমবার একাডেমিক শাটডাউনের পর মঙ্গলবার হাইকোর্ট অভিমুখে লংমার্চ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সময়সীমা নির্ধারণ: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দুটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে অথবা বড় ধরনের নির্বাচন সংস্কার হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।

রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলায় ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিইসি। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন।

নির্বাচন কমিশন সব পক্ষকে নিয়ে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের মতো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চায় বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে হবে নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—এ বিতর্কে যেতে চায় না ইসি।

তিনি বলেন, "আমাদের প্রথম লক্ষ্য একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা। বর্তমানে তালিকায় ১৬ লাখ মৃত ভোটার রয়েছে, যাদের বাদ দিতে হবে।" পাশাপাশি নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির কাজও চলমান রয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সবার সহযোগিতা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, "নির্বাচন কমিশন কোনো অন্যায় চাপ গ্রহণ করবে না, কোনো অন্যায় সিদ্ধান্তও দেবে না।"

বর্তমান প্রশাসনে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা অতীতের নির্বাচন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে।

এ সময় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, কক্সবাজার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফর ও স্টারলিংক চালুর আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার
পাঁচ দফা দাবিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, একাডেমিক শাটডাউন ও লংমার্চের ঘোষণা
নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সময়সীমা নির্ধারণ: সিইসি
নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ অভিনেতা আজাদ, আহত মা ও স্ত্রী
আহতদের চিকিৎসা বন্ধে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিলো
এস আলম পরিবারের ৮,১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের নির্দেশ
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা
প্রথমবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি বাণিজ্য চালু
৪ ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসর, জানা গেল নাম
পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, কোনো দলের নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ধর্ষণের প্রতিবাদে আসাদ গেটে ছাত্র-জনতার সড়ক অবরোধ
স্ত্রীর সামনে বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২
দুই ফুসফুসেই নিউমোনিয়া, পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: জুনেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন
নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
প্রযোজনায় নাম লেখালেন বুবলি  
চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  
বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘরে হামলা  
আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণ  
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার