নান্দনিক শৈল্পিক পুরাকীর্তির নিদর্শন ঘোলদাড়ী প্রাচীন মসজিদ
বৃহত্তর কুষ্টিয়ার (কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর) চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের (পূর্বের নাগদহ ইউনিয়ন) ঘোলদাড়ী গ্রামে অবস্থিত প্রথম প্রাচীন মসজিদ যা এ জেলার পুরাকীর্তির এক মূল্যবান নিদর্শন। হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। জনশ্রুতি আছে, বারো আউলিয়ার এক আউলিয়া হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত করেন, যা বাংলায় প্রতিষ্ঠিত প্রথম মসজিদ। জানা যায়, এটি একসময় গভীর জঙ্গলে আবৃত ছিল। পরবর্তীতে জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটি ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়। মসজিদটিতে কিছু সংস্কার কাজ ও সংস্করণ করা হলেও এর মূল কাঠামোর প্রাচীনরূপটি আজও অক্ষুণ্ন রয়েছে।
১৯৭৪ সালের ৩ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় এই মসজিদ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যে ৪১৩ বঙ্গাব্দে হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) নামক একজন বিখ্যাত দরবেশ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি ৪১৩ বাংলা সন অর্থাৎ ১০০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি যুক্তিপূর্ণ হয় না। কারণ তখন বাংলায় সেন রাজত্বের সূচনায় বা বৌদ্ধ পাল রাজত্বের শেষ পর্বে কুষ্টিয়া অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের কোন বিবরণ জানা যায় না। বাংলাদেশে পাল রাজাদের সময়কালে কোন স্থাপত্য নিদর্শন মাটির উপর দণ্ডায়মান নেই। সেন বংশীয় রাজাদের কোন স্থাপত্য নিদর্শন কুষ্টিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের নদীয়াতে নেই বলেই ঐতিহাসিকদের অভিমত।
আবার ইতিহাসবিদদের মতে, ইখতিয়ার উদ্দিন মহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর নদীয়া বিজয়ের বেশ আগেই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। তা ছাড়া শেষ সেন বংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেন মুসলমান বিদ্বেষী ছিলেন। তুর্কীদের দ্বারা আক্রমণের ভয়ে বিদেশী মুসলমান দেখলেই হত্যা করার নির্দেশ দিতেন। কাজেই লক্ষ্মণসেনের রাজত্বকালে কিংবা তার পূর্বে এ জেলায় ইসলাম প্রচার ও মসজিদ নির্মাণ অতিশয় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ছিল; অতএব ইতিহাসের পুন:পুন পর্যালোচনায় অনুমান করা যায়, আরব দেশ থেকে আগত হযরত খাইরুল বাশার ওমজ (র.) ঐ ঝুকিপূর্ণ সময়ে এই অঞ্চলে প্রথম ইসলাম প্রচার শুরুর কাজটি করেন, তবে তিনি খুব বেশি সফল হতে পারেননি বলেই মত। তারপরেও হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) ছিলেন অসম্ভব গুণ-মাধুর্য সম্পন্ন একজন উদার ব্যক্তিত্ব, ছিলেন একজন বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলায় যে সকল আউলিয়া-দরবেশ ইসলাম প্রচার করেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রে হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) নাম স্মর্তব্য। ঘোলদাড়ীতে হযরত পীর আজম খায়রুল বাশার ওমজ (র.) যে কাজ প্রথম আরম্ভ করেছিলেন তাই পরবর্তীকালে বিস্তার লাভ করেছে। ‘খায়রুল বাশার’ আরবি কথার অর্থ হল উত্তম সুসংবাদবাহক বা উত্তম সুসংবাদবহনকারী। তিনি এই জেলায় প্রথম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসেছিলেন যা ছিল সত্যই সুসংবাদ। তাঁর সহজ, সরল, অনাড়ম্বর জীবন ও মানুষের প্রতি ভালবাসাই তাঁর প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করেছিল। দ্বাদশ শতকের শেষপাদে যখন গৌড়ের রাজা ছিলেন সেন বংশীয় লক্ষ্মণসেন (১১৭৮-১২০৬), তখন আরবদেশ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত খায়রুল বাসার ওমজ (র.) কুষ্টিয়া জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ী গ্রামে এসে আস্তানা স্থাপন করেন এবং একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময় আলমডাঙ্গা অঞ্চল ছিল জলাশয় ও জঙ্গলপূর্ণ এলাকা। হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেন, তখন গৌড়ের রাজা লক্ষ্মণসেন মুসলমানদের আক্রমণের আশঙ্কায় খুব ভীত হয়ে পড়েছিলেন।
জনশ্রুতি আছে যে, রাজা লক্ষ্মণসেন হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) বিরুদ্ধে একটি সৈন্যদল প্রেরণ করেন। ঐ সৈন্যদলের সাথে হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) সংঘর্ষ হয় এবং তিনি জয়লাভ করেন। তবে তাঁর অনেক মুরীদ ও অনুচর শহীদ হন। এই সংঘর্ষে নিহত শহীদদের মাজার ঘোলদাড়ী মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত। হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) রাজার তরফ থেকে বড় ধরণের আক্রমণের আশঙ্কায় তাঁকে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বিহারের মুসলিম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর নিকট পত্র প্রেরণ করেন। সেই একইসময় বখতিয়ার খিলজী বাংলা আক্রমণের জন্য খোঁজ-খবরও নিচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি আর দেরী না করে অতর্কিতভাবে মাত্র সতেরো অথবা আঠারো জন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে আক্রমণ করে লক্ষ্মণসেনের অস্থায়ী গ্রীস্মকালীন রাজধানী নদীয়া দখল করে নেন। এরপর তিনি এ জেলায় যে প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন তার আলো সমস্ত জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছিল অতি অল্পকালের মধ্যে। দিল্লীর সুলতান তাঁর নামে তখন তেরশ বিঘা লাখেরাজ সম্পত্তি দান করেন। তখন তিনি এই ঘোলদাড়ীতেই যে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, সেটিই বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার প্রথম মসজিদ তা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত। তাঁর মৃত্যুর দিন-কাল-তারিখ এই তথ্য কোথাও পাওয়া যায় না। মসজিদ চত্বরে ঘাসের আচ্ছাদনে উন্মুক্ত আকাশের সামিয়ানার নিচে হয়তো কোন এক স্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন পীর আজম হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.), বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার প্রথম সুসংবাদবাহক! তাঁর মৃত্যুর পর অত্র অঞ্চলটি অবহেলিত হয়ে পড়ে, নেমে আসে স্থবিরতা।
এর প্রমাণ পাওয়া যায়, দীর্ঘদিন পর দিল্লীর সুলতান কর্তৃক প্রেরিত একজন আলাউদ্দিন ঘোরী নামক ব্যক্তি কিছু হতদরিদ্র মুসলিমের সহায়তায় মসজিদটি সংস্কার করেন এবং হযরত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) মাজারটি রক্ষণাবেক্ষণে মনযোগী হন। ইতিহাসের পর্যালোচনায় ও জনশ্রুতি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে পাওয়া যায়, আনুমানিক ১২৭০ থেকে ১২৭৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে দিল্লীর সালতানাত কর্তৃক আদেশপ্রাপ্ত হয়ে অথবা সুলতান মোহাম্মদ ঘোরী’র অনুসারী, অবশিষ্ট কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে স্বউদ্যোগী হয়ে একদল অনুচর পালতোলা নৌকায় চড়ে এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আসেন। তখন বিহার ও উড়িষ্যা অঞ্চল এবং বাংলার অধিকাংশ এলাকা মুসলিম শাসনের অধীনে।
অনুমান করা হয়, এই দলের সাথেই নেতৃত্বে ছিলেন পীর বুজুর্গ আলাউদ্দিন ঘোরী। আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী সংশ্লিষ্ট নদী প্রবাহের কোন এক জায়গায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দলটির নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে এবং তারা ঐ অঞ্চলে সফর সমাপ্ত করতে বাধ্য হন। অতঃপর তারা স্থানীয়দের দ্বারা অবগত হয়ে হয়রত খায়রুল বাশার ওমজ (র.) কর্তৃক স্থাপিত ঐতিহাসিক ঘোলদাড়ী মসজিদটির হদিস পান। মসজিদটি তখন ছিল জঙ্গল আবৃত অবস্থায় সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণির আবাসস্থল। তারা মসজিদের জঙ্গল পরিস্কার করে নামাজ আদায়ের উপযোগী করেন এবং মহান পীর দরবেশ খায়রুল বাশার ওমজ (র.) মাজারটি সংরক্ষণ করেন। এরপর পীর আলাউদ্দিন ঘোরী মাজারের খাদেম হিসেবে দায়িত্ব নেন অর্থাৎ তিনিই প্রথম খাদেম এবং নামাজের পাশাপাশি মসজিদের পার্শ্বে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম শিক্ষার আয়োজন করেন। আরও তিনি পুকুর খনন করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছিলেন। মাদ্রাসার কোন স্মৃতিচিহ্ন এখন আর পাওয়া যায় না।
ঘোলদাড়ীর সেই বিখ্যাত মসজিদের সিঁড়ির নিচে তাঁর মাজারের খাদেম পীর আলাউদ্দিন ঘোরী’র মাজার ছিল। সিঁড়িটি যে কোথায় কিভাবে ছিল এখন আর কেউ তা বলতে পারে না। সিঁড়ির পাশাপাশি মাজারটিও স্থান নির্দেশনা হারিয়ে ফেলেছে। যেহেতু নতুন সৃষ্ট মসজিদ সংলগ্ন গোরস্থানের কোন জায়গাতেই তাঁদের দাফন স্থানের কোন নির্দেশনা ফলক পাওয়া যায় না। ইতিহাস বলে পীরসাহেব ও খাদেম দু’জনেরই মাজার দু’টি মুক্ত আকাশের নিচে ঘাসে আচ্ছাদিত ছিল। প্রায় একশত বছর আগে হঠাৎ করেই আগমন করেন কুতুবউদ্দিন আউলিয়া নামক একজন পশ্চিম দেশীয় সাধক এবং তিনি এই ঘোলদাড়ীতেই হযরত পীর খায়রুল বাশার ওমজ (র.) মাজারে আস্তানা করেন। তিনি আরব দেশের লোক বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন। মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে তাঁর মাজার অবস্থিত। এ ছাড়া পীর বুড়ী নামক একজন মহিলা প্রায় দেড়’শ বছর আগে মাজারের খাদেম ছিলেন। মসজিদের সম্মুখে তাঁর কবর আছে।
জনশ্রুতি আছে, শতাধিক বছর পূর্বে মসজিদ সংলগ্ন লোকালয়ে আগুন লাগে এবং সমস্ত গ্রাম পুড়ে যায়। লোকজন একস্থান থেকে অন্যত্র সরে গেলে এখানে গভীর জঙ্গলে আবৃত হয়। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় মসজিদটি। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মকবুলার রহমান নিজ উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জঙ্গল পরিস্কার করিয়ে ধ্বংসপ্রায় মসজিদটি নামাজ আদায়যোগ্য করে তোলেন। অতঃপর ১৯৬৪ সালে মসজিদটি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার সংস্কার করেছিলেন বলেও জানা যায়।
মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ১০ ফুট। এর দেওয়ালের বেড় ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে মাঝখানে ১.৫ ফুট ব্যাসার্ধের টেরাকোটারূপে সজ্জিত নান্দনিক মেহরাব আছে। তার একই দূরত্বে দুই পার্শ্বে দুটি খোদাই করা দরজার পাল্লা আকৃতির দুই রকম লতাপাতা নক্শার আদলে তৈরি মেহরাবের ন্যায় ১ ফুট ব্যাসার্ধের স্থাপনা আছে। পিদিম বা আলোক উৎস রাখার জন্য পূর্বে ছয়টি, পশ্চিমে চারটি, উত্তর-দক্ষিণে দুইটি করে মোট চৌদ্দটি কোটর বা কুঠুরি আছে। ৩ ফুট উচু, ৬ ইঞ্চি গভীর ও ১.৫ ফুট বেড় মাপের কিতাব বা প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য বড় কোটর আছে ছয়টি। মূল মসজিদের ভেতরে দুটি সারি বা কাতার আছে। প্রতি সারিতে প্রায় ৩০ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের পূর্ব দেওয়ালে তিনটি দরজা আছে যার মাঝেরটি ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতা এবং ৩ ফুট প্রস্থ। দুই পার্শ্বের দরজা দুটি তার থেকে সামান্য ছোট। মসজিদের চার দেওয়ালের চার কোণে চারটি এবং দরজাগুলোর মধ্যে দুটি করে চারটি বুরুজ বা মোটা গোলাকৃতির নকশাকার পিলার রয়েছে। এই বুরুজগুলোর উপরে ছোট আকৃতির চারটি মিনার যার উপর টেপা কলসাকৃতির ছোট গম্বুজ রয়েছে। উত্তর-দক্ষিণ পার্শ্বে একটি করে দুটি জানালা রয়েছে। পূর্বে সম্মুখে ছাদহীন বারান্দা ছিল। এই বারান্দায় দুই কাতার এবং পরে পরিবর্ধিত বারান্দায় আরও চার কাতারে মুসল্লিগণ নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদের ছাদ তিনটি একই মাপের বড় গম্বুজদ্বারা দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের দেয়ালে ফুল, লতাপাতার টেরাকোটার নকশা রয়েছে। কালের বিবর্তনে অনেক নকশা-সৌন্দর্য-অবয়ব আজ নিশ্চিহ্ন প্রায় এবং মসজিদটি প্রায় ৩ ফুট মাটির নিচে দেবে গেছে। মসজিদটি ছোট ছোট ইট এবং চুন-সুড়কি দ্বারা নির্মিত। মসজিদের মুয়াজ্জিন নিজামউদ্দীন বলেন, ‘ছেলে বেলায় এখানে অনেক ঝোড় জঙ্গল ছিল এবং বাঘ-শুকর, সাপ-পোকাসহ অনেক বন্যপ্রাণি দেখা যেত, এর মধ্যেই এলাকার মানুষ মসজিদটিতে নামায় আদায় করতেন। তবে নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন যে মসজিদটি কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিদিন অনেক পর্যটক ঐতিহ্যের সাক্ষী হতে ঘোলদাড়ী প্রাচীন মসজিদ দেখতে এবং নামাজ আদায় করতে আসেন। পাইকপাড়া গ্রামের জনৈক গাজিরউদ্দীন বলেন, ‘এই মসজিদের প্রকৃত জমির পরিমাণ ১৪১ বিঘা’।
বর্তমানে এ মসজিদে জুম্মা’র নামাজ আদায় হয় এবং প্রতি শুক্রবার মানত আসে, যা নগদ অর্থ ও প্রাণিদ্বারা আগত মুসলমানসহ অন্য ধর্মের ভক্তবৃন্দ নিজেরাই শিরনি বিতরণপূর্বক পূরণ করে থাকেন। এখানে কোন দানবাক্স নেই এবং নগদ অর্থ কেহই দাবী করেন না, গ্রহণও করেন না, যা সত্যিই বড় ব্যতিক্রম। নীরবে নিভৃত্বে ইবাদত বন্দেগি করার জন্য মসজিদটি অতুলনীয় যা হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষী হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। প্রশ্ন থেকে যায়, মসজিদটি কি একসময় বিলীন অথবা হারিয়ে যাবে? প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি মসজিদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণপূর্বক দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করা ও পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে তোলা।
তথ্যসূত্র: ধর্মীয় ইতিহাস স্থাপত্যে কুষ্টিয়া–ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন ও ড. সারিয়া সুলতানা, কণ্ঠধ্বনি প্রকাশনী, কুষ্টিয়া, একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০
খুজতে হলে: https://www.rokomari.com/search?term=কণ্ঠধ্বনি+প্রকাশনী
লেখক: ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক