মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

লালন উৎসব

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’

লালন উৎসবে লালনভক্ত অনুসারীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাঁর গান ও দর্শন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলার বাউলের প্রাণপুরুষ মহাত্মা লালন নিয়ে গবেষণা থেমে নেই। যুগে যুগে লালন গবেষণার পরিধি কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় লালন একাডেমি থেকে বের হয়ে তামাম পৃথিবীর লালন বিশেষজ্ঞ ও আপামর মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেবে লালন স্মরণোৎসব- ২০২২। অনুষ্ঠান চলবে ১৫ থেকে ১৭ মার্চ (১ থেকে ৩ চৈত্র ১৪২৮ বঙ্গাব্দ) পর্যন্ত।

লালন ছিলেন মানবতাবাদী বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ্, মহাত্মা লালন ফকির, বাউল সম্রাটসহ বিভিন্ন উপাধিতে ভক্ত ও সুধী-সাধারণের মাঝে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক সাধক, তাত্ত্বিক গুরু, কবি, বাউল ঘরানার মরমি সাধক, বাউল, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক, দার্শনিক এবং ধর্মবেত্তা ও প্রেমিক। ফকির লালন শাহে’র জন্ম অজ্ঞাত। পালিত পিতা মওলানা মলম শাহ্, পালিত মাতা মতিজান বিবি এবং সাধন সঙ্গী বিশাখা ফকিরানী। ফকির লালন বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম প্রধান, তাঁর গান লোকসাহিত্য মাত্র নয়–বাঙালির প্রাণের কথা, মনীয়ার ফসল, সংস্কৃতির স্বাক্ষর; যার যুগান্তকারী গানের মাধ্যমে উনিশ শতকে বাউল গান অধিকতর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তিনি অসংখ্য পদ রচনা করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে লালন সংগীত, লালনগীতি বা ভাবসংগীত হিসেবে পরিচিতি পায়।

ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সব জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তাঁর গান রচনা করেছেন। তাঁর গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। কারো কোনো লেখনীতে লালন তাঁর জীবন সম্পর্কে কোনো তথ্য রেখে যাননি; তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে ‘লালন ফকির’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সারা বাঙলার বিশিষ্ট বাউলরা লালনকে ‘সিদ্ধপুরুষ’ বলে অভিহিত করে থাকেন।

লালন গবেষণার পথিকৃত শ্রীবসন্তকুমার পাল এর মতে, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাঁড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। মীর মশাররফ হোসেনের ‘হিতকরী’ পত্রিকায় প্রাবন্ধিক রাইচরণ দাস প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুণ বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তাঁর সাথিরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালীগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মওলানা মলম শাহ্ ও তাঁর স্ত্রী মতিজান বিবি এবং তারাই তাকে সেবা-শুশ্রুষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। গুটি বসন্ত রোগে তিনি একটি চোখ হারান। ছেঁউড়িয়াতে পালিত মাতা ও পিতার অনুরোধে তাদের দানকৃত জমিতেই লালন বসবাস শুরু করেন। এই সময় সিরাজ সাঁই নামক একজন সুফি দরবেশ ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়, যার দ্বারা তিনি প্রভাবিত হন। লালনের অনেক পদে দরবেশ সিরাজ সাঁই এর নাম উল্লেখ আছে। ছেঁউড়িয়াতেই থাকাকালীন বিভিন্ন জায়গার সাধক-সন্ন্যাসীরা তাঁর এখানে আসা-যাওয়া শুরু করেন। লালন অশ্বারোহণে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়স অব্দি অশ্বারোহণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যেতেন। কোন ক্লান্তি, অবসাদ, ক্ষুধা তাকে কখনো থামিয়ে দেয়নি।

লালনের পরিচয় দিতে গিয়ে সুধীর চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘কাঙ্গাল হরিনাথ তাকে জানতেন, মীর মশাররফ তাকে চিনতেন, ঠাকুরদের হাউসবোটে যাতায়াত ছিল, লেখক রায় বাহাদুর জলধর সেন, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় তাকে সামনাসামনি দেখেছেন, গান শুনেছেন, তবু জানতে পারেন নি লালনের জাত পরিচয়, বংশধারা বা ধর্ম।’ লালনের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘লালন ধার্মিক ছিলেন, কিন্তু কোনো বিশেষ ধর্মের রীতিনীতি পালনে আগ্রহী ছিলেন না। সব ধর্মের বন্ধন ছিন্ন করে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন জীবনে।’

একটি গানে লালন নিজেই মানবতাকে প্রশ্ন করেছেন–

‘এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে।
যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান,
জাতি গোত্র ভেদ নাহি রবে।’

লালন তাঁর ছেঁউড়িয়া আখড়া বাড়িতে শিষ্যদের নীতি আদর্শ ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তিনি প্রতি দোল পূর্ণিমায় আখড়া বাড়িতে একটি মহোৎসব আয়োজন করতেন। যেখানে সহস্রাধিক শিষ্য ও ভারত বর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধু-সন্ন্যাসীদের নিয়ে একত্রিত হতেন। রাত্রি ব্যাপি ভাব সংগীত ও আলোচনা হত। লালন তাঁর গানে তিনি নিজেকে ফকির (আরবি ‘সাধু’) হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

লালন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন–আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’

ফকির লালন শাহ্ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালীন তাঁর বিচিত্রতা লক্ষণীয়! বিশিষ্ট লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী ‘লালন সাঁই ও উত্তরসূরি’ গ্রন্থে (‘মহাত্মা লালন ফকীর’ পাক্ষিক ‘হিতকরী’, ১ম ভাগ, ১৩শ সংখ্যা, ১৫ কার্তিক ১২৯৭, ৩১ অক্টোবর ১৮৯০) উল্লেখ কাহিনির বর্ণনায় নিবন্ধকার রাইচরণ দাসের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন: “ইনি ১১৬ বৎসর বয়সে গত ১৭ অক্টোবর শুক্রবার প্রাতে মানবলীলা সম্বরণ করিয়াছেন। ...মরণের পূর্ব্বে রাত্রিতেও প্রায় সমস্ত সময় গান করিয়া রাত্রি ৫টার সময় শিষ্যগণকে বলেন ‘আমি চলিলাম’। ইহার কিয়ৎকাল পরে শ্বাসরোধ হয়। মৃত্যুকালে কোনো সম্প্রদায়ী মতানুসারে তাঁহার অন্তিমকার্য্য সম্পন্ন হওয়া তাঁহার অভিপ্রায় ও উপদেশ ছিল না। তজ্জন্য মোল্লা বা পুরোহিত কিছুই লাগে নাই।”

মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত তৎকালীন পাক্ষিক পত্রিকা ‘হিতকরী’তেই একমাত্র প্রকাশিত রাইচরণ দাসের এই একটি রচনায় সর্বপ্রথম তাকে ‘মহাত্মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থাৎ গান্ধীজীর ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম লালনকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেওয়া হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের ওপর লালনের প্রভাব পড়েছিল। গীতাঞ্জলির অনেক গানে, তাঁর জীবনদর্শনে লালন তাঁকে প্রভাবিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ধারণায় Lalon is the king of the Bauls. রবীন্দ্রনাথের পর দেশ-বিদেশে অনেকেই গবেষণা-লেখালেখি-সংগীতসাধনের মধ্য দিয়ে লালনকে সুপরিচিত করে তুলেছেন। বিদেশি গবেষকদের মধ্যে মার্কিন গবেষক ক্যারল সলোমনের (২৮ জুলাই ১৯৪৮-১৩ মার্চ ২০০৯) কর্মসাধনা অনন্য। বিস্ময়কর বিবেচনা-পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে তিন দশক ধরে যেসব লালন সংগীতের পাঠ তিনি নির্ণয় করেছিলেন এবং ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন সেগুলোর একশ সাইত্রিশটি গান নিয়ে সম্পূর্ণ বাংলা ও ইংরেজিতে দ্বিভাষিক সংকলন বের হয়েছে। বইটির নাম ‘লালন সাঁইজির গান City of Mirrors: Songs of Lalon Sai’। প্রকাশক আমেরিকার নিউইয়র্কের বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিয়ন প্রেস। সম্পাদনা করেছেন লোকগবেষক সাইমন জাকারিয়া ও আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়ান ওপেনশাও।

প্রতি বৎসর দুবার কুষ্টিয়ায় ছেঁউড়িয়াতে অনুষ্ঠিত লালন মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও বিদেশ থেকে গবেষক, মিডিয়া, টেলিভিশন ও ফিল্ম সভাসদদের সমাবেশ ঘটে। এই সময় কুষ্টিয়া জেলা শহর এবং ছেঁউড়িয়া গ্রাম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উৎসব প্রাঙ্গণে পরিগণিত হয়। মৃত্যুর ১২৯ বছর পরেও লালন ফকিরের খ্যাতি আজ তুঙ্গে। রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের পরে এমন খ্যাতি এ দেশে অন্য কারো ভাগ্যে জোটেনি। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দিব্যদ্যুতি সরকার লালন সম্পর্কে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি আর লালনের আখড়ার দূরত্ব ছিল মাত্র ছয় মাইল, একজন শিলাইদহে অন্যজন ছেঁউড়িয়ায়। লালন রবীন্দ্রনাথের ব্রাহ্মসংগীতসহ কোনোটায় আগ্রহ বোধ করেননি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আগ্রহ বোধ করেছিলেন লালনের গানে। সেই আগ্রহের কারণে তিনি লালনের ২৯৮টি গান সংগ্রহও করেছিলেন। দৃশ্যত এই দুইজনের পৃথিবী ছিল বিপুল ব্যবধানের। একজন ফকির, পথেঘাটে থাকেন। অন্যজন অভিজাত জমিদার, ক্ষণে ক্ষণে বাড়ি গাড়ি পাল্টান, পাল্টান বাড়ির নামও। একজন জীবদ্দশাতেই বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিলেন। অন্যজন প্রাণপণে নিজেকে আড়ালে রাখতেন। কিন্তু বাংলা ও বাঙালিত্বের শোভন প্রাঙ্গণে দুই জনই আমাদের আত্মীয়।’

শ্রীবসন্তকুমার পাল, ‘হারামনি’ গ্রন্থ প্রণেতা মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন, কবি জসীমউদ্দীন, ড. উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মুহম্মদ আবু তালিব, ড. আনোয়ারুল করীম, খোন্দকার রিয়াজুল হক, শক্তিনাথ ঝা, ড. আবুল আহসান চৌধুরী প্রমুখ পণ্ডিত-গবেষক প্রাণান্ত শ্রম-মেধা-মনন দিয়ে লালনের গান ও জীবনদর্শনের একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার গড়ে তুলেছেন।

লেখক পরিচিতি: ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক

এসএ/

Header Ad
Header Ad

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চ্যানেলটির স্ক্রলে এ তথ্য জানানো হয়।

স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও জানা গেছে, সাম্প্রতিক এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এ ঘটনায় দীপ্ত টিভির এক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে খুব শিগগিরই সংবাদ কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা
সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা